আমাদের বাংলাদেশ নিউজ 24 ডেস্কঃ চট্টগ্রাম-১৫ (সাতকানিয়া-লোহাগাড়া) আসন থেকে সরে দাঁড়ালেন জামায়াতে ইসলামের কর্মপরিষদ সদস্য ও সাবেক সংসদ সদস্য শাহজাহান চৌধুরী। এর পরিবর্তে তিনি মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন চট্টগ্রাম-১০ (ডবলমুরিং-হালিশহর) আসনে। দলীয় কোন্দল এড়াতে জামায়াতের সিদ্ধান্ত তিনি শেষ পর্যন্ত মেনে নিয়েছেন বলে সংগঠনটির নেতারা জানিয়েছেন। এখন এ আসনে জামায়াতের প্রার্থী হিসেবে আছেন কেন্দ্রীয় নায়েবে আমির আ ন ম শামসুল ইসলাম ও চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা আমির জাফর সাদেক।
জামায়াতের নেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, যদি আইনি জটিলতায় শেষ পর্যন্ত শামসুল ইসলাম নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে না পারেন, তবে জাফর সাদেকই হবেন জামায়াতের প্রার্থীতবু শাহজাহান চৌধুরী নন। এই আসনে শাহজাহান চৌধুরী দুইবার সংসদ সদস্য ছিলেন। আর শামসুল ইসলাম ছিলেন একবার। এ নিয়ে দুই নেতার মধ্যে দ্বন্দ্ব রয়েছে। জাফর সাদেক অতীতে সাতকানিয়া পৌরসভার মেয়র নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে তৃতীয় হয়েছিলেন।
বিষয়টি সম্পর্কে জানতে চাইলে জাফর সাদেক কোনো ধরনের মন্তব্য করতে রাজি হননি। তিনি বলেন, দলের সিদ্ধান্ত আমরা সবাই মেনে নেব।
চট্টগ্রাম-১০ আসনটির অবস্থান নগরীতে। ২০০৮ সালে এ আসনে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল্লাহ আল নোমান আওয়ামী লীগের নগর সহসভাপতি ডা. আফছারুল আমীনের কাছে হেরে যান। জানা যায়, জামায়াতে ইসলামের কেন্দ্রীয় নির্দেশে তখন থেকে শাহজাহান চৌধুরী চট্টগ্রাম-১০ আসনে কাজ করে যাচ্ছেন। সর্বশেষ তিনি ওই এলাকা থেকেই গ্রেপ্তার হন। বর্তমানে শামসুল ইসলাম ও শাহজাহান চৌধুরী দুজনই জেলে আছেন। শাহজাহান চৌধুরীর ঘনিষ্ঠ এক জামায়াত নেতা বলেন, তিনি চাপ সৃষ্টি করে দলের মনোনয়ন আদায়ের চেষ্টা করলেও শেষ পর্যন্ত দলীয় কোন্দলে জড়াতে চাননি।
তাই চট্টগ্রাম-১৫ আসনে তার জন্য ফরম কেনা হলেও সংগঠনের সবুজ সংকেত না থাকায় তিনি সেটিতে স্বাক্ষর করেননি।
নিজে দলীয় কোন্দল এড়িয়ে চলতে চাইলেও সাতকানিয়া ও লোহাগাড়া উপজেলায় রয়েছে শাহজাহান চৌধুরীর হাজার হাজার ভক্ত। দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর ফাঁসির রায়ের পর সাতকানিয়া ও লোহগাড়ায় ব্যাপক ভাংচুর ও সড়কের দুই পাশের হাজার হাজার গাছ কাটা হয়। জামায়াত কর্মীদের হামলায় এক জাপানি নারী পর্যটক চোখ হারান। পুরো তা-বের নেতৃত্ব দেন শাহজাহান চৌধুরী।
জামায়াতে ইসলাম থেকে শামসুল ইসলামকে মনোনয়ন দেওয়ার ঘোষণা সত্ত্বেও লোহাগাড়া উপজেলা এলাকায় নাগরিক কমিটির ব্যানারে জামায়াত-শিবিরের একদল নেতাকর্মী ও সমর্থক শাহজাহান চৌধুরীকে তাদের প্রার্থী ঘোষণা করেন। তবে শাহজাহান চৌধুরী চট্টগ্রাম-১৫ আসনে দলের সিদ্ধান্তের বাইরে গিয়ে মনোনয়নপত্র গ্রহণে সম্মত না হওয়ায় তাঁর সমর্থকরাও পিছু হটে যান। এই কমিটির আহ্বায়ক ও আমিরাবাদ ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান এনামুল হক বলেন, আমরাও শেষ পর্যন্ত নেতার কথাই মেনে নিয়েছি।
জানা যায়, প্রতীক বরাদ্দ না দেওয়া পর্যন্ত জামায়াতে ইসলামের নেতাকর্মীরা জনসম্মুখে না এসে নিজেদের এক প্রকার আড়াল করে রেখেছেন। তাদের মোবাইল ফোনও বন্ধ রয়েছে। একজন নেতা বলেন, প্রতীক বরাদ্দ ও প্রচার পুরোদমে শুরু হলেই তারা আনুষ্ঠানিকভাবে মাঠে নামবেন।
-আমাদের সময়
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন