বিজ্ঞাপন দিন

আচ্ছালামু আলাইকুম ওয়ারাহমাতুল্লাহ। ইসলামী ব্যাংক এজেন্ট ব্যাংকিং আউটলেট দক্ষিণগাও, শাহীবাগ বাজার এর পক্ষ থেকে সকল গ্রাহক, শুভাকাংখীসহ সবাইকে জানাই ঈদ উত্তর সালাম ও আন্তরিক শুভেচ্ছা। ব্যাংক খোলা এবং যথারীতি ব্যাংকিং কার্যক্রম চলছে। এই গ্রুপে যারা আছেন তাদের মাধ্যমে সংশ্লিষ্ট এলাকার এলাকারসকলকে ইসলামী ব্যাংকের মাধ্যমে বিদেশ থেকে রেমিটপন্স পাঠানোর আহবান জানাচ্ছি। ঢাকার সবুজবাগ থানার রাজারবাগ, কুসুমবাগ, দক্ষিনগাও, শাহীবাগ, মানিকদিয়া, বাইকদিয়া, নন্দিপাড়াসহ সকল এলাকার গ্রাহক, শুভাকাংখী, শুভানুধ্যায়ীদের প্রদত্ত মোবাইল নাম্বারে যোগাযোগ করার অনুরোধ করা হলোঃ ০১৭১১-৪৫৮১৫১, ০১৭০০৯২৫২৪১:b>ইসলামী ব্যাংক এজেন্ট ব্যাংকিং আউটলেট দক্ষিণগাও, শাহীবাগ বাজার

রবিবার, ১১ সেপ্টেম্বর, ২০১৬

সকল জুলুমের বিরুদ্ধে আমার এ কলম চলবে

আজ রাত দশাটার কিছুক্ষন পরেই আমার স্ত্রী ৩ জন বখাটে রাজনৈতিক কর্মীর হাতে আক্রান্ত হয়েছেন! প্রায় মাস তিনেক থেকেই তারা দিনের বেলা কিংবা সন্ধ্যায় মাঝে মধ্যেই মহল্লার গলিতে একা পেলে উত্যক্ত করতো। এ বিষয়ে আমাকে অনেকবার জানিয়েছে আমি প্রায়ই চেষ্টা করতাম বাইরে গেলে তার সঙ্গ দিতে। যদিও জীবনমুখী ব্যস্ততার কারণে তা সবসময় হয়ে ওঠে না।
আমার স্ত্রী পেশায় একজন শিক্ষক। তিনি অন্তঃসত্বা। ৭ মাস চলছে। অনেকদিন পর আজ বাবার বাড়ি গিয়েছে ফিরতে একটু দেরী হয়েছে আমিও অফিসের কিছু কাজ জমে থাকায় তাকে সাথে আনতে পারিনি। বাইরে থেকে এসে ওয়াশরুমে ঢুকেছি বাইরে থেকে দরজায় প্রচন্ড ধাক্কাধাক্কি পরে বের হয়ে দেখি আমার স্ত্রী ভয়ে কাঁপছে। আমাকে দেখে চিৎকার করে কান্না শুরু করে দিল! বললাম কি হয়েছে? ভয়ে কথাও বলতে পারছে না। পরে শুনলাম তার রিক্সা আটকিয়ে ভয়ংকর অশ্রাব্য ভাষায় তাকে গালিগালি করা হয়েছে!
এক পর্যায়ে আমার স্ত্রী বলেন, আমার সাথে এমন করছেন কেন? আমি কি করেছি? ওরা বলেছে ‘তোর হাজবেন্ড বেশি বাড়াবাড়ি করছে। আমাদের ভাই ব্রাদারদের বিরুদ্ধে লেখালেখি করে? সে ভাবছে সে পার পাবে?’ আমার স্ত্রী বলে ও যদি কিছু করে থাকে তাহলে তার কাছে যান আমার পথ আটকিয়েছেন কেন? বলার সাথে সাথেই তার গলা চেপে ধরে চড়-থাপ্পর দিতে থাকে। উপস্থিত ঘটনায় হতভম্ব হয়ে সে চিৎকার করলে একজন চাকু বের করে তার পেটে ঠেকায়! তার চিৎকার শুনে পাশের দুএকটা ফ্লাটের যারা বাইরে ছিল তারা ভেতরে চলে যায়! পরে একজন গরু বিক্রেতা ও এক ভদ্রলোক পাশ দিয়ে যাচ্ছিলেন তারা এসে প্রতিবাদ জানায়। পরে তারা পুলিশকে খবর দিতে চাইলে বখাটেরা পালিয়ে যায়!
ঘটনার আকস্মিকতায় আমি আসলে কি বলবো বা কিভাবে সান্তনা দেবো ভেবে পাচ্ছিলাম না। একজন সাত মাসের গর্ভবতী নারীকে তার স্বামীর লেখালিখির কারণে কলেজ কিংবা বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া ছেলেরা তাদের বিরুদ্ধমতের প্রতিপক্ষের স্ত্রীর গায়ে হাত তুলবে বাংলাদেশ এখন সেই জামানায় ঢুকে গেছে।
কিছুদিন আগে একটি বেসরকারী টিভি একুশে বইমেলায় সাক্ষাতকার নিয়েছিল বিভিন্ন দর্শনার্থীদের। স্কুল কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া বিভিন্ন স্তরের মানুষের কাছে জানতে চেয়েছে একুশে ফেব্রুয়ারীতে কি হয়েছিল? একটা ছেলে মেয়েও কোন সঠিক উত্তর দিতে পারেনি।
কথা সেটা নয়। এরকম কোটি কোটি কর্মী বাহিনী নিয়ে চেতনার গল্প শুনিয়ে লাফাচ্ছে তাদের হয়তো একাত্তরের কোন সঠিক খবরা খবরও জানা নেই! কিন্তু এই ভয়ংকর বিদ্বেষ এবং সাম্প্রদায়িকতা কিভাবে ছড়ানো হেলো এসব বখাটে ইতিহাস বিমূখ ছেলেদের কাছে। কিসের চেতনায় তারা আজ গর্ভবতী নারীদের গায়ে হাত তুলতে উজ্জীবিত হচ্ছে।

