বিজ্ঞাপন দিন

আচ্ছালামু আলাইকুম ওয়ারাহমাতুল্লাহ। ইসলামী ব্যাংক এজেন্ট ব্যাংকিং আউটলেট দক্ষিণগাও, শাহীবাগ বাজার এর পক্ষ থেকে সকল গ্রাহক, শুভাকাংখীসহ সবাইকে জানাই ঈদ উত্তর সালাম ও আন্তরিক শুভেচ্ছা। ব্যাংক খোলা এবং যথারীতি ব্যাংকিং কার্যক্রম চলছে। এই গ্রুপে যারা আছেন তাদের মাধ্যমে সংশ্লিষ্ট এলাকার এলাকারসকলকে ইসলামী ব্যাংকের মাধ্যমে বিদেশ থেকে রেমিটপন্স পাঠানোর আহবান জানাচ্ছি। ঢাকার সবুজবাগ থানার রাজারবাগ, কুসুমবাগ, দক্ষিনগাও, শাহীবাগ, মানিকদিয়া, বাইকদিয়া, নন্দিপাড়াসহ সকল এলাকার গ্রাহক, শুভাকাংখী, শুভানুধ্যায়ীদের প্রদত্ত মোবাইল নাম্বারে যোগাযোগ করার অনুরোধ করা হলোঃ ০১৭১১-৪৫৮১৫১, ০১৭০০৯২৫২৪১:b>ইসলামী ব্যাংক এজেন্ট ব্যাংকিং আউটলেট দক্ষিণগাও, শাহীবাগ বাজার

বুধবার, ৩০ মার্চ, ২০১৬

এক বছরে নারী নির্যাতন বেড়েছে ৭৪ শতাংশ

আমাদের বাংলাদেশ অনলাইন নিউজ: দেশে ২০১৪ সালের তুলনায় ২০১৫ সালে নারী নির্যাতনের ঘটনা ৭৪ শতাংশ বেড়েছে। ৫৫টি জেলায় নিজস্ব কর্মীদের মাধ্যমে সংগৃহীত তথ্যের ভিত্তিতে ব্র্যাকের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে। ওই প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, নারীর প্রতি সহিংস ঘটনার ৬৮ শতাংশই নথিভুক্ত হয় না। নথিভুক্ত হলে সংখ্যাটি আরও বাড়ত।

আরও কয়েকটি সংস্থার নিজস্ব পরিসংখ্যানও নারী নির্যাতন পরিস্থিতির অবনতির চিত্রদিচ্ছে। পুলিশের মামলার হিসাবও বলছে, নির্যাতনের ঘটনা বেড়েছে। নারী আন্দোলনকর্মী, মানবাধিকারকর্মীরা প্রতিনিয়তই এ ব্যাপারে উদ্বেগ প্রকাশ করছেন।
তবে মহিলা ও শিশু-বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের নারী নির্যাতন প্রতিরোধকল্পে মাল্টিসেক্টরাল প্রোগ্রামের প্রকল্প পরিচালক আবুল হোসেন বলেন, সরকারের বিভিন্ন কার্যক্রম, গণমাধ্যমে প্রচার—সব মিলিয়ে আগে মানুষ যে বিষয়গুলোকে নির্যাতন বলেই মনে করত না, এখন তা যে নির্যাতন, সেই সচেতনতা তৈরি হয়েছে। বর্তমানে নির্যাতন নিয়ে মানুষ মুখ খুলতে শুরু করেছে। ফলে নারী নির্যাতনের সংখ্যাটি বেশি দৃশ্যমান হচ্ছে।
এরই মধ্যে কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া কলেজের ছাত্রী ও নাট্যকর্মী সোহাগী জাহান তনু হত্যাকাণ্ড নিয়ে সারা দেশে বিক্ষোভ চলছে।
ব্র্যাকের পরিসংখ্যান: দেশের বৃহত্তম বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা ব্র্যাক তাদের সামাজিকÿক্ষমতায়ন কর্মসূচির আওতায় দেশের ৫৫টি জেলা থেকে নির্যাতনের ঘটনার তথ্য সংগ্রহ করে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে গত বছরের জুন মাসে। প্রতিবেদন অনুযায়ী, ২০১৪ সালে ২ হাজার ৮৭৩টি নারী নির্যাতনের ঘটনা ঘটে। পরের বছর সংখ্যাটি ৫ হাজার ৮টিতে পৌঁছায়। এই এক বছরে নারীর প্রতি প্রায় সব ধরনের সহিংসতাই বেড়েছে। এই প্রতিবেদনে দেখা যায়, দরিদ্র নারীরা সচ্ছল নারীদের থেকে বেশি (৫৪ শতাংশ) সহিংসতার শিকার হয়েছেন। আর নারী নির্যাতনকারীদের ৮৮ শতাংশই পুরুষ। এই পুরুষেরা নির্যাতনের শিকার নারীর পরিবারের সদস্য বা প্রতিবেশী। ব্র্যাকের জরিপ অনুযায়ী, নির্যাতনের বেশি ঘটনা ঘটে কুমিল্লা, বগুড়া, রাজশাহী, বাগেরহাট ও সাতক্ষীরায়। বছরের মে মাসে নির্যাতনের সংখ্যা বাড়ে। অন্যদিকে জানুয়ারি মাসে নির্যাতনের ঘটনা কম থাকে।
ব্র্যাকের পল্লিসমাজ নামের ওয়ার্ডভিত্তিক ও নারীকেন্দ্রিক সংগঠনের নেটওয়ার্কের সদস্যদের কাজে লাগিয়ে এ তথ্য সংগ্রহ করা হয়। কোথাও নারী নির্যাতনের ঘটনা ঘটলে ভুক্তভোগীর পরিবার, প্রতিবেশী, পল্লিসমাজের সদস্যরা ২৪ ঘণ্টার মধ্যে সেসব তথ্য রাজধানীতে ব্র্যাকের প্রধান কার্যালয়ে পাঠান এবং প্রধান কার্যালয় এ তথ্য ডেটাবেইসে সংরক্ষণ করে।

রিজার্ভ চুরি বাংলাদেশেই হয়েছে: মাহফুজ উল্লাহ


বিশিষ্ট সাংবাদিক মাহফুজ উল্লাহ বলেছেন, বাংলাদেশ ব্যাংকে যদি বায়োমেট্রিক সিস্টেম থেকে থাকে তাহলে ১০০ ভাগের উপরে সত্য যে বাংলাদেশেই রিজার্ভ চুরি হয়েছে। তিনি বলেন, যদিও সারা পৃথিবী জুড়েই হ্যাকিং হয় এবং হ্যাকিং এর বিষয় কিন্তু একাডেমিক ভাবে পড়ানো হয়, যারা কম্পিউটারের বিষয় নিয়ে পড়াশুনা করেন তাদেরকে। পাড়ানোর কারণ হলো, আপনাকে কাউন্টার বিষয়টা জানানোর জন্য।
মঙ্গলবারে বাংলাভিশন টেলিভিশনে নিউজ এন্ড ভিউজ অনুষ্ঠানে সাংবাদিক মাহফুজ উল্লাহ এ কথা বলেন।
মাহফুজ উল্লাহ বলেন, আজকে পৃথিবীতে এবং বিজ্ঞানে বায়োমেট্রিক এমন একটা বিষয় যেখানে কারো ছাপের সাথে কারো আঙ্গুলের ছাপ মেলে না। কারণ আল্লাহ্ আলাদা আলাদা অঙ্গুলের ছাপ তৈরি করে দিয়েছে সুতরাং এখানে আলাদা একটা পাসওয়ার্ড থাকে এবং একটা চাবি থাকে অনেকটা পেনড্রাইভ এর মত এবং তার মধ্যে একটা বিলটিন সফটওয়ার থাকে।
তিনি বলেন, এখানে বড় একটা টেকনিক্যাল বিষয় আছে, আর যে তদন্ত কমিটি করা হয়েছে সেখানে একজন টেকনোলজি বিশেষজ্ঞ থাকা খুবই দরকার ছিল কিন্তু নেই।
তিনি আরও বলেন, এখানে যে বিষয়টা ঘটেছে তাতে পরিষ্কার ভাবে ৩টা বিষয় আছে তা হলো, সুইফট কোডের মাধ্যমে সুইফট এর মেম্বার যারা থাকে “বেলজিয়ামে” তাদের প্রতেকের আলাদা আলাদা কোড আছে এবং সুইফটের পুরো সফটওয়ার সম্পূর্ণ ভিন্ন এবং এটা ভাঙ্গা কোনো ভাবেই সম্ভব না এবং কোনো কালেই হয়নি। এছাড়াও সুইফটের সফটওয়ার দিয়ে যখন কাজ করে, সেই কম্পিউটার গুলো সম্পূর্ণ আলাদা থাকে এবং বিশেষ লোকের কাছে থাকে বাংলাদেশ ব্যাংকেও তাই ছিল।
সাংবাদিক মাহফুজ উল্লাহ বলেন, আমরা যতটুকু জানি তাতে আমাদের বাংলাদেশ ব্যাংকেও ৩টা কম্পিউটার আছে যেখানে সুইফট সফটওয়াকে ব্যবহার করে। যারা এটা ব্যবহার করেন তারা একটা লকড তৈরি করে এবং সেই লকডটা নিউইয়র্ক, বেলজিয়ামে এবং অন্যান্য জায়গায় সংরক্ষিত থাকে। সেই কম্পিউটারটা যদি কেউ দেখে তাহলে বোঝা যাবে যে কে কখন কিভাবে ব্যবহার করেছে তার একটা রেকর্ড থাকে এবং সেটা কখনোই মুছে ফেলা যায় না।
তিনি আরও বলেন, এখন যে পাসওয়ার্ড থাকে সেটা ৬৪ বিটের হয়ে থাকে এবং সেখানে ছোট হাতের এবং বড় হাতের অনেক কিছু মিলিয়ে পাসওয়ার্ড করতে হয়। যেটা মনে রাখা সম্ভব না এবং সুইফটের নিয়ম অনুসারে ১ মাসের বেশি ঐ পাসওয়ার্ড ব্যবহার করা যায় না, কিন্তু কিছু কিছু সময়ে এর আগেও পরিবর্তন করা যায় কিন্তু ১ মাসের বেশি রাখা যায় না। সুইফটের যে আলাদা ক্ষমতা তাতে বাহিরের কোনো কিছু প্রবেশ করানো সম্ভব না যদি প্রবেশ করেও থাকে তাহলে সাথে সাথে বন্ধ হয়ে যাবে এবং কোন কাজ করা সম্ভব না।
তিনি বলেন, এখন আইনজীবী আজমল সাহেব যে প্রশ্নটা তুলেছেন যে এতগুলো ফেরত এসেছে। দেখেন এটা একটা বিষয় আছে সেটা হলো, যদি পুরো তথ্য না থাকে এবং যদি সঠিক না হয় তাহলে ব্যাংক কিন্তু নেয় না, আমাদের এখানেই নেয় না তারপর ওখানে। শ্রীলংকায় যে টাকাটা শনাক্ত করা গেছে সেটা কিন্তু জার্মানিতে শনাক্ত করা হয়েছে।
কারণ তারা ফাউন্ডেশনের জায়গায় ফাউন্ডেট লেখেছে।
তিনি আরও বলেন, আমেরিকায় ৩টা ব্যাংকের মাধ্যমে এই টাকাগুলো ফিলিপাইনে গেছে। কাজেই এখান থেকে যদি পরিষ্কার নির্দেশনা না দেয় তাহলে ওখানে নেয়ার কথা না। কারণ রির্জাভ ফেডারেল ব্যাংকেও এই ধরণের ঘটনা কোনো দিনও ঘটে নাই। আসলে নির্দেশনা ছাড়া করা সম্ভব না।
সাংবাদিক মাহফুজউল্লাহ বলেন, কম্পিউটার সম্পর্কে সারা পৃথিবীতে একটা কথা বলা আছে সেটা হচ্ছে কম্পিউটার একটা বোকা যন্ত্র যেখানে আরগুমেন্ট হয় না। আমরা কম্পিউটারকে যে ভাবে নির্দেশনা দিবো ও সেই ভাবেই করবে। কিন্তু সুইফটের যে পাসওয়ার্ডগুলো থাকে সেটা ভাংতে হলে সুপার কম্পিউটার দরকার যা শুধু মাত্র মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রেই আছে। সুপার কম্পিউটারের যে ক্ষমতা তা সাধারণ মানুষ কল্পনাও করতে পাবে না।
তিনি বলেন,“এটা হ্যাকিং না এটা চুরি, এবং যারা বাংলাদেশ ব্যাংকের সাথে আছে তারাই এটি করেছে। আর এটা বের করারা দায়িত্ব বাংলাদেশ সরকারের আমর আপনার না”।
তাহলেতো পৃথিবীর সব হ্যাকিংকে চুরি বলতে হবে?
জবাবে তিনি বলেনা সব হ্যাকিং চুরি না, যেটা হ্যাকিং সেটা হ্যাকিংই আর যেটা চুরি সেটা চুরিই। এখানে আপনাকে পার্থক্য বুঝতে হবে। উদাহরণ স্বরুপ তিনি বলেন চুরি আর খুন কি এক বিষয় ? এখানে যারা এই ধরণের কথা বলে বা এই ধরণের শব্দ ব্যবহার করে তাদের পার্থক্যটা বোঝা উচিত।
তিনি আরও বলেন, এ ব্যাপারে বাংলাদেশ ব্যাংক একটা গাধার মত ভাইরাসের কথা বলছে, কারণ সুইফটে সফটওয়ারে ভাইরাসের ঘটনা ঘটতে পারে না। হ্যা ভাইরাস আসতে পারে সেটা সাধারণ কম্পিউটারের ক্ষেত্রে কিন্তু সুইফট সফটওয়ার এর কম্পিউটার সম্পূর্ণভাবে আলাদা। আর যদি তাই হতো তাহলে তো অনেক আগেই রিজার্ভ ব্যাংক বন্ধ হয়ে যেত, সুইফটও বন্ধ হয়ে যেত। এখানে মানুষের নির্দেশনা ছাড়া সম্ভব না। আস

সুন্দরগঞ্জে কারাগার থেকেই নির্বাচন জামায়াতের ২ নেতার পক্ষে বিপুল সাড়া

ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে দ্বিতীয় ধাপে গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ উপজেলায় কারাগার থেকেই চেয়ারম্যান পদে লড়ছেন জামায়াতের দুই নেতা। তাদের জনসমর্থন দেখে বিরোধী পক্ষ দিশেহারা হয়ে বিভিন্ন ধরনের ষড়যন্ত্র করছেন। তারা ভোটারদেরকে ভয়ভীতি ও হুমকি দিচ্ছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। 
ইতোমধ্যে তাদের পক্ষে স্ত্রী, ছেলে-মেয়ে, পরিবারের সদস্য ও দলীয় নেতাকর্মীরা প্রচার-প্রচারণা চালিয়ে ভোট প্রার্থনা করছেন। 
প্রার্থীদ্বয় হলেন, সুন্দরগঞ্জ উপজেলার রামজীবন ইউনিয়নের কাশদহ গ্রামের মাওলানা মো মিজানুর রহমান ও দহবন্দ ইউনিয়নের দক্ষিণ ধুমাইটারী গ্রামের মো গোলাম মোস্তফা প্রামাণিক রাজু। 
এর মধ্যে আলহাজ্ব মাওলানা মো মিজানুর রহমানের বিরুদ্ধে সুন্দরগঞ্জ থানায় হত্যাসহ একাধিক নাশকতার মিথ্যা মামলা রয়েছে। এসব মামলায় তিনি কোর্টে আত্মসমর্পণ করে বেশ কিছুদিন ধরে গাইবান্ধা জেলা কারাগারে রয়েছেন।
এছাড়া গোলাম মোস্তফা প্রামাণিক রাজু। সুন্দরগঞ্জ পৌরসভার সাবেক মেয়র জামায়াত নেতা মো নুরুন্নবী প্রামাণিক সাজুর ছোট ভাইও ঝিনিয়া এমএ উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক। তার বিরুদ্ধে সুন্দরগঞ্জ থানায় নাশকতা ও সন্ত্রাসবিরোধী আইনে একাধিক মিথ্যা মামলা রয়েছে। গত ১০ মার্চ নির্বাচনী প্রচারণার সময় পুলিশের হাতে গ্রেফতার হয়ে তিনি বর্তমানে গাইবান্ধা জেলা কারাগারে রয়েছেন। 
এদিকে, কারাগারে থেকে দুই জামায়াত নেতা চেয়ারম্যান হিসেবে প্রতিদ্বন্দিতা করায় তাদের স্ত্রী, ছেলে-মেয়ে, পরিবারের সদস্য, দলীয় নেতাকর্মী ও কর্মী-সমর্থকরা ভোট প্রার্থনা করছেন। শেষ মুহূর্তে এসে তারা এখন দিন-রাত ভোটারদের দ্বারে দ্বারে ঘুরছেন। 
এলাকাবাসীর সাথে কথা বলে আরও জানা যায়, চেয়ারম্যান প্রার্থী হাজী মিজান কারাগারে বন্দী থাকায় তার পক্ষে মাঠ চষে বেড়াচ্ছেন তার স্ত্রী মোর্শেদা বেগম। ভোর থেকে গভীর রাত পর্যন্ত ভোটারদের কাছে ছুটে বেড়াচ্ছেন তিনি। এ সময় তিনি অন্যায়ভাবে তার স্বামীকে জেলে আটকে রাখার বিষয়টি ভোটারদের সামনে তুলে ধরছেন। ফলে ভোটারদের মাঝে ব্যাপক সহানুভূতির সৃষ্টি হয়েছে। 
এলাকার সাধারণ ভোটারদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, চশমা প্রতীকের প্রার্থী হাজী মিজান এলাকায় একজন ভালো মানুষ হিসেবে সুপরিচিত। তিনি পেশায় মাদরাসা শিক্ষক হওয়ায় এলাকায় অসংখ্য ছাত্র-ছাত্রী এবং তাদের পরিবারের লোকজনের কাছে ভালো মানুষ হিসেবে পরিচিতি রয়েছে তার। এছাড়াও সামাজিক কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকায় হাজী মিজানের কর্মদক্ষতা সম্পর্কেও সবাই পরিচিত। 
অপর প্রার্থী গোলাম মোস্তফা রাজু এলাকার একজন সুপরিচিত নাম। স্কুলের একজন আদর্শ শিক্ষক হিসেবে এলাকায় যথেষ্ঠ প্রভাব রয়েছে। মিথ্যা মামলায় তাকে গ্রেফতার করায় এলাকাবাসী খুবই ক্ষুব্ধ। জামায়াতের সাথে সম্পর্কের কারণে তার উপর এই জুলুম। জেলে থাকায় এলাকায় ব্যাপক সাড়া পরেছে। তার স্ত্রী মোছাঃ শিউলি বেগম দিন রাত চশমা মার্কায় ভোটের জন্য ছুটে বেড়াচ্ছেন ভোটারদের কাছে। তিনি জানালেন সুষ্ঠু ভোট হলে তার স্বামী বিপুল ভোটের ব্যাবধানে অবশ্যই জয়ী হবেন। 
এলাকাবাসীর সাথে কথা বলে আরও জানা গেছে দেহবন্ধ রামজীবনসহ গোটা উপজেলার ভোটারদের মাঝে জামায়াতে ইসলামীর ব্যাপক প্রভাব রয়েছে। ভোটাররা ভোটকেন্দ্রে গিয়ে সুষ্ঠুভাবে ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারলে হাজী মিজানসহ জামায়াতের প্রার্থীদের বিজয় সুনিশ্চিত বলেই তারা মনে করছেন। 
এদিকে, কারাবন্দী জামায়াত নেতা হাজী মিজান রাজুর সুনিশ্চিত বিজয় ছিনিয়ে নিতে সরকারি দল ষড়যন্ত্র করছে বলে অভিযোগ উঠেছে। বিশেষ করে আওয়ামী লীগ সমর্থিত চেয়ারম্যান প্রার্থী, আ’লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী এবং জাতীয় পার্টির প্রার্থীর কর্মী-সমর্থকরা ভোটারদের নানাভাবে ভয়ভীতি প্রদর্শন করছে। জামায়াত নেতাকে ভোট দিলে মামলা-হামলারও ভয় দেখানো হচ্ছে বলে অনেক ভোটার অভিযোগ করেছেন। এসব কারণে চেয়ারম্যান প্রার্থী হাজী মিজানের পক্ষ থেকে সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য নির্বাচন সংশ্লিষ্ট সকলের প্রতি আহ্বান জানানো হয়েছে। গোটা উপজেলার সবকটি ভোট কেন্দ্রই ঝুঁকিপূর্ণ। একই সাথে রামজীবন ইউনিয়নের ৪টি ভোটকেন্দ্র যথাক্রমে- কাশদহ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, কে-কৈ কাশদহ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, নিজপাড়া বালিকা দাখিল মাদ্রাসা এবং রামজীবন মাদরাসা ভোট কেন্দ্রকে অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে দাবি করে নির্বাচন কর্মকর্তাদের দৃষ্টি আকর্ষণ করা হয়েছে। এসব কেন্দ্রে আ’লীগ প্রার্থী, আ’লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী এবং জাতীয় পার্টির প্রার্থীর লোকজন জোরপূর্বক ভোট কেটে নিতে পারে বলে আশংকা রয়েছে। সুন্দরগঞ্জ এলাকায় অতীতে প্রতিটি নির্বাচনেই জামায়াত সমর্থিত প্রাথীরা বিজয়ী হয়েছেন। বর্তমান সরকারের আমলে সীমাহীন জুুলুম-নির্যাতন-নীপিড়নের ফলে সাধারণ ভোটারদের মাঝে জামায়াতের স্বতন্ত্র প্রার্থী হাজী মিজানের চশমা প্রতীকের প্রতি ব্যাপক গণজোয়ার সৃষ্টি হয়েছে। 
জানা গেছে, রামজীবন ইউনিয়নে মোট ভোটার সংখ্যা প্রায় ২১ হাজার। এই ইউনিয়নের চেয়ারম্যান পদ দখলের লড়াইয়ে নেমেছেন ১০ জন প্রার্থী। এদের মধ্যে আওয়ামী লীগ মনোনীত একজন এবং আ’লীগের বিদ্রোহী রয়েছেন একজন। জাতীয় পার্টি থেকে লড়ছেন একজন। অন্যরা সবাই স্বতন্ত্র। বিএনপি এই ইউনিয়নে কোন প্রার্থী দেয়নি। জামায়াতের স্বতন্ত্র প্রার্থী আলহাজ্ব মিজানুর রহমানকেই সমর্থন দিয়েছে বিএনপি। ফলে দলমত নির্বিশেষে সবার মাঝেই ব্যাপক গ্রহণযোগ্য হয়ে উঠেছেন হাজী মিজান। 
উল্লেখ্য, সুন্দরগঞ্জ উপজেলার ১৫ ইউনিয়নের মধ্যে ১৩ ইউনিয়নে ভোট হচ্ছে আগামী ৩১ মার্চ। ১৩ ইউনিয়নে চেয়ারম্যান পদে ৯২ জন ও সংরক্ষিত নারী এবং সাধারণ সদস্য পদে ৫৩৪ জন প্রতিদ্বন্দিতা করছেন। এর মধ্যে ৪৯ জন প্রার্থীর বিরুদ্ধে সুন্দরগঞ্জ থানায় হত্যা, নাশকতা, সন্ত্রাস, ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ ও নারী ও শিশু নির্যাতনহ বিভিন্ন অপরাধের ঘটনায় মামলা রয়েছে। তারা জামিনে এসে নির্বাচনে দাঁড়িয়েছেন।
সুন্দরগঞ্জ উপজেলা নির্বাচন অফিসার মো আবদুল মালেক জানান, মিজানুর রহমান জেলা কারাগারে থাকায় তার পক্ষে স্ত্রী মনোনয়নপত্র দাখিল করেন। এছাড়া গোলাম মোস্তফা প্রামাণিক মনোনয়নপত্র দাখিল করে প্রচারণার সময় পুলিশ তাকে গ্রেফতার করে। দু’জন প্রার্থী স্বতন্ত্র হিসেবে চেয়ারম্যান পদে লড়ছেন। তারা দুজনই চশমা প্রতীক পেয়েছেন।

ঝিনাইদহে ২ শিবির নেতাকে আটকের পর অস্বীকারের প্রতিবাদ ও অবিলম্বে তাদের সন্ধানের দাবীতে আগামীকাল ৩১ মার্চ বৃহস্পতিবার দেশব্যাপী বিক্ষোভ কর্মসূচি ঘোষনা


ঝিনাইদহে ২ শিবির নেতাকে আটকের পর অস্বীকারের প্রতিবাদ ও অবিলম্বে তাদের সন্ধানের দাবীতে আগামী ৩১ মার্চ বৃহস্পতিবার দেশব্যাপী বিক্ষোভ কর্মসূচি ঘোষণা করেছে বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির।
এক যৌথ বিবৃতিতে ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় সভাপতি আতিকুর রহমান ও সেক্রেটারী জেনারেল ইয়াছিন আরাফাত বলেন, নিরাপত্তার বদলে ছাত্রদের জীবন ধ্বংসের নির্মম খেলায় মেতে উঠেছে সরকার। গত ১৮.০৩.১৬ তারিখ শুক্রবার জুম্মার নামাজ শেষে বাড়ি যাওয়ার পথে ঝিনাইদহ জামতলা মোড় থেকে দু’টি মটরসাইকেল যোগে ৪ জন ব্যক্তি পুলিশ পরিচয়ে যশোর এমএম কলেজের ছাত্র ও ছাত্রশিবির কালিগঞ্জ পৌরসভার সভাপতি আবুজর গিফারির পথরোধ করে। এরপর তাকে মটরসাইকেলে তুলে গান্না সড়কের দিকে চলে যায়। পরে তার পরিবার এ ব্যাপারে ঝিনাইদহ সদর থানায় যোগাযোগ করলে ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আনোয়ার হোসেন গ্রেপ্তারের কথা অস্বীকার করে। পরিবারের পক্ষ থেকে সংবাদ সম্মেলন করে তার সন্ধানের দাবী জানানো হয়। সংগঠনের পক্ষ থেকেও বিবৃতির মাধ্যমে তার সন্ধান দাবী করা হয়। কিন্তু পুলিশ তাতে কর্ণপাত না করে উল্টো ২৫.০৩.১৬ তারিখে ঝিনাইদহ কে সি কলেজের অনার্স ২য় বর্ষের ছাত্র শামীম হোসেনকে গ্রেপ্তার করে। তার গ্রেপ্তারের কথাও পুলিশ অস্বীকার করছে। পুলিশের এই অমানবিক কাজে ঝিনাইদহসহ দেশবাসী হতবাক ও বিক্ষুদ্ধ। কিন্তু তাতে প্রশাসন কর্ণপাত করেনি। যা দেশের প্রচলিত আইনের সুস্পষ্ট লংঘন। আমরা মনে করি সরকার পরিকল্পিত ভাবে পুলিশকে ব্যবহার করে এমন অমানবিক ও বেআইনি কাজ করাচ্ছে। কিন্তু তা মেনে নেয়া যায়না।
অবৈধ সরকারের এই বেআইনি কাজের প্রতিবাদে আগামী ৩১শে মার্চ বৃহস্পতিবার দেশব্যাপী শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভ মিছিল কর্মসূচি ঘোষণা করছি। আমরা ইসলামী ছাত্রশিবিরের সকল নেতা-কর্মীদের, দেশপ্রেমিক জনতা ও ছাত্রসমাজকে সাথে নিয়ে শান্তিপূর্ণ উপায়ে এ কর্মসূচি পালন করার জন্য আহবান জানাচ্ছি। আশা করি সরকার ও আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী আইনে প্রতি শ্রদ্ধাশীল হয়ে গ্রেপ্তারকৃত দুই শিবির নেতাকে অনতিবিলম্বে আদালতে হাজির করবে।

সাক্ষী নান্নু বিতর্কের অবসান ছাড়াই কি মাওলানা নিজামীর ফাঁসি হবে! -অলিউল্লাহ নোমান


জামায়াতে ইসলামীর আমীর মাওলানা মতিউর রহমান নিজামী সুপ্রিমকোর্টে বিভিউ আবেদন দায়ের করেছেন। ফাঁসির দন্ড পুন:বিবেচনার জন্য গতকাল ২৯ মার্চ আবেদনটি দায়ের করা হয়। রিভিউ-এর রায় কি হয় সেটা অতীতের মামলা গুলো কিছুটা আভাস দেয়। রিভিউ-এর রায় অতীতের মত হলে কত গুলো প্রশ্ন অমিমাংশিত থেকে যাবে। কোন প্রশ্নের চুড়ান্ত মিমাংশা ছাড়া কি সন্দেহের উর্ধ্বে উঠা যায়! আর সন্দেহের উর্ধ্বে না উঠে কাউকে কি চুড়ান্ত দন্ড ফাঁসি দেয়া যায়! সন্দেহের উর্ধ্বে উঠতে হলে মাওলনা মতিউর রহমান নিজামীর মামলা চলাকালীন সাক্ষী সামসুল হক নান্নুকে নিয়ে উঠা বিতর্কের চুড়ান্ত অবসান হওয়া দরকার। নতুবা প্রশ্নের মিমাংশা ছাড়াই একটা মানুষকে খুনের হুকুম দেয়া ছাড়া ন্যায় বিচার বলা যাবে না।
স্কাইপ স্ক্যান্ডালে উঠে এসেছিল কিভাবে সরকার, প্রসিকিউশন এবং ট্রাইব্যুনালের মধ্যে গোপন ষড়যন্ত্র এবং যোগসাজ রয়েছে। এতে পরিস্কার হয়ে যায়, কতিপয় নেতাকে ফাঁসির দন্ড দিতেই সরকার, প্রসিকিউশন এবং ট্রাইব্যুনালের যৌথ ষড়যন্ত্র। স্কাইপ স্ক্যান্ডালে ট্রাইব্যুনালের প্রথম চেয়ারম্যান নিজামুল হক নাসিমের জবানীতে উঠে এসেছিল ষড়যন্ত্রের রোল মডেল। তিনি নিজেই বলেছিলেন, প্রসিকিউটর জিয়াদ আল মালুম তাঁকে বলেছেন-‘আমি খাড়াইয়া যামু, আপনি বসায়া দেবেন, লোকে বোঝবে আমাদের মাঝে কোন সম্পর্ক নাই।’ নাসিমের জবানীতে আরো উঠে এসেছিল আইনমন্ত্রী কিভাবে ডিকটেট করছে বিচার কাজ পরিচালনায় এবং তৎকালীন আইন প্রতিমন্ত্রী তাঁকে রায়ের জন্য কিভাবে তাগিদ দিয়েছেন। বিচারপতি এ কে এম জহিরুল হককে আইনমন্ত্রী ডেকে নিয়ে কিভাবে পদত্যাগ পত্র রেখে বিদায় দিলেন সেটাও উঠে এসেছিল নিজামুল হক নাসিমের জবানীতে।
