বাংলাদেশ বার্তা:পানামা পেপার্স বিস্ফোরণে বাংলাদেশী পঁচিশজন প্রভাবশালী অর্থ পাচারকারী ব্যক্তির নাম প্রকাশিত হওয়ার ঘটনায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন জামায়াতে ইসলামীর ভারপ্রাপ্ত সেক্রেটারি জেনারেল ডাঃ শফিকুর রহমান। তিনি বলেন, পানামা পেপার্স বিস্ফোরণে বাংলাদেশের যে পঁচিশজন প্রভাবশালী অর্থ পাচারকারী ব্যক্তির নাম প্রকাশিত হয়েছে তাদের ব্যাপারে বিচার বিভাগীয় শক্তিশালী কমিটি গঠন করে সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ তদন্ত করে পাচারকৃত অর্থ উদ্ধার এবং অর্থ পাচারকারীদের বিরুদ্ধে আইনগত পদক্ষেপ গ্রহণ করা প্রয়োজন।
বুধবার দেয়া বিবৃতিতে তিনি বলেন, পানামা পেপার্স বিস্ফোরণে বাংলাদেশী পঁচিশজন প্রভাবশালী অর্থ পাচারকারী ব্যক্তির নাম প্রকাশিত হওয়ায় দেশবাসীর নিকট পরিষ্কার হয়ে গিয়েছে যে, বাংলাদেশী বহু অর্থ পাচারকারী ব্যক্তি বিদেশে অর্থ পাচার করছে। যারা বিদেশে অর্থ পাচার করছে তারা নিঃসন্দেহে দুর্নীতিবাজ ব্যক্তি। তারা দেশের অর্থ বিদেশে পাচার করে সম্পদের পাহাড় গড়ছে। অর্থ পাচারকারীদের মধ্যে ক্ষমতাসীন দলের একজন প্রভাবশালী ব্যক্তি ও তার স্ত্রীর নামও এসেছে। আগামী মে মাসে আরো অর্থ পাচারকারী ব্যক্তিদের নাম প্রকাশ করা হবে বলে জানা গেছে।
তিনি বলেন, দেশবাসী উদ্বেগের সাথে লক্ষ্য করছে যে, বর্তমান সরকারের আমলে কিছু প্রভাবশালী ব্যক্তি দেশের অর্থ দুর্নীতির মাধ্যমে লুটপাট করছে এবং বিদেশে পাচার করছে। সরকারের আশ্রয়-প্রশ্রয় থেকেই প্রভাবশালী ব্যক্তিরা জনগণের অর্থ লুটপাট করছে এবং পাচার করছে। কিন্তু সরকার বরাবরই এসব ব্যাপারগুলো ধামাচাপা দেয়ার চেষ্টা করছে। এ সরকারের আমলে অর্থ কেলেংকারির বহু ঘটনা ঘটেছে। কিন্তু কোন একটি ঘটনারই সুষ্ঠু তদন্ত ও বিচার হয়নি।
তিনি আরো বলেন, পাচারকৃত অর্থ দেশের সাধারণ জনগণেরই অর্থ। সুতরাং জনগণের সামনে পুরো বিষয়টি তুলে ধরতে হবে। সরকারের সাথে এদের সামাজিক ও রাজনৈতিক কোন যোগসূত্র না থাকলে বেপরোয়াভাবে তারা এভাবে অর্থ লুটপাট করতে পারতো না। তাই দেশের জনগণ সঙ্গত কারণেই বিশ্বাস করে সরকারের একটি উঁচু মহল এ ঘটনার সাথে জড়িত থাকতে পারে।
ভারপ্রাপ্ত সেক্রেটারি জেনারেল বলেন, দেশের অর্থ যারা বিদেশে পাচার করছে, তারা দেশের শত্রু। তারা জনগণকে শোষণ করে এবং দুর্নীতি করে টাকা হাতিয়ে নিয়ে সেই টাকা বিদেশে পাচার করে দেশের স্বার্থ বিকিয়ে দিচ্ছে। যারা এভাবে দেশের অর্থ বিদেশে পাচার করছে তাদের সম্পদের হিসাব গ্রহণ করা প্রয়োজন। দুর্নীতি দমন কমিশনের উচিত, অর্থ পাচারকারী হিসেবে যাদের নাম এসেছে তাদের অর্থের হিসাব গ্রহণ করা। অর্থ পাচারকারীদের আশ্রয়-প্রশ্রয় না দিয়ে তাদের ব্যাপারে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা দরকার। এই ব্যাপারটি ধামাচাপা দেয়ার অপচেষ্টা চালানো হলে দেশের জনগণ তা বরদাস্ত করবে না।
একটি বিচার বিভাগীয় শক্তিশালী তদন্ত কমিটি গঠন করে অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষভাবে তদন্ত করে অর্থ পাচারকারী ব্যক্তিদের চিহ্নিত করে পাচারকৃত অর্থ উদ্ধার এবং অর্থ পাচারকারীদের বিরুদ্ধে যথোপোযুক্ত আইনগত পদক্ষেপ গ্রহণ করার জন্য তিনি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের প্রতি আহ্বান জানান। অন্যথায় দেশের জনগণ সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলন গড়ে তুলতে বাধ্য হবে।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন