বিজ্ঞাপন দিন

আচ্ছালামু আলাইকুম ওয়ারাহমাতুল্লাহ। ইসলামী ব্যাংক এজেন্ট ব্যাংকিং আউটলেট দক্ষিণগাও, শাহীবাগ বাজার এর পক্ষ থেকে সকল গ্রাহক, শুভাকাংখীসহ সবাইকে জানাই ঈদ উত্তর সালাম ও আন্তরিক শুভেচ্ছা। ব্যাংক খোলা এবং যথারীতি ব্যাংকিং কার্যক্রম চলছে। এই গ্রুপে যারা আছেন তাদের মাধ্যমে সংশ্লিষ্ট এলাকার এলাকারসকলকে ইসলামী ব্যাংকের মাধ্যমে বিদেশ থেকে রেমিটপন্স পাঠানোর আহবান জানাচ্ছি। ঢাকার সবুজবাগ থানার রাজারবাগ, কুসুমবাগ, দক্ষিনগাও, শাহীবাগ, মানিকদিয়া, বাইকদিয়া, নন্দিপাড়াসহ সকল এলাকার গ্রাহক, শুভাকাংখী, শুভানুধ্যায়ীদের প্রদত্ত মোবাইল নাম্বারে যোগাযোগ করার অনুরোধ করা হলোঃ ০১৭১১-৪৫৮১৫১, ০১৭০০৯২৫২৪১:b>ইসলামী ব্যাংক এজেন্ট ব্যাংকিং আউটলেট দক্ষিণগাও, শাহীবাগ বাজার

শুক্রবার, ১৯ ফেব্রুয়ারী, ২০২১

নিঃসন্তান দম্পতির সন্তান লাভের উপায়!

 বাংলাদেশে আশংকাজনক হারে বাড়ছে সন্তানহীন দম্পতির সংখ্যা। সংসার জীবনে দীর্ঘ হচ্ছে হতাশার ছাঁয়া। অনেকে ডাক্তার দেখিয়ে ক্লান্ত হচ্ছেন, অনেকে ধরণা দিচ্ছেন পীরের দরবারে। অনেকে ধরণা দিচ্ছেন যিনিই সত্যিকারে সন্তান দিতে পারেন সে মহান আল্লাহর কাছে। কিন্তু কিছুতেই সন্তান হচ্ছেনা। কিন্তু কেন?

রাসুল (সাঃ) এর সাহাবীদের জীবনী পড়লে দেখা যায়, তারা যখন কোন অকল্যাণ দেখতে পেত, তখন চিন্তায় পড়ে যেত হয়তো তারা দ্বীনের ক্ষেত্রে ভুল করেছেন। দেখা যেত, হয়তো নিজেদের অলক্ষ্যে কোন সুন্নাত অনুসরণ থেকে পিছিয়ে পড়েছেন, তখনি নিজেদের শুধরিয়ে নিতেন। আর আল্লাহর রহমত আসতে দেরী হতোনা।
আল্লাহ চাহেতো আপনার বন্ধা স্ত্রীর গর্ভেও সন্তান দিতে পারেন। যেমন দিয়েছিলেন, হযরত ইব্রাহীম (আঃ) এর বন্ধা স্ত্রী সায়েরা (রাঃ) এর গর্ভে। আসুন আমরা কারণ খোঁজার আগে আল্লাহ কি বলছে তা জেনে নিই।
فَقُلۡتُ ٱسۡتَغۡفِرُواْ رَبَّكُمۡ إِنَّهُ ۥ كَانَ غَفَّارً۬ا .
يُرۡسِلِ ٱلسَّمَآءَ عَلَيۡكُم مِّدۡرَارً۬ا .
وَيُمۡدِدۡكُم بِأَمۡوَٲلٍ۬ وَبَنِينَ وَيَجۡعَل لَّكُمۡ جَنَّـٰتٍ۬ وَيَجۡعَل لَّكُمۡ أَنۡہَـٰرً۬ا
“বলেছি, তোমরা তোমাদের প্রতিপালকের ক্ষমা প্রার্থনা করো, তিনি তো অতিশয় ক্ষমাশীল; তিনি তোমাদের জন্য আকাশ হতে প্রচুর বৃষ্টিপাত করবেন, তিনি তোমাদের সমৃদ্ধ করবেন ধন-সম্পদ ও সন্তান-সন্ততিতে এবং তোমাদের জন্য বাগানসমূহ তৈরি করবেন ও প্রবাহিত করবেন নদী-নালা।”
(সূরা নুহ ১০-১২)
লক্ষ্য করুন, আল্লাহ বলছেন তিনি সমৃদ্ধ করবেন সন্তান-সন্ততিতে। কিন্তু একটি শর্ত জুড়ে দিয়েছেন। প্রশ্ন হলো শর্তটা কি? অর্থগুলো প্রথম থেকে আবার পড়ে আসুন। আল্লাহ বলেছেন, তোমরা আল্লাহর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করো, তোমাদেরকে সমৃদ্ধ করা হবে। অর্থাৎ আল্লাহ আমাদের কোন কাজ কিংবা সকল কাজের প্রতি অসন্তুষ্ট। তাই তিনি আমাদেরকে সন্তান দেন না। আমাদের (স্বামীর অথবা স্ত্রীর অথবা উভয়ের) এমন কোন আচরণ কিংবা কাজ রয়েছে, যা আল্লাহর নিকট অপছন্দনীয়। তাই আল্লাহ আমাদের সন্তান দিচ্ছেন না।
তাফসীরে কুরতুবিতে একটি ঘটনার উল্লেখ পাওয়া যায়, এক ব্যক্তি হযরত হাসান আল বাসরির (রঃ) নিকট এসে দোয়া চেয়ে বললেন - ”আল্লাহর কাছে প্রার্থনা করুন আমাকে একজন সন্তান দিয়ে রহম করার জন্য।” উত্তরে তিনি বললেন – “আল্লাহর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করো।”
হাসান আল বাসরিও আল্লাহর কাছে ক্ষমা চাওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন। তাই ভাই ও বোনেরা, আসুন আমরা নিজেদের নিয়ে একটু পর্যালোচনা করি। নিজেদের দোষ খুঁজে বের করি। এমন কিছু কাজ খুঁজে বের করি, যার জন্য আল্লাহ আমাদের উপর অসন্তুষ্ট। আর তাওবা করি। হাদীসে কুদসীতে আল্লাহ বলেছেন,
”হে আদম সন্তান! যাবৎ তুমি আমাকে ডাকবে এবং ক্ষমার আশা রাখবে, তাবৎ আমি তোমাকে ক্ষমা করব। তোমার অবস্থা যাই হোক না কেন, আমি কোন পরোয়া করি না। হে আদম সন্তান! তোমার গুনাহ যদি আকাশ পর্যন্ত পৌঁছে থাকে অতঃপর তুমি আমার নিকট ক্ষমা চাও, আমি তোমাকে ক্ষমা করে দেব, আমি কোন পরোয়া করি না। হে আদম সন্তান! তুমি যদি পৃথিবী পরিমাণ গুনাহ নিয়ে আমার কাছে উপস্থিত হও এবং আমার সাথে কাউকে শরীক না করে থাক, তাহলে আমি পৃথিবী পরিমাণ ক্ষমা নিয়ে তোমার নিকট উপস্থিত হব।’’ (তিরমিযী, হাসান)
আসুন, ক্ষমা চাওয়ার মাধ্যমে আমরা আল্লাহর নৈকট্য লাভের চেষ্টা করি। আল্লাহর নৈকট্য লাভের উপায় সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে পড়তে পারেন, শহীদ মতিউর রহমান নিজামী’র লেখা বই, “আল্লাহর নৈকট্য লাভের উপায়”।
আর বেশি বেশি করে নিমোক্ত দোয়ার মাধ্যমে কল্যাণ চাইতে থাকি,
رَبَّنَا هَبْ لَنَا مِنْ أَزْوَاجِنَا وَذُرِّيَّاتِنَا قُرَّةَ أَعْيُنٍ وَاجْعَلْنَا لِلْمُتَّقِينَ إِمَامًا
’হে আমাদের পালনকর্তা, আমাদের জীবনসঙ্গীর পক্ষ থেকে এবং আমাদের সন্তানের পক্ষ থেকে আমাদের জন্যে চোখের শীতলতা দান দান করুন এবং আমাদেরকে মুত্তাকীদের জন্যে আদর্শস্বরূপ দান করুন।’ (সূরা ফুরকান ৭৪)
رَبِّ هَبْ لِي مِن لَّدُنْكَ ذُرِّيَّةً طَيِّبَةً إِنَّكَ سَمِيعُ الدُّعَاء
হে, আমার পালনকর্তা! আপনার নিকট থেকে আমাকে পুত-পবিত্র সন্তান দান করুন। নিশ্চয়ই আপনি প্রার্থনা শ্রবণকারী। (সূরা আলে-ইমরান ৩৮)
আমরা যদি, তাওবাতুন নাসুহার মাধ্যমে আল্লাহর ক্ষমা লাভ করতে পারি, ইনশাল্লাহ তিনি আমাদের নিঃসন্তান দম্পতিকে সন্তান দান করবেন।
Collected