কিসের শিক্ষা, কিসের আবেগ, কিসের চেতনায় একটা প্রজন্মের তরুণদের অন্ধ করে দেয়া হয়েছে। অল্প বয়সী এসব তরুণদের চেতনার নামে কিভাবে বদ্ধ উম্মাদ তৈরী করা হচ্ছে? যারা ভুলে যাচ্ছে মনুষত্ব? এসবই কি মুক্তিযুদ্ধের চেতনা?
আমার স্ত্রী অপমানে কাঁদছে, ব্যাথায় কাঁদছে কিন্তু আমি নির্বাক! কার কাছে যাব? কার কাছে বিচার দেবো? কে দাঁড়াবে এই অন্যায়ের বিরুদ্ধে? আমার অনাগত সন্তান তার মায়ের পেট থেকেই হয়তো অনুভব করছে তার মায়ের আত্মচিৎকার!
আমার স্ত্রী এখনও ভয়ে কাঁপছে। গায়ে তীব্র জ্বর। যেহেতু গর্ভাবস্থার এই সময়ে কোন পেইন কিলার খেতে পারবে না। তাই কিছুই করার নেই। ব্যাথায় ছটফট করছে। আমি কোনমতে তাকে রেখে কিবোর্ড হাতে নিয়েছি। আমার ব্যথার কথাগুলো নির্বাক বাংলাদেশকে জানাতে।
একজন নির্যাতিত গণমাধ্যম কর্মী হিসেবে শুধু ভাবছি, যারা আজ ক্ষমতার দম্ভে অন্ধ হয়ে গেছে। যাদের লাখো অন্ধ অনুসারী পাড়ায় পাড়ায় গলিতে গলিতে ছড়িয়ে দিয়ে কোটি মানুষের জীবনকে দূর্বিষহ করছে তারা কি একটিবারও ভেবে দেখে না, যে ক্ষমতার দম্ভে তারা ঘরে ঘরে আগুনের উত্তাপ ছড়িয়ে দিচ্ছে তাদের সন্তান কিংবা আপনজনরাও কি তাদের মতই ক্ষমতাধর হবে এটা কি তারা নিশ্চিত?

যদি তা না হয়, তাহলে তাদের সন্তান, স্ত্রী, পরিজনকেও কারো না কারো হাতে এরকম নির্যাতিত নিগৃহীত হতেই হবে? কারণ যে বৃক্ষ তারা রোপন করছেন সেটি ফলবান হয়ে আরও বেশি অপরাধ অনাচারের জন্ম দেবে। সেটা অবশ্যই কাউকে না কাউকে দগ্ধ করবেই!
আমি ওয়াহিদ ফারুকী একজন সামান্য গণমাধ্যম কর্মী। আমি যখন যা লিখি নিজের বিশ্বাস থেকে লিখি, নিজের দেশের স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব, তাহযীব তামুদ্দূন অক্ষুন্ন রাখার জন্যই লিখি। চোখের সামনে স্বদেশ লুট হবে জেগে জেগে ঘুমাবো? সব অনাচার হাসি মুখে সয়ে যাবো এমনটা ভাবার কিংবা করার জন্য মিডিয়াতে আসিনি।

পৃথিবীর সকল মজলুম আমার ভাই। আমার স্বজন। সকল জুলুমের বিরুদ্ধে আমার এ কলম চলবে। কোন বাঁধাই এই কলম থামাতে পারবে না ইনশাআল্লাহ। ছোট্ট একটা প্রাচীন মিশরীয় গল্প দিয়ে শেষ করছি-
‘হযরত ইব্রাহীম (আ) এর জন্য নমরূদ বিশাল অগ্নিকান্ড তৈরি করেছে খবর পেয়ে টিকটিকি ছুটছে আগুন নেভাতে। পথিমধ্যে একজন তাকে জিজ্ঞেস করলো ও টিকটিকি কই যাও? টিকটিকি বললো নমরুদ ইব্রাহীমের জন্য আগুন জ্বালিয়েছে আমি যাচ্ছি সেটা নেভাতে। পথিক টিকটিকিকে ভৎর্সনা করে বললো, ‘তোমার মত এত ছোট টিকটিকি কিভাবে এত বড় আগুন নেভাবে?’ টিকটিকি বললো, আগুন নেভাতে পারবো না সেটা আমিও জানি কিন্তু আমার আল্লাহ তো জানবে ইব্রাহীমের বিপদে আমি ছুটে গিয়েছি, সত্যের পক্ষ নিয়েছি এটাই আমার বড় পাওয়া!’
আমি জানি, আমার মত ক্ষুদ্র টিকটিকিসম গণমাধ্যম কর্মীর কোন চিৎকার চেচামেচি কিংবা আওয়াজ জালিমের কানে পৌছাবে না কিন্তু আমার আল্লাহ তো দেখছেন আমি দূর্দিনেও মজলুমের পক্ষে ছিলাম!
আমিন।
ওয়াহিদ ফারুকী
ঢাকা

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

About

ব্লগ সংরক্ষাণাগার

আমার ব্লগ তালিকা

Translate

Translate

আমাদের বাংলাদেশ নিউজ 24

সর্বশেষ

অনুসরণকারী