বিজ্ঞাপন দিন

আচ্ছালামু আলাইকুম ওয়ারাহমাতুল্লাহ। ইসলামী ব্যাংক এজেন্ট ব্যাংকিং আউটলেট দক্ষিণগাও, শাহীবাগ বাজার এর পক্ষ থেকে সকল গ্রাহক, শুভাকাংখীসহ সবাইকে জানাই ঈদ উত্তর সালাম ও আন্তরিক শুভেচ্ছা। ব্যাংক খোলা এবং যথারীতি ব্যাংকিং কার্যক্রম চলছে। এই গ্রুপে যারা আছেন তাদের মাধ্যমে সংশ্লিষ্ট এলাকার এলাকারসকলকে ইসলামী ব্যাংকের মাধ্যমে বিদেশ থেকে রেমিটপন্স পাঠানোর আহবান জানাচ্ছি। ঢাকার সবুজবাগ থানার রাজারবাগ, কুসুমবাগ, দক্ষিনগাও, শাহীবাগ, মানিকদিয়া, বাইকদিয়া, নন্দিপাড়াসহ সকল এলাকার গ্রাহক, শুভাকাংখী, শুভানুধ্যায়ীদের প্রদত্ত মোবাইল নাম্বারে যোগাযোগ করার অনুরোধ করা হলোঃ ০১৭১১-৪৫৮১৫১, ০১৭০০৯২৫২৪১:b>ইসলামী ব্যাংক এজেন্ট ব্যাংকিং আউটলেট দক্ষিণগাও, শাহীবাগ বাজার

বুধবার, ১৪ ডিসেম্বর, ২০১৬

স্বাধীনতার মূল অর্জন গণতন্ত্রকে হারিয়ে সমাজ অনিশ্চিত গন্তব্যের পথে যাত্রা শুরু করেছে -মকবুল আহমাদ

১৬ই ডিসেম্বর ‘মহান বিজয় দিবস’ উপলক্ষে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমীর মকবুল আহমাদ গতকাল সোমবার বিবৃতি দিয়েছেন। 
তিনি বলেন, ১৬ই ডিসেম্বর ‘মহান বিজয় দিবস’। আমাদের জাতীয় জীবনে এ দিবসটির গুরুত্ব ও তাৎপর্য অপরিসীম। যারা দেশের জন্য জীবন দিয়েছেন এবং মহান মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করে অপরিসীম ত্যাগ স্বীকার করেছেন সেই সব বীর মুক্তিযোদ্ধাসহ সমগ্র জাতির অবদানের কথা আমরা গভীর শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করছি ও শহীদদের মাগফিরাতের জন্য আল্লাহর কাছে দোয়া করছি। 
তিনি বলেন, জাতি এমন এক সময় মহান বিজয় দিবস পালন করতে যাচ্ছে যখন দেশে এক শ্বাসরুদ্ধকর পরিস্থিতি বিরাজ করছে। স্বাধীনতার মূল অর্জন গণতন্ত্রকে হারিয়ে সমাজ আজ এক অনিশ্চিত গন্তব্যের পথে যাত্রা শুরু করেছে। এ অবস্থায় জাতীয় ঐক্যের কোন বিকল্প নেই। 
ব্যাপকভিত্তিক জাতীয় ঐক্য গড়ে তুলে দেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্বকে হেফাজতের দৃঢ় অঙ্গীকার ব্যক্ত করে আলোচনা সভা ও দোয়ার মাহফিলসহ নানাবিধ অনুষ্ঠানের মাধ্যমে ১৬ই ডিসেম্বর ‘মহান বিজয় দিবস’ যথাযোগ্য মর্যাদার সাথে উদযাপন করার জন্য তিনি বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সকল শাখার প্রতি আহ্বান জানান। সেই সাথে মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে তিনি দেশবাসীকে আন্তরিক অভিনন্দন জানান এবং দেশবাসী সকলের সুখ-সমৃদ্ধি ও কল্যাণ কামনা করেন। দৈনিক সংগ্রাম

চট্টগ্রাম ষোলশহর থেকে অন্যায়ভাবে ২৭ মেধাবী ছাত্র গ্রেপ্তারের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির


আমাদের বাংলাদেশ অনলাইন নিউজ ডেস্কঃ  এক যৌথ প্রতিবাদ বার্তায় ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় সভাপতি আতিকুর রহমান ও সেক্রেটারী জেনারেল ইয়াছিন আরাফাত বলেন, গভীর রাতে কোন কারণ ছাড়াই চট্টগ্রাম পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের ২৭ জন মেধাবী ছাত্রকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। গতকাল গভীর রাতে ঘুমন্ত অবস্থায় পুলিশ তাদের গ্রেপ্তার করে। অথচ তাদের বিরুদ্ধে কোন অভিযোগ ছিলনা। পুলিশ এই অন্যায় গ্রেপ্তারকে আড়াল করতে 'জিহাদী বই উদ্ধার' নামক ভাঙ্গা রেকর্ড বাজিয়ে মিথ্যা প্রচারণা চালাচ্ছে। কোন কারণ ছাড়াই এভাবে নিরপরাধ ছাত্রদের গ্রেপ্তার ও হয়রানীর যৌক্তিক কারণ দেখাতে পারেনি পুলিশ প্রশাসন। এর আগেও নিরপরাধ ছাত্রদের অন্যায়ভাবে গ্রেপ্তার ও হয়রানী করা হয়েছে। যা নিয়ে নানা মহল থেকে প্রশ্ন উঠেছে। পুলিশের এমন নির্বিচার গ্রেপ্তার জনমনে আতঙ্ক তৈরি করছে। এতে করে সারা দেশে বিভিন্ন মেস ও ব্যাচেলর বাসায় অবস্থানরত হাজার হাজার শিক্ষার্থীর লেখাপড়া মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে। নিজেদের ব্যর্থতাকে আড়াল ও জাতিকে বিভ্রান্ত করতে একের পর এক নিরপরাধ ছাত্রের জীবনকে হুমকির মুখে ফেলে দিচ্ছে সরকার।

নেতৃবৃন্দ বলেন, কোন কারণ ছাড়াই সাধারণ ছাত্রদের জীবন হুমকির মুখে ফেলা নূন্যতম দায়িত্বশীলতার মধ্যে পড়েনা। আমরা অবিলম্বে গ্রেপ্তারকৃতদের মুক্তির দাবী জানাচ্ছি। একই সাথে মেস ও বাসা-বাড়িতে সাধারণ ছাত্রদেরকে হয়রানি না করার আহবান জানাচ্ছি।

নেতৃবৃন্দ অবিলম্বে নিরপরাধ নেতাকর্মীদের মুক্তি দিতে এবং ভবিষ্যতে এমন দায়িত্বহীন কাজ থেকে বিরত থাকতে সরকার ও পুলিশের প্রতি আহবান জানান।

রবিবার, ৬ নভেম্বর, ২০১৬

এবার মসজিদে রাখা হল মূর্তি: নাসিরনগর পুরুষশূন্য, তাণ্ডবের নেপথ্যে ফারুক


ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগরে শুক্রবার রাতে বিভিন্ন গ্রামে অভিযান চালিয়েছে পুলিশ। গ্রেফতার করা হয়েছে ৩৩ জনকে।  
  এরপর থেকেই এলাকায় বিরাজ করছে থমথমে অবস্থা। গ্রেফতার এড়াতে বাড়িঘর ছেড়েছেন পুরুষরা। 
  শুক্রবার ৫ বাড়িতে আগুন দেয়ার পর নাসিরনগরে বাড়ানো হয় নিরাপত্তা। একদিকে আইনশৃংখলা বাহিনীর বজ্র আঁটুনি, অন্যদিকে গ্রেফতার আতংক- এরই মধ্যে শনিবার সন্ধ্যায় আরেক বাড়িতে আগুন দিয়েছে দুর্বৃত্তরা। ঘটেছে উসকানিমূলক বিপরীত ঘটনাও। এক মসজিদের ভেতরে কে বা কারা রেখে গেছে লক্ষ্মী মূর্তি। 
  পাঁচ বাড়িতে আগুন দেয়ার ঘটনায় শনিবার সন্ধ্যায় মামলা হয়েছে। এদিকে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদমন্ত্রী ছায়েদুল হক তার সমর্থক তিন নেতাকে বহিষ্কারের তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন। প্রতিক্রিয়া জানাতে আজ সংবাদ সম্মেলন ডেকেছেন তিনি।  
  ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা চৌধুরী মোয়াজ্জেম আহমেদের পদত্যাগ চেয়েছে। সেই সঙ্গে তাকেও তদন্তের আওতায় আনার দাবি তুলেছে তারা। 
  রোববার নাসিরনগরে ১৫ মন্দির ও শতাধিক বাড়িতে তাণ্ডব চালায় দুর্বৃত্তরা। অগ্নিসংযোগ করে।  
  ফেসবুক ঘেঁটে ও স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ওই দিন উত্তেজনা ছড়িয়ে দিয়েছিলেন হরিণবেড় ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ সভাপতি ফারুক আহমেদ।  
  রসরাজের ফেসবুক আইডিতে ধর্মীয় অবমাননার ব্যঙ্গচিত্র আপলোড হওয়ার পর ফারুকই তা শেয়ার দিয়ে ফেসবুকে প্রতিবাদের ডাক দেন।  
  অনেকেই মনে করেন, ফারুক ওই ব্যঙ্গচিত্র আপলোডের সঙ্গেও যুক্ত। রাজনৈতিক ও স্থানীয় বিলে আধিপত্য নিয়ে দ্বন্দ্বে পানি ঘোলা করে ফায়দা লোটার জন্য এমনটি করা হয়েছে। শুক্রবার যে তিন নেতাকে বহিষ্কার করে আওয়ামী লীগ, ফারুক তাদের একজন। 
  পুলিশের এক সূত্র জানায়, ভিডিও ফুটেজ দেখে এবং বিভিন্ন সাক্ষ্য-প্রমাণের ভিত্তিতে শুক্রবার ৩৩ জনকে গ্রেফতার করা হয়। শনিবার তাদের আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে।  
  তবে নাসিরনগর থানার ওসি (তদন্ত) শওকত হোসেন বলেন, গ্রেফতার ব্যক্তিদের ৭ দিনের রিমান্ডে আনার আবেদন করা হয়েছে। এ ঘটনায় এ নিয়ে ৪৪ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। 
  পুলিশের চট্টগ্রাম রেঞ্জের অতিরিক্ত ডিআইজি মো. সাখাওয়াত হোসেন বলেন, ‘আমরা অপরাধীদের গ্রেফতারে বিশেষ অভিযান শুরু করেছি। পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হওয়া পর্যন্ত এ অভিযান চলবে।’  
  এক প্রশ্নের উত্তরে ডিআইজি বলেন, পত্র-পত্রিকায় যেসব নেতার নাম এসেছে তাদের ব্যাপারে তদন্ত চলছে। দোষী প্রমাণ হলে তাদেরও আইনের আওতায় আনা হবে। তিনি বলেন, ৭ কার্যদিবসের মধ্যেই তদন্ত প্রতিবেদন দেয়ার চেষ্টা চলছে। 
  
শনিবার সন্ধ্যায় উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান ও উপজেলা যুবলীগের সভাপতি অঞ্জন কুমার দেবের বাড়ির পাটশলার গুদামে আগুন দেয় দুর্বৃত্তরা। খবর পেয়ে আইনশৃংখলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা সেখানে যান। 
  এদিন ক্ষতিগ্রস্ত বাড়িঘর ও উপাসনালয় পরিদর্শন শেষে ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির আহ্বায়ক শাহরিয়ার কবির যুগান্তরকে বলেন, নাসিরনগরে রামুর ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঘটেছে। রসরাজের মতো সাধারণ জেলের পক্ষে ওই রকম ব্যঙ্গচিত্র বানানো সম্ভব নয়। কারণ ধর্মীয় ওই ব্যঙ্গচিত্র তৈরি করতে যে ধরনের মেধা প্রয়োজন তা রসরাজের নেই। সে ৪র্থ বা ৫ম শ্রেণী পাস।  
  তিনি বলেন, ওই ব্যঙ্গচিত্র তৈরিতে কম্পিউটারের প্রয়োজন হয়েছে। রসরাজ ফটোশপের কাজ তো দূরের কথা, সে কম্পিউটার চেনে কিনা তাও আমার সন্দেহ রয়েছে।  
  শাহরিয়ার বলেন, হরিণবেড় গ্রামের একজন আইনজীবীর সঙ্গে আমাদের দেখা হয়েছিল। তিনি রসরাজের পক্ষে আদালতে দাঁড়াতে চেয়েছিলেন কিন্তু দাঁড়াতে দেয়া হয়নি। পরে তাকে রিমান্ডে পাঠিয়ে দেয়া হয়েছে।’ 
  শাহরিয়ার কবির আরও বলেন, ‘হরিণবেড় বাজারে আল আমিন নামক একটি কম্পিউটারের দোকান থেকে এই ব্যঙ্গচিত্র তৈরি করে রসরাজের ফেসবুকে আপলোড করা হয়। এ ব্যাপারে তথ্যপ্রমাণ পাওয়া গেছে।’  
  
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে নাসিরনগর থেকে প্রত্যাহারের দাবি জানিয়ে তিনি বলেন, ‘২৯ অক্টোবর ইউএনও শুধু দুটি প্রতিবাদ সভার অনুমতিই দেননি, সেখানে তিনি বক্তব্যও দিয়েছেন। সেদিন ওই সমাবেশের অনুমতি যদি না দেয়া হতো তাহলে হিন্দু পরিবারগুলো হামলা ও ক্ষয়ক্ষতি থেকে রক্ষা পেত।’ ঘটনার এক সপ্তাহ পরও ইউএনওকে স্বপদে বহাল রাখার সমালোচনা করেন তিনি। 
  
শাহরিয়ার কবিরের সঙ্গে ছিলেন বিচারপতি শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিক। তিনি বলেন, ম্যাজিস্ট্রেট রসরাজের পক্ষে আইনজীবীকে দাঁড়ানোর সুযোগ দেননি। ম্যাজিস্ট্রেট যেটি করেছেন, সেটি সংবিধান পরিপন্থী কাজ। ম্যাজিস্ট্রেট রসরাজকে কোনো কিছু বলার সুযোগ না দিয়ে তার বিরুদ্ধে রিমান্ড অর্ডার দিয়েছেন। এজন্য ম্যাজিস্ট্রেটের কাছেও ব্যাখ্যা চাওয়া উচিত।’  
  
এ সময় নির্মূল কমিটির সদস্য সচিব কাজী মুকুল, মহিলা পরিষদের সহসভাপতি রেখা চৌধুরী, যুগ্ম সম্পাদক রাখী দাস, জেলা নির্মূল কমিটির সভাপতি কবি জয়দুল হোসেন প্রমুখ সেখানে ছিলেন। এছাড়া শনিবার নাসিরনগরের ক্ষতিগ্রস্ত মন্দির ও বাড়িঘর পরিদর্শন করেন প্রেস কাউন্সিলের চেয়ারম্যান বিচারপতি মমতাজ উদ্দিন আহমেদ। 
  
উপজেলা সদর থেকে ১৪ কিলোমিটার পূর্বে রসরাজের গ্রাম হরিণবেড়। শনিবার সেখানে গিয়ে দেখা যায়, তিতাস নদীর পারের এ গ্রামে সবই জেলে পরিবার।  
  
হরিপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান দেওয়ান আতিকুর রহমান আঁখি যুগান্তরকে বলেন, রসরাজ দৈনিক শ্রমিক। বাড়ির পাশের বিলে জেলে হিসেবে মাছ ধরে। ফেসবুকে ছবি পোস্ট হওয়ার ক’দিন আগে থেকেই সে বালিঙ্গা বিলে মাছ ধরার কাজে ব্যস্ত ছিল। তার ফোনটিও বাড়িতে রেখে যায়। তার ছোট ভাই আরেকজনের মোবাইল ফোনের মাধ্যমে ফোন করে রসরাজের সঙ্গে কথা বলে। তাকে জানায়, ‘তোমার ফেসবুক থেকে কী আপলোড করেছে? যা নিয়ে সমস্ত এলাকায় তোলপাড় শুরু হয়েছে।’ এ কথা শুনে বাড়িতে আসে রসরাজ। ফেসবুকে ওই ব্যঙ্গচিত্র দেখে সে হতভম্ব হয়ে পড়ে। 
  
রসরাজের ফেসবুক প্রোফাইল ঘেঁটে দেখা যায়, ধর্মীয় যে ব্যঙ্গচিত্র আপলোড নিয়ে এত লংকাকাণ্ড সেটি মুছে ফেলা হয়েছে। তবে ২৯ সেপ্টেম্বর বেলা ১১টা ২৪ মিনিটে ওই ব্যঙ্গচিত্র আপলোডের বিষয়ে ক্ষমা চেয়ে একটি স্ট্যাটাস দেয়া হয়।  
  
যাতে লেখা রয়েছে, ‘প্রথমেই আমি সকল মুসলিম ভাইদের কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করছি। কারণ আমার অজান্তে কে বা কারা আমার আইডি থেকে একটি ছবি পোস্ট করেছে। কাল (২৮ অক্টোবর) রাতে আমি, মামুন ভাই, আশু ভাই আর বিপুলের মাধ্যমে জানতে পারি ছবি পোস্টের কথা। তার আগ পর্যন্ত আমি কিছুই জানতাম না। জেনে সাথে সাথেই ডিলিট করি। যেখানে আমরা বসবাস করি হিন্দু-মুসলিম ভাই ভাই হিসেবে। ওইখানে ওইরকম মনমানসিকতা এবং দুঃসাহসিকতা অবশ্যই আমাদের কারও নেই। আমি কেন? আমি মনে করি ওই মনমানসিকতা কারও নেই।’  
  
স্ট্যাটাসে আরও বলা হয়, ‘এখানে আমার মুসলিম ভাইয়েরা আমাদের বিভিন্ন অনুষ্ঠানে সার্বিক সহযোগিতা করে থাকেন। ওইখানে আমার আইডি থেকে এমন ছবি আমার অজান্তে কিভাবে পোস্ট হল, কে বা কারা ওই কাজটা করল আমি জানি না। তাই সকলের কাছে আমি ক্ষমা প্রার্থী।’ 
  
ইউপি সদস্য দ্বীন ইসলাম যুগান্তরকে বলেন, কৈবর্তপাড়ার মনা মাস্টারের ছেলে আশুতোষকে জিজ্ঞাসাবাদ করলে আসল তথ্য পাওয়া যাবে। কারণ ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ সভাপতি ফারুক আহমদের অফিসে ২৯ অক্টোবর সকালে আশুতোষ রসরাজের আইডি থেকে দুঃখ প্রকাশ করে পোস্ট দেয়ার কথা স্বীকার করে। এ সময় আওয়ামী লীগ নেতা ফারুক ইউপি সদস্য আবু লাল, স্কুল কমিটির সভাপতি খালেদ মোবারকসহ বিশিষ্ট ব্যক্তিরা উপস্থিত ছিলেন বলেও জানান তিনি। 
  
এলাকার একটি সূত্র জানায়, আওয়ামী লীগ নেতা ফারুকের সঙ্গে মনা মাস্টারের পারিবারিক সম্পর্ক রয়েছে। ফারুক মনা মাস্টারকে শ্বশুর বলে সম্বোধন করেন। ওইদিন হরিপুর বাজারের আল আমিন সাইবার ক্যাফের মালিক বেনু মিয়ার ছেলে জাহাঙ্গীর আলম রসরাজের পোস্টটি প্রথম কম্পিউটার থেকে প্রিন্ট করেন। পরে এগুলো ফটোস্ট্যাট করে এলাকায় প্রচার করেন। 
  
শনিবার (২৯ অক্টোবর) সকালে জাহাঙ্গীর আলমই তার সহযোগীদের নিয়ে রসরাজকে মনা মাস্টারের বাড়ি থেকে ধরে ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ অফিসে নিয়ে আসে এবং আওয়ামী লীগ নেতা ফারুকের হাতে তুলে দেয়।  
  
সেখান থেকে নাসিরনগর থানা পুলিশ তাকে আটক করে থানায় নিয়ে যায়। একই সময়ে হরিপুর এলাকায় ব্যাপক মাইকিং করে আওয়ামী লীগ নেতা ফারুক ও তার ভাই কাপ্তানের নেতৃত্বে প্রতিবাদ সমাবেশ করা হয়। শনিবার দুপুরে হরিপুর বাজারে গিয়ে জাহাঙ্গীরের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ও মোবাইল নম্বর দুটিই বন্ধ পাওয়া যায়। 
  
চেয়ারম্যান আঁখি আরও বলেন, জেলে রসরাজের বিদ্যা-বুদ্ধি কোনোটাই এমন নেই। তিনি মনে করেন, বালিঙ্গা বিলের আধিপত্য নিয়ে তাকে ফাঁসানো হয়েছে।  
  
এছাড়া গত ইউপি নির্বাচনে হরিপুরে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থীর নৌকা প্রতীকে ভোট দেয় কৈবর্তপাড়ার মানুষ। মন্ত্রী ছায়েদুল হক, আওয়ামী লীগ নেতা ফারুক সমর্থন করেছিলেন স্বতন্ত্র প্রার্থী রাশেদ চৌধুরীকে। তাদের উপেক্ষা করে কৈবর্ত সমাজের মানুষ আওয়ামী লীগ প্রার্থী হিসেবে তাকে ভোট দিয়ে বিজয়ী করেন। এ ঘটনার প্রতিশোধ নিতেও রসরাজকে ফাঁসিয়ে কৈবর্ত সমাজের উপাসনালয়সহ তাদের বাড়িঘরে হামলা-ভাংচুর করা হতে পারে। 
  
কৈবর্তপাড়ার মৎস্য ব্যবসায়ী সমিতির নেতা রামেশ্বর দাস জানান, আমরা হরিণবেড় হরিপুর আহসান মৎস্যজীবী সমবায় সমিতির নামে ৩ বছর আগে জেলা প্রশাসকের কার্যালয় থেকে বালিঙ্গা বিল লিজ এনেছিলাম। গত বছর বিলের মাছ ধরে বিক্রিও করা হয়। এ বছরের জন্য কয়েক মাস আগে ৩ লাখ ৫৩ হাজার ২৪০ টাকা জমা দিয়ে লিজ নবায়ন করা হয়। এর কিছুদিন পরই ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ সভাপতি ফারুক আহমেদ তাদের ডেকে জোর করে কমিটি বাতিল করেন। ওই কমিটির সভাপতি রামেশ্বর আর সাধারণ সম্পাদক ছিলেন রাধুচরণ দাস। বিল আত্মসাৎ করতে তাদের বাদ দিয়ে নতুন কমিটি করেন ফারুক। এ কমিটির সভাপতি সুভাষ দাস ও সাধারণ সম্পাদক করা হয় রসরাজ দাসকে। এমনকি সাধারণ সম্পাদক রাধুচরণ দাসের কাছ থেকে জোর করে সব খাতাপত্রও নিয়ে যায় ফারুক। 
  
এ বিষয়ে ফারুক আহমেদ বলেন, আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রমূলকভাবে এসব কথা বলা হচ্ছে। আমি রসরাজ ও তার এলাকার মানুষদের রক্ষা করতে আপ্রাণ চেষ্টা করেছি। 
  
ধর্মীয় অবমাননা সংক্রান্ত ব্যঙ্গচিত্র আপলোডের বিষয়ে ২৯ সেপ্টেম্বর প্রতিবাদ সভার মধ্য দিয়েই উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে নাসিরনগরে। ইউএনও চৌধুরী মোয়াজ্জেম আহমদ ওইদিনই নাসিরনগর সদরে দুটি প্রতিবাদ সভা আয়োজনের অনুমতি দেন। আহলে সুন্নাত ওয়াল জামাত প্রতিবাদ সভা করে কলেজ মোড়ে। আর নাসিরনগর আশুতোষ পাইলট উচ্চবিদ্যালয় মাঠে তৌহিদী জনতার ব্যানারে বিক্ষোভ মিছিল ও প্রতিবাদ সভার আয়োজন করা হয়। এ দুটি সমাবেশ শেষ হওয়ার আগেই হিন্দুদের বাড়িঘর ও উপাসনালয়ে হামলা, অগ্নিসংযোগ ও ভাংচুর করা হয়। দুই সমাবেশের অনুমতি দেয়ার পর তাতে বক্তব্য দেন ইউএনও। দুটিতেই উপস্থিত ছিলেন নাসিরনগর উপজেলা চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি এটিএম মনিরুজ্জামান সরকারসহ স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতারা। 
  
রসরাজের আইডি থেকে ব্যঙ্গচিত্র ২৯ অক্টোবর রাত ১১টা ২৮ মিনিটে শেয়ার করেন ফারুক। এ সময় তিনি তার স্ট্যাটাসে লেখেন, ‘নাসিরনগর হরিণবেড় গ্রামের একটি ছেলে পবিত্র কাবাঘরে শিবমন্দির বসিয়ে ব্যঙ্গ করে। ছেলেটির নাম রসরাজ দাস। তার বাবার নাম জগন্নাথ দাস। আজ শনিবার বেলা ১১টায় ফেসবুকে রসরাজ দাসের টাইমলাইনে এলাকার মুসলিম সম্প্রদায়ের কিছু লোক দেখতে পেলে ফেসবুকেই ব্যাপক আলোচনা শুরু হয়। আমি এ খবর পেয়ে নাসিরনগর থানার এসআই আশরাফুল ভাইকে বিষয়টি অবগত করি। আমি এবং খালেদ মোবারক এলাকার আরও জনগণ নিয়ে রসরাজকে ধরে ফেলি। তারপর প্রশাসন হরিণবেড় আসে। রসরাজকে এসআই আশরাফের কাছে হ্যান্ডওভার করেছি। আমি এই কুলাঙ্গারের দৃষ্টান্তমূলক সাজা চাই এবং ফাঁসি চাই।’ ৩০ অক্টোবর এলাকার বেশ কিছু মানুষকে নিয়ে ছবি তুলে আরেকটি প্রতিবাদী স্ট্যাটাস দেন ফারুক। এতে তিনি লেখেন, ‘সকল ধর্মপ্রাণ মুসলমান ভাইয়েরা সেই কুলাঙ্গারের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ মিছিল করে। এতে আমরা সমর্থন করি। খোঁজ নিয়ে জানা যায়, আওয়ামী লীগ নেতা ফারুকের ভাই কাপ্তান মিয়া রোববার সকালে এলাকার মাদ্রাসাছাত্রসহ দুই শতাধিক লোক নিয়ে ১৪টি ট্রাকে করে উপজেলা সদরে আসেন।’ 
  
বুধবার রাতে ভাদুঘরে জামিয়া সিরাজিয়া দারুল উলুম ভাদুঘর মাদ্রাসার গেটে তালা লাগিয়ে দিয়েছিল কে বা কারা। মাদ্রাসার গেটে আপত্তিকর পোস্টারও সেঁটে দেয়। শনিবার কুণ্ডা ইউনিয়নের বিটুই গ্রামের মসজিদে সকালে কে বা কারা একটি লক্ষ্মী মূর্তি রেখে যায়। পরে সকালে পুলিশ গিয়ে তা বের করে আনে। 
  
তিন নেতাকে বহিষ্কারের ঘটনায় ক্ষুব্ধ মন্ত্রী ছায়েদুল হক। তিনি জানিয়েছেন, তাকে না জানিয়েই বা তার সঙ্গে কথা না বলেই তাদের বহিষ্কার করা হয়। তারা দোষী নয় বলেও দাবি করেন মন্ত্রী। তিনি নাসিরনগর উপজেলা ডাকবাংলোতে আজ দুপুরে সংবাদ সম্মেলন ডেকেছেন বলে তথ্য অধিদফতর জানিয়েছে। শনিবার অধিদফতর থেকে পাঠানো মন্ত্রীর দিনের কর্মসূচিতে দুপুর ১টায় সংবাদ সম্মেলনের উল্লেখ রয়েছে। 
  
দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে বিচার দাবি : নাসিরনগরে তাণ্ডব-অগ্নিসংযোগ, ঠাকুরগাঁও ও নেত্রকোনায় প্রতিমা ভাংচুর এবং নওগাঁয় মন্দির দখলের চেষ্টায় জড়িতদের দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে বিচারের দাবি জানিয়েছেন সাংবিধানিক অধিকার ফোরামের সাধারণ সম্পাদক সুরঞ্জন ঘোষ। শনিবার এক বিবৃতিতে তিনি বলেন, সংখ্যালঘুদের ওপর হামলাকারীদের বিচার করার জন্য নতুন আইন দরকার। সে আইনে এ অপরাধের শাস্তি হবে মৃত্যুদণ্ড। পাশাপাশি দোষীদের স্থাবর-অস্থাবর সম্পত্তি রাষ্ট্রের অনুকূলে বাজেয়াপ্ত করতে হবে।

শনিবার, ২৯ অক্টোবর, ২০১৬

রক্তাক্ত ২৮ অক্টোবর উপলক্ষ্যে চান্দগাঁও জামায়াতের আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিল

আমাদের বাংলাদেশ অনলাইন নিউজ ডেস্কঃ বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী চান্দগাঁও থানা রক্তাক্ত ২৮ অক্টোবর উপলক্ষ্যে এক আলোচনা সভা ও ২৮ অক্টোবর শহীদের মাগফিরাত কামনা করে দোয়া মাহফিল আয়োজন করে। 
জামায়াত নেতা আবু জাওয়াদ এর সভাপতিত্বে অস্থায়ী কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিলে অন্যান্যের মধ্যে  সর্ব জনাব  মুহাম্মদ ইবনে হোসাইন, আবু নাহিদ, মুহাম্মদ  জালাল, সাইফুল প্রমূখ বক্তব্য রাখেন।
বক্তারা সরকারের সমালোচনা করে বলেন, বর্তমান সরকার রক্তাক্ত ২৮ অক্টোবরের ঘটনার বেনিফিসিয়ারী। তাই রক্তাক্ত ২৮ অক্টোবরের ঘটনার  ন্যায় বিচারের কোন উদ্যোগ গ্রহণ করেনি।
নেতৃবৃন্দ বলেন, ২৮ অক্টোবরের শহীদদের রক্ত বৃথা যাবেনা। শহীদের রক্তে রঞ্জিত বাংলাদেশে এই মাটিতে কালেমার পতাকা একদিন ঊড়বেই। 

বর্তমান বিশ্বে গুরুত্বের আলোকে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সামাজিক ডাইমেনশনের উপর বুদ্ধি বৃত্তিক কাজ হওয়া প্রয়োজনঃ ইন্টারন্যাশনাল কনফরেন্সের সমাপনী অনুষ্ঠানে প্রফেসর ড. আজহারুল ইসলাম

বক্তব্য রাখছেন প্রধান অতিথি প্রফেসর ড. এ. কে. এম    আজহারুল ইসলাম
আমাদের বাংলাদেশ অনলাইন নিউজ ডেস্কঃ ২৯ অক্টোবর ২০১৬: আইআইইউসি’র ভাইস-চ্যান্সেলর আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন পদার্থ বিজ্ঞানী প্রফেসর ড. এ. কে. এম    আজহারুল ইসলাম বলেছেন, বর্তমান বিশ্বে গুরুত্বের আলোকে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সামাজিক ডাইমেনশনের উপর বুদ্ধি বিত্তিক কাজ গওয়া প্রয়োজন।তিনি বলেন, একাডেমিক গবেষণা কুব কমজনের বোধগম্য হয়। সেই বোধগম্য না হওয়াটা প্রয়োগের ক্ষেত্রে একটা বড় বাধা। এই বোঝা বা উপলব্ধির ক্ষমতা বাড়ানোর জন্যে জ্ঞানের বিনিময় এবং যৌথ উদ্যোগ বাড়ানো প্রয়োজন।
শনিবার বিকালে আন্তর্জাতিক ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় চট্টগ্রাম(আইআইইউসি) এর বিজ্ঞান ও প্রকৌশল অনুষদের প্রথম এবং আইআইইউসি’র আয়োজনে ১০ম ইন্টারন্যাশনাল কনফারেন্সের সমাপনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে আইআইইউসি’র ভাইস-চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. এ. কে. এম    আজহারুল ইসলাম এ কথা বলেন।নগরীর লডর্স ইন মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত ‘ইনোভেশন ইন সায়েন্স, ইঞ্জিনিয়ারিং এন্ড টেকনোলজি-২০১৬’ শীর্ষক দু’দিনব্যাপী কনফরেন্সের এই সমাপনী আয়োজনে সভাপতিত্ব করেন আইআইইউসি’র ভারপ্রাপ্ত প্রো-ভাইস-চ্যান্সেলর এবং কমিটি কনভেনার প্রফেসর ড. দেলওয়ার হোসেন।বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন ইউনিভার্সিটি সে্ইন্স মালয়েশিয়ার ইঞ্জিনিয়ারিং এন্ড বিল্ট এনভাইরনমেন্ট অনুষদের ডীন প্রফেসর ড. কামারুজ্জামান শিমন এবং আই ট্রিপল ই বাংলাদেশ সেকশনের সহ-সভাপতি ও রুয়েট এর প্রফেসর ড. মোহাম্মদ আবদুল গাফ্ফার খান। স্বাগত বক্তব্য রাখেন কমিটি কো-কনভেনার মোহাম্মদ সামসুল আলম।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে ভিসি প্রফেসর ড. এ. কে. এম আজহারুল ইসলাম বলেন, এই কনফারেন্স বিশ্বের গবেষক, শিক্ষাবিদ ও পন্ডিতদের সম্মিলনের এবং বিজ্ঞান ও প্রকৌশলের সর্বক্ষেত্রের নতুন ধারণা, সাম্প্রতিক ফলাফল এবং ভবিষ্যত সম্ভাবনা সম্পর্কে মতবিনিময়ের দারুন সুযোগ করে দিয়েছে।দেশ-বিদেশের বিজ্ঞানী, প্রেকৌশলী, প্রযুক্তিবিদ, গবেষক, শিক্ষাবিদ ও পন্ডিতদের এই সমাবেশ এবং মেধা ও অভিজ্ঞতার, বিনিময় বিশেষ করে তরুণ গবেষকদেরকে তাদের মেধার স্বাক্ষর রাখার বড় সুযোগ করে দিয়েছে।এই কনফারেন্স ছিল বাস্তব চ্যালেন্সগুলো আলোচনা এবং সমাধানের একটা উপযুক্ত প্লাটফরম।তিনি এই  কনফারেন্সের সাফল্রের অংশীদার এবং সংশ্লিষ্ট সবাইকে ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করেন।
এদিকে আজ সকালে আই ট্রিপল ই বাংলাদেশ সেকশনের আয়োজনে এবং আইআইইউসি’র সহযোগিতায় ইউনিভার্সিটি- ইন্ডাস্ট্রি কলাবরেশন শীর্ষক এক কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়।আই ট্রিপল ই বাংলাদেশ সেকশনের এক্টিভিটি কো-অর্ডিনেটর প্রফেসর ড. মোঃ নুরুন্নবী মোল্লার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত কর্মশালার উদ্বোধনী আয়োজনে প্রধান অতিথি ছিলেন আইআইইউসি’র ভাইস-চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. এ. কে. এম    আজহারুল ইসলাম।এত বিশেষ অতিথি ছিলেন ইঞ্জিনিয়ার্স  ইন্সটিটিউট বাংলাদেশ, চট্টগ্রাম কেন্দ্রের চেয়ারম্যান প্রকৌশলী সাদেক মোহাম্মদ চৌধুরী।স্বাগত বক্তব্য রাখেন আইআইইউসি’র ট্রিপল ই বিভাগের প্রধান মুহাম্মদ আতাহার উদ্দিন।টেকনিক্যাল টক উপস্থাপন করেন প্রফেসর ড. মুহাম্মদ শরীফ উদ্দিন, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অবঃ) শাহাদাত হোসেন চৌধুরী, প্রফেসর ড. মোহাম্মদ আবদুল গাফ্ফার খান, ড. রিদোয়ান হাসান খান এবং প্রফেসর ড. মোহাম্মদ তরিকুল ইসলাম।
উল্লেখ্য, এই ইন্টারন্যাশনাল কনফরেন্সে দেশের প্রায় সবক’টি সরকারী বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয় এবং কানাডা, অস্ট্রেলিয়া, ভারত, মালয়েশিয়া, থাইল্যান্ড, দক্ষিণ কোরিয়া, সৌদি আরবসহ ১৮টি দেশে প্রসিদ্ধ বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর গবেষক- প্রতিনিধিগণ অংশগ্রহণ করেন।কনফরেন্সে প্রাপ্ত ২৭৯টা প্রবন্ধের মধ্যে ৭৮ টা প্রবন্ধ উপস্থাপিত হয়েছে। এছাড়া ৬টি মূল প্রবন্ধ ও ৪টি আমন্ত্রিত প্রবন্ধ উপস্থাপিত হয়। মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন আইআইইউসি’র ভাইস-চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. এ. কে. এম    আজহারুল ইসলাম, ইউনিভার্সিটি সে্ইন্স মালয়েশিয়ার ইঞ্জিনিয়ারিং এন্ড বিল্ট এনভাইরনমেন্ট অনুষদের ডীন প্রফেসর ড. কামারুজ্জামান শিমন, ইউনিভার্সিটি কেবাংসান মালয়েশিয়ার ইলেকট্রিক্যাল, ইলেকট্রনিক এনাড সিস্টেম ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের ড. মোহাম্মদ তারিকুল ইসলাম, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফার্মেসির প্রফেসর ড. চৌধুরী মাহমুদ হাসান, ইউনিভার্সিটি কেবাংসান মালয়েশিয়ার ইলেকট্রিক্যাল, ইলেকট্রনিক এনাড সিস্টেম ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের ড. নওশাদ আমিন এবং কানাডার ক্যালগেরি ইউনিভার্সিটির ইলেকট্রিক্যাল এন্ড কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের এসোসিয়েট হেড ড. আনিস হক।

বৃহস্পতিবার, ২০ অক্টোবর, ২০১৬

নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্যে মকবুল আহমাদ: ছোট-খাটো মতপার্থক্য পরিহার করে ইসলামী আন্দোলনের লক্ষ্য অর্জনের জন্য সর্বাবস্থায় ইস্পাত কঠিন ঐক্য বজায় রাখতে হবে


আমাদের বাংলাদেশ অনলাইন নিউজ ডেস্কঃ সোমবার নতুন আমীর হিসেবে শপথ গ্রহনের পর নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্যে মকবুল আহমাদ বলেন, বাংলাদেশের রাজনীতির অনেক উত্থান-পতন ও ইসলামী সমাজ বিনির্মাণে কঠিন পথ অনুসরণ করে জামায়াতে ইসলামী আজকের অবস্থানে এসে পৌঁছেছে। সরকারের জুলুম-নির্যাতনের ফলে জামায়াতের প্রতি জনগণের আস্থা ও প্রত্যাশা ক্রমেই বেড়ে চলেছে।
তিনি বলেন, সুবিচারপূর্ণ কল্যাণমুখী সমাজ বিনির্মাণ করতে কুরআন-হাদীসের চর্চা বাড়াতে হবে। ইসলামী ও আধুনিক জ্ঞান-বিজ্ঞানে সমৃদ্ধ হতে হবে। মজবুত ঈমান, উন্নত আমল ও নৈতিকতার অধিকারী হতে হবে। দ্বীনের প্রকৃত দায়ী হিসাবে সমাজের মানুষের নিকট নিজেদেরকে ইসলামের রোল-মডেল এবং সত্যের সাক্ষ্য হিসাবে উপস্থাপন করতে হবে। দরদপূর্ণ মন নিয়ে সুখে-দুঃখে মানুষের পাশে দাঁড়াতে হবে।
তিনি বলেন, যার উপরে যে সাংগঠনিক দায়িত্ব অর্পিত হবে, তা যথাযথভাবে পালনের জন্য সদা সচেতন থেকে সর্বোচ্চ আন্তরিকতা ও নিষ্ঠার পরিচয় দিতে হবে। নেতৃত্বের সামান্য ভুল সংগঠনকে বড় ক্ষতির দিকে ঠেলে দিতে পারে। সংগঠনের সদস্য-কর্মীদের মধ্যে ইনসাফপূর্ণ আচরণ নিশ্চিত করতে হবে। নিজেদের মধ্যে ছোট-খাটো মতপার্থক্য পরিহার করে ইসলামী আন্দোলনের লক্ষ্য অর্জনের জন্য সর্বাবস্থায় ইস্পাত কঠিন ঐক্য বজায় রাখতে হবে

বৃহস্পতিবার, ১৩ অক্টোবর, ২০১৬

মিয়ানমারে মুসলিমদের উপর চলছে নির্মম নির্জাতন শুধু তাই নয় জালিয়ে দেওয়া হচ্ছে তাদের ঘর বাড়ি

বাংলাদেশ বার্তা ডেস্কঃ  মিয়ানমারে মুসলিমদের উপর চলছে নির্মম নির্জাতন শুধু তাই নয় জালিয়ে দেওয়া হচ্ছে তাদের ঘর বাড়ি। এখানে কয়েকটি ভিডিও ক্লিপ দেয়া হলো  সংশ্লিষ্ট লিংকে ক্লিক করে ভিডিও গুলো দেখুন।

অভিযানের নামে আরাকানের মুসলিমদের উপর মিয়ানমারে সরকারি তিনটি বাহিনী নির্মম নৃশংসতার খবর পাওয়া যাচ্ছে।  
  ভিডিও দেখতে এই লিংকে ক্লিক করুন
গত ৫ দিনে সংঘর্ষে মারা গেছে ৩৯ জন। বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে ৪০০ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। জীবন বাঁচাতে ঘরবাড়ি ছেড়ে পালাচ্ছেন রাখাইন রাজ্যের শত শত মুসলিম আরাকানি।  
  
গত সপ্তাহের রোববার বাংলাদেশ সীমান্তবর্তী মুসলিম অধ্যুষিত এলাকাটিতে পুলিশের ওপর হামলায় ঘটনার সূত্রপাত। 
  

এরপর থেকে শুরু হয় পুলিশ, সেনাবাহিনী ও মিয়ানমার সীমান্তরক্ষী বাহিনীর ত্রিমুখী হামলা। বুধবারও মারা গেছে ১০ গ্রামবাসী। সরকারি বাহিনী জ্বালিয়ে দিয়েছে কমপক্ষে ২৫ টি বাড়ি। জারি করা হয়েছে রাত্রিকালিন কারফিউ।  
  ভিডিও টি দেখতে এই লিংকে ক্লিক করুন
কিছুদিন আগে রোহিঙ্গা সমস্যা সমাধানে একটি উদ্যোগ নিয়েছিলো মিয়ানমারের নতুন সরকার। কিন্তু নতুন করে শুরু হওয়া এই সহিংসতা ওই ‍উদ্যোগকে বাধাগ্রস্ত করবে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।  
  
জাতিসংঘের ভাষায়, রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের মানুষজন বিশ্বের সবচাইতে নির্যাতিত জনগোষ্ঠীর একটি। যারা পৃথিবীর কোনো দেশের নাগরিক নয়।  
  
গত কয়েক শতাব্দী ধরে মিয়ানমারের রাখাইন প্রদেশে রোহিঙ্গাদের বাস। দেশটি রোহিঙ্গাদের তার নাগরিক মনে করে না। বরং মিয়ানমার মনে করে তাদের আদি আবাস বাংলাদেশ। এমনকি রোহিঙ্গা শব্দটি ব্যবহারেও দেশটির সরকারের আপত্তি রয়েছে। 
  
রোহিঙ্গারা মিয়ানমারে বৌদ্ধদের হাতে নির্যাতনের শিকার বলে অভিযোগ রয়েছে। 
  
বিভিন্ন সময়ে সহিংসতার মুখে পালিয়ে সীমান্ত পার হয়ে তাদের অনেকেই বাংলাদেশেও প্রবেশ করেছে। 
বাংলাদেশে কক্সবাজার এলাকাতেই তাদের একটা বড় অংশ বাস করেন। এছাড়া চট্টগ্রাম, বান্দরবান, খাগড়াছড়িতেও কিছু রোহিঙ্গা বসবাস করছেন। সরকারের রেজিস্টার্ড ক্যাম্পগুলোতে ৩৩ হাজারের মতো রোহিঙ্গা বাস করে। 
  
কিন্তু বলা হয় বাংলাদেশে তাদের মোট সংখ্যা পাঁচ লাখের মতো।

এখানে কয়েকটি ভিডিও ক্লিপ দোয়া হলো  সংশ্লিষ্ট লিংকে ক্লিক করে দেখুন।



সোমবার, ১০ অক্টোবর, ২০১৬

শরীরের ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখতে করণীয় অধ্যাপক নইম কাদের

আমাদের বাংলাদেশ অনলাইন নিউজ ডেস্কঃ  শরীরের বাড়তি ওজন খুবই বিপদজনক। তাই, শরীরের ওজন যেন বেড়ে না যায়, সেদিকে সবাইকে লক্ষ রাখতে হবে এবং এ বিষয়ে সচেতন থাকতে হবে। ডায়াবেটিস, হৃদরোগ, উচ্চ রক্তচাপ, কিডনির নানা সমস্যাসহ বহু জটিল ও কঠিন রোগের কারণ শরীরের অতিরিক্ত ওজন। অনেকে ওজন কমাতে বিভিন্ন পন্থা অবলম্বন করেন। এগুলোর মধ্যে রয়েছে খাদ্য নিয়ন্ত্রণ, নিয়মিত ব্যায়াম, ওষুধ সেবন ইত্যাদি। মনে রাখতে হবে ওজন নিয়ন্ত্রণের সঠিক নিয়ম জানা না থাকলে আপনার স্বাস্থ্য ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠতে পারে। বর্তমান সময়ে কিছু উঠতি বয়সের তরুণীদের মধ্যে ‘ িম ফিগার’ ধারণাটি বেশ পরিচিত হয়ে উঠেছে। এ জন্য তারা ঠিকমত খাওয়া-দাওয়া করে না। তাদের ধারণা হচ্ছে পরিমাণে কম খেয়েই ফিগার ৗিম রাখা যাবে। এটা করতে গিয়ে অনেকের জীবন মারাত্মক হুমকিম মধ্যে পড়ে যাচ্ছে। আবার বিভিন্ন মিডিয়িায় এ বিষয়ে চটকদার বিজ্ঞাপন দেখে অনেকে আকৃষ্ট হয়। মনে রাখতে হবে, ওষুধ সেবন করে কিংবা কোমরে বেল্ট বেঁধে ঘাম ঝরিয়ে মেদ কমানো যায় না, ওজন নিয়ন্ত্রণ করা যায় না। এসব প্রতারণা ছাড়া কিছুই নয়। অনুরূপ খাওয়া-দাওয়া বাদ দিয়ে শরীরের বাড়তি ওজন কমাতে যাওয়াও মারাত্মক ভুল। খাওয়া-দাওয়া বাদ দিয়ে নয়, বরং পানাহার করতে হবে পরিমিত ও নিয়ন্ত্রিত। মনে রাখতে হবে, দেহের স্বাভাবিক বৃদ্ধি এবং গঠনের জন্য পরিমিত পানাহার অপরিহার্য। ঠিকমত না খেলে অপুষ্টিতে ভোগতে হবে, শরীরের গঠন ও বৃদ্ধি সঠিকভাবে হবে না। এর ফলে বয়োঃবৃদ্ধির সাথে সাথে নানা জটিল রোগে ভোগতে হবে।
শরীরের ওজন কীভাবে ঠিক রাখবেন, বাড়িতে ওজন কীভাবে কমাবেন এ নিয়ে সম্প্রতি একদল গবেষক গবেষণা করেছেন। আন্তর্জাতিক এই গবেষকদল দীর্ঘদিন যাবত বিভিন্নভাবে গবেষণা চালিয়ে শরীরের বাড়তি ওজন কমানো, ওজন নিয়ন্ত্রণের জন্য গুরুত্বপূর্ণ কিছু তথ্য দিয়েছেন। গবেষকদল ৯২টি প্রশ্নের মাধ্যমে ওজন নিয়ন্ত্রণের কলাকৌশল জানার চেষ্টা করেছেন। গবেষণায় প্রাপ্ত তথ্য পর্যালোচনা করে দেখা গেছে যে, ওজন নিয়ন্ত্রণের জন্য কয়েকটি বিষয় মেনে চলতে হবে। যথা- খাবারের পরিমাণ কমবেশি নয়, বরং খাবারের গুণগত মান বিবেচনায় আনতে হবে। অর্থাৎ আপনি বেশি খাচ্ছেন কিংবা খুব কম খাচ্ছেন, এটা বড় কথা নয়, দেখতে হবে, আপনি যা খাচ্ছেন তার খাদ্যমান কেমন। খাবারের গুণগত মানের প্রতি বেশি খেয়াল রাখতে হবে। 
ঘরে তৈরি খাবার সবসময় উত্তম। যারা বাইরের খাবারের চেয়ে ঘরে তৈরি খাবার বেশি খান, তাদের ওজন তুলনামূলক নিয়ন্ত্রণে থাকে। এখানেও ‘খাবারের গুণগত মান’ বিষয়টি লক্ষণীয়। হোটেল- রেস্তোরাঁর তুলনায় ঘরে তৈরি খাবার অধিক পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন, স্বাস্থ্যসম্মত এবং ঘরের খাবারের মান বাইরের খাবারের চাইতে অনেক ভাল তাতে কারো দ্বিমত থাকার কথা নয়। সুতরাং আপনি যদি শরীরের ওজন নিয়ন্ত্রণ রাখতে চান, আপনাকে বাইরের খাবার বর্জন করতে হবে। 
ওজন নিয়ন্ত্রণে নিয়মিত ব্যায়াম দরকার। ব্যায়াম মানে এই নয় যে, আপনাকে প্রতিদিন জিমে যেতে হবে। ব্যায়াম বলতে এখানে শারীরিক পরিশ্রম বুঝানো হয়েছে। হ্যাঁ যারা অতিরিক্ত মোটা হয়ে গেছে, অতিরিক্ত মেদ জমে গেছে, যাদের ওজন স্বাভাবিক পরিমাণের তুলনায় বেশ বেড়ে গেছে, তাঁদের জন্য ব্যায়াম জরশুরী। কিন্তু যাদের শারীরিক অবস্থা এখনো ঠিক আছে, ওজন নিয়ন্ত্রণে আছে, তাদের এ অবস্থা ধরে রাখার জন্য শারীরিক পরিশ্রম করতে হবে। নিয়মিত হাঁটা-চলা করা, সাঁতার কাটা, হল্কা ব্যায়াম ইত্যাদির সাথে যদি পানাহারে গুণগত মান ল রাখা যায়, ওজন নিয়ন্ত্রণে থাকবে। দীর্ঘ রাত জাগা, সকালে দীর্ঘক্ষণ শুয়ে থাকা, চর্বিযুক্ত খাবার এবং বাইরের খাবার ও ফার্স্টফুডে অভ্যস্ত হয়ে পড়া ইত্যাদি শরীরের ওজন বৃদ্ধিতে সাহায্য করে। 

সোমবার, ১২ সেপ্টেম্বর, ২০১৬

দেশবাসীকে ছাত্রশিবিরের ঈদুল আজহার শুভেচ্ছা


আমাদের বাংলাদেশ অনলাইন নিউজ ডেস্কঃ  দেশবাসীকে পবিত্র ঈদুল আজহার শুভেচ্ছা জানিয়েছে বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির। আজ এক শুভেচ্ছা বার্তায় শিবির নেতৃবৃন্দ এই শুভেচ্ছা জানান।
এক যৌথ শুভেচ্ছা বার্তায় ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় সভাপতি আতিকুর রহমান ও সেক্রেটারী জেনারেল ইয়াছিন আরাফাত বলেন, ত্যাগ-কুরবাণীর মহান আদর্শ নিয়ে পবিত্র ঈদুল আয্হা আমাদের দ্বারে সমাগত। ত্যাগই ঈদুল আজহার মূল প্রেরণা। এই প্রেরণা আমাদেরকে হিংসা, বিদ্বেষ, লোভ, লালসা, পাপ-পঙ্কিলতা পরিত্যাগ করার শিক্ষা দেয়। ঈদুল আযহা আমাদেরকে ত্যাগ ও কুরবাণীর আদর্শে উজ্জীবিত হয়ে সামাজিক, রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক বৈষম্য ও শোষণ দূর করে একটি শোষণমুক্ত ইনসাফ ভিত্তিক সমাজ গঠনের জন্য ত্যাগ স্বীকারে অনুপ্রেরণা যোগায়।

আজ দেশের স্বাধীনতা সার্বভৌমত্ব হুমকির সম্মুখ্যিন এবং অর্থনৈতিক, রাজনৈতিক ও গণতান্ত্রিক অধিকার ভূলুন্ঠিত। দেশ এক ক্রান্তিকাল অতিক্রম করছে। আমরা আশা করি জনগণের অধিকার প্রতিষ্ঠা এবং স্বাধীনতা সার্বভৌমত্ব রক্ষায় ত্যাগের মানষিকতা নিয়ে সবাই ঐক্যবদ্ধভাবে ভূমিকা রাখবে। ধনী-গরীব, রাজনৈতিক বিভেদ ভূলে পবিত্র ঈদকে সুখময় করে তোলাই হোক আমাদের প্রত্যয়। ঈদের আনন্দকে ঐক্যের সুদৃঢ় বন্ধনে পরিণত করে মুসলিম উম্মাহ সামনের দিকে এগিয়ে যাবে এটাই আমাদের কামনা। দেশবাসীকে ছাত্রশিবিরের পক্ষ থেকে আন্তরিক ঈদ শুভেচ্ছা জানাচ্ছি।

নেতৃবৃন্দ দেশবাসীর সুখ, সমৃদ্ধি ও প্রশান্তি কামনায় মহান আল্লাহর কাছে দোয়া করেন।

মুসলিমদের রুখতে হিন্দুদের হাতে অস্ত্র তুলে নিতে হবে - বিশ্ব হিন্দু পরিষদ


ভারত ও বাংলাদেশে হিন্দুরা নির্যাতিত হচ্ছে উল্লেখ করে কট্টর হিন্দুত্ববাদী সংগঠন বিশ্ব হিন্দু পরিষদের নেতারা মুসলিমদের বিরুদ্ধে রুখে দাড়াতে অস্ত্র হাতে তুলে নেয়ার আহ্বান জানিয়েছেন।
শনিবার কলকাতায় মহাজাতি সদনে এক সাংবাদিক সম্মেলনে বিশ্ব হিন্দু পরিষদের সাধারণ সম্পাদক সুরেন্দ্র জৈন এ আহ্বান জানান। তিনি বলেন,‘দেশের বিভিন্ন স্থান এবং পড়শী রাষ্ট্র বাংলাদেশের হিন্দুরা প্রতিনিয়ত আক্রান্ত হচ্ছেন। তাই আর ভয় নয়, এবার দেখাতে হবে পরাক্রম বা সাহস। এই আক্রমণকে প্রতিহত করতে বাড়িতে বাড়িতে মজুত লাঠি, অস্ত্র তুলে পাল্টা আক্রমণে নামতে হবে। ভিটে থেকে ভয়ে উৎখাত হওয়ার সময় শেষ। এবার দরকার মারমুখি আক্রমণ।’
বিশ্বজুড়ে মুসলমানদের হাতে হিন্দুদের নিগৃহীত হওয়ার বিষয়টি আর কোন ভাবেই সহ্য না করার ডাক দিয়ে বিশ্ব হিন্দু পরিষদ নেতারা বলেন,‘এপার-ওপার দুই বাংলার হিন্দুদের সমবেত হয়ে মুসলমানদের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াতে হবে।’
সাংবাদিক সম্মেলনে সভায় বিশ্ব হিন্দু পরিষদের সদস্য ও বক্তারা বলেন, ‘ভারতবর্ষে ক্রমাগতই বাড়ছে মুসলমানদের সংখ্যা। সংখ্যালঘু মুসলমানরা ধীরে ধীরে সংখ্যাগুরু হয়ে ওঠার পথে পা বাড়চ্ছে। আগামী বছর কুড়ির মধ্যে হয়তো হিন্দু জাতিসহ অন্যান্য জাতিকে মুসলমানদের ‘অত্যাচারে’ বাস্তচ্যুত হতে হবে। তবে এখনই যদি রুখে দাঁড়ায় হিন্দুরা, তাহলে সেক্ষেত্রে পরিস্থিতির বদল হলেও হতে পারে।’
বক্তার বলেন, পশ্চিমবঙ্গে মোট ২৭ শতাংশ মুসলমান বসবাস করে। এই মুসলমানরা যদি সংঘবদ্ধভাবে ভোট দিয়ে জামায়েতের নেতা সিদ্দিকুল্লা চৌধুরীকে রাজ্য সরকারের মন্ত্রী পদে আসীন করতে পারেন, তাহলে ৭১ শতাংশ হিন্দুরা কেন নিজেদের অধিকার প্রয়োগের সাহস দেখাতে পারবে না?’
বিশ্ব হিন্দু পরিষদের নেতা সুরেন্দ্র জৈন দাবি, ‘রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী ভোট ব্যাংকের রাজনীতি করছেন। আর সেই ঘৃণ্য রাজনীতির অঙ্গ হিসেবে তিনি মুসলিম তোষণের পন্থা নিয়েছেন।’
পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রীর বিরুদ্ধে বিশ্ব হিন্দু পরিষদের প্রশ্ন, মুসলিম তোষণের উদ্দেশে মোয়াজ্জেম ভাতা বা উলেমা ভাতার ব্যবস্থা করেছেন। কিন্তু দরিদ্র হিন্দু পুরোহিতদের জন্য কোন ভাতা বা আর্থিক সাহায্যের ব্যবস্থা করেন নি। এটা কেন?
হিন্দু পরিষদের ক্ষোভ, ‘বিজয়া দশমীর দিনেই কলকাতার সমস্ত সর্বজনিন দূর্গোৎসবের প্রতিমা বিসর্জন করতে হবে। এমন তুঘলকি ফতোয়া দেওয়ার কারণ কি মুসলমানদের তোষণ নয়? কারণ সামনেই আছে মহরম। আর সেই সময় মুসলমানদের তুষ্ট করার জন্যই এমন আদেশ দিয়েছেন মমতা।
সুরেন্দ্র জৈন মুখ্যমন্ত্রী মমতাকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে বলেন, বহু মুসলিম অধ্যুষিত এলাকায় হিন্দু মন্দিরে প্রার্থনা, ভজন সবকিছু বন্ধ করা হয়েছে। শুধুমাত্র মুসলমানদের আজান ও নামাজের ক্ষেত্রে অসুবিধা সৃষ্টি যাতে না হয় সেই কারণে। মুসলমানদের তুষ্ট করতে গিয়ে স্বজাতি হিন্দুদের চোখেই খারাপ হচ্ছেন মুখ্যমন্ত্রী। মুখ্যমন্ত্রীর দল এ রাজ্যে রাস্তায় দাড়িয়ে প্রকাশ্যে গরুর মাংস খেতে পারল। সহনশীল হিন্দুরা সেই ব্যাপারটাকে মেনেও নিলো। কিন্তু কোন বিশেষ ধর্ম-অধ্যুষিত এলাকায় দাড়িয়ে যদি শুকুরের মাংস খেতে বা খাওয়াতে পারেন তিনি, তো বোঝা যাবে তার ক্ষমতা!’
হিন্দুত্ববাদী বিশাখানন্দ শঙ্কারাচার্য বলেন, একের পর এক হিন্দু নির্যাতন চলছে দুই বাংলা জুড়ে। হিন্দুরা চিরকাল শক্তির উপাসক। শক্তিরুপিণী দেবী দূর্গা বা দেবী কালিকা কখনও খড়গহস্তা, কখনও বা ত্রিশূলধারিণী। তারা অন্যায় দমনের জন্য অস্ত্র তুলে নেন। আজ হিন্দুদের সামনেও সেই ক্রান্তিকাল উপস্থিত। তাই হিন্দুরা নিজেদের রক্ষার উদ্দেশ্যে হাতে তুলে নিক অস্ত্র। আঘাতের বদলে পাল্টা আঘাতই হবে মুখের মতো জবাব। 

http://goo.gl/YeZUii

রবিবার, ১১ সেপ্টেম্বর, ২০১৬

আজ পবিত্র হজ্ব...!!!


“লাব্বাইকা আল্লাহুম্মা লাব্বাইক, লাব্বাইকা লা শারীকা লাকা লাব্বাইক। ইন্নাল হামদা ওয়ান নিয়মাতা লাকা ওয়াল মুলক। লা শারীকা লাক্।” লাখ লাখ কণ্ঠের এই ধ্বনীতে আজ মুখরিত হয়ে উঠবে আরাফাত ময়দান। বিঘোষিত হবে মহান আল্লাহর একত্ব ও মহত্ত্বের কথা। কাফনের কাপড়ের মতো সাদা দু’টুকরো ইহরামের কাপড় পরে মহান আল্লাহর সান্নিধ্যলাভের জন্য ব্যাকুল হয়ে পড়বেন আল্লাহর বান্দাহগণ। সৌদিআরবের গ্র্যান্ড ইমাম হাজীদের উদ্দেশে খুতবা প্রদান করবেন। আল্লাহ তায়ালা এবং বান্দার মধ্যে সম্পর্ক উন্নয়নের অনন্য আবহে বিরাজ করবে মুসলিম উম্মাহর ঐক্য, সংহতি ও ভ্রাতৃত্বের এক অনুপম দৃশ্য। 
ফজরের নামায মিনায় আদায় করার পর হাজীগণ ইহরাম বাঁধা অবস্থায় আরাফাত ময়দানে এসে অবস্থান গ্রহণ করবেন। এই আরাফাতের ময়দানে দাঁড়িয়েই সর্বশেষ ও সর্বশ্রেষ্ঠ নবী হযরত মুহাম্মদ (সা.) আজ থেকে চৌদ্দশত বছর আগে বিদায় হজ্বে¡র ঐতিহাসিক ভাষণ দিয়েছিলেন। লাখো মানুষের উদ্দেশ্যে প্রদত্ত এই ভাষণের পর আল্লাহর পক্ষ থেকে ঘোষণা এসেছিল দ্বীনের পরিপূর্ণতা লাভের। আজো সেই ধারাবাহিকতা বজায় রেখে ভাষণ দেয়া হয়। ভাষণে গোটা বিশ্বের সার্বিক পরিস্থিতি তুলে ধরা হয়। মুসলিম উম্মাহর শান্তি ও সমৃদ্ধির জন্য প্রয়োজনীয় দিক নির্দেশনা দেয়া হয়। আর হাজীগণ এক আবেগঘন পরিবেশে মহান আল্লাহর জন্য নিজের জীবন উৎসর্গ করে দেয়ার মন-মানসিকতা নিয়ে কান্নাকাটি করতে থাকেন। তারা নিজেদের পাপের জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করেন, নিজের পরিবার পরিজন, সমাজ ও রাষ্ট্রের সুখ শান্তির জন্য আল্লাহর কাছে দোয়া করেন।
বাংলাদেশে আজ ৮ জিলহজ্ব হলেও সৌদি আরবে আজ ৯ জিলহজ্ব। গতকাল সারাদিন ও রাত হাজীগণ মিনায় অবস্থান করেছেন। আজ ফজরের নামায মিনায় আদায় করার পর আরাফার ময়দানে হাজীগণ অবস্থান করবেন। এখানে সূর্যাস্ত পর্যন্ত থাকতে হবে। সূর্যাস্তের পর মুযদালিফার উদ্দেশ্যে আরাফার ময়দান ত্যাগ করবেন এবং মুযদালিফায় গিয়ে মাগরিব ও এশা’র নামায এশা’র ওয়াক্তে একত্রে পড়বেন এবং সমস্ত রাত অবস্থান করবেন। মিনায় জামরাতে নিক্ষেপ করার জন্য ৭০টি কংকর এখান থেকে সংগ্রহ করবেন। মুযদালিফায় ফজরের নামায পড়ে মিনার উদ্দেশ্যে রওয়ানা হবেন।
পবিত্র মক্কা থেকে প্রায় ৯ মাইল পূর্বদিকে একটি পাহাড়ের নাম ‘জাবালুর রহমত’ বা করুণার পাহাড়। এই পাহাড় সংলগ্ন দক্ষিণ-পশ্চিমে প্রলম্বিত বিরাট প্রান্তরটি আরাফাত প্রান্তর নামে পরিচিত। পাহাড়টি মধ্যম আকৃতির এবং গ্রানাইট শিলা দ্বারা গঠিত। এর উচ্চতা প্রায় ২০০ ফুট। এই পাহাড়ের পূর্বদিকে প্রস্তরের সিঁড়ি রয়েছে। এর ষষ্ঠ ধাপের উচ্চতা বরাবর আগে একটি উন্নত মঞ্চ ও একটি মিম্বর ছিল। এই মিম্বরে দাঁড়িয়ে প্রতি বছর ৯ জিলহজ্ব আরাফার দিন ইমাম সাহেব খুতবা প্রদান করতেন। এখন আর সেই মঞ্চ ও মিম্বার নেই এবং এখান হতে হজ্বে¡র খুতবাও প্রদান করা হয় না। বরং এখন খুতবা দেয়া হয় মসজিদে নামিরা হতে। সৌদি আরবের গ্র্যান্ড মুফতি এ খুতবা প্রদান করবেন।
আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনের জন্য প্রতি বছর মাত্র ১ দিন হাজীরা আরাফাতের ময়দানে অবস্থান করেন। তখন তাদের পরণে থাকে কাফনের কাপড়ের মতো সেলাইবিহীন সাদা দুই টুকরো কাপড়। হাজীরা আরাফারাতের ময়দানে অবস্থানকালে উচ্চস্বরে ‘লাব্বাইকা’ তালবিয়াহ পাঠ করেন, যদি সম্ভব হয় হজ্বের খুতবা শ্রবণ করেন। যোহর ও আছরের নামায একত্রে আদায় করেন, আল্লাহর মহিমা ঘোষণা করেন, কুরআন তেলাওয়াত, দরূদ ও সালাম প্রেরণ এবং ইহ ও পরকালের কল্যাণ কামনায় অবস্থানকালটি অতিবাহিত করেন।
হযরত আবদুর রহমান বিন ইয়ামার আদ-দায়লি (রা.) হতে বর্ণিত আছে, রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, “আরাফাই তো হজ্ব।” ইমাম শাওকানী (রহ.) এ কথার ব্যাখ্যায় বলেছেন, “যে ব্যক্তি আরাফাতে অবস্থানের জন্য নির্দিষ্ট দিনে উক্ত ময়দানে উপস্থিত থাকার সৌভাগ্য অর্জন করলো তার হজ্ব হয়ে গেল।” ইমাম তিরমিযী (রহ.) এ প্রসঙ্গে বলেছেন, “আরাফাত ময়দানে অবস্থান করার ভাগ্য যার হয়নি তার হজ্ব বাতিল হয়ে যাবে।” ((সংগ্রহঃ দৈনিক সংগ্রাম))

নগরবাসীকে পবিত্র ঈদুল আযহার শুভেচ্ছা জানিয়েছেন ঢাকা মহানগরী আমীর রফিকুল ইসলাম খাঁন


আমাদের বাংলাদেশ অনলাইন নিউজ ডেস্ক ১১ সেপ্টেম্বর ২০১৬, রবিবারঃ  ত্যাগের মহিমায় সমুজ্জল ‘পবিত্র ঈদুল আযহা’র শিক্ষায় উদ্বুদ্ধ হয়ে শোষণ ও বঞ্চনামুক্ত ন্যায়-ইনসাফের সমাজ প্রতিষ্ঠার প্রত্যয়ে ঐক্যবদ্ধ প্রয়াস চালানোর আহবান জানিয়েছেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী আমীর মাওলানা রফিকুল ইসলাম খান। 
পবিত্র ঈদুল আযহা উপলক্ষ্যে নগরবাসীর উদ্দেশ্যে এক শুভেচ্ছা বাণীতে তিনি এসব কথা বলেন। 
মহানগরী আমীর বলেন, পবিত্র ‘মাহে জিলহজ্জ’ এক মহিমান্বিত মাস। এ মাসেই মুসলিম জাতির পিতা হযরত ইব্রাহীম (আ.) পরম করুণাময় আল্লাহ রাব্বুল আলামীনের নির্দেশে এবং তার সন্তষ্টি অর্জনের জন্যই স্বীয় পুত্র হযরত ঈসমাইল (আ.) কে কোরবানী করতে উদ্দত হয়েছিলেন। যা সৃষ্টির আদিকাল থেকে বর্তমান সময় পর্যন্ত অবিস্বরণীয় ও নজীরবিহীন। আর হযরত ইব্রাহীম (আ.)এর অনুসরণেই মুসলিম উম্মাহ দিবসটিকে পবিত্র ঈদুল আযহা হিসাবে পালন করে থাকে। মূলত মানুষের জন্য আল্লাহ রাব্বুল আলামীনের নির্দেশনার বাইরে যাওয়ার কোনই সুযোগ নেই। জাতির পিতা হযরত ইব্রাহীম (আ.) মহিমান্বিত মাসে প্রিয় পুত্র ঈসমাঈল (আ.)কে কোরবানী করতে উদ্দত হয়ে আল্লাহর নির্দেশ পালানে যে পরাকাষ্ঠা প্রদর্শন করেছিলেন তা শত-সহস্র বছর পরেও মুসলিম উম্মাহর জন্য অনুকরণীয় ও অনুসরণীয় আদর্শ হিসাবে প্রতিষ্ঠিত আছে। 

তিনি বলেন, মূলত ষড়রিপুর উপর নিয়ন্ত্রণ আরোপ করে পশুপ্রবৃত্তির উপর বিজয় অর্জনই কোরবানীর প্রকৃত শিক্ষা। বস্তুত অন্যায়-অসত্য, অনাচার-পাপাচার, হিংসা-বিদ্বেষ, জুলুম-নির্যাতন, বিভেদ-বিসংবাদ বন্ধ করে সমাজে সার্বিক শান্তি প্রতিষ্ঠা করে মানবজাতির সর্বাঙ্গীন কল্যাণ সাধন করায় পবিত্র ঈদুল আযহার উদ্দেশ্য। আর এ উদ্দেশ্য যখন যথাযথভাবে সাধন করা সম্ভব হয়, তখনই আমাদের জন্য ঈদ আনন্দঘন ও অর্থবহ হয়ে ওঠে। বর্ষপরিক্রমায় আবারও আমাদের মাঝে পবিত্র ঈদুল আযহা ফিরে আসলেও দেশের মানুষ বরাবরের মত ঈদের অনাবিল আনন্দ থেকে বঞ্চিত। রাষ্ট্রশক্তি পশুশক্তি দমনের পরিবর্তে নিজেরাই সকল অপশক্তিকেই রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতা দিয়ে যাচ্ছে। রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাস ও জুলুম-নির্যাতনের মাধ্যম জনজীবনকে দুর্বিসহ করে তোলা হয়েছে। কথিত বিচারের নামে নির্বিবাদে মানুষ হত্যা করে পৈশাচিক উম্মাদনা চলছে। হত্যা, সন্ত্রাস, নৈরাজ্য, গুম, অপহরণ ও গুপ্তহত্যা চলছে নির্বিবাদে। জনগণের জানমালের নিরাপত্তার দায়িত্ব সরকারের হলেও সরকারের ভূমিকা পুরোপুরি বিপরীতমুখী।
তিনি আরও বলেন, দেশ কল্যাণ রাষ্ট্র না হওয়ায় এবং আইনের শাসন প্রতিষ্ঠিত না থাকায় দেশের বৃহত্তর জনগোষ্ঠীর কাছে ঈদের আনন্দ অনেকটাই ম্লান। সরকারের জুলুম-নির্যাতনের শিকার হয়ে অনেক নিরাপরাধ মানুষের বছরের পর বছর কারাগারের অন্ধকার প্রকোষ্টে দিনাতিপাদ করছেন। সরকারের হত্যা-সন্ত্রাসের শিকার হয়ে স্বজনহারা মানুষেরা করছেন আহাজারী। পঙ্গুত্ববরণের কারণে অনেক পরিবারে ঈদের খুশী অনেকটাই ম্লান। তাই ঈদকে অর্থবহ করে আনন্দকে সর্বজনীন করার জন্য দেশে ন্যায়-ইনসাফের সমাজ ও আইনের শাসন প্রতিষ্ঠার কোন বিকল্প নেই। তিনি পবিত্র ঈদুল আযহার প্রকৃত শিক্ষা ধারণ করে দেশে ন্যায়-ইনসাফের সমাজ প্রতিষ্ঠার আন্দোলনকে বেগবাগ করতে সকলকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহবান জানান এবং পবিত্র ঈদুল আযহা উপলক্ষ্যে সকল স্তরের নগরবাসীর প্রতি শুভেচ্ছা জ্ঞাপন করেন।

সকল জুলুমের বিরুদ্ধে আমার এ কলম চলবে

আজ রাত দশাটার কিছুক্ষন পরেই আমার স্ত্রী ৩ জন বখাটে রাজনৈতিক কর্মীর হাতে আক্রান্ত হয়েছেন! প্রায় মাস তিনেক থেকেই তারা দিনের বেলা কিংবা সন্ধ্যায় মাঝে মধ্যেই মহল্লার গলিতে একা পেলে উত্যক্ত করতো। এ বিষয়ে আমাকে অনেকবার জানিয়েছে আমি প্রায়ই চেষ্টা করতাম বাইরে গেলে তার সঙ্গ দিতে। যদিও জীবনমুখী ব্যস্ততার কারণে তা সবসময় হয়ে ওঠে না।
আমার স্ত্রী পেশায় একজন শিক্ষক। তিনি অন্তঃসত্বা। ৭ মাস চলছে। অনেকদিন পর আজ বাবার বাড়ি গিয়েছে ফিরতে একটু দেরী হয়েছে আমিও অফিসের কিছু কাজ জমে থাকায় তাকে সাথে আনতে পারিনি। বাইরে থেকে এসে ওয়াশরুমে ঢুকেছি বাইরে থেকে দরজায় প্রচন্ড ধাক্কাধাক্কি পরে বের হয়ে দেখি আমার স্ত্রী ভয়ে কাঁপছে। আমাকে দেখে চিৎকার করে কান্না শুরু করে দিল! বললাম কি হয়েছে? ভয়ে কথাও বলতে পারছে না। পরে শুনলাম তার রিক্সা আটকিয়ে ভয়ংকর অশ্রাব্য ভাষায় তাকে গালিগালি করা হয়েছে!
এক পর্যায়ে আমার স্ত্রী বলেন, আমার সাথে এমন করছেন কেন? আমি কি করেছি? ওরা বলেছে ‘তোর হাজবেন্ড বেশি বাড়াবাড়ি করছে। আমাদের ভাই ব্রাদারদের বিরুদ্ধে লেখালেখি করে? সে ভাবছে সে পার পাবে?’ আমার স্ত্রী বলে ও যদি কিছু করে থাকে তাহলে তার কাছে যান আমার পথ আটকিয়েছেন কেন? বলার সাথে সাথেই তার গলা চেপে ধরে চড়-থাপ্পর দিতে থাকে। উপস্থিত ঘটনায় হতভম্ব হয়ে সে চিৎকার করলে একজন চাকু বের করে তার পেটে ঠেকায়! তার চিৎকার শুনে পাশের দুএকটা ফ্লাটের যারা বাইরে ছিল তারা ভেতরে চলে যায়! পরে একজন গরু বিক্রেতা ও এক ভদ্রলোক পাশ দিয়ে যাচ্ছিলেন তারা এসে প্রতিবাদ জানায়। পরে তারা পুলিশকে খবর দিতে চাইলে বখাটেরা পালিয়ে যায়!
ঘটনার আকস্মিকতায় আমি আসলে কি বলবো বা কিভাবে সান্তনা দেবো ভেবে পাচ্ছিলাম না। একজন সাত মাসের গর্ভবতী নারীকে তার স্বামীর লেখালিখির কারণে কলেজ কিংবা বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া ছেলেরা তাদের বিরুদ্ধমতের প্রতিপক্ষের স্ত্রীর গায়ে হাত তুলবে বাংলাদেশ এখন সেই জামানায় ঢুকে গেছে।
কিছুদিন আগে একটি বেসরকারী টিভি একুশে বইমেলায় সাক্ষাতকার নিয়েছিল বিভিন্ন দর্শনার্থীদের। স্কুল কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া বিভিন্ন স্তরের মানুষের কাছে জানতে চেয়েছে একুশে ফেব্রুয়ারীতে কি হয়েছিল? একটা ছেলে মেয়েও কোন সঠিক উত্তর দিতে পারেনি।
কথা সেটা নয়। এরকম কোটি কোটি কর্মী বাহিনী নিয়ে চেতনার গল্প শুনিয়ে লাফাচ্ছে তাদের হয়তো একাত্তরের কোন সঠিক খবরা খবরও জানা নেই! কিন্তু এই ভয়ংকর বিদ্বেষ এবং সাম্প্রদায়িকতা কিভাবে ছড়ানো হেলো এসব বখাটে ইতিহাস বিমূখ ছেলেদের কাছে। কিসের চেতনায় তারা আজ গর্ভবতী নারীদের গায়ে হাত তুলতে উজ্জীবিত হচ্ছে।

কিসের শিক্ষা, কিসের আবেগ, কিসের চেতনায় একটা প্রজন্মের তরুণদের অন্ধ করে দেয়া হয়েছে। অল্প বয়সী এসব তরুণদের চেতনার নামে কিভাবে বদ্ধ উম্মাদ তৈরী করা হচ্ছে? যারা ভুলে যাচ্ছে মনুষত্ব? এসবই কি মুক্তিযুদ্ধের চেতনা?
আমার স্ত্রী অপমানে কাঁদছে, ব্যাথায় কাঁদছে কিন্তু আমি নির্বাক! কার কাছে যাব? কার কাছে বিচার দেবো? কে দাঁড়াবে এই অন্যায়ের বিরুদ্ধে? আমার অনাগত সন্তান তার মায়ের পেট থেকেই হয়তো অনুভব করছে তার মায়ের আত্মচিৎকার!
আমার স্ত্রী এখনও ভয়ে কাঁপছে। গায়ে তীব্র জ্বর। যেহেতু গর্ভাবস্থার এই সময়ে কোন পেইন কিলার খেতে পারবে না। তাই কিছুই করার নেই। ব্যাথায় ছটফট করছে। আমি কোনমতে তাকে রেখে কিবোর্ড হাতে নিয়েছি। আমার ব্যথার কথাগুলো নির্বাক বাংলাদেশকে জানাতে।
একজন নির্যাতিত গণমাধ্যম কর্মী হিসেবে শুধু ভাবছি, যারা আজ ক্ষমতার দম্ভে অন্ধ হয়ে গেছে। যাদের লাখো অন্ধ অনুসারী পাড়ায় পাড়ায় গলিতে গলিতে ছড়িয়ে দিয়ে কোটি মানুষের জীবনকে দূর্বিষহ করছে তারা কি একটিবারও ভেবে দেখে না, যে ক্ষমতার দম্ভে তারা ঘরে ঘরে আগুনের উত্তাপ ছড়িয়ে দিচ্ছে তাদের সন্তান কিংবা আপনজনরাও কি তাদের মতই ক্ষমতাধর হবে এটা কি তারা নিশ্চিত?

যদি তা না হয়, তাহলে তাদের সন্তান, স্ত্রী, পরিজনকেও কারো না কারো হাতে এরকম নির্যাতিত নিগৃহীত হতেই হবে? কারণ যে বৃক্ষ তারা রোপন করছেন সেটি ফলবান হয়ে আরও বেশি অপরাধ অনাচারের জন্ম দেবে। সেটা অবশ্যই কাউকে না কাউকে দগ্ধ করবেই!
আমি ওয়াহিদ ফারুকী একজন সামান্য গণমাধ্যম কর্মী। আমি যখন যা লিখি নিজের বিশ্বাস থেকে লিখি, নিজের দেশের স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব, তাহযীব তামুদ্দূন অক্ষুন্ন রাখার জন্যই লিখি। চোখের সামনে স্বদেশ লুট হবে জেগে জেগে ঘুমাবো? সব অনাচার হাসি মুখে সয়ে যাবো এমনটা ভাবার কিংবা করার জন্য মিডিয়াতে আসিনি।

পৃথিবীর সকল মজলুম আমার ভাই। আমার স্বজন। সকল জুলুমের বিরুদ্ধে আমার এ কলম চলবে। কোন বাঁধাই এই কলম থামাতে পারবে না ইনশাআল্লাহ। ছোট্ট একটা প্রাচীন মিশরীয় গল্প দিয়ে শেষ করছি-
‘হযরত ইব্রাহীম (আ) এর জন্য নমরূদ বিশাল অগ্নিকান্ড তৈরি করেছে খবর পেয়ে টিকটিকি ছুটছে আগুন নেভাতে। পথিমধ্যে একজন তাকে জিজ্ঞেস করলো ও টিকটিকি কই যাও? টিকটিকি বললো নমরুদ ইব্রাহীমের জন্য আগুন জ্বালিয়েছে আমি যাচ্ছি সেটা নেভাতে। পথিক টিকটিকিকে ভৎর্সনা করে বললো, ‘তোমার মত এত ছোট টিকটিকি কিভাবে এত বড় আগুন নেভাবে?’ টিকটিকি বললো, আগুন নেভাতে পারবো না সেটা আমিও জানি কিন্তু আমার আল্লাহ তো জানবে ইব্রাহীমের বিপদে আমি ছুটে গিয়েছি, সত্যের পক্ষ নিয়েছি এটাই আমার বড় পাওয়া!’
আমি জানি, আমার মত ক্ষুদ্র টিকটিকিসম গণমাধ্যম কর্মীর কোন চিৎকার চেচামেচি কিংবা আওয়াজ জালিমের কানে পৌছাবে না কিন্তু আমার আল্লাহ তো দেখছেন আমি দূর্দিনেও মজলুমের পক্ষে ছিলাম!
আমিন।
ওয়াহিদ ফারুকী
ঢাকা

চট্টলবাসীসহ দেশের সর্বস্তরের জনতাকে শ্রমিক কল্যাণের পবিত্র ঈদুল আদ্বহার শুভেচ্ছা "ঈদ মোবারক"......!!!


আমাদের বাংলাদেশ অনলাইন নিউজ ডেস্কঃ  পবিত্র ঈদুল আদ্বহা উপলক্ষে চট্টগ্রামসহ দেশবাসীকে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন বাংলাদেশ শ্রমিক কল্যান ফেডারেশন, চট্টগ্রাম সদর অঞ্চল সভাপতি মকবুল আহমেদ ভূঁইয়া ও সেক্রেটারী মোঃ মীর হোসাইন। আজ রবিবার যৌথ শুভেচ্ছা বাণীতে নেতৃদ্বয় বলেন, ত্যাগের উজ্জ্বল মহিমায় পবিত্র ঈদুল আদ্বহা আমাদের দ্বারে সমাগত। ঈদুল আদ্বহা হলো মুসলিম জাতির পিতা হযরত ইব্রাহীম (আঃ) এর প্রতি আল্লাহর বিশেষ করুণা যা তিনি সব্বোর্চ পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে পেয়েছিলেন । কুরবানির মূল হলো ত্যাগ ও কুরবানী। রাসূল (সা.) এবং খোলাফায়ে রাশেদীনের ত্যাগ ও কুরবানীর আদলে একটি ইসলামী কল্যাণ রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠিত হলেই মানুষ সেখানে সত্যিকারভাবে ঈদের আনন্দ উপভোগ করতে সক্ষম হবে।

তারা বলেন, দেশবাসী এমনি এক সময়ে ঈদুল আদ্বহা উদযাপন করতে যাচ্ছে যখন সারাবিশ্বে অশান্তি বিরাজ করছে। বিশ্বের বিভিন্ন দেশে চলছে মুসলমানদের উপর হামলা-জুলুম। আমাদের দেশের জনগণ গ্যাস, বিদ্যুৎ, পানি সংকট, আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির চরম অবনতি এবং দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির কারণে চরম দুর্ভোগের মধ্যে কালাতিপাত করছে। এই অবস্থায় পরিপূর্ণ আনন্দের সাথে ঈদুল আদ্বহা উদযাপন করা কারো পক্ষে সম্ভব নয়। একমাত্র ইসলামী আদর্শ অনুসরণের মাধ্যমেই জুলুম-নির্যাতনের অবসান ঘটিয়ে বাংলাদেশসহ সারাবিশ্বে শান্তি প্রতিষ্ঠা করা সম্ভব। 
তাই ইসলামী সমাজ কায়েমের জন্য প্রচেষ্টা চালানো আমাদের সকলের কর্তব্য।রাসূলে করিম হযরত মুহাম্মদ (সা.) এবং খোলাফায়ে রাশেদীনের আদলে একটি ইসলামী কল্যাণ রাষ্ট্র কায়েমের অঙ্গীকারের মাধ্যমে পবিত্র ঈদুল আদ্বহা উদযাপন করার জন্য চট্টলবাসীসহ দেশবাসীর প্রতি উদাত্ত আহবান জানান তাঁরা।

শনিবার, ১০ সেপ্টেম্বর, ২০১৬

টঙ্গীতে টাম্প্যাকো ফয়েলস্ কারখানার বয়লার বিস্ফোরণে হতাহতের ঘটনায় গভীর শোক প্রকাশ


আমাদের বাংলাদেশ অনলাইন নিউজ ডেস্কঃ  টঙ্গীর রেলগেট এলাকায় বিসিক শিল্প নগরীতে টাম্প্যাকো ফয়েলস্ কারখানায় ১০ সেপ্টেম্বর সকালে বয়লার বিস্ফোরণে কারখানা ভবনের একাংশ ধ্বসে গিয়ে প্রায় ২৫ জনের অধিক শ্রমিক নিহত ও শতাধিক আহত হওয়ার মর্মান্তিক ঘটনায় গভীর শোক প্রকাশ করে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর ভারপ্রাপ্ত সেক্রেটারী জেনারেল ডাঃ শফিকুর রহমান আজ ১০ সেপ্টেম্বর প্রদত্ত এক বিবৃতিতে বলেন, “ঈদুল আজহার ঠিক পূর্ব মুর্হূতে টঙ্গীতে টাম্প্যাকো ফয়েলস্ কারখানার বয়লার বিস্ফোরণে ২৫ জনের অধিক লোক নিহত ও শতাধিক লোক আহত হওয়ার ঘটনায় আমরা গভীরভাবে শোকাহত ও মর্মাহত। 

আমি আশা করি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ এ দুর্ঘটনার প্রকৃত কারণ অনুসন্ধান করে এ দুর্ঘটনার জন্য দায়ী ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে যথাপোযুক্ত ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন এবং যাতে ভবিষ্যতে এ ধরনের দুর্ঘটনা আর না ঘটে সে জন্য যথাযথ সতর্কতামূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন। সেই সাথে নিহতদের পরিবারবর্গকে উপযুক্ত ক্ষতিপূরণ প্রদান ও আহতদের সুচিকিৎসা নিশ্চিত এবং পরবর্তীতে এ সমস্ত লোকদের পুনর্বাসনের যুক্তিসংগত উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে। 

আমি নিহতদের রূহের মাগফিরাত কামনা করছি এবং তাদের শোক সন্তপ্ত পরিবার-পরিজনদের প্রতি গভীর সমবেদনা জ্ঞাপন করছি ও আহতদের দ্রুত সুস্থ্যতার জন্যে মহান আল্লাহ তায়ালার দরবারে দোয়া করছি।”

