প্রতিদিনের অভ্যাসমত মাগরীবের নামাযের পড়ে কোরআন তেলোয়াত করতে বসেছিল সোমা। কি হতে কি হলো সে কিছুই বুঝতে পারছেনা! কোরআন পড়তে পড়তে প্রথম পিছনে কিছুটা শোরগোল শুনতে পেল। তারপরেই মনে হলো কয়েকজনের পায়ের লাথি তার পিঠের উপরে পড়ছে! নিজেকে সামলে রাখতে না পেরে কোরআনের উপর উপুড় হয়ে পড়ে গেল! তার বুক, পিঠ, মুখ সব যায়গায় লাথি মারতে লাগলো তারা! দুজন চুল ধরে শোয়া থেকে উঁচু করে দাড় করে ফেললো...
ভার্সিটির হোষ্টেলের নামাযের রুমে সোমা ও কয়েকজন নিয়মিত নামায পড়ে। ইদানীং উপস্থিতি খুব কম হয়। এক সময় অনেক মেয়ে নামাযে আসতো নামায কক্ষে। এখন এক অজানা ভয়ে অনেকে আসেনা। তবু তারা কয়েকজন মেয়ে আসে এখনও। নামায শেষে যার যার মত চলে গেলেও সোমা কিছুটা সময় কোরআন পড়ে তারপর রুমে ফিরে ক্লাসের পড়া পড়তে বসে।
আজ এক বিভীষিকাময় পরিস্থিতির মুখোমুখি সে। নামায শেষ করে কোরআন পড়তে গেলে এই সময়ের ভিতর বেশ কয়েকজন হামলে পড়েছে তার উপর। কারন কি সে কিছুই জানেনা! মারতে মারতে একজন বলে উঠলো, এই তুই জঙ্গি! এবার সোমা বুঝতে পারলো হামলাকারীরা সোমাকে না, কোন জঙ্গিকে মারধোর করছে! কয়েকবার বলার চেষ্টা করলো, আমি না আমি না....
কথা শেষ করতে পারেনা। তার আগেই তল পেটে একজন লাথি বসিয়ে দেয়। কুঁকিয়ে উঠে তল পেট চেপে ধরে বসে পড়ে। মাথা ঘুরতে থাকে তার, হয়তো কিছুক্ষনের ভিতর জ্ঞান হারাবে। আবারো তাকে চুল ধরে দাড় করানো হয়। কথা বলতে না বলতে নাক মুখের উপর কয়েজন ঘুষি মারতে থাকে। নাক চেপে ধরে মাথা নিচু করলে আঙুলের ফাঁকগলে রক্তের ধারা বের হয়ে এলো। একজন চুল ধরে মাথা উঁচু করে ধরে রাখলো যেন মারতে সুবিধা হয়। তখন সামনে তাকিয়ে দেখতে পেল তার দুজন ম্যাডাম ও হল প্রভোস্টকে! মনের ভিতর কিছুটা প্রশান্তি ফিরে এলো। এই যাত্রায় বুঝি কিছুটা রক্ষা পেলাম..
হল প্রভোস্ট রঞ্জিত দাস এগিয়ে এসে এমন একটি বিজয়ের হাসি দিল যেন সে দুইটা মেডেল জিতেছে! দাত খিটমিট করে বললো- বাহবা, নামায পড়তে আসে! সাথে আবার জঙ্গি বই রাখো! একে এমন ভাবে মারবা যেন পুলিশ নিয়ে গেলে তাদের অতিরিক্ত কোন কাজ করতে না হয়...
সংগৃহীত।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন