বিজ্ঞাপন দিন

আচ্ছালামু আলাইকুম ওয়ারাহমাতুল্লাহ। ইসলামী ব্যাংক এজেন্ট ব্যাংকিং আউটলেট দক্ষিণগাও, শাহীবাগ বাজার এর পক্ষ থেকে সকল গ্রাহক, শুভাকাংখীসহ সবাইকে জানাই ঈদ উত্তর সালাম ও আন্তরিক শুভেচ্ছা। ব্যাংক খোলা এবং যথারীতি ব্যাংকিং কার্যক্রম চলছে। এই গ্রুপে যারা আছেন তাদের মাধ্যমে সংশ্লিষ্ট এলাকার এলাকারসকলকে ইসলামী ব্যাংকের মাধ্যমে বিদেশ থেকে রেমিটপন্স পাঠানোর আহবান জানাচ্ছি। ঢাকার সবুজবাগ থানার রাজারবাগ, কুসুমবাগ, দক্ষিনগাও, শাহীবাগ, মানিকদিয়া, বাইকদিয়া, নন্দিপাড়াসহ সকল এলাকার গ্রাহক, শুভাকাংখী, শুভানুধ্যায়ীদের প্রদত্ত মোবাইল নাম্বারে যোগাযোগ করার অনুরোধ করা হলোঃ ০১৭১১-৪৫৮১৫১, ০১৭০০৯২৫২৪১:b>ইসলামী ব্যাংক এজেন্ট ব্যাংকিং আউটলেট দক্ষিণগাও, শাহীবাগ বাজার
আইন-আদালত লেবেলটি সহ পোস্টগুলি দেখানো হচ্ছে৷ সকল পোস্ট দেখান
আইন-আদালত লেবেলটি সহ পোস্টগুলি দেখানো হচ্ছে৷ সকল পোস্ট দেখান

সোমবার, ২৬ অক্টোবর, ২০২০

অধ্যাপক ড. শেখ আব্দুস সাত্তার আবু গোদ্দাহ ইন্তেকাল করেছেন।

 

আমাদের বাংলাদেশ নিউজ 24 ডেস্কঃ ইখওয়ানুল মুসলিমিনের অন্যতম ব্যক্তিত্ব ও প্রখ্যাত অধ্যাপক ড. শেখ আব্দুস সাত্তার আবু গোদ্দাহ ইন্তেকাল করেছেন। ইন্নালিল্লাহি ওয়া ইন্নাইলাইহি রাজিউন।

তিনি ছিলেন তুলনামূলক ইসলামী আইনশাস্ত্রের অধ্যাপক এবং ইসলামী ফিকহ একাডেমীর সাবেক প্রধান।
ডঃ আবু গোদ্দা সৌদি আরব, কুয়েত, মিশর এবং বিভিন্ন দেশে অনেক বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যাপক হিসাবে চাকু‌রি করেছেন। তিনি ১৯৯০ সাল থেকে কুয়েতের একটি ফিকহ এনসাইক্লোপিডিয়ায় গবেষক এবং বিশেষজ্ঞ হিসেবে কাজ করেছেন। এবং ১৯৫৫ সাল থেকে ইসলামী আর্থিক প্রতিষ্ঠানের অ্যাকাউন্টিং, অডিটিং সংস্থার স্ট্যান্ডার্ড বোর্ড ও শরিয়া বোর্ডের সদস্য ছিলেন। এছাড়াও তিনি বহু আর্থিক প্রতিষ্ঠান ও আইনী পরিষদের সদস্য এবং বিশেষজ্ঞ ছিলেন।

অধ্যাপক শেখ আব্দুস সাত্তার আবু গোদ্দা ১৯৪০ সালে সিরিয়ার আলেপ্পোতে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি দামেস্ক বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ১৯৬৪ সালে বিএ ডিগ্রি করেন এবং একই বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ১৯৬৫ সালে স্নাতক ডিগ্রি লাভ করেন।

এরপরে তিনি মিশরের আল-আজহার বিশ্ববিদ্যালয়ে ১৯৬৬ সালে শরিয়ায় এমএ,১৯৬৯ সালে হাদিসশাস্ত্রে এমএ করেন।পুনরায় আল-আজহার বিশ্ববিদ্যালয় থেকেই ১৯৭৫ সালে (তুলনামূলক আইনশাস্ত্র)পিএইচডি ডিগ্রি অর্জন করেন তিনি।

তুলনামূলক ইসলামী আইনশাস্ত্র, আর্থিক লেনদেন, ইসলামী ব্যাংকিং, যাকাত, অনুদান, হিসাববিজ্ঞান, আইনী শাসন, আইনী অধ্যয়ন, পাণ্ডুলিপি যাচাইকরণ পদ্ধতি এবং ইসলামী মেডিসিন বিষয়ে প্রচুর গবেষণা ও থিসিস তৈরি করেছেন তি‌নি।

তার উল্লখযোগ্য গবেষণাপত্র - সংস্কার এবং গত দশকগুলির প্রভাব, বর্তমান যুগে ইসলামী আইন ও শাসকের ভূমিকা, চিকিৎসা, আইনশাস্ত্র ও মানসিক স্বাস্থ্য, ইসলামিক দৃষ্টিকোণ থেকে গবেষণা, যাকাত ইত্যাদি।

আল্লাহ রাব্বুল আলামীন তাকে জান্নাতের মেহমান হিসাবে কবুল করুন। আমিন।

বৃহস্পতিবার, ৬ ডিসেম্বর, ২০১৮

মিথ্যা মামলায় জামায়াতের স্বতন্ত্র প্রার্থীসহ ৬ জন কারাগারে

আমাদের বাংলাদেশ নিউজ24 ডেস্কঃ বগুড়ার কাহালু উপজেলা চেয়ারম্যান ও জামায়াত নেতা মাওলানা তায়েব আলীসহ ৬ নেতাকর্মীকে বিশেষ ক্ষমতা আইনে দায়েরকৃত মামলায় জামিন না মঞ্জুর করে কারাগারে পাঠিয়েছে আদালত। বুধবার বগুড়া জেলা ও দায়রা জজ নরেশ চন্দ্র সরকার এর আদালতে হাজির হয়ে আসামীরা জামিন আবেদন করলে তিনি এ আদেশ দেন।
সূত্রে জানা যায়, গত ৩ অক্টোবর রাতে কাহালু উপজেলা সদরের দুটি স্থানে কে বা কারা দুটি ককটেল বিস্ফোরন ঘটালে কাহালু উপজেলা আ’লীগের সাধারন সম্পাদক আব্দুল মান্নান বাদী হয়ে কাহালু থানায় ১৯৭৪ সালের বিশেষ ক্ষমতা আইনে ষড়যন্ত্রমুলক মিথ্যা মামলা করেন। এ মামলায় উপজেলা চেয়ারম্যান মাওলানা তায়েব আলীসহ বিএনপি ও জামায়াতের ২২জন নেতাকর্মীর নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত ৬০-৭০ জনকে আসামী করা হয়। এরপর আসামীরা হাইকোর্ট থেকে ৮ সপ্তাহের আগাম জামিন লাভ করেন।
জামিনের মেয়াদ শেষ হওয়ায় তায়েব আলীসহ জামায়াতের ৬ জন নেতাকর্মী বুধবার আদালতে হাজির হয়ে জামিন আবেদন করেন। আদালত আবেদন না মঞ্জুর করে কারাগারে পাঠান। অপর আসামীরা হলেন কাহালু সদর ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান জামায়াত নেতা মাওলানা আব্দুল মোমিন, কাহালু পৌরসভার কাউন্সিলর সাইফুল ইসলাম, ফখরুল ইসলাম, জাহাঙ্গীর আলম ও রিজওয়ানুল হক।
উল্লেখ্য, একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে জামায়াত নেতা মাওলানা তায়েব আলী মনোনয়নপত্র দাখিল করেন। কিন্তু উপজেলা চেয়ারম্যানের পদে থাকার অজুহাত দেখিয়ে তার মনোনয়নপত্র বাতিল করেন রিটার্নিং কর্মকর্তা।

মঙ্গলবার, ৬ সেপ্টেম্বর, ২০১৬

যেভাবে ফাঁসির মঞ্চে নেওয়া হয় মীর কাসেমকে

একাত্তরে মানবতাবিরোধী অপরাধে মৃত্যুদণ্ডাদেশপ্রাপ্ত জামায়াতে ইসলামীর নেতা মীর কাসেম আলীর ফাঁসি কার্যকর করার জন্য শনিবার বিকাল পাঁচটার পর অন্য বন্দীদের নিজ নিজ সেলে আটকে রাখা হয়। শুধু জল্লাদরা বাইরে ছিলেন। সন্ধ্যার পর মীর কাসেমের সঙ্গে পরিবারের সবাই দেখা করে কারাগার থেকে বের হয়ে যান। কাসেমের স্বজনরা কারাগার থেকে বের হওয়ার পরই কারা ফটক ও আশপাশের এলাকা পূর্ণ নিয়ন্ত্রণে নেয় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী।
কারাগার সূত্র বিষয়টি এনটিভি অনলাইনকে নিশ্চিত করেছে। রাত সাড়ে ৯টায় কারা মসজিদের ইমাম হাফেজ মুফতি হেলাল উদ্দিনকে সঙ্গে নিয়ে জ্যেষ্ঠ জেল সুপার প্রশান্ত কুমার বণিক ও জেল সুপার নাসির আহমদ কনডেম সেলে মীর কাসেমের কক্ষে যান। সেখানে মীর কাসেমের কাছে গিয়ে তাঁরা জানতে চান, তার কোনো কিছু খেতে ইচ্ছে করছে কিনা?

জবাবে মীর কাসেম আলী বলেন, ‘না’। এরপর মীর কাসেমকে জেল সুপার নাসির উদ্দিন বলেন, ‘এটাই আপনার শেষ রাত। এ রাতেই আপনার ফাঁসি কার্যকর করা হবে। এখন আপনাকে তওবা পড়তে হবে’। তখন মীর কাসেম বলেন, ‘আমি নিজেই তওবা পড়তে পারবো’। এরপর তিনি নিজেই তওবা পড়ে দুই রাকাত নফল নামাজ আদায় করেন।
এরপর ঊর্ধ্বতন কারা কর্তৃপক্ষের সামনে তাকে বিভিন্ন রকমের খাবার দেওয়া হয়। খাবারগুলোর মধ্যে ছিল গরুর মাংস, সবজি, ভাত, ডাল পায়েস ও কয়েক রকম ফল। কিন্তু তিনি শুধুমাত্র একটুখানি পায়েস খেয়েছেন বলে জানিয়েছে কারাসূত্র।
এ সময়ে কারা কর্তৃপক্ষ রায় কার্যকরের বিষয়ে আলোচনা করে। এসময় উপস্থিত ছিলেন আইজি প্রিজন সৈয়দ ইফতেখার উদ্দিন আহমেদ, ডিআইজি প্রিজন গোলাম হায়দার, জ্যেষ্ঠ জেল সুপার প্রশান্ত কুমার বনিক, কারাধ্যক্ষ (জেলার) নাসির উদ্দিন আহমদ, গাজীপুর জেলা প্রশাসক এস এম আলম, জেলা পুলিশ সুপারের প্রতিনিধি সার্কেল এএসপি মনোয়ার হোসেন, জয়দেবপুর থানার ওসি খন্দকার রেজাউল হাসান, গাজীপুর জেলা সিভিল সার্জন ডা. আলী হায়দার খান, কারা হাসপাতালের চিকিৎসক ডা. আহসান হাবীব।
রাত দশটায় আলোচনা শেষে প্রধান জল্লাদ শাহজাহানের নেতৃত্বে চারজন জল্লাদ কনডেম সেলে প্রবেশ করেন। কনডেম সেলে প্রবেশ করে মীর কাসেমকে জমটুপি পরিয়ে দেন জল্লাদ দীন ইসলাম। এরপর সেখান থেকে মীর কাসেমকে ফাঁসির মঞ্চে নিয়ে যাওয়া হয়। প্রধান জল্লাদ শাহজাহানের নেতৃত্ব চার জল্লাদ মীর কাসেম আলীকে ধরে ফাঁসির মঞ্চে নিয়ে যায়। এ সময় তিনি কোনো প্রকার হৈ চৈ করেননি। অনেকটা শান্ত ও স্থির ছিলেন।
তাকে আট ফুট দৈর্ঘ্য ও সাড়ে চার ফুট প্রস্থ বিশিষ্ট ফাঁসির মঞ্চে উঠানো হয়। মঞ্চটি ভূমি থেকে বেশ উঁচু। মঞ্চ থেকে নিচের দিকে ১২ ফুট গভীর গর্ত আছে। সেই গর্তটি কাঠের পাটাতন দিয়ে ঢাকা। রাত সাড়ে দশটার সময় জেলা প্রশাসক হাত থেকে লাল রুমাল নিচে ফেলে দেন। সঙ্গে সঙ্গে লিভারে চাপ দেয় জল্লাদ শাহজাহান। পায়ের নিচ থেকে সরে যায় পাটাতন। ফাঁসির দড়িতে ঝুলতে থাকে মীর কাসেম আলী।
ফাঁসি কার্যকরের সময় মঞ্চ সংলগ্নস্থানে একটি লম্বা টেবিলের সঙ্গে বেশকিছু চেয়ার পাতা হয়। তাতে পাশাপাশি বসেন ১০ জন কর্মকর্তা। প্রায় ২০ মিনিট ফাঁসির দড়িতে ঝুলিয়ে রাখার পর মীর কাসেমের লাশ তুলে টেবিলে রাখা হয়। লাশ পরীক্ষা-নিরীক্ষা করেন সিভিল সার্জন ডা. আলী হায়দার। এরপর গোসল শেষে মীর কাসেমের মরদেহ কফিনে করে অ্যাম্বুলেন্সে তোলা হয়। শনিবার দিবাগত রাত সাড়ে ১২টার দিকে লাশবাহী অ্যাম্বুলেন্স নিয়ে মানিকগঞ্জের উদ্দেশ্যে রওয়ানা হয় পুলিশ।
সূত্রঃ এনটিভি

শনিবার, ৩ সেপ্টেম্বর, ২০১৬

মীর কাসেম আলীর মৃত্যুদন্ড কার্যকর

সামছুল আরেফীন, তোফাজ্জল হোসেন কামাল, ইব্রাহিম খলিল, রেজাউল বারী বাবুল : বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য মীর কাসেম আলীর মৃত্যুদ- কার্যকর করা হয়েছে। ইন্নালিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন। গতকাল শনিবার দিবাগত রাত ১০টা ৩০ মিনিটে গাজীপুরের কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগার পার্ট-২ এ ফাঁসিতে ঝুলিয়ে তার মৃত্যুদ- কার্যকর করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) এ কে এম শহীদুল হক। পরে ঢাকা রেঞ্জের ডিআইজি মাহফুজুল হক নুরুজ্জামানও কারাগার থেকে বের হয়ে সাংবাদিকদের বলেন, রাত সাড়ে দশটার পর ফাঁসি কার্যকর করা হয়। ২০ মিনিট তাকে ফাঁসির মঞ্চে ঝুলিয়ে রাখা হয়। কাশিমপুর কারাগার-২ সূত্র জানায়, শনিবার দুপুরের পর কারাগারের ভেতরে মঞ্চে চূড়ান্ত মহড়ায় চার জল্লাদ অংশ নেন। তারা হলেন শাহজাহান, দ্বীন ইসলাম, রিপন ও শাহীন। রাতে জল্লাদ শাহজাহানের নেতৃত্বে ফাঁসি কার্যকর করে তারা। 
কারা কর্তৃপক্ষ জানায়, মীর কাসেম আলীর মৃত্যুদ- কার্যকরের পর লাশের সুরতহাল রিপোর্ট সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের উপস্থিতিতে সম্পন্ন করা হয়। এরপর ময়নাতদন্ত শেষে পুলিশ-র‌্যাবের কড়া নিরাপত্তায় রাত সাড়ে ১২টার দিকে এ্যাম্বুলেন্সে করে মীর কাসেম আলীর লাশ গ্রামের বাড়ির উদ্দেশ্যে রওনা হয়। অসিয়ত অনুযায়ী মানিকগঞ্জের হরিরামপুর উপজেলার চালা জামে মসজিদের পাশে তাকে দাফন করার কথা রয়েছে।
মানিকগঞ্জের স্থানীয় সূত্রগুলো জানায়, চালাগ্রামের মীরবাড়ি জামে মসজিদের পশ্চিম পাশে তার দাফনের ব্যবস্থা করা হয়েছে। এখানে কবর খননে সহায়তা করেন মীর কাসেম আলী প্রতিষ্ঠিত এতিমখানার এতিমরা। তদারক করেন স্থানীয় প্রশাসনের উর্ধ্বতন কর্মকর্তাবৃন্দ। এর আগে স্থানীয় প্রশাসন গোটা এলাকায় নিরাপত্তা জোরদার করে। এর মধ্যেই রাত সাড়ে ১০টার দিকে পরিবারের সদস্যরা ৫টি গাড়িতে করে এলাকায় যান। তাদেরকে দেড় মাইল দূরে কলতাবাজার বেইলী ব্রীজের কাছে আইনশৃংখলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা পথরোধ করে। পরে তারা ৩টি গাড়িতে করে বাড়ির উদ্দেশ্যে রওনা দেন। পথে কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা গড়ে তোলে আইন শৃংখলা বাহিনী। কাউকেই মীর কাসেম আলীর বাড়ির দিকে যেতে দেয়া হচ্ছে না বলে স্থানীয়রা জানিয়েছেন। 
গাজীপুরের কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগার-২-এর ৪০ নম্বর ফাঁসির সেলে ছিলেন মীর কাসেম আলী। গতকাল তাঁর ফাঁসি কার্যকরের নির্বাহী আদেশ স্বরাষ্ট্রমন্ত্রনালয় থেকে বিশেষ বাহক মারফতে কড়া নিরাপত্তায় কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগার কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠানোর পরই ফাঁসি কার্যকরের সব প্রস্তুতি নেয় কারা কর্তৃপক্ষ। সরকারের নির্বাহী আদেশ দুপুরে কারাগারে প্রবেশের পরপরই দৃশ্যপট দ্রুত বদলাতে শুরু করে। সময় গড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে রাতেই ফাঁসি কার্যকরের লক্ষণ স্পষ্ট হতে থাকে। ওই সময় কারাগার এলাকার নিরাপত্তা কয়েকগুণ বাড়ানো হয়। পুলিশের পাশাপাশি কারাগারের ফটকে সারিবেঁধে অবস্থান নেন বিপুলসংখ্যক র‌্যাব সদস্য। কারাগারের আরপি চেকপোস্ট সংলগ্ন দোকানপাট দুপুরেই বন্ধ করে দেয়া হয়। গতকাল সকাল থেকে কাশিমপুর কারাগারের চারপাশে বাড়তি নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়। পোশাকে ও সাদাপোশাকে কাজ করেছেন পুলিশ, র‌্যাবসহ একাধিক গোয়েন্দা সংস্থার সদস্যরা। কোনো প্রকার অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে নিরাপত্তার স্বার্থে রাজধানী ঢাকা ও গাজীপুরে ১০ প্লাটুন বিজিবি সদস্য মোতায়েন করা হয়। সন্ধ্যার পরই তাদের টহল জোরদার করা হয় সংশ্লিষ্ট এলাকাগুলোতে।
বিকাল সোয়া ৪টার দিকে কারাগারে ঢোকে ফায়ার সার্ভিসের একটা গাড়ি। পুলিশের একটি জলকামান আগের রাতেই কারাগারের ভেতরে নিয়ে রাখা হয়েছিল। অতিরিক্ত আইজি (প্রিজন্স) কর্নেল ইকবাল হাসানকে দুপুর দেড়টার দিকে কাশিমপুর কারাগারে ঢুকতে দেখা যায়। এরপর বিকাল ৪টায় কারাগারে যান ডিআইজি (প্রিজন্স) গোলাম হায়দার। বিকাল চারটা ১৫ মিনিটে মীর কাসেমের সঙ্গে শেষ দেখা করতে কাশিমপুর কারাগারে যান তার পরিবারের সদস্যরা। এ সময়েই কারাগারে মৃত্যুদ- কার্যকরের নির্বাহী আদেশ পাঠানো হয়েছে বলে জানান স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী  আসাদুজ্জামান খাঁন মিয়া।
মীর কাসেমের স্বজনরা বেরিয়ে যাওয়ার পর ভেতরে যান কারা মহাপরিদর্শক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল সৈয়দ ইফতেখার উদ্দীন। পরে গাজীপুরের জেলা প্রশাসক (জেলা ম্যাজিস্ট্রেট) এসএম আলাম, সিভিল সার্জন আলী হায়দার খান, অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট রাহেনুল ইসলামসহ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা কারাগারের ভেতরে ঢোকেন রাত সাড়ে ৯টার দিকে।
এর আগেই নিয়ম অনুযায়ী মীর কাসেম আলীর স্বাস্থ্য পরীক্ষা সম্পন্ন হয়। এরপর তাকে ফাঁসির সেল থেকে নেয়া হয় ফাঁসির মঞ্চে।
সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায় কারাগার থেকে বেরিয়ে যাওয়ার সময় মীর কাসেমের স্ত্রী খন্দকার আয়েশা খাতুন সাংবাদিকদের বলেন, “যারা ফাঁসি দিচ্ছে তারা জয়ী হবে না। এই মৃত্যু শহীদের সামিল।” তিনি বলেন, ‘তিনি (মীর কাসেম আলী) আমাকে বলেছেন, তাঁকে ফাঁসির কথা জানানো হয়েছে। মানিকগঞ্জে তাঁকে দাফন করা হবে।’ মীর কাসেম আলীর শেষ ইচ্ছার কথা জানিয়েছেন কি না, জানতে চাইলে আয়েশা খাতুন বলেন, শেষ মুহূর্তেও ছেলের সঙ্গে দেখা না হওয়ায় আক্ষেপ করেছেন তিনি।
মীর কাসেম আলীর মৃত্যুদ-ের রায় পুনর্বিবেচনার (রিভিউ) আবেদন গত মঙ্গলবার খারিজ করে দেন দেশের সর্বোচ্চ আদালত। ওইদিন সকালে এই রায় ঘোষণার পর বিকেলেই পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশিত হয়। 
প্রাণভিক্ষা চাইবেন না বলে জানালো কারা কর্তৃপক্ষ : মীর কাসেম আলী রাষ্ট্রপতির কাছে প্রাণভিক্ষা চাইবেন না বলে গত শুক্রবার জানায় কারা কর্তৃপক্ষ। বিকাল সোয়া ৪টায় সাংবাদিকদের কাশিমপুর কারাগার-২ এর জেল সুপার প্রশান্ত কুমার বণিক বলেন, আমরা দুপুরের পর আবারও তার সিদ্ধান্ত জানতে চেয়েছিলাম। উনি জানিয়েছেন, রাষ্ট্রপতির কাছে প্রাণভিক্ষা চাইবেন না। 
রিভিউ খারিজের পর পরিবারের সাক্ষাৎ : ৩১ আগষ্ট রিভিউ খারিজের রায় পর বিকেলে পরিবারের সদস্যরা মীর কাসেম আলীর সাথে কারাগারে সাক্ষাত করেন। মীর কাসেম আলীর স্ত্রী খন্দকার আয়েশা খাতুন এবং দুই মেয়ে সুমাইয়া রাবেয়া ও তাহেরা তাসনিম, পুত্রবধূ শাহেদা তাহমিদা ও তাহমিনা আক্তার এবং ভাতিজা হাছান জামাল খান এবং ছেলে ও মেয়ের ঘরের ৩জন নাতি নাতনি বুধবার বেলা ২টার দিকে কাশিমপুর কারাগারে পৌঁছান। স্বাক্ষাৎ শেষে বিকাল পৌনে চারটায় দিকে কারাগার ত্যাগ করেন তারা।
এ সময় মীর কাসেম আলী তার ছেলেকে কাছে পেতে চান এবং ছেলের সাথে কথা বলেই রাষ্ট্রপতির কাছে প্রাণ ভিক্ষার আবেদন সংক্রান্ত বিষয়ে মতামত জানানো হবে বলে জানান তার স্ত্রী খোন্দকার আয়েশা খাতুন। তিনি সাংবাদিকদের মাধ্যমে সরকারের কাছে তাদের ছেলেকে ফেরত চেয়েছেন।
কারাগারে রায়ের কপি : ৩১ আগষ্ট রিভিউ খারিজের রায় প্রকাশিত হওয়ার পর অনুলিপি সন্ধ্যা সোয়া ৬টার দিকে ট্রাইব্যুনালে পৌঁছায়। ৭ টা ১০ মিনিটের দিকে ট্রাইব্যুনালের কর্মকর্তারা রায়ের অনুলিপি নিয়ে কারাগারের উদ্দেশে যাত্রা শুরু করেন। সেখান থেকে রায়ের অনুলিপি কেন্দ্রীয় কারাগারে পৌঁছে।
কারা কর্তৃপক্ষ জানান, পরদিন সকালে সকাল সাড়ে ৭টার দিকে মীর কাসেম আলীকে তার রিভিউ আবেদন খারিজ হওয়ার রায় পড়ে শোনানো হয়। 
মামলার ধারাক্রম : মীর কাসেম আলীর মৃত্যুদন্ডের রায় পুনর্বিবেচনার আবেদন (রিভিউ) গত মঙ্গলবার খারিজ করে দেয় সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ। ডিসমিসড’ এক শব্দে আদালত রিভিউ আবেদনটি খারিজ করেন। পরে বিকাল ৫ টা ১৫ মিনিটের দিকে রিভিউ খারিজের রায় সুপ্রিম কোর্টের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত হয়।
গত ২৫ জুলাই রিভিউ শুনানির জন্য প্রস্তুতিতে দু’ মাস সময় চাইলে সর্বোচ্চ আদালত এক মাস শুনানি পিছিয়ে দেন। ওইদিন মীর কাসেম আলীর প্রধান আইনজীবী ও সুপ্রিম কোর্ট বার এসোসিয়েশনের সাবেক সভাপতি খন্দকার মাহবুব হোসেন রিভিউ শুনানির দুই মাসের সময় আবেদন করেন। এর প্রেক্ষিতে আদালত এক মাসের সময় মঞ্জুর করেন। ওই দিনই ২৪ আগস্ট রিভিউ শুনানির পরবর্তী দিন নির্ধারণ করেন আদালত। এর ধারাবাহিকতায় ২৩ আগস্ট শুনানির জন্য কার্যতালিকায় আসে। পরদিন বুধবার শুনানি শুরু হয়ে আবার ২৮ আগস্ট দিন ধার্য করা হয়। সে অনুযায়ী শুনানি শেষে ৩১ আগষ্ট রায়ের দিন ধার্য করা হয়।
গত ১৯ জুন আপিল বিভাগের মৃত্যুদন্ডের রায় পুনর্বিবেচনা চেয়ে আবেদন করেন মীর কাসেম আলী। রিভিউ দাখিলের একদিন পরেই সরকার পক্ষ দিন ধার্যের জন্য আবেদন করে। পরে ২১ জুন আপিল বিভাগের চেম্বার জজ বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী রিভিউ শুনানির জন্য ২৫ জুলাই দিন ধার্য করেন। এরই ধারাবাহিকতায় বিষয়টি আপিল বিভাগের ২৫ জুলাইর কার্যতালিকায় আসে। 
এর আগে গত ৬ জুন মীর কাসেম আলীর মৃত্যুদন্ড বহাল রেখে পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশ করে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ। 
গত ৮ মার্চ মীর কাসেম আলীর আপিল আংশিক মঞ্জুর করে তিনটি অভিযোগ থেকে তাকে অব্যাহতি এবং সাতটি অভিযোগে সাজা বহাল রাখেন সুপ্রিম কোটের্র আপিল বিভাগ। এরমধ্যে ১১ নম্বর অভিযোগে কিশোর মুক্তিযোদ্ধা জসিম উদ্দিন হত্যার অভিযোগে ট্রাইব্যুনালের দেয়া মৃত্যুদন্ডের রায় বহাল রাখেন আপিল বিভাগ। 
২০১৪ সালের ২ নবেম্বর আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-২ এর চেয়ারম্যান বিচারপতি ওবায়দুল হাসানের নেতৃত্বে দু’ সদস্য মীর কাসেম আলীর বিরুদ্ধে মৃত্যুদন্ডের রায় প্রদান করেন। ওইদিন মোট ৩৫১ পৃষ্ঠার রায়ের মধ্যে ১১ পৃষ্ঠার সংক্ষিপ্ত রায় পড়ে শোনায় ট্রাইব্যুনাল। 
একই বছরের ৩০ নবেম্বর ট্রাইব্যুনালের দেয়া মৃত্যুদন্ডের রায় থেকে খালাস চেয়ে আপিল করেন মীর কাসেম আলী। তার পক্ষে আইনজীবীরা আপিলটি দাখিল করেন। আপিলটি পাঁচটি ভলিউমে ১৭৫০ পৃষ্ঠার। ১৫০ পৃষ্ঠার আপিলে ১৮১টি যুক্তিতে খালাস চাওয়া হয়েছিল। 
২০১২ সালের ১৭ জুন মীর কাসেম আলীর বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করলে ওই দিনই তাকে গ্রেফতার করে বিকেল সোয়া চারটার দিকে ট্রাইব্যুনালে নিয়ে আসে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী।

মীর কাসেম আলী ‌মৃত্যুকে ভয় পান না : আয়েশা খাতুন

নিজস্ব প্রতিবেদক : মীর কাসেম আলীর স্ত্রী খোন্দকার আয়েশা খাতুন বলেছেন, তার স্বামী মৃত্যুকে ভয় পান না। তিনি মৃত্যুর জন্য প্রস্তুত আছেন। তিনি শহীদ হবেন। যারা মিথ্যা মামলা দিয়ে তাকে মৃত্যুর মুখোমুখি করেছে তারা পরাজিত হবে।
আজ শনিবার সন্ধ্যায় মীর কাসেম আলীর সাথে সাক্ষাৎ শেষে কাশিমপুর কারাগার থেকে বের হয়ে তিনি সাংবাদিকদের এ কথা বলেন।
তিনি আরো বলেন, শেষ মুহূর্তে ছেলের সাক্ষাৎ না পাওয়ায় মনের কষ্টে আছেন মীর কাসেম আলী।
এর আগে বেলা তিনটা ৪৫ মিনিটে পরিবারের সদস্যরা কাশিমপুর কারাগার কম্পাউন্ডে প্রবেশ করেন। মীর কাসেম আলীর স্ত্রী খন্দকার আয়শা খাতুন, মেয়ে সুমাইয়া রাবেয়া ও তাহেরা তাছনিম, ছেলের স্ত্রী সাইয়েদা তাহমিদ আক্তার ও তাহমিনা আক্তার, বড় ভাই ডা: মীর নাছিম আলী, ভাইয়ের ছেলে মীর ওসমান বিন নাছিম, ভাইয়ের মেয়ে রায়হানা নাছিমসহ ৪৫ জন সদস্য তার সাথে দেখা করতে কারাগারে যান।
তবে কারা কর্তৃপক্ষ স্ত্রী, দুই মেয়ে, দুই ছেলের স্ত্রী, ভাই, ভাতিজা ও ভাতিজিসহ ২৫ জনকে মীর কাসেম আলীর সাথে দেখা করার অনুমতি দেয় বলে জানা গেছে।
বিকেল চারটা ৩৫ মিনিটে তাদের সাক্ষাতের জন্য ভেতরে নেয়া হয়। সাক্ষাৎ শেষে ছয়টা ৪০ মিনিটে কারাগার থেকে বেরিয়ে যান তারা।
শনিবার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে মিরপুর বাসা থেকে গাজীপুরের কাশিমপুর কারাগারের উদ্দেশে তারা যাত্রা করেন তারা। এর আগে বিকেল সাড়ে তিনটায় সাক্ষাতের সময় দেয় কারা কর্তৃপক্ষ।

বুধবার, ৩১ আগস্ট, ২০১৬

মীর কাসেম আলীর ফাঁসির রায় স্থগিতের আহ্বান জাতিসংঘের

বিডিমর্নিং ডেস্ক-প্রকাশঃ আগস্ট ২৬, ২০১৬ঃ জামায়াত নেতা মীর কাসেম আলীর মৃত্যুদণ্ডাদেশ স্থগিতের আহ্বান জানিয়েছে জাতিসংঘের মানবাধিকার বিশেষজ্ঞরা। পাশাপাশি আন্তর্জাতিক মান বজায় রেখে মীর কাসেম আলীর পুনর্বিচারের আহ্বানও জানানো হয়েছে সরকারকে।
মীর কাশেম আলীর রিভিউ শুনানির আগে, তার ছেলে ও ডিফেন্স টিমের সদস্য ব্যারিস্টার মীর আহমেদ বিন কাসেমকে আটকের ঘটনায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন জাতিসংঘের মানবাধিকার বিশেষজ্ঞরা।
বিচার বহির্ভূত হত্যাকান্ড, বিচার বিভাগের স্বাধীনতা, নির্যাতন, বিনা বিচারে আটক ও জোরপূর্বক অপরহণ বিষয়ক জাতিসঙ্ঘের বিশেষজ্ঞরা গত মঙ্গলবার জেনেভা থেকে দেয়া এক বিবৃতিতে এ আহব্বান জানায়।
বিবৃতিতে বলা হয়, ১৯৭১ সালে স্বাধীনতা যুদ্ধ চলাকালে মানবতাবিরোধী অপরাধের জন্য বাংলাদেশের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল (আইসিটি) ২০১৪ সালে মীর কাসেম আলীকে মৃত্যুদন্ড দেন। আইসিটির দেয়া রায় গত ৮ মার্চ সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ বহাল রাখেন।
এতে বলা হয়, মৃত্যুদন্ড প্রয়োগে সুষ্ঠু বিচার ও যথাযথ প্রক্রিয়া-সংক্রান্ত আন্তর্জাতিক মান বজায় না রাখার অভিযোগ রয়েছে।
বিবৃতিতে বলা হয়, আন্তর্জাতিক আইন অনুযায়ী, যা অনুসরণ করতে বাংলাদেশের বাধ্যবাধকতা রয়েছে, সর্বোচ্চ সাজা দেয়ার ক্ষেত্রে অবশ্যই ন্যায্য বিচার ও যথাযথ প্রক্রিয়া অনুসরণ করতে হবে। অন্যথায় সাজা কার্যকর বিবেচনা করতে হবে।
বিশেষজ্ঞরা বলেন, সাজা হিসেবে মৃত্যুদন্ড অমানবিক। তাই তার প্রক্রিয়া হতে হবে স্বচ্ছ। মীর কাসেম আলীর ছেলে ও তার ডিফেন্স টিমের আইনজীবী মীর আহমেদ বিন কাসেমকে গত ৯ আগস্ট তার বাসা থেকে তুলে নিয়ে যাওয়ার ব্যাপারেও উদ্বেগ প্রকাশ করেছে মানবাধিকার বিষয়ক জাতিসংঘ বিশেষজ্ঞ দল।
তাদের মতে, মীর কাসেম আলীর রিভিউ শুনানির দুই সপ্তাহ আগে কী সন্দেহ বা অভিযোগে, কাদের দ্বারা এবং কোথায় তার ছেলেকে আটকে রাখা হয়েছে, এ ব্যাপারে কোনো তথ্য পাওয়া যাচ্ছে না। মীর আহমেদ বিন কাশেমের অবস্থান সম্পর্কে অবিলম্বে জানানোর জন্য জাতিসঙ্ঘের বিশেষজ্ঞরা বাংলাদেশের কর্তৃপক্ষের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে।
বিবৃতিদাতা বিশেষজ্ঞরা হলেন, মিস এজেন্স চেল্লেমার্ড, মিস. মোনিকা পিন্টু, মি. জোয়ান ই. মিনডেজ, মি. সিটোনডিজেই রোল্যান্ড আডিজুভি।

মঙ্গলবার, ৩০ আগস্ট, ২০১৬

Verdict against Mir Quasem based on false charges, depositions: Khandaker Mahbub

Amader Bangladesh Online News Desk:  Advocate Khandaker Mahbub Hossain, chief counsel of Mir Quasem Ali, said his client has been sentenced to death based on false charges and depositions of fake witnesses.
"Mir Quasem has been deprived of justice. Fake witnesses were prepared keeping them at Safe Home to give false depositions. The prosecution submitted false documents. I repeatedly shouted that the verdict has been taken away by bringing false charges and producing fake evidences against him,” he said.
Khandaker Mahbub came up with this observation while expressing his reaction to the reporters after the Appellate Division of the Supreme Court dismissed Quasem’s review plea against his death sentence.
Asked to comment on the verdict, Mahbub said that it is not possible for him to say the verdict is “not right”.
“I have nothing to say about the verdict. As a lawyer I have to accept it. According to law, whatever verdict the apex court delivers is the justice. But the future, the future generation and people of law arena throughout the world will examine whether the verdict against Mir Quasem was correct or not,” he added.

বৃহস্পতিবার, ৪ আগস্ট, ২০১৬

সাকা চৌধুরীর স্ত্রী ও ছেলেকে ডিবি পরিচয়ে তুলে নেওয়ার অভিযোগ

আমাদের বাংলাদেশ অনলাইন নিউজ ডেস্ক, ০৪ আগষ্ট, ২০১৬ইং বৃহস্পতিবারঃ বিরোধী অপরাধের মামলায় ফাঁসির কাষ্ঠে দন্ডিত বিএনপি নেতা সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরীর স্ত্রী ও ছেলেকে ডিবি পরিচয়ে তুলে নেওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে।
বৃহস্পতিবার ঢাকার নিম্ন আদালতে হাজিরা দিতে গেলে এ ঘটনা ঘটে বলে হুম্মাম কাদের চৌধুরীর পিএস মিনহাজ উদ্দিন চৌধুরী শিবলী সাংবাদিকদের জানান।
তিনি জানান, আদালতে হাজিরার সময় হুম্মাম কাদের চৌধুরী ও তার মা ফারহাত কাদের চৌধুরী উপস্থিত ছিলেন। এ সময় তাদেরকে ডিবি পরিচয় দিয়ে আদালত প্রাঙ্গণ থেকে তুলে নিয়ে যাওয়া হয়।
উৎসঃ আলোতিক নিউজ

বুধবার, ৩০ মার্চ, ২০১৬

সাক্ষী নান্নু বিতর্কের অবসান ছাড়াই কি মাওলানা নিজামীর ফাঁসি হবে! -অলিউল্লাহ নোমান


জামায়াতে ইসলামীর আমীর মাওলানা মতিউর রহমান নিজামী সুপ্রিমকোর্টে বিভিউ আবেদন দায়ের করেছেন। ফাঁসির দন্ড পুন:বিবেচনার জন্য গতকাল ২৯ মার্চ আবেদনটি দায়ের করা হয়। রিভিউ-এর রায় কি হয় সেটা অতীতের মামলা গুলো কিছুটা আভাস দেয়। রিভিউ-এর রায় অতীতের মত হলে কত গুলো প্রশ্ন অমিমাংশিত থেকে যাবে। কোন প্রশ্নের চুড়ান্ত মিমাংশা ছাড়া কি সন্দেহের উর্ধ্বে উঠা যায়! আর সন্দেহের উর্ধ্বে না উঠে কাউকে কি চুড়ান্ত দন্ড ফাঁসি দেয়া যায়! সন্দেহের উর্ধ্বে উঠতে হলে মাওলনা মতিউর রহমান নিজামীর মামলা চলাকালীন সাক্ষী সামসুল হক নান্নুকে নিয়ে উঠা বিতর্কের চুড়ান্ত অবসান হওয়া দরকার। নতুবা প্রশ্নের মিমাংশা ছাড়াই একটা মানুষকে খুনের হুকুম দেয়া ছাড়া ন্যায় বিচার বলা যাবে না।
স্কাইপ স্ক্যান্ডালে উঠে এসেছিল কিভাবে সরকার, প্রসিকিউশন এবং ট্রাইব্যুনালের মধ্যে গোপন ষড়যন্ত্র এবং যোগসাজ রয়েছে। এতে পরিস্কার হয়ে যায়, কতিপয় নেতাকে ফাঁসির দন্ড দিতেই সরকার, প্রসিকিউশন এবং ট্রাইব্যুনালের যৌথ ষড়যন্ত্র। স্কাইপ স্ক্যান্ডালে ট্রাইব্যুনালের প্রথম চেয়ারম্যান নিজামুল হক নাসিমের জবানীতে উঠে এসেছিল ষড়যন্ত্রের রোল মডেল। তিনি নিজেই বলেছিলেন, প্রসিকিউটর জিয়াদ আল মালুম তাঁকে বলেছেন-‘আমি খাড়াইয়া যামু, আপনি বসায়া দেবেন, লোকে বোঝবে আমাদের মাঝে কোন সম্পর্ক নাই।’ নাসিমের জবানীতে আরো উঠে এসেছিল আইনমন্ত্রী কিভাবে ডিকটেট করছে বিচার কাজ পরিচালনায় এবং তৎকালীন আইন প্রতিমন্ত্রী তাঁকে রায়ের জন্য কিভাবে তাগিদ দিয়েছেন। বিচারপতি এ কে এম জহিরুল হককে আইনমন্ত্রী ডেকে নিয়ে কিভাবে পদত্যাগ পত্র রেখে বিদায় দিলেন সেটাও উঠে এসেছিল নিজামুল হক নাসিমের জবানীতে।
মাওলনা নিজামীর মামলা ট্রাইব্যুনালে চলাকালীন আরেকটি স্ক্যান্ডাল প্রকাশিত হয় সাক্ষী অ্যাডভোকেট সামসুল হক নান্নুর জবান দিয়ে। সাক্ষী সামসুল হক নান্নু এক ভিডিও সাক্ষৎকারে জানিয়েছেন তিনি মাওলানা নিজামীকে ১৯৮৬ সালে জাতীয় ইলেকশনের আগে চিনতেন না। ১৯৮৬ সালে পাবনার সাথিয়া থেকে জামায়াতে ইসলামীর প্রার্থী হওয়ার পর তিনি মাওলানা মতিউর রহমান নিজামীকে ব্যক্তিগতভাবে চিনতে পারেন। এর আগে কোনদিন সরাসরি দেখেননি। কিভাবে তাঁকে এ মামলায় নিজামীর বিরুদ্ধে অন্যতম প্রধান সাক্ষী বানানো হয়েছে, এই বর্ণনাও দিয়েছেন তিনি সেই ভিডিও সাক্ষাৎকারে। ভিডিও সাক্ষাৎকারে উঠে এসেছে সামসুল হক নান্নুকে কিভাবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সাক্ষী হতে নির্দেশ দিয়েছেন। সাবেক স্বরাষ্ট্রপ্রতিমন্ত্রী কিভাবে তাঁকে সাক্ষী হওয়ার জন্য চাপ সৃস্টি করেছিলেন এবং সেনা সদর দফতরে নিয়ে তাঁকে কিভাবে আটকে রাখা হয়, সেই বর্ণনাও অকপটে দিয়েছেন তিনি। সামসুল হক নান্নুর ভিতিও সাক্ষাৎকারের বক্তব্য থেকেই স্পষ্ট তাঁকে সাক্ষ্য হিসাবে উপস্থাপনের পেছনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, সেনা বাহিনী এবং সাবেক স্বরাষ্ট্রপ্রতিমন্ত্রী শামসুল হক টুকু সরাসরি জড়িত। এই সাক্ষ্য তাঁকে দিতে বলা হয়েছে সরকারের সাজানো চক অনুযায়ী। সত্য সাক্ষ্য নয়। এমন নয় যে, তিনি ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী। সাক্ষী দিতে রাজি হচ্ছিলেন না। তাঁকে চাপ সৃস্টি করে রাজি করানো হয়েছে। তিনি ঘটনা সম্পর্কে কিছুই জানতেন না। সরকারি ষড়যন্ত্রে তৈরি করা সাজানো ঘটনা তাঁকে দিয়ে বলানো হয়েছে মাত্র। এই সাজানো ঘটনা বলতে তিনি কিভাবে রাজি হয়েছেন সেই বর্ণনাই দিয়েছেন ভিডিও সাক্ষাৎকারে। ইউটিউভে প্রচারিত হওয়া ভিডিও সাক্ষাৎকারটি এখানে লিঙ্ক দেয়া হল। ——-
https://www.youtube.com/watch?v=SwDgPD_LXLw

এই ভিডিও সাক্ষাৎকার সোস্যাল মিডিয়ায় প্রচারিত হলে তোলপাড় শুরু হয়। তখন প্রসিকিউশন সামসুল হক নান্নুকে ট্রাইব্যুনাল ভবনে একটি সংবাদ সম্মেলনে হাজির করে। এ সংবাদ সম্মেলনে নান্নু এসে দাবী করেন ভিডিও চিত্রে ধারন করা ব্যক্তিটি তিনি। এখানে তাঁর নাম ব্যবহার করা হয়েছে। ভিডিও চিত্রে ধারন করা ব্যক্তি তিনি নন। তাঁর বক্তব্য অনুযায়ী পার্থক্য কিছুটা রয়েছে। সংবাদ সম্মেলনে হাজির হওয়া নান্নুর গোফ রয়েছে। ভিডিও সাক্ষাৎকারে প্রচারিত নান্নুর গোফ নেই। বলা হয়, সোস্যাল মিডিয়া প্রচারিত নান্নুর ভিতিও বক্তব্য হচ্ছে মামলা ভিন্নখাতে প্রবাহিত করতে একটি ষড়যন্ত্র।
কিন্তু পরবর্তিতে অনুসন্ধানে দেখা যায়, সংবাদ একমাত্র সম্মেলনেই নান্নুর গোফ রয়েছে। অন্য সব জায়গায় উপস্থিত নান্নুর কোন গোফ নেই। সাক্ষ্য দেয়ার জন্য একটি ঘটনাস্থলে উপস্থিত সামসুল হক নান্নুর একটি ভিডিও চিত্র রয়েছে। সেখানে তদন্ত সংস্থার কর্তকর্তা, প্রসিকিউশনের সদস্যসহ অনেক লোকজন রয়েছেন। সবার সামনে ভিডিও চিত্রে নিজের পরিচয় দিচ্ছেন তিনি সুপ্রিমকোর্টের আইনজীবী। পাবনা বার-এ তিনি প্র্যাকটিস করেন। পাবনা জেলা আওয়ামী লীগের আইন বিষয়ক সম্পাদক।
নান্নুর সাক্ষ্য মাওলানা মতিউর রহমান নিজামীকে ফাঁসি দিতে সহায়তা করেছে। সাক্ষী হিসাবে তাঁর বক্তব্য আমলে নিয়েই নিজামীর দন্ড দেয়া হয়। অথচ নান্নু ভিডিও সাক্ষাৎকারে বলেছেন, তিনি মাওলানা মতিউর রহমান নিজামীকে ১৯৮৬ সালের জাতীয় নির্বাচনের আগে কোন দিন সরাসরি দেখেননি। তাকে সরকারি সাজানো চকে সাক্ষ্য দিতে রাজি করানো হয়েছে। রাজি করাতে তাঁর উপর চাপ সৃস্টির একটা বর্ণনাও তিনি দিয়েছেন। এই নান্নুর সাক্ষীতেই আবার মাওলনা নিজামীর ফাঁসিও দেয় আদালত।
সরকার পক্ষের দাবী হচ্ছে ভিডিও সাক্ষাৎকারে প্রচারিত বক্তব্য নান্নুর সংবাদ সম্মেলনের দাবী অনুযায়ী তিনি দেননি। একটি বিচারকে প্রশ্নবিদ্ধ করতে এই ভিডিও সাক্ষাৎকার হচ্ছে ষড়যন্ত্র। কিন্তু আসামী পক্ষের দাবী হচ্ছে ভিডিওসাক্ষাৎকার এবং প্রসিকিউশনের সাক্ষী নান্নু একই ব্যক্তি। ট্রাইব্যুনাল এবং আপিল বিভাগ আসামী পক্ষের দাবীকে কোন পাত্তাই দেয়নি। ভিডিও সাক্ষাৎকারে প্রচারিত বক্তব্য যিনি দিয়েছেন তিনি এবং প্রসিকিউশনের সাক্ষী হিসাবে হাজির হওয়া নান্নু একই ব্যক্তি কি না এটা পরীক্ষার দায়িত্ব হচ্ছে আদালতের। পরীক্ষা নীরিক্ষা ছাড়া সন্দেহের উর্ধ্বে উঠে সম্ভব নয়। সন্দেহের উর্ধ্বে না উঠে কাউকে মৃত্যুদন্ড দেয়াও আইনের দৃষ্টিতে অপরাধ। প্রশ্ন হচ্ছে আমাদের সুপ্রিমকোর্ট কি আইনের উর্ধ্বে উঠে সরকারি চক অনুযায়ী সাজানো ঘটনায় একটি রাজনৈতিক দলের প্রধান এবং একধিকবার জনগরে রায়ে নির্বাচিত সাবেক সংসদ সদস্যকে মৃত্যুদন্ড দেবেন?
ভিডিও সাক্ষাৎকারে প্রচারিত নান্নু আর সাক্ষ্য হিসাবে হাজির হওয়া নান্নু একই ব্যক্তি কিনা সেটা পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা কি খুব কঠিন বিষয়! দুনিয়াতে এখন প্রযুক্তির শেষ নেই। মানুষের ভয়েস, ফটো পরীক্ষা করার অনেক কৌশল আবিস্কার হয়েছে। হাত বাড়ালেই এসব প্রযুক্তি এবং সংশ্লিস্ট বিষয়ে এক্সপার্ট পাওয়া যায়। অতি সম্প্রতি গত ২৩ মার্চ লন্ডনের ইমেগ্রেশন আপার ট্রাইব্যুনালে একটি রায় হয়েছে। এই মামলা চলাকালীন ভয়েস এক্সপার্ট ডাকা হয়। এক ছাত্রের ভয়েস এবং সংশ্লিষ্ট দফতরের মৌখিক ইংলিশ টেষ্ট পরীক্ষায় ধারন করা ভিডিও’র ভয়েস একই ব্যক্তির কিনা, সেটা পরীক্ষা করা হয়। মামলাটি ছিল হোম অফিস ওই ছাত্রের ভিসা বাতিল করে দেয়। অভিযোগ হচ্ছে, মৌখিক ইংলিশ টেষ্ট নিজে না দিয়ে অন্যের মাধ্যমে দেয়ানো হয়েছে। পরীক্ষায় জালিয়াতি করা হয়েছে। ছাত্রটি তা চ্যালেঞ্জ করে আদালতে যায়। ইমিগ্রেশন আপার ট্রাইব্যুনাল ভয়েস এক্সপার্ট ডেকে টেপরেকর্ডে ধারন করা পরীক্ষার বক্তব্য এবং ছাত্রের সরাসরি বক্তব্য গ্রহন নেয়। দুই বক্তব্যে গলার স্বর পরীক্ষা করে ভয়েস এক্সপার্ট। এতে বের হয়ে আসে ওই ছাত্রের ভিসা বাতিল সঠিক হয়নি। কারন টেপ রেকর্ডে ধারন করা ভয়েস এবং ছাত্রের সরাসরি ভয়েসে কোন অমিল পাওয়া যায়নি। ভয়েস এক্সপার্টের রিপোর্টে ভিত্তি করে আদালত রায় দেয়।
অথচ মাওলানা মতিউর রহমান নিজামীর মামলায় সাক্ষী অ্যাডভোকেট সামসুল হক নান্নু এবং ইউটিউভে প্রচারিত ইন্টারভিউতে সামসুল হক নান্নুর ভিডিও চিত্র রয়েছে। শুধু ভয়েস নয়। ভিডিও চিত্র আর ভয়েস একসঙ্গে থাকায় এক্সপার্টের জন্য পরীক্ষার কাজটি আরো সহজ হওয়ার কথা। আরো কিছু ভিডিও চিত্র রয়েছে যা তদন্ত সংস্থা ধারন করেছে। এসব মিলিয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে নিশ্চিত হওয়া কোন কঠিন ব্যাপার নয়। আর এই পরীক্ষা-নিরীক্ষা ছাড়া আদালত নিজের এখতিয়ারে ফাঁসির জন্য ফাঁসি দিলে অনেক প্রশ্ন এবং রহস্য থেকেই যাবে। প্রশ্ন আর রহস্য জিয়ে রেখে কাউকে ফাঁসির দন্ডের মত খুনের আদেশ দেয়া কতটা ন্যায়বিচার সাপেক্ষ হবে সেটা ভবিষ্যৎ অনুসন্ধানের রায় বলে দেবে।

ভিডিও চিত্রে ধারন করা নান্নু, সাক্ষী হিসাবে উপস্থিত হওয়া নান্নু এবং সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত নান্নুর ভিডিও চিত্রের লিঙ্ক এখানে পাঠকের বিচারের জন্য দেয়া হল। চাইলে কেউ ক্লিক করে দেখে নিতে পারেন। যাছাই করতে পারেন নিজে-----
https://www.youtube.com/watch?v=AVM5CJL6P2s

লেখক: অলিউল্লাহ নোমান, দৈনিক আমার দেশ-এর বিশেষ প্রতিনিধি, বর্তমানে যুক্তরাজ্যে নির্বাসিত।

রবিবার, ১১ অক্টোবর, ২০১৫

বিচারের সকল প্রক্রিয়া স্থগিত করতে লর্ড কার্লাইলের আহ্বান আলী আহসান মোহাম্মদ মুজাহিদ ন্যায্য বিচার পাননি