মাওলনা নিজামীর মামলা ট্রাইব্যুনালে চলাকালীন আরেকটি স্ক্যান্ডাল প্রকাশিত হয় সাক্ষী অ্যাডভোকেট সামসুল হক নান্নুর জবান দিয়ে। সাক্ষী সামসুল হক নান্নু এক ভিডিও সাক্ষৎকারে জানিয়েছেন তিনি মাওলানা নিজামীকে ১৯৮৬ সালে জাতীয় ইলেকশনের আগে চিনতেন না। ১৯৮৬ সালে পাবনার সাথিয়া থেকে জামায়াতে ইসলামীর প্রার্থী হওয়ার পর তিনি মাওলানা মতিউর রহমান নিজামীকে ব্যক্তিগতভাবে চিনতে পারেন। এর আগে কোনদিন সরাসরি দেখেননি। কিভাবে তাঁকে এ মামলায় নিজামীর বিরুদ্ধে অন্যতম প্রধান সাক্ষী বানানো হয়েছে, এই বর্ণনাও দিয়েছেন তিনি সেই ভিডিও সাক্ষাৎকারে। ভিডিও সাক্ষাৎকারে উঠে এসেছে সামসুল হক নান্নুকে কিভাবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সাক্ষী হতে নির্দেশ দিয়েছেন। সাবেক স্বরাষ্ট্রপ্রতিমন্ত্রী কিভাবে তাঁকে সাক্ষী হওয়ার জন্য চাপ সৃস্টি করেছিলেন এবং সেনা সদর দফতরে নিয়ে তাঁকে কিভাবে আটকে রাখা হয়, সেই বর্ণনাও অকপটে দিয়েছেন তিনি। সামসুল হক নান্নুর ভিতিও সাক্ষাৎকারের বক্তব্য থেকেই স্পষ্ট তাঁকে সাক্ষ্য হিসাবে উপস্থাপনের পেছনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, সেনা বাহিনী এবং সাবেক স্বরাষ্ট্রপ্রতিমন্ত্রী শামসুল হক টুকু সরাসরি জড়িত। এই সাক্ষ্য তাঁকে দিতে বলা হয়েছে সরকারের সাজানো চক অনুযায়ী। সত্য সাক্ষ্য নয়। এমন নয় যে, তিনি ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী। সাক্ষী দিতে রাজি হচ্ছিলেন না। তাঁকে চাপ সৃস্টি করে রাজি করানো হয়েছে। তিনি ঘটনা সম্পর্কে কিছুই জানতেন না। সরকারি ষড়যন্ত্রে তৈরি করা সাজানো ঘটনা তাঁকে দিয়ে বলানো হয়েছে মাত্র। এই সাজানো ঘটনা বলতে তিনি কিভাবে রাজি হয়েছেন সেই বর্ণনাই দিয়েছেন ভিডিও সাক্ষাৎকারে। ইউটিউভে প্রচারিত হওয়া ভিডিও সাক্ষাৎকারটি এখানে লিঙ্ক দেয়া হল। ——-
https://www.youtube.com/watch?v=SwDgPD_LXLw

এই ভিডিও সাক্ষাৎকার সোস্যাল মিডিয়ায় প্রচারিত হলে তোলপাড় শুরু হয়। তখন প্রসিকিউশন সামসুল হক নান্নুকে ট্রাইব্যুনাল ভবনে একটি সংবাদ সম্মেলনে হাজির করে। এ সংবাদ সম্মেলনে নান্নু এসে দাবী করেন ভিডিও চিত্রে ধারন করা ব্যক্তিটি তিনি। এখানে তাঁর নাম ব্যবহার করা হয়েছে। ভিডিও চিত্রে ধারন করা ব্যক্তি তিনি নন। তাঁর বক্তব্য অনুযায়ী পার্থক্য কিছুটা রয়েছে। সংবাদ সম্মেলনে হাজির হওয়া নান্নুর গোফ রয়েছে। ভিডিও সাক্ষাৎকারে প্রচারিত নান্নুর গোফ নেই। বলা হয়, সোস্যাল মিডিয়া প্রচারিত নান্নুর ভিতিও বক্তব্য হচ্ছে মামলা ভিন্নখাতে প্রবাহিত করতে একটি ষড়যন্ত্র।
কিন্তু পরবর্তিতে অনুসন্ধানে দেখা যায়, সংবাদ একমাত্র সম্মেলনেই নান্নুর গোফ রয়েছে। অন্য সব জায়গায় উপস্থিত নান্নুর কোন গোফ নেই। সাক্ষ্য দেয়ার জন্য একটি ঘটনাস্থলে উপস্থিত সামসুল হক নান্নুর একটি ভিডিও চিত্র রয়েছে। সেখানে তদন্ত সংস্থার কর্তকর্তা, প্রসিকিউশনের সদস্যসহ অনেক লোকজন রয়েছেন। সবার সামনে ভিডিও চিত্রে নিজের পরিচয় দিচ্ছেন তিনি সুপ্রিমকোর্টের আইনজীবী। পাবনা বার-এ তিনি প্র্যাকটিস করেন। পাবনা জেলা আওয়ামী লীগের আইন বিষয়ক সম্পাদক।
নান্নুর সাক্ষ্য মাওলানা মতিউর রহমান নিজামীকে ফাঁসি দিতে সহায়তা করেছে। সাক্ষী হিসাবে তাঁর বক্তব্য আমলে নিয়েই নিজামীর