হজ : কাবাকেন্দ্রিক জীবন পরিক্রমা -নইম কাদের

আমাদের বাংলাদেশ অনলাইন নিউজ ডেস্কঃ ইসলামের অন্যতম মৌলিক স্তম্ভ। হজ শব্দের আভিধানিক অর্থ হচ্ছেÑ ইচ্ছে করা, সংকল্প করা। হজ আমাদের অতি পরিচিত একটি ইবাদতের নাম। ইসলামের পাঁচটি মৌলভিত্তির অন্যতম হজ। হজ ঈমানের অবিচ্ছেদ্য অঙ্গ। বান্দার সাথে আল্লাহর সম্পর্কোন্নয়ন এবং আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনের অন্যতম মাধ্যম হজ। পবিত্র হাদিসে ইরশাদ হয়েছে, বান্দা যখন হজ পালন করবে, আরাফাত ময়দানে অবস্থান করবে, তার অতীতের সব গোনাহ মাফ করে দেয়া হয়। ইয়াওমে আরাফা বা আরাফা দিবসের পর বান্দার অবস্থা এমন হয়ে যায় যে, যেন সদ্যপ্রসূত সন্তান। মায়ের পেট থেকে সদ্যপ্রসূত সন্তানের যেমন কোনো গোনাহ থাকে না, অনুরূপ হজ পালনকারীর কোনো গোনাহ থাকে না। হজ এমন একটি গুরুত্বপূর্ণ ইবাদত, যে ইবাদতের মাধ্যমে বান্দার সব গোনাহ মাফ হয়ে যায় এবং আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জন সম্ভব।
আল্লাহ রাব্বুল আলামিন তাঁর অগণিত সৃষ্টির মধ্যে মানুষ ও জিন জাতিকে সৃষ্টি করেছেন ইবাদতের জন্য। পবিত্র কুরআনে আল্লাহ পাক ইরশাদ করেছেনÑ ওয়ামা খালাকতুল জিন্না ওয়াল ইনসা ইল্লা লিয়া’বুদুন। অর্থাৎ আমি জিন ও মানব জাতিকে সৃষ্টি করেছি একমাত্র আমার ইবাদতের জন্য। কুরআনে বর্ণিত এই ইবাদত একটি ব্যাপক অর্থবোধক শব্দ। গুটিকয়েক বিধিবিধান পালন করার নাম ইবাদত নয়, যে ইবাদতের জন্য আল্লাহ পাক জিন ও ইনসান সৃষ্টি করেছেন। বরং জীবনের সব ক্ষেত্রে আল্লাহ এবং আল্লাহর রাসূল সা:-এর নির্দেশ পালন ও অনুশীলনের নাম ইবাদত।
সালাত প্রতিষ্ঠা করা, জাকাত আদায় করা ইবাদত; কারণ এটি আল্লাহ পাকের নির্দেশ। অনুরূপ চলাচলের পথে রাস্তাঘাটে ময়লা-আবর্জনা বা কষ্টদায়ক কোনো কিছু না ফেলা এবং এরূপ কিছু থাকলে তা সরিয়ে ফেলা গুরুত্বপূর্ণ ইবাদত; কারণ এটি আল্লাহর রাসূল সা:-এর নির্দেশ। একজন সচ্ছল মানুষ, তার হাতে পর্যাপ্ত সময় আছে, সুযোগ আছে, এমতাবস্থায় গল্পগুজবে জীবনের মূল্যবান সময় নষ্ট করার পরিবর্তে ঘরে, মসজিদে বসে কুরআন তিলাওয়াত করা, জিকির-আজকার করা, রোগীর সেবা করা, আত্মীয়-প্রতিবেশের খোঁজখবর নেয়া ইত্যাদি তার জন্য ইবাদত। অপর দিকে অভাবী দরিদ্র মানুষ, হালাল রুজি উপার্জনের নিয়তে দিনমজুর হিসেবে ক্ষেতে-খামারে কাজ করছে, এটিও ইবাদত। হাদিস শরিফে এ জাতীয় সৎ শ্রমজীবী মানুষকে আল্লাহর বন্ধু হিসেবে আখ্যায়িত করা হয়েছে। একজন ফকিহ (ইসলামি গবেষক) যদি এক ঘণ্টা গবেষণা করেন তার এই এক ঘণ্টা একজন আবেদের সারা রাত নফল ইবাদতের চেয়ে উত্তম। অর্থাৎ গবেষণা-অধ্যয়নও একটি গুরুত্বপূর্ণ ইবাদত। অনুরূপ হালাল ব্যবসাও একটি গুরুত্বপূর্ণ ইবাদত। সহিহ হাদিসে সৎ ব্যবসায়ীদের জন্য সুসংবাদ দিয়ে বলা হয়েছে, সৎ এবং বিশ্বস্ত ব্যবসায়ীদের হাশর হবে নবী এবং শহীদদের সাথে।
মানুষের দৈনন্দিন প্রতিটি কাজই ইবাদত, যদি তা আল্লাহর নির্দেশ ও রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের শিক্ষানুযায়ী হয়। মনে রাখতে হবে, আল্লাহ সুবহানুহু তায়ালা বান্দার কোনো কাজকে হিসাবের বাইরে রাখেন না। তাই বান্দার ঘুমও ইবাদতের অংশ। এ ছাড়া আল্লহ পাক বান্দার জন্য অভিন্ন কিছু ইবাদতকে বাধ্যতামূলক করে দিয়েছেন। ইসলামি পরিভাষায় যা ফরজ, ওয়াজিব নামে পরিচিত। যেমনÑ নামাজ, রোজা, জাকাত, হজ ইত্যাদি। মুমিনমাত্রই নামাজ তার জন্য বাধ্যতামূলক। ব্যবসা ইবাদত, কিন্তু ব্যবসা করা প্রত্যেকের জন্য ফরজ নয়। পক্ষান্তরে নামাজ প্রতিটি মুসলমানের জন্য ফরজ। জাকাত এবং হজ ফরজ হওয়া বান্দার আর্থিক সামর্থ্যরে সাথে সম্পর্কিত। প্রত্যেক প্রাপ্তবয়স্ক ও সুস্থ মুসলিম নর-নারীর ওপর সালাত ফরজ হলেও বিশেষ শারীরিক অবস্থায় মহিলাদের জন্য ওই সময়ে সালাত আদায় করা নিষেধ। পবিত্র রমজানে মাসব্যাপী রোজা ফরজ হলেও মুসাফির এবং শারীরিক বিশেষ অবস্থার কারণে মহিলাদের জন্য পরবর্তী সময়ে রোজা পালনের বিধান রাখা হয়েছে। 
নামাজ, রোজা, হজ, জাকাত প্রভৃতি ইবাদত যা আল্লাহ পাক অবস্থাভেদে মুসলিম নর-নারীর ওপর ফরজ বা বাধ্যতামূলক করেছেন। এটা কেন করা হলো? এ প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে হলে প্রথমে আমাদের মানুষ সৃষ্টির আসল উদ্দেশ্য ও দুনিয়াতে অপরাপর সৃষ্টির তুলনায় মানুষের মর্যাদাগত পার্থক্য কী তা জানতে হবে। 
আল্লাহ পাক দুনিয়াতে কী উদ্দেশ্যে মানুষ সৃষ্টি করেছেন এবং অপরাপর সৃষ্টির সাথে মানুষের মর্যাদাগত পার্থক্য কী পবিত্র কুরআনের সূরা বাকারায় তার সুস্পষ্ট উল্লেখ আছে। আল্লাহ পাক ফেরিশতাদের বলেন- ‘ইন্নি যা’য়েলুন ফিল আরদি খালিফাতান।’ অর্থাৎ আমি জমিনে আমার প্রতিনিধি সৃষ্টি করতে যাচ্ছি। পবিত্র কুরআনে বনি আদম সম্পর্কে বলা হয়েছে- ‘লাকাদ কাররমনা বনি আদমা।’ অর্থাৎ নিঃসন্দেহে আমি বনি আদমকে মর্যাদা দিয়েছি। হজরত আদম আ:-কে সৃষ্টি করা এবং ফিরেশতা দিয়ে তাকে সিজদার মাধ্যমে আল্লাহ পাক মানুষের মর্যদা নির্ধারণ করেছেন আশরাফুল মাখলুকাত বা সৃষ্টির সেরা জীব হিসেবে।
মানুষের সৃষ্টিগত এই মর্যাদা ও সম্মান চিরস্থায়ী নয়। বরং তা নির্ভর করে তার কর্মপন্থা, কর্মকৌশল এবং কাজের মাধ্যমে। অর্থাৎ মানব আকৃতিতে মানব বংশে জন্ম নিলেই সে আল্লাহর প্রতিনিধি হয়ে যাবে, তার জন্য সব রকম মর্যাদা নিশ্চিত হয়ে যাবে, তা নয়। পবিত্র কুরআনের সূরা ত্বিনে আল্লাহ রাব্বুল আলামিন স্পষ্ট বলে দিয়েছেন- ‘আমি মানুষকে সর্বোত্তম আকৃতিসহকারে সৃষ্টি করেছি, অতঃপর আমি তাদের একেবারে নিম্নস্তরে নামিয়ে দিয়েছি শুধু তারা ছাড়া, যারা ঈমান এনেছে এবং যারা সৎকর্ম সম্পাদনকারী। 
মানুষের প্রতিটি কথা, কাজ ও আচার-আচরণের পুঙ্খানুপুঙ্খ হিসাব হবে। এই হিসাব থেকে কারোরই রেহাই নেই। প্রত্যেক বান্দাকেই নিজ নিজ কর্মের হিসাব দেয়ার জন্য আল্লাহর সামনে দাঁড়ানো ছাড়া কোনো পথ নেই। হিসাবের এই কঠিন পরীক্ষায় একমাত্র তারাই উত্তীর্ণ হবে, যারা পবিত্র কুরআনের ভাষায় ঈমান এনেছে এবং সৎকর্ম সম্পাদন করেছে। অর্থাৎ সৃষ্টিগত স্বীয় মর্যাদা ও বৈশিষ্ট্যপূর্ণ জীবনযাপন করেছে।
মানুষকে তার মর্যাদার সাথে সঙ্গতিপূর্ণ এবং সৃষ্টির সেরা জীব হিসেবে জীবনযাপনে অভ্যস্ত করতে আল্লাহ পাক বিভিন্ন ইবাদত ফরজ বা বাধ্যতামূলক করেছেন। ফরজ ইবাদতগুলোর মধ্যে প্রতিটি ইবাদতের আলাদা বৈশিষ্ট্য রয়েছে। সালাত আদায়ে নিবিষ্ট মনোভাব ও একাগ্রতার যে শিক্ষা আমরা পেয়ে থাকি, জাকাতে তা ভিন্ন রকম। আর্থিক ত্যাগ ও দরিদ্র মানুষের প্রতি সহমর্মিতার যে শিক্ষা জাকাতের মাধ্যমে পেয়ে থাকি, সওম বা রোজায় তা অন্য রকম। খোদাভীতি সৃষ্টির মাধ্যমে তাকওয়া অর্জনের যে শিক্ষা সিয়াম সাধনায় অর্জিত হয়, অপরাপর ইবাদতের অর্জন অন্য রকম। 
আল্লাহ রাব্বুল আলামিন বিভিন্ন ধরনের ইবাদত বান্দার জন্য ফরজ করেছেন। তা করা হয়েছে মানুষের সার্বিক উন্নতি এবং স্বীয় মর্যাদা ও বৈশিষ্ট্যের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ জীবনযাপনে অভ্যস্ত করতে। ইসলামের মৌলিক পাঁচটি স্তম্ভের প্রথমটি কলবের সাথে সম্পর্কিত বিশ্বাসের বিষয়। অন্য চারটি ভিন্ন আঙ্গিকের ইবাদত। এগুলো হচ্ছেÑ সালাত, সওম, হজ এবং জাকাত।
ইবাদত সাধারণত তিন ধরনের : ক. শারীরিক ইবাদত, যেমনÑ সালাত ও সাওম শারীরিক ইবাদতের অন্তর্ভুক্ত, খ. আর্থিক ইবাদত, যেমনÑ জাকাত ও সাদকা আর্থিক ইবাদতের অন্তর্ভুক্ত, গ. অর্থ এবং শরীর যৌথ সংমিশ্রণে ইবাদত, যেমনÑ হজ আর্থিক ও শারীরিক ইবাদত।
মানুষ সৃষ্টির একটি অন্যতম বৈশিষ্ট্য হচ্ছে বিশ্বজনীনতা ও সর্বজনীনতা। এ জন্য ইসলামের মৌলিক ইবাদতগুলো ব্যক্তিকেন্দ্রিকতা পরিহার করে আমরা সামষ্টিক জীবনযাপনের শিক্ষা পাই। জামায়াত বা সঙ্ঘবদ্ধ জীবন, ইসলামি জীবনব্যবস্থার অন্যতম বৈশিষ্ট্য। আমরা ‘মিল্লাত’ এবং ‘উম্মত’ নামে যে দু’টি বিশেষ পরিভাষার সাথে পরিচিত, এ দু’টির ব্যবহারও সামষ্টিক অর্থে। মনে রাখতে হবে, ‘উম্মতে মুহাম্মাদি’ ইসলামি জীবনব্যবস্থায় অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এবং তাৎপর্যময় একটি পরিভাষা। 
বিশ্বজনীনতা ও সর্বজনীনতা অর্জন এবং অনুশীলনের জন্য মানবজাতিকে একটি নির্দিষ্ট কেন্দ্রকে টার্গেট করে অগ্রসর হতে হয়। কেন্দ্রচ্যুত জীবন সুনিয়ন্ত্রিত ও সুশৃঙ্খল জীবন নয়। হজের অন্যতম বৈশিষ্ট্য হচ্ছে গোটা পৃথিবীর মানুষকে একটি কেন্দ্রে নিয়ে আসা, একটি নির্দিষ্ট কেন্দ্রের দিকে ধাবিত করার মাধ্যমে মানবজাতির জীবন অভিন্ন লক্ষ্যপানে পরিচালিত করা। 
এই কেন্দ্রের নাম কাবা যেটি বায়তুল্লাহ বা আল্লাহর ঘর নামে পরিচিত। গোটা বিশ্বের মানুষকে একটি কেন্দ্রে নিয়ে আসার কারণ হলো মানব সমাজের বৃহত্তর ঐক্য। বর্ণ, ভাষা, সংস্কৃতি, জীবনযাপন পদ্ধতির পার্থক্য সত্ত্বেও কাবাকেন্দ্রিক জীবন পরিক্রমায় মানবসমাজের বৃহত্তর ঐক্য সৃষ্টি করা হজের একটি গুরুত্বপূর্ণ শিক্ষা। সুতরাং আমরা বলতে পারিÑ হজ কাবাকেন্দ্রিক জীবন পরিক্রমার নাম। এ কথা অস্বীকার করার উপায় নেই যে, ঐক্য ছাড়া কল্যাণকর কোনো কিছুই সম্ভব নয়। 
হজের যাবতীয় কার্যক্রম পবিত্র কাবাকেন্দ্রিক। কাবা ঘর পুনঃনির্মাণ, কোরবানি, সাঈ, তাওয়াফ, জমজম কূপ, মাকামে ইবরাহিমসহ হজের অনেক গুরুত্বপূর্ণ বিষয় এবং আহকামের সাথে সাইয়্যেদানা ইবরাহিম আলাইহিসসালাম এবং সাইয়্যেদানা ইসমাইল আলাইহিসসালামের সাথে সম্পর্কযুক্ত। শুধু তাই নয়, পবিত্র কাবা ঘরের সাথে রয়েছে মানবজাতির পিতা, প্রথম মানব হজরত আদম আলাইহিসসালামের সম্পর্ক। বায়তুল্লাহর দেয়ালে স্থাপিত হাজরে আসওয়াদ বা কালো পাথর পিতা আদম আলাইহিসসালাম জান্নাত থেকে নিয়ে এসেছিলেন। সুতরাং দেখা যাচ্ছে, বায়তুল্লাহর সাথে সম্পর্ক মানে প্রথম মানব হজরত আদম আলাইহিসসালামের সাথে সম্পর্ক। এর পরে আছে সাইয়্যেদানা ইবরাহিম আলাইহিসসালাম এবং সাইয়্যেদানা ইসমাইল আলাইহিসসালামের বিষয়। এভাবেই বায়তুল্লাহ বা কাবা ঘর সৃষ্টির প্রথম মানব থেকে শুরু করে সব মানুষকে একই সূত্রে গেঁথে রেখেছে। পবিত্র কাবার হাজারো বৈশিষ্ট্যের মধ্যে এটি অন্যতম।
পবিত্র কাবাকে কেন্দ্র করেই পরিচালিত হয়েছে সাইয়্যেদুল আম্বিয়া মুহাম্মাদুর রাসূলুল্লাহ সা:-এর যাবতীয় কর্মপন্থা। হিজরতের সময় সজল চোখে বারবার কাবার দিকে ফিরে দেখা, হিজরতের পরে আল্লাহর নির্দেশে কিবলা পরিবর্তন তারই সুস্পষ্ট প্রমাণ। তাঁরই বদৌলতে কাবা ও এর সন্নিহিত এলাকা ‘হেরম’ এবং মক্কা নগরী ‘বালাদে আমিন’ নিরাপদ শহরের মর্যাদা পেয়েছে। এই মর্যাদা পৃথিবীর আর কোনো জনপদের নেই। 
পবিত্র কাবা একটি ঘর মাত্র নয়। এর আছে আলাদা মর্যাদা এবং স্বতন্ত্র বৈশিষ্ট্য। পবিত্র কাবা হচ্ছে সভ্যতার প্রথম নিদর্শন। পবিত্র কুরআনে স্বয়ং আল্লাহ পাক ষোষণা দিয়েছেনÑ ইন্না আউয়ালা বাইতিন উদিয়া লিন্নাছি লাল্লাজি বিবক্কাতা মুবারাকান। মক্কায় অবস্থিত এই ঘর মানবজাতির জন্য সর্বপ্রথম তৈরি করা ঘর। সর্বশেষ সাইয়্যেদুল আম্বিয়া সা:-এর মাধ্যমে আল্লাহ রাব্বুল আলামিন এই ঘরকে করেছেন নিখিল সৃষ্টির জন্য বরকতময় এবং পথনির্দেশক। 
প্রতি বছর গোটা বিশ্ব থেকে হাজারো ভাষার, বর্ণের, আকৃতির, সংস্কৃতির মানুষ এই কাবা ঘরে এসে হাসিল করে বরকত এবং গ্রহণ করেন পথনির্দেশনা। যার সূচনা হয়েছিল প্রথম মানব হজরত আদম আলাইহিসসালামের মাধ্যমে, যা নবরূপ লাভ করেছিল সাইয়্যেদানা ইবরাহিম আলাইহিসসালাম এবং সাইয়্যেদানা ইসমাইল আলাইহিসসালামের মাধ্যমে এবং চূড়ান্ত রূপ লাভ করেছে আল্লাহর হাবিব সাইয়্যেদুল আম্বিয়া মুহাম্মাদুর রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের হাতে।
লেখক : সহকারী অধ্যাপক
নানুপুর লায়লা-কবির ডিগ্রি কলেজ,
ফটিকছড়ি, চট্টগ্রাম
E-mail : nayeemquaderctg@gmail.c

শুক্রবার, ৯ সেপ্টেম্বর, ২০১৬

আইআইইউসি’র রেড স্টার মার্ক উঠে গেছে: ভিসি ট্রাস্টি সদস্যদের সন্তোষ শিক্ষার্থীদের উল্লাস

বাংলঅদেশ বার্তা ডেস্কঃ আন্তর্জাতিক ইসলামী বিম্ববিদ্যালয় চট্টগ্রাম(আইআইইউসি) এর উপর রেড স্টার মার্ক উঠিয়ে দিয়েছে বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশিন(ইউজিসি)। ইউজিস ‘র ওয়েব সাইটে আন্তর্জাতিক ইসলামী বিম্ববিদ্যালয় চট্টগ্রাম(আইআইইউসি) এর নামের পাশে লাল তারকা চিহ্ন (রেড স্টার মার্ক) আর দৃশ্যমান হচ্ছে না। এই সুসংবাদ পাওয়ার পর  আইআইইউসি’র ভাইস চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. এ. কে. এম. আজহারুল ইসলাম এবং বোর্ অব ট্রাস্টিজের সদস্যগণ সন্তোষ প্রকাশ করেন। এই সংবাদ ক্যাম্পাসে ছড়িয়ে পড়লে শিক্ষাথীরা উল্লাস প্রকাশ করেন এবং শিক্ষক ও নিজেদের মধ্যে মিষ্টি বিতরণ করেন।
উর্লৈখ্য, বিগত ২৭ জুলাই ২০১৬ তারিখে বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশিন(ইউজিসি) এর প্রজ্ঞাপনের আলোকে আইআইইউসি’র অবশিষ্ট্য ৪টি বিভাগসহ সকল শিক্ষা কার্যক্রম কুমিরাস্থ স্খায়ী ক্যাম্পাসে পরিপূর্ণভাবে স্থানান্তর করা হয়েছে।আন্তর্জাতিক ইসলামী বিম্ববিদ্যালয় চট্টগ্রামএর মোট ১১টি বিভাগের মধ্যে ৭(সাত)টি বিভাগ আহগ থেকেই পরিপূর্ণভাবে স্থায়ী ব্যাম্পাসে পরিচালিত হয়ে আসছে।এখন চট্টগ্রামস্থ কুমিরায় আইআইইউসি এর সকল শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালিত জচ্ছে।এছাড়া সবর্তমানে অন্য কোথাও বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে না।ইতি মধ্যে ইউজিসি সংবাদ পত্রে এক গণবিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে এর স্বীকৃতি প্রদান করে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের অনেক ত্যাগের এই অর্জনে ট্রাস্টি সদস্য, ছাত্রছাত্রী, শিক্ষক, কর্মকর্তা, কর্মচারী, অভিভাবকবৃন্দসহ সকলের আন্তরিক সহযোগিতার জন্য  ভাইস চ্যান্সেলরের পক্ষ থেকে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করা হয়েছে।

হল প্রভোস্ট রঞ্জিত দাস এগিয়ে এসে এমন একটি বিজয়ের হাসি দিল যেন সে দুইটা মেডেল জিতেছে!

প্রতিদিনের অভ্যাসমত মাগরীবের নামাযের পড়ে কোরআন তেলোয়াত করতে বসেছিল সোমা। কি হতে কি হলো সে কিছুই বুঝতে পারছেনা! কোরআন পড়তে পড়তে প্রথম পিছনে কিছুটা শোরগোল শুনতে পেল। তারপরেই মনে হলো কয়েকজনের পায়ের লাথি তার পিঠের উপরে পড়ছে! নিজেকে সামলে রাখতে না পেরে কোরআনের উপর উপুড় হয়ে পড়ে গেল! তার বুক, পিঠ, মুখ সব যায়গায় লাথি মারতে লাগলো তারা! দুজন চুল ধরে শোয়া থেকে উঁচু করে দাড় করে ফেললো...
ভার্সিটির হোষ্টেলের নামাযের রুমে সোমা ও কয়েকজন নিয়মিত নামায পড়ে। ইদানীং উপস্থিতি খুব কম হয়। এক সময় অনেক মেয়ে নামাযে আসতো নামায কক্ষে। এখন এক অজানা ভয়ে অনেকে আসেনা। তবু তারা কয়েকজন মেয়ে আসে এখনও। নামায শেষে যার যার মত চলে গেলেও সোমা কিছুটা সময় কোরআন পড়ে তারপর রুমে ফিরে ক্লাসের পড়া পড়তে বসে।
আজ এক বিভীষিকাময় পরিস্থিতির মুখোমুখি সে। নামায শেষ করে কোরআন পড়তে গেলে এই সময়ের ভিতর বেশ কয়েকজন হামলে পড়েছে তার উপর। কারন কি সে কিছুই জানেনা! মারতে মারতে একজন বলে উঠলো, এই তুই জঙ্গি! এবার সোমা বুঝতে পারলো হামলাকারীরা সোমাকে না, কোন জঙ্গিকে মারধোর করছে! কয়েকবার বলার চেষ্টা করলো, আমি না আমি না....
কথা শেষ করতে পারেনা। তার আগেই তল পেটে একজন লাথি বসিয়ে দেয়। কুঁকিয়ে উঠে তল পেট চেপে ধরে বসে পড়ে। মাথা ঘুরতে থাকে তার, হয়তো কিছুক্ষনের ভিতর জ্ঞান হারাবে। আবারো তাকে চুল ধরে দাড় করানো হয়। কথা বলতে না বলতে নাক মুখের উপর কয়েজন ঘুষি মারতে থাকে। নাক চেপে ধরে মাথা নিচু করলে আঙুলের ফাঁকগলে রক্তের ধারা বের হয়ে এলো। একজন চুল ধরে মাথা উঁচু করে ধরে রাখলো যেন মারতে সুবিধা হয়। তখন সামনে তাকিয়ে দেখতে পেল তার দুজন ম্যাডাম ও হল প্রভোস্টকে! মনের ভিতর কিছুটা প্রশান্তি ফিরে এলো। এই যাত্রায় বুঝি কিছুটা রক্ষা পেলাম..
হল প্রভোস্ট রঞ্জিত দাস এগিয়ে এসে এমন একটি বিজয়ের হাসি দিল যেন সে দুইটা মেডেল জিতেছে! দাত খিটমিট করে বললো- বাহবা, নামায পড়তে আসে! সাথে আবার জঙ্গি বই রাখো! একে এমন ভাবে মারবা যেন পুলিশ নিয়ে গেলে তাদের অতিরিক্ত কোন কাজ করতে না হয়...
সংগৃহীত।

মা ও ছেলে আবারো একসাথে-


আমাদের বাংলাদেশ অনলাইন নিউজ ডেস্কঃ  বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া সঙ্গে জেদ্দায় তারেক রহমান ও তার স্ত্রী জোবায়দা রহমানের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন। 
.
৮ সেপ্টেম্বর স্থানীয় সময় ভোর ৫টায় এমিরেটস এয়ারলাইন্সের একটি ফ্লাইটে জেদ্দা কিং আব্দুল আজিজ বিমানবন্দরে অবতরণ করেন বিএনপির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমান, তার স্ত্রী ডা. জোবাইদা রহমান, মেয়ে জাইমা রহমান ও মরহুম আরাফাত রহমান কোকোর স্ত্রী ও সন্তানরা। 
.
সৌদি বাদশা সালমান বিন আবদুল আজিজ আল-সৌদের আমন্ত্রণে পবিত্র হজ পালনের জন্য পৃথকভাবে সৌদি আরবে গিয়েছেন তিনি। সৌদি আরব স্থানীয় সময় রাত ১০টা ২০ মিনিটে বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া সৌদি এয়ারলাইন্সের একটি ফ্লাইট জেদ্দা কিং আব্দুল আজিজ বিমানবন্দরে পৌঁছান। 
.
জানা যায়, ২৯ সেপ্টেম্বর বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া বাংলাদেশে এবং সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমানের যুক্তরাজ্যের উদ্দেশে রওনা দেবেন।
@ফাইল ছবি।

বৃহস্পতিবার, ৮ সেপ্টেম্বর, ২০১৬

যুদ্দ্বাপরাধ+ জামাত+ প্রতিবাদ= বিবেকের বিচারঃ বিজেপি নেতা।

হুবহু পোস্ট। জাস্ট চেপে যা
অনেকেই জানেন, আমি ছিলাম বিজেপি'র একজন একনিষ্ঠ কর্মী। বিজেপি'র হয়ে এলাকার বুথ কমিটির সেক্রেটারির পদও সামলেছি। না, বিজেপি আমায় দল থেকে বের করেনি, পদ থেকে সরিয়ে দেয়নি। আমিই নিজেই বেরিয়েছি, ইস্তফা দিয়েছি, পদ থেকে নিজেই সরে দাঁড়িয়েছি।
যাইহোক, সক্রিয়ভাবে রাজনীতি করার সময় থেকেই জানতাম, বাংলাদেশের সর্ববৃহৎ ইসলামিক সংগঠন হল- জামাত শিবির। এও জানতাম, জামায়াত শিবির একটি ভয়ংকর সন্ত্রাসবাদী সংগঠন। এরা রক্তের রাজনীতি করে, নির্মমভাবে মানুষ খুন করে, মানুষের শিরা কেটে দেয় ইত্যাদি ইত্যাদি। না, এগুলি যে শুধু আমি আমার রাজনৈতিক সূত্রেই জেনেছিলাম তা নয়। অন্যান্য তথাকথিত সেক্যুলার দল, প্রথমসারীর পত্র-পত্রিকা, বুদ্ধিজীবীদের বক্তব্য আর সোশ্যাল মিডিয়া মারফৎ প্রচারণায় বিশ্বাস করতে বাধ্যই হয়েছিলাম যে, বাংলাদেশের জামায়াত শিবির একটি ভয়ানক সন্ত্রাসবাদী সংগঠন। কিন্তু এখন! ৭১ আমি দেখিনি, ইতিহাস কতটা অবিকৃত তাও জানিনা। কিন্তু বর্তমানের জামাত শিবিরের কর্মকান্ড পর্যবেক্ষণের পরে, আমার ভাবনার আমূল পরিবর্তন হয়েছে। বিশেষ একটি আদর্শের সমর্থক না হলেও বিরুদ্ধ আদর্শের বিরুদ্ধে মিথ্যাচার করা আমার স্বভাব বিরুদ্ধ এবং মিথ্যাচার সমর্থনযোগ্যও নয়।
ঘটনার চার দশক পরে বাংলাদেশে আন্তর্জাতিক ট্রাইবুনাল গঠন করে, প্রহসনের বিচারে জামায়াতের শীর্ষ স্থানীয় নেতাদের ফাঁসীতে ঝোলানো হচ্ছে। ট্রাবুনালের বিচারিক প্রক্রিয়া যে অস্বচ্ছ এবং রাজনৈতিক উদ্দেশ্যগত- একথা আমি নয়, অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল, হিউম্যান রাইটস ওয়াচ, রাষ্ট্রপুঞ্জের মানবধিকার সংগঠন প্রত্যেকেই একই কথা বলছে। এমন অস্বচ্ছ বিচারিক প্রক্রিয়ার মাধ্যমে সন্ত্রাসবাদী জামায়াত নেতাদের বক্তব্য এবং কর্মীদের কর্মকান্ড আমায় বেশ ভাবিয়ে তুলেছে! ফাঁসীর আগের মুহুর্তে কাদের মোল্লা থেকে মীর কাশেম আলী কেউই রাষ্ট্রপতির কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করেননি। রাষ্ট্রপতির কাছে ক্ষমা চাওয়ার বিষয়ে প্রত্যেকেই বলেছেন, 'আমরা কোনও অন্যায় করিনি, মিথ্যা অভিযোগ এবং সাক্ষ্যের ভিত্তিতে রাজনৈতিক কারণে আমাদের ফাঁসী দেওয়া হচ্ছে। তাই রাষ্ট্রপতির কাছে ক্ষমা চাওয়ার প্রশ্নই নেই।' ফাঁসীর আগে পরিবার মারফৎ দেশবাসী এবং সংগঠনের কর্মীদের উদ্দেশ্যে দেওয়া তাঁদের ভাষণও আমায় বেশ আলোড়িত করেছে। তাঁদের কন্ঠে সশস্ত্র জিহাদের ডাক শোনা যায়নি। জ্বালিয়ে দেওয়া, পুড়িয়ে দেওয়া বা বদলা নেওয়ার কথাও বলতে শোনা যায়নি। বরং তাঁরা প্রত্যেকেই দেশবাসী এবং কর্মীদের ধৈর্যধারণ করতে বলেছেন। সেই সাথে শান্ত থাকার এবং প্রার্থনা(দোয়া) করার আহবান জানিয়েছেন। তাঁদের পরিবারের পক্ষ থেকেও কোনো উস্কানিমূলক বক্তব্য পাওয়া যায়নি। আর অন্যান্য নেতা-কর্মীদের কার্যকলাপ! প্রিয় নেতাদের ফাঁসীতে ঝোলানোর পরেও তারা শুধু শান্তি বজায় রেখে ধর্মঘট পালন করেছেন। কোনও রকেট লঞ্চার হামলা করেননি, বোমা হামলা করে থানা-কোর্ট উড়িয়ে দেননি, কোনও আইইডি হামলা করে বাজার-মল ধ্বংস করে দেননি, মানুষের হাত-পায়ের শিরা কেটে দেননি, নির্বিচারে নারীদের ধর্ষণ করেননি। আমি বাংলাদেশের জামায়াত ইসলামী এবং ছাত্র শিবিরের ওয়েবিসাইটগুলিও ভিজিট করেছি। লক্ষ্য করেছি, সেখানে শুধুমাত্র বিচারের সমালোচনা করা হয়েছে, বিচারিক প্রক্রিয়ার লু ফলস-গুলি দেখিয়ে শান্তিপূর্ণভাবে ধর্মঘটের ঘোষণা করা হয়েছে।
তাহলে কিসের ভিত্তিতে আমি জামায়াত-শিবিরকে সন্ত্রাসবাদী সংগঠন বলব? আরে, গান্ধীজীর অহিংস আন্দোলনও তো এক সময় সহিংসতার পথ নিয়ছিল। আন্দোলন সহিংস হয়ে ওঠায় গান্ধীজী আন্দোলন পরিত্যাগ করেছিলেন, সে প্রসঙ্গ ভিন্ন। কিন্তু যাদের আমরা চিনহিত সন্ত্রাসবাদী বলছি, তাদের কার্যকলাপ এবং বক্তব্যের কোথাও তো সহিংসতা বা সন্ত্রাসবাদের ছিটেফোঁটা লক্ষ্য করছিনা। শুধু আনন্দবাজার, অর্ধ প্যারালাইজড বুদ্ধিজীবী আর কমরেডদের গালগল্প শুনে আমায় বিশ্বাস করতে হবে- জামায়াত শিবির সন্ত্রাসবাদী সংগঠন?
শুনেছি জামায়াত শিবিরের নাকি অনেক টাকা। সদ্য ফাঁসীর সাজাপ্রাপ্ত মীর কাশেম আলী নাকি হাজার হাজার কোটি টাকার সম্পত্তির মালিক। যে সংগঠনে যথেষ্ট পরিমানে কর্মী ('জেহাদি') রয়েছে, অফুরন্ত টাকা রয়েছে- সেই সংগঠনটি কোনও পালটা আঘাত না হেনে অত্যন্ত শান্তিপূর্ণভাবে ধর্মঘট পালনের মাধ্যমে প্রতিবাদ জানাচ্ছে? আমি জানিনা, ভারতীয় সংসদীয় গণতন্ত্রে অংশগ্রহণকারী কোনও রাজনৈতিক দলের সর্বোচ্চ নেতাদের প্রহসনের বিচারে এভাবে ফাঁসীতে ঝোলানো হলে, তাদের নেতা-কর্মীরা জামায়াত শিবিরের মত অহিংস এবং সংযমী থাকতে পারতেন কিনা!
---সুতীর্থ মুখার্জী
ভারতের সরকারী দল বিজেপির সাবেক নেতা।

About

ব্লগ সংরক্ষাণাগার

আমার ব্লগ তালিকা

Translate

Translate

আমাদের বাংলাদেশ নিউজ 24

সর্বশেষ

অনুসরণকারী