বৃটিশ হাউজ অব লর্ডস এর সদস্য লর্ড কার্লাইল এক বিবৃতিতে বলেছেন, আলী আহসান মোহাম্মদ মুজাহিদ ন্যায্য বিচার পাননি। তিনি বিচারের সকল প্রক্রিয়া স্থগিত করে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-আইসিটি এর প্রক্রিয়া নিয়ে আন্তর্জাতিক সমর্থনপুষ্ট রিভিউ করার আহ্বান জানান, যা হবে পুরোপুরি গ্রহণযোগ্য ও স্বচ্ছ। তিনি আশা প্রকাশ করেন, এর মধ্য দিয়ে এই বিচার প্রক্রিয়াটি ইতিহাসে এমন একটি উদাহরণ হয়ে থাকবে, যা আর কখনও হয়নি।
গতকাল রোববার দেয়া বিবৃতিতে তিনি বলেন, নাগরিক ও রাজনৈতিক অধিকার সংক্রান্ত আন্তর্জাতিক চুক্তি (আইসিসিপিআর) এবং মানবাধিকার বিষয়ক শাশ্বত ঘোষণা (ইউডিএইচআর) স্বাক্ষরকারী দেশ হিসেবে বাংলাদেশ সরকারের চুক্তির আওতায় আন্তর্জাতিক মূলনীতিগুলো মেনে চলা উচিত। দুর্ভাগ্যবশত অনেক ক্ষেত্রে এই বিষয়গুলো উপেক্ষিত রয়ে যাচ্ছে। 
লর্ড কার্লাইল আলী আহসান মোহাম্মদ মুজাহিদের নাম উল্লেখ করে বলেন, তার মামলা দেখে মনে হয়, বাংলাদেশের আইনী ব্যবস্থা রাজনৈতিক প্রতিষ্ঠানে পরিণত হয়েছে এবং তা প্রতিশোধের অস্ত্র হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে। 
তিনি বলেন, ১৯৭১ সালের যুদ্ধের ঘটনা নিয়ে তদন্ত ও অপরাধের জন্য দায়ী ব্যক্তিদের বিচারের মুখোমুখি করার উদ্যোগ প্রশসংনীয়। কিন্তু এর প্রক্রিয়া কঠোরভাবে সমালোচিত ও আন্তর্জাতিকভাবে নিন্দনীয়। তিনি বলেন, মুজাহিদ ন্যায্য বিচার পাননি। অনেক উদ্বেগের বিষয়গুলো সুরাহা করা হয়নি। তার বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ প্রমাণে ব্যর্থ হয়েছে, অধিকন্তু জনশ্রুতির উপর ভিত্তি করা হয়েছে। তিনি বলেন, মৃত্যুদন্ড দেয়ার ক্ষেত্রে বিচার প্রক্রিয়ার পদ্ধতিগত সততার সর্বোচ্চ মানদন্ড রক্ষা করা উচিত। কিন্তু এখানে তা কাঙ্খিত মানের হয়নি। 
বৃটিশ এই লর্ড বাংলাদেশ সরকারের প্রতি চলমান প্রক্রিয়া স্থগিত এবং সকল সাজা প্রদান বন্ধ করে আইসিটি ও তার প্রক্রিয়া নিয়ে আন্তর্জাতিক সমর্থনপুষ্ট রিভিউ করার আহ্বান জানান, যা হবে পুরোপুরি গ্রহণযোগ্য ও স্বচ্ছ। 
তিনি বাংলাদেশ সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেন, এর মধ্য দিয়ে বিচার প্রক্রিয়াটি একটি সম্মানজনক পর্যায়ে যাবে এবং প্রমাণিত হবে যে এটা প্রতিহিংসার জন্য ব্যবহৃত হচ্ছে না। আর এই বিচার প্রক্রিয়াটি ইতিহাসে এমন একটি উদাহরণ হয়ে থাকবে, যা আর কখনও হয়নি। 
জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল ও সাবেক মন্ত্রী আলী আহসান মোহাম্মদ মুজাহিদের মৃত্যুদন্ডাদেশ বহাল রেখে আপীল বিভাগের দেয়া রায় গত ৩০ সেপ্টেম্বর প্রকাশিত হয়। এরপর গত ৩ অক্টোবর আইনজীবীরা তার সাথে সাক্ষাৎ করেন। সাক্ষাৎ শেষে তার আইনজীবী শিশির মোহাম্মাদ মনির সাংবাদিকদের জানান, আলী আহসান মোহাম্মদ মুজাহিদ আপিল বিভাগের চূড়ান্ত রায় পুনর্বিবেচনার (রিভিউ পিটিশন) আবেদনের প্রস্তুতি নিতে পরামর্শ দিয়েছেন। নির্ধারিত সময়ের মধ্যেই রিভিউ পিটিশন দায়ের করা হবে।

শনিবার, ১০ অক্টোবর, ২০১৫

তিনি সম্পূর্ণ নির্দোষ রাষ্ট্রের কাছে ন্যায় বিচার প্রত্যাশা মুজাহিদের স্ত্রীর


গতকাল শুক্রবার বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল আলী আহসান মোহাম্মদ মুজাহিদের সাথে সাক্ষাৎ শেষে কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে বেরিয়ে আসছেন তার পরিবারের সদস্যরা -সংগ্রাম
স্টাফ রিপোর্টার : জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল সাবেক মন্ত্রী আলী আহসান মোহাম্মদ মুজাহিদের সাথে সাক্ষাৎ করেছেন তার স্ত্রী ও চার সন্তান। ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে সাক্ষাৎ শেষে তার স্ত্রী তামান্না-ই-জাহান সাংবাদিকদের বলেন, উনার শারীরিক অবস্থা ভালো। মানসিকভাবে তিনি মজবুত আছেন। তিনি আল্লাহকে হাজির নাজির জেনে বলেছেন, তার বিরুদ্ধে আনীত সকল অভিযোগ মিথ্যা ও বানোয়াট। তিনি সম্পূর্ণ নির্দোষ, নির্দোষ এবং নির্দোষ।
গতকাল শুক্রবার বেলা ১০টা ৫০ মিনিটে আলী আহসান মোহাম্মদ মুজাহিদের স্ত্রী তামান্না-ই-জাহান, তার ৩ ছেলে এবং ১ মেয়ে ঢাকার কেন্দ্রীয় কারাগারে প্রবেশ করেন এবং সেখানে প্রায় আধা ঘণ্টা অবস্থান শেষে বেরিয়ে আসেন।
কারাগার থেকে বের হয়ে তামান্না-ই-জাহান সাংবাদিকদের বলেন, আমার স্বামী আলী আহসান মোহাম্মদ মুজাহিদ দেশবাসীকে সালাম জানিয়েছেন এবং সকলের কাছে দোয়া চেয়েছেন। আল্লাহর রহমতে তিনি শারীরিকভাবে ভাল ও সুস্থ আছেন। মানসিকভাবে অবিচল ও দৃঢ়চেতা রয়েছেন। তিনি আল্লাহকে হাজির নাজির জেনে বলেছেন, তার বিরুদ্ধে আনীত সকল অভিযোগ মিথ্যা ও বানোয়াট। তিনি সম্পূর্ণ নির্দোষ।
তিনি বলেন, স্ত্রী হিসেবে আমিও সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, তিনি সম্পূর্ণ নির্দোষ। আমার স্বামী ঘরে বাইরে, ব্যক্তিগত ও পারিবারিক জীবনে আল্লাহর রহমতে অত্যন্ত স্বচ্ছ ও সৎ জীবন যাপন করেছেন। ইতোমধ্যেই তিনি আইনজীবীদের মাধ্যমে রিভিউ আবেদন করার জন্য নির্দেশনা প্রদান করেছেন। 
তিনি আশা প্রকাশ করেন, রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী ও প্রধান বিচারপতিসহ সকল দায়িত্বশীল কর্তৃপক্ষ ন্যায় বিচার নিশ্চিত করতে ভূমিকা রাখবেন। আমরা বিশ্বাস করি, ন্যায় বিচার নিশ্চিত করা হলে তার রিভিউ আবেদন মঞ্জুর হবে এবং তিনি বেকসুর খালাশ পাবেন ইনশাল্লাহ।
এ সময় তাদের ছোট ছেলে আলী আহমদ মাবরুরসহ ৩ ছেলে ও ১ মেয়ে উপস্থিত ছিলেন।
মৃত্যুদণ্ডাদেশ বহাল রেখে আপীল বিভাগের দেয়া রায় গত ৩০ সেপ্টেম্বর প্রকাশিত হয়। এরপর গত ৩ অক্টোবর আইনজীবীরা তার সাথে সাক্ষাৎ করেন। সাক্ষাৎ শেষে তার আইনজীবী শিশির মোহাম্মাদ মনির সাংবাদিকদের জানান, আলী আহসান মোহাম্মদ মুজাহিদ আপিল বিভাগের চূড়ান্ত রায় পুনর্বিবেচনার (রিভিউ পিটিশন) আবেদনের প্রস্তুতি নিতে পরামর্শ দিয়েছেন। নির্ধারিত সময়ের মধ্যেই রিভিউ পিটিশন দায়ের করা হবে।

মঙ্গলবার, ২৮ জুলাই, ২০১৫

সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরীর ফাঁসি বহাল


মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরীর বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে দেওয়া মৃত্যুদণ্ডাদেশ বহাল রেখেছেন সু্প্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ।
বুধবার সকালে প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহার নেতৃতাধীন চার সদস্যের আপিল বেঞ্চ এ রায় দেন।
বেঞ্চের অন্য সদস্যরা হলেন- বিচারপতি নাজমুন আরা সুলতানা, বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন ও বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী।
গত ৭ জুলাই যুক্তিতর্ক (আর্গুমেন্ট) উপস্থাপনের মধ্য দিয়ে আপিল শুনানি শেষ হওয়ায় ২৯ জুলাই রায়ের দিন ধার্য করেন আপিল বিভাগ। গত ১৬ জুন শুরু হয়ে ১৩ কার্যদিবসে এ আপিল শুনানি শেষ হয়।  ইনসাফ টোয়েন্টিফোর ডটকম 

About

ব্লগ সংরক্ষাণাগার

আমার ব্লগ তালিকা

Translate

Translate

আমাদের বাংলাদেশ নিউজ 24

সর্বশেষ

অনুসরণকারী