মঙ্গলবার, ১৬ ফেব্রুয়ারী, ২০২১

চট্টগ্রাম ওয়াসার পানি সরবরাহ বিঘ্নের বিজ্ঞপ্তি

আমাদের বাংলাদেশ নিউজ 24 ডেস্কঃ চট্টগ্রাম ওয়াসা চট্টগ্রাম শহরে পানি সরবরাহ বিঘ্নের বিষয়ে একটি বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেছে। বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেক করা হয়েছে, চট্টগ্রাম শহরের জলবদ্ধতা নিরসনকল্পে খাল পুনঃখনন, সম্প্রসারণ, সংস্কার ও উন্নয়ন প্রকল্পের কাজ বাস্তবায়নে চট্টগ্রাম ওয়াসার মড-২ আওতাধীন এলাকায় হিজরা খালে স্থিত কাপাসগোল ব্রিজ স্থানে ২৪ ইঞ্চি ব্যাসের পাইপ লাইন পুনর্বাসন কাজ চলমান আছে। পাইপ লাইন পুনর্বাসনের জন্য আগামী ১৭/২/২০২১ খ্রিঃ রোজ বুধবার রাত ১২:০০ ঘটিকা হইতে পরবর্তী ৩৬ ঘন্টা পানি সরবরাহ বন্ধ রাখিতে হইবে।

ফলে কালুরঘাট বুস্টার স্টেশনের আওতাধীন এলাকাসমূহ যথাক্রমে চান্দগাঁও আবাসিক এলাকা, চকবাজার, ডিসি রোড, চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ও তৎসংলগ্ন এলাকা, সিরাজুদ্দৌল্লাহ রোড, কাপাসগোলা রোড, বহদ্দারহাট, বাড়ইপাড়া, খাজারোড, প্রবর্তক মোড়, সুগন্ধ্যা আবাসিক এলাকা, কাতালগঞ্জ, বাদুরতলা, শুলকবহর (আংশিক), চাঁনমিয়া সওদাগর রোড ও তৎসংলগ্ন এলাকাসমূহে পানি সরবরাহ বন্ধ থাকিবে। 

সম্মানিত গ্রহকবৃন্দের সামিয়িক অসুবিধার জন্য চট্টগ্রাম ওয়াসা কর্তৃপক্ষ আন্তরিকবাবে দুঃখ প্রকাশ করেছেন। 

সোমবার, ১৫ ফেব্রুয়ারী, ২০২১

আমাদের বিয়ের বয়স এ বছর ১৪ পেরুবে।

 

আমাদের বাংলাদেশ নিউজ24:পরিবারের সম্মতিতেই বিয়েটা হয় মেডিকেল থার্ড ইয়ারে থাকতে। আশেপাশের যেকোন প্রেম মেনে নেয়া সমাজকেই তখন কেন জানিনা আমাদের বিয়েটাকে মেনে নিতে অনেক হট্টগোল এবং মানসিক কসরত করতে দেখেছি।


প্রেম করলে লেখাপড়ার যদি ক্ষতি হয়, বিয়েতে নাকি ক্যারিয়ারের রীতিমত সর্বনাশ! তার উপর সম বয়সী জামাই-বউ ধ্বংস যেন অনিবার্য। দু'জনই মহা প্যাড়ার মধ্যে দিয়ে গেছি! একটা মেয়ের ২১-২২ বছর বয়সে বিয়ে তাও মানা যায়! এই বয়সী একটা ছেলে বিয়ে করবে!! সে যেন এক ছি! ছি অবস্থা।

একজন ঢাকা মেডিকেলে আরেকজন চট্টগ্রাম মেডিকেলে পড়ি। শুরু হল আমাদের হাইওয়ে সংসার। একে লং ডিসট্যান্স রিলেশনশিপ, তার উপর ২ টা ভিন্ন মেডিকেল, তার উপর ছিলাম ৭ টাকা/৩ টাকা প্রতি মিনিট কল রেটের জামানায়! ইন্টারনেট নাই। এ যেন, 'মাঝে মাঝে তব দেখা পাই ' মার্কা অবস্থা!

প্রায় ১৪ বছর আগে আমাদের নতুন সংসারের খরচ চলতো গুণে গুণে। বাসা থেকে থাকা-খাওয়ার খরচ আসতো।পড়া যাতে নষ্ট না হয় তাই দু'জন ১ টা করে টিউশনি করতাম। আমাদের মাথায় ছিল, বাবা মায়ের যত সামর্থ থাকুক না কেন আমাদের শখ আহ্লাদ মেটানোর দায়িত্ব নিতে তারা বাধ্য নন। তাই নিজেদের শখের লাগাম নিজেদেরই টানত হবে। আর এভাবেই আমরা বেশ ভাল ছিলাম। শখ আর সাধ্য মিলিয়ে নিলে, সাথে লোক দেখানো ব্যাপারটা নিয়ে খুব মাথা ব্যথা না থাকলে অল্পতেই সন্তুষ্ট থাকা খুব সম্ভব বলে আমাদের দু'জনেরই বিশ্বাস।জীবন থেকেই শিখেছি।

আমরা মেডিকেল লাইফে খুব আনন্দ নিয়ে পড়েছি।
একজন অন্যজনের মাস্টার ছিলাম ঠিকই তবে দুজনের কেউই আঁতেল ছিলাম না!
আস্তে আস্তে মোবাইল কল রেট যখন কমল ডিজুস রাত জাগা অফারে - কতক্ষণ আর 'তোমাকে ছাড়া আমার চলেনা' বলা যায়! আইটেমের পড়া ও নিজেদের মধ্যে ডিস্কাস করার অভ্যাস করে ফেললাম। এই ডেমো খাওয়া এবং ডেমো দেওয়ার আন্ডারস্ট্যান্ডিং টা - আমাদের মধ্যে অদ্ভূত রকম ভাল ছিল! তাই বড়সড় ফেইল ছাড়াই মেডিকেল লাইফটা ভালই কেটেছে।

আমরা দু'জনই আমাদের মাতৃত্ব এবং পিতৃত্ব ব্যাপারটা মন থেকে খুব ভালবেসেছি। আমাদের ৩ সন্তান আমাদের পড়ায় কখনো বাঁধা হয়নি বরং ওরাই আমাদের জীবনের সবচেয়ে বড় অর্জন। প্রতিটি pregnancy তে অসম্ভব মাত্রায় Emotionally draining & Physically intolerable অবস্থায় গেলেও কেবল একসাথে শক্ত থাকা এবং একে অন্যের পড়ার খেয়াল রাখাতে আমরা যেটা পেরেছি সেটা হল, শিক্ষাজীবনে বড়সড় কোন গ্যাপ ছাড়া মাত্র ৬ মাস আগে পরে আমরা দু'জন কম বয়সেই আমাদের পোষ্টগ্র্যাজুয়েশন কমপ্লিট করি।

আমার বিবাহিত জীবনের সবচেয়ে বড় সারপ্রাইজ ছিল নিজের কাবিনের টাকা হাতে পাওয়া যে ব্যাপারটাতে আমি নিজে কিনা বিন্দুমাত্র সিরিয়াস ছিলাম না!

বিয়ের অনেক বছর পর এক দুপুরে এতোগুলো টাকা হঠাৎ নিজের একাউন্টে আসতে দেখে জামাই কে ফোন দিলাম হন্তদন্ত হয়ে! সে বলল- অস্থির হবার কিচ্ছু নেই। বিয়ের কাবিনটা যখন হয় সেটা তখন ওর সামর্থের পুরোপুরি বাইরে ছিল। তাই একটু একটু করে ও টাকাটা জমিয়েছে যাতে পুরো টাকা টা আমি পাই। বউ মাফ করলেই মাফ টাইপ ন্যাকা ন্যাকা নাটকে না পড়ি! এবং টাকাটা ও ই দেয়, আমার শ্বশুর নন কারন এটা ওর উপরে ফরজ। কাবিন কোন ছেলেখেলা না। এটা নাকি আমার অধিকার! বিয়ে কোন মজা না। এটা একটা worship for the sake of Allah.

আমি আসলেই ঘুণাক্ষরে ও কল্পনা করিনি যে, সংসারের এতো খরচ সামলে একজন মানুষ এতো সিরিয়াসলি আমার একটা অধিকার বুঝিয়ে দিতে ভেতরে ভেতরে এতোটা অবিচল হতে পারে!

হাদিসে এসছে - বিয়ে, সন্তান, হজ্বের নিয়তে নাকি আয় বাড়ে। আমি এটা নিয়ে অনেক ভেবেছি কারন এর সত্যতা আমি নিজেদের জীবনে দেখেছি। আমার সিম্পলি মনে হয়েছে, এই বিষয়গুলো আমাদের মানুষ হিসেবে পরিপক্ক এবং অনেক বেশি দায়বদ্ধ করে।অহেতুক বিনোদন, অকারন সময় নষ্টের ফাঁদ থেকে বাঁচায়। আমাদের পরিশ্রম করার মানসিকতা তৈরি হয়। আমরা বুঝি, Temptation এর দুনিয়ায় নিজের সব Desire মিটিয়ে নেয়াই সুখ না, সুখ টা অন্যের জন্যে দায়িত্ব নেয়া, অন্যের জন্যে ছাড় দেয়া, অন্যকে ভালোবাসার মধ্যে দিয়েই আসে - হোক সে স্বামী/স্ত্রী,সন্তান বা পরিবার।

প্রেম আমাদের কাছে কখনোই 'বিনোদন' ছিল না বরং ছিল 'দায়িত্বশীলতা' শব্দটিরই সমার্থক।

এই আমাদের কাছে আসার সাহসী গল্প।

কুরআনের একটা আয়াত আমার বড্ড প্রিয় এবং এই আয়াতটা নিজের অজান্তেই আমার চোখ ভিজিয়ে দেয়-"অতঃপর, তোমরা তোমাদের রবের কোন কোন নিয়ামত কে অস্বীকার করবে?"
(May Allah grant a house for us in His jannah.)

সোমবার, ৮ ফেব্রুয়ারী, ২০২১

কুরআন পড়ি বুঝে বুঝে: মা মু ন প্লা ব ন

 সূরা বাকারাহ, আয়াত ৯৯-১০১

প্রারম্ভিকাঃ

আলোচ্য আয়াতগুলো মহাগ্রন্থ আলকুরআনের সূরা আল বাকারাহ এর ৯৯,১০০ ১০১ নং আয়াত।৯৯ নং আয়াতে আল কুরআনও রাসূল(সাঃ) এঁর মহিমা বর্ণনা করা হয়েছে এবং ১০০ ১০১ নং আয়াতে ইহুদীদের চরিত্র উম্মোচন করা হয়েছে।নিম্নে আমরা কয়েকটি প্রসিদ্ধ তাফসীর গ্রন্থের আলোকে আয়াতগুলো অধ্যয়নান্তে এর অন্তর্নিহিত শিক্ষা বুঝে নেবার প্রয়াস পাবো ইনশাআল্লাহ।

আয়াতঃ৯৯

অনুবাদঃ

"আমি তোমার প্রতি এমন সব আয়াত নাযিল করেছি যেগুলো দ্ব্যর্থহীন সত্যের প্রকাশে সমুজ্জ্বল। একমাত্র ফাসেক গোষ্ঠী ছাড়া আর কেউ তার অনুগামিতায় অস্বীকৃতি জানায়নি।"

তাফসীর পড়ে যা বুঝলামঃ

আলোচ্য আয়াতে আলকুরআন রাসূল (সাঃ) এঁর মহিমা বর্ণনা করে বলা হয়েছে যে, রাসূল (সাঃ)এঁর প্রতি যে আয়াত, নিদর্শন বা Sign গুলো নাজেল করা হয়েছে সেগুলো সত্য প্রকাশে সমুজ্জ্বল সাক্ষ্য।মূলতঃ ফাসিকরা তা মানতে পারে না।

তাফসীর ইবনে কাসীরঃ

বলা হচ্ছে, হে মুহাম্মদ(সাঃ) আমি এমন এমন নিদর্শনাবলী তোমার উপর অবতীর্ণ করেছি যা তোমার নবুয়তের জন্য প্রকাশ্য দলীল।ইয়াহুদীদের বিশেষ জ্ঞান ভান্ডার,তাওরাতোর গোপনীয় কথা,তাদের পরিবর্তন কৃত আহকাম ইত্যাদি সব কিছুই আমি অলৌকিক কিতাব আলকুরআন মজীদে বর্ণনা করেছি।ওটা শুনে প্রত্যেক জীবিত অন্তর তোমার নবুয়তের সত্যতা স্বীকার করতে বাধ্য হয়।তবে ইহুদীরা যে হিংসা বিদ্বেষ বশতঃ মানছে না ওটা অন্য কথা।নতুবা প্রত্যেক লোকই বুঝতে পারে যে,একজন নিরক্ষর লোক কখনো এরকম পবিত্র অলংকার নিপূনতাপূর্ণ কথা বানাতে পারে না।'

ইয়াহুদীদের নিকট শেষ নবী (সাঃ)কে স্বীকার করার উপর অংগীকার নেওয়া হয়েছিলো তা অস্বীকার করেছিলো বলে আল্লাহ তাআলা বলেন যে,অংগীকার ভঙ্গ করা এটাতো ইহুদীদের চিরাচরিত অভ্যাস,বরং তাদের অধিকাংশের অন্তরইতো ঈমান শূণ্য।

ফাসিক কারাঃ

যারা সত্য স্বীকার করে কিন্তু কার্যতঃ মানেনা তারাই ফাসিক।

ফাসিক আরবী শব্দ ফিসক থেকে এসেছে যার অর্থ অবাধ্য।এরা জানে কিন্তু মানেনা।হীন দুনিয়াবী স্বার্থে ফাসিকরা জেনে বুঝেই সত্য গোপন করে।

তওবা নসূহা করে মরতে না পারলে ফাসিকরাও জাহান্নামী হবে।

আয়াতঃ১০০

অনুবাদঃ

"যখনই তারা কোন অঙ্গীকার করেছে তখনই কি তাদের কোন না কোন উপদল নিশ্চিতরূপেই তার বুড়ো আঙুল দেখায়নি? বরং তাদের অধিকাংশই সাচ্চা দিলে ঈমান আনে না।"

তফসীর পড়ে যা বুঝলামঃ

আলোচ্য আয়াত টিতে বনি ইসরাইলদের সম্পর্কে বলা হয়েছে তারা যখনই অঙ্গীকার করেছে তখনই তাদের এক দল তা ভঙ্গ করেছে।অথচ তারা নিজদেরকে ঈমানদার দাবী করে।তাদের এই নাম সর্বস্ব ঈমানের কোন দাম নেই।

তাফসীর বয়ানুল কুরআনঃ

মুহাম্মদ(সাঃ) কুরআন আবির্ভূত হলে তাঁর প্রতি ঈমান আনার জন্য তাওরাতে ইহুদীগণ হতে গৃহিত ওয়াদা তাদেরকে স্মরণ করিয়ে দিলে তারা সেওয়াদা পরিস্কার অস্বীকার করে বসলো।এ আয়াতে তা বর্ণিত হয়েছে।

আয়াত ১০১

অনুবাদঃ

"আর যখনই তাদের কাছে পূর্ব থেকে রক্ষিত কিতাবের সত্যতা প্রমাণ করে তার প্রতি সমর্থন দিয়ে কোন রসূল এসেছে তখনই এই আহলি কিতাবদের একটি উপদল আল্লাহর কিতাবকে এমনভাবে পেছনে ঠেলে দিয়েছে যেন তারা কিছু জানেই না।"

তাফসীর পড়ে যা বুঝলামঃ

আল কুরআন পূর্ববর্তী সকল কিতাবের সত্যায়ন কারী।তাওরাত, যাবুর এবং ইঞ্জিলেরও সত্যায়ন কারী।কুরআন প্রকাশিত হবার পর বনি ইসরাইলগণ এমন ভাবে তা অস্বীকার করছে যেন তারা তাদের অঙ্গীকার সমূহ সম্পর্কে কিছুই জানে না।

তাফসীর বয়ানুল কুরআনঃ

শেষ নবী হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) এঁর আগমনের পর তাঁর উপর ঈমান আনার ব্যাপারে আল্লাহ তা'আলা ইহুদী নাসারাদের নিকট থেকে যে প্রতিশ্রুতি গ্রহন করেছিলেন তাওরাত ইঞ্জিলে তার উল্লেখ রয়েছে।ইঞ্জিলে নবীজীকে আহমাদ নামে উল্লেখ করা হয়েছে।একবার নবীজী ইহুদী পন্ডিত মালিক ইবনে সায়িফকে সে প্রতিশ্রুতির কথা স্মরণ করিয়ে দেন।তখন সে শপথ করে বলে, কোথায় মুহাম্মদ সম্পর্কে আমাদের নিকট হতে কোন প্রতিশ্রুতি নেওয়া হয়নিতো! তার অস্বীকৃতির জবাবে আলোচ্য আয়াতটি নাজেল হয়।

তাফসীর আহসানুল বয়ানঃ

মহান আল্লাহ নবী করীম (সাঃ)-এর প্রতি ইঙ্গিত করে বলছেন যে, আমি রসূলকে বহু উজ্জ্বল নিদর্শনাবলী দান করেছি; যা দেখে ইয়াহুদীদেরও ঈমান আনা উচিত ছিল। তাছাড়া তাদের কিতাব তাওরাতেও তার গুণাবলীর উল্লেখ এবং তার উপর ঈমান আনার অঙ্গীকার রয়েছে, কিন্তু তারা পূর্বে কি কোন অঙ্গীকারের কোনই পরোয়া করেছে যে, এই অঙ্গীকারেরও করবে? অঙ্গীকার ভঙ্গ করা তাদের একটি দলের অভ্যাসই ছিল। এমন কি আল্লাহর কিতাবকেও তারা পশ্চাতে নিক্ষেপ করল; যেন তারা তা (আল্লাহর বাণী বলে) জানেই না।

 

আল কুরআন অধ্যয়নে আমরা জানতে পারি আল্লাহ বনি ইসরাইলদের থেকে নিম্মোক্ত অঙ্গীকার সমূহ নিয়ে ছিলেন-

. আল্লাহর কিতাবকে শক্ত ভাবে আঁকড়ে ধরার অঙ্গীকার

.কিতাবে যে সকল বিধান রয়েছে তা মেনে চলার অঙ্গীকার

.আল্লাহ ছাড়া আর কারো ইবাদত না করার অঙ্গীকার

.মা বাবার সাথে ভালো ব্যবহারের অঙ্গীকার

.আত্মীয়ের সাথে ভালো ব্যবহারের অঙ্গীকার

.ইয়াতিমের সাথে ভালো ব্যবহারের অঙ্গীকার

.মিসকিনের সাথে ভালো ব্যবহারের অঙ্গীকার

.সকল মানুষের সাথে ভালো আচরণের অঙ্গীকার

.নামাজ কায়েমের অংঙ্গীকার

১০.যাকাত আদায়ের অঙ্গীকার

১১.পরস্পরকে হত্যা না করার অংঙ্গীকার

১২.পরস্পরকে গৃহচ্যুত না করার অঙ্গীকার

শিক্ষনীয়ঃ

আলকুরআনের আলোচ্য আয়াত গুলো থেকে আমাদের জন্য নিন্মোক্ত শিক্ষনীয় বিষয় রয়েছে-

আল কুরআন নিরংকুশ সত্যের স্বাক্ষ্যবাহী এক একমাত্র কিতাব।ইহা পরম সত্য বিগত সত্যের সত্যায়নকারী।আলকুরআনের নির্ভুল জ্ঞানের একমাত্র উৎস।আলকুরআন মহান আল্লাহর অমীয় বাণী বিশ্ব মানবতার অবশ্যপালনীয় সংবিধান।আল কুরআনকে ধারণ করেই কেবল দুনিয়া আখিরাতের সার্বিক সফলতা সম্ভব।

আল কুরআনে অবিশ্বাসীরা ফাসিক,কাফির,জালিম,জাহিল।অবিশ্বাসী অবস্থায় মৃত্যু বরণকারীর পরিণাম নিশ্চিত জাহান্নাম।

বনি ইসরাইলগণ এক ভয়ানক পাপী জাতির উদাহরণ।অঙ্গীকার ভঙ্গ করা তাদের বৈশিষ্ট্য।সূচনালগ্ন থেকে অধ্যাবদি তারা তাদের গৃহিত ছোট বড় সকল অঙ্গীকারই ভঙ্গ করে চলেছে।

বনি ইসরাইলগণ রাসূল(সাঃ) আলকুরআনকে অস্বীকার করে নিশ্চিত কাফিরে পরিণত হয়েছে।

পরিশেষঃ

বনি ইসরাইল তথা ইহুদী খৃষ্টানদের সত্য প্রত্যাখ্যানের প্রবনণতা চিরন্তন।তারা কেবল সত্য প্রত্যাখ্যান করে না বরং সত্য পন্থীদের বিরুদ্ধে নানামুখি ষড়যন্ত্রেও লিপ্ত থাকে।তারা কোন অঙ্গীকারই রক্ষা করে না।তারা নিচক দুনিয়াদার।দুনিয়াবী হীন স্বার্থ,মূর্খতা অহংকার বশতঃ তারা ইসলাম মুহাম্মদ (সাঃ)কে অস্বীকার করে কুফরীতে লিপ্ত রয়েছে।

বনি ইসরাইলদের ঘটনাবলী ইতিহাসকে আলকুরআনে মুসলিমদের জন্য শিক্ষনীয় করা হয়েছে।

আজকের নামধারী মুসলিমরাও আলকুরআনকে বেমালুম ভুলে রয়েছে।তাদের সংবিধান,রাষ্ট্র পরিচালনা, আইন, বিচার কোথাও আজ আলকুরআন মানা হয় না।যে জাতি জীবনের সকল ক্ষেত্রে কুরআন মানে না সে জাতি মুসলিম হতে পারে না।

তাই আমাদের উচিত আমাদের ঈমানী জেন্দেগীর অবস্থা পূনর্বিবেচনা করা।যে টুকু ঈমান আর ঈামানী জেন্দেগীর দুরাবস্থা নিয়ে আমরা নিজেদের মুসলিম দাবী করছি তা যেন বনি ইসরাইলদের ঈমানের দাবীর মতো অসার বাস্তবতা বিবর্জিত প্রমাণিত না হয়।

আল্লাহ আমাদেরকে আলকুরআনের বাস্তব অনুসারী হিসাবে কবুল করুন।আমিন

মামুন প্লাবন

//২১ঈসাব্দ

ঢাকা।

 

About

ব্লগ সংরক্ষাণাগার

আমার ব্লগ তালিকা

Translate

Translate

আমাদের বাংলাদেশ নিউজ 24

সর্বশেষ

অনুসরণকারী