আমাদের বাংলাদেশ অনলাইন নিউজ ডেস্কঃ সাবিরা হোসেন, কথিত মডেল! মডেল-অভিনেতা-অভিনেত্রী মানেই তথাকথিত আধুনিকদের স্বপ্নের রাজা-রাণী! সাজ-গোজ, পোষাক-আসাকের সাথে সাথে তাদের মতো হাটা-চলা-বলার চেষ্ঠাও অনেকে করে থাকেন। তারাই তাদের জীবনের আদর্শ!
সেই ধরনের কথিত সুন্দরী, আকর্ষনীয় সাবিরাকে করতে হলো আত্মহত্যা! খবরটি নিয়ে তেমন উৎসাহী ছিলাম না। কিন্তু তার আত্মহত্যার কারণ ও নোটের কথা গুলো যখন প্রকাশ হলো তখন আগ্রহ বেড়ে গেলো। মনে হলো তার কথাগুলোতে শিক্ষনীয় আছে কোটি তরুণীর।
কি সেই শিক্ষাটি? একজন মেয়ে যখন তার জীবনের সর্বশ্রেষ্ঠ সম্পদ- নিজের আব্রু কোন প্রকার বৈধ সামাজিক বন্ধন ছাড়া পুরুষের কাছে হারিয়ে ফেলে তখন সেই পুরুষের কাছে ওই তরুণী ব্যবহৃত টিস্যু পেপার যে হয়ে যায়, তা সাবিরা এই সময়ের অন্যতম শ্রেষ্ঠ উদাহরণ। নষ্ট সংস্কৃতির খপ্পড়ে পড়ে সাবিরা সবকিছুই বিয়ে ছাড়াই দিয়ে বসেছে কথিত বন্ধু বা প্রেমিকের কাছে। খুবই নাকি বিশ্বাস করেছিল! সে জন্যেই নাকি স্ত্রীর মতো সবকিছুই দিয়ে দিয়েছিল। সবকিছু, সবকিছুই!
বিনিময়ে কি পাওয়া গেলো? কেন, টিস্যু পেপারের মতো ছুড়ে ফেলে দেয়া। বুঝিনা একটি মেয়ে কি করে এভাবে কথিত পুরুষকে বিশ্বাস করে! ভালোবাসার নামে যখন পুরুষ, মেয়েটিকে স্ত্রীর মতো ব্যবহার করতে চায় তখনই তো মেয়েটির সতর্ক হয়ে যাওয়ার কথা। তখনই তো মেয়েটির বুঝা উচিত ভালোবাসা নয়, এখানে ভিন্ন কিছু ওই নষ্ট পুরুষের চাওয়া। আধুনিক মেয়েগুলো নিজেদের এত জ্ঞানী মনে করে, এত প্রগতিশীল দাবী করে, এই সামান্য বিষয়টিও বুঝতে পারে না?! আশ্চর্য!
মেয়ে, নিজেকে এত আধুনিক ও প্রগতিশীল দাবী করো, কিন্তু নিজের শরীর, আব্রু, ইজ্জত আরেকটি ছেলের কাছে বিলিয়ে দেয়া যে ঠিক না, তা বুঝতে পারো না? আশেপাশে এত অধঃপতন দেখেও তোমাদের শিক্ষা হয় না? কিভাবে একজন ছেলের কাছে বিয়ের আগেই সবকিছু সপে দাও? দেয়ার সময় মাথায় আসে না যে প্রতারিত হতে পারো? আসবে কিভাবে? তথাকথিত আধুনিক সংস্কৃতি তো তোমাদের এটিই শিক্ষা দিচ্ছে। অবাধে মেলামেশা করো, উদ্দাম হও, লাম্পট্যপনাতে জড়িয়ে পড়ো। তোমার কি এই বোধটুকুও আসে না যে, তোমার শ্রেষ্ঠ সম্পদই যখন বিয়ের আগে কোন প্রকার সামাজিক স্বীকৃতি ও চুক্তি ছাড়াই একজন ছেলে নিয়ে নিয়েছে তখন পরবর্তীতে সেই ছেলের তোমাকে বিয়ে করার প্রয়োজন কি?
তাই দেখা যায় সাবিরার মতো সুন্দরী, আধুনিকাও সেই পুরুষের কাছে তুচ্ছ হয়ে যায় যখন বিয়ে বহির্ভূত ভাবে সবকিছু দিয়ে দেয় ওই পুরুষকে। সবকিছু হারানোর পর সাবিরা বুঝতে পারে সে এখন তুচ্ছ! তুচ্ছ না হয়েও বা কি হবে?! কারণ সাবিরাদের মতোই অপসংস্কৃতির ছোঁয়ায় বিবেকশুণ্য হাজারও তরুণী আশেপাশে আছে যাদের ওইসব নষ্টপুরুষরা যখন তখন খুঁজে পায় ও ব্যবহার করতে পারে। যেখানে সাবিরার মতো বা তার চেয়ে আরও কথিত উন্নত-আধুনিক-সুন্দরী কাউকে খুঁজে পাওয়ার সম্ভাবনা থাকে তখন কেন ওই নষ্ট পুরুষরা ব্যবহৃত টিস্যু পেপার সাবিরার জন্য বসে থাকবে?
কিন্তু সাবিরা কি তুচ্ছ হয়ে যাওয়ার মতো ছিল? কি ছিল না তার? রূপ? সৌন্দর্য? মাধুর্য? কমনীয়তা? স্বাভাবিক ভাবে একজন পুরুষ যা চায় তার কোনটি তার কমতি ছিল? তারপরও কিভাবে সে ফেলনা হয়ে গেলো? বিশাল প্রশ্ন। আত্মহত্যার নোট পড়ে ও ভিডিও দেখে এটি বুঝা যায় আসলে সবকিছু থাকার পরও সে হারিয়ে ফেলেছিল তার জীবনের শ্রেষ্ঠ সম্পদটি। যা কথিত আধুনিক মেয়েরা সাবিরার মতোই ফাঁদে পড়ে হারাচ্ছে অহরহ। কেন জানি না, ওই সব আধুনিক ও কথিত শিক্ষিতরা কেন সবকিছু হারানোর আগে বিষয়টি বুঝতে পারে না!
সাবিরার আত্মহত্যার নোট পড়ে আবারও হেফাজতে ইসলাম বা এদেশের ইসলামী দলগুলোর সেই দাবীর কথা মনে ভেসে উঠে। তারা দাবী করেছিল, "ব্যক্তি ও বাকস্বাধীনতার নামে সব বেহায়াপনা, অনাচার, ব্যভিচার, প্রকাশ্যে নারী-পুরুষের অবাধ বিচরণ বন্ধ করা উচিত।" সাবিরাদের পরিণতি দেখে কি এই দাবীর যৌক্তিকতা ফুটে উঠে না? হেফাজত বা ইসলামী দলের এই দাবী আসলে শুধু তাদের বা ইসলামের নয় বরং প্রতিটি বিবেকবান মানুষের। যাদের বিবেক নষ্ট হয়ে গিয়েছে, যারা চায় নারীদের পরিণতি সাবিরাদের মতো হোক, তারা ছাড়া আর কেউ কি এই দাবীর বিরোধীতা করতে পারে?
বর্তমান বাংলাদেশের তথাকথিত নারীবাদী-প্রগতিশীল-মুক্তমণ াদের মূল শত্রু ইসলাম। নারী অধিকারের নামে তারা সবসময় বিরোধীতা করতে থাকে ইসলামের। তাদের সেই ইসলাম বিরোধীতার মূল কারণ তারা আসলে এদেশের তরুণ-তরুণীদের সাবিরা-নির্ঝরদের মতো তৈরি করতে চায় যাদের নীতি, নৈতিকতা, মানবিকতা, চরিত্র, ইসলাম কোন কিছুই থাকবে না, তারা হবে শুধু অশ্লীলতা, যত্রতত্র অবাধ যৌনতা ও যৌন লালসা সর্বস্ব মাতাল কিছু জীব। ওসব জীব দেশ, জাতি, সমাজ, ভবিষ্যৎ কোন কিছুই নিয়ে ভাববে না, ভাববে শুধু কিভাবে অবাধে লালসা মিটানো যায়।
কিন্তু এক্ষেত্রে একমাত্র ও শুধুমাত্র বাঁধা ইসলাম। তাই বর্তমান বাংলাদেশে নৈতিকতা ধ্বংসের সকল পথ খুলে দেয়া হয়েছে। নৈতিক চরিত্র তৈরির সকল পথ আস্তে আস্তে বন্ধ করে দেয়া হচ্ছে। তার ধারাবাহিকতায় বতর্মান বাংলাদেশে ইসলাম, ইসলামী শিক্ষা, সংস্কৃতি, রাজনীতি একপ্রকার নিষিদ্ধ এবং ইসলামী ব্যাক্তিত্বরা কারাগারে বা ফাঁসির কাষ্ঠে। একদিকে অশ্লীলতা, অনৈতিকতা ছড়ানোর কারিগর ভারতীয় অশ্লীল অপসংস্কৃতির নায়ক-নায়িকাদের জন্য বাংলাদেশকে অবারিত করে দেয়া হয়েছে, অন্যদিকে ইসলামকে নির্বাসনে পাঠানো হচ্ছে।
কারণ ভারত, হাসিনা ও আওয়ামী লীগ ট্রানজিট-কোরিডোর সম্পন্ন ধর্মনিরপেক্ষতাবাদী যে রাষ্ট্র ও সমাজ প্রতিষ্ঠিত করতে চাচ্ছে তাতে সুস্থ-সচেতন-দেশপ্রেমিক-নৈত িকচরিত্র সম্পন্ন মানুষের কোন প্রয়োজন নেই। প্রয়োজন শুধু বোধশক্তিহীন, অধঃপতিত চরিত্রের জীব সাবিরা-নির্ঝরদের। তাই এই সাবিরা শেষ সাবিরা নয়, আরো অনেক অনেক সাবিরা বর্তমান সাবিরার পরিণতির দিকে ধেয়ে চলেছে ধর্মনিরপেক্ষতাবাদী নষ্ট সংস্কৃতির কবলে পড়ে...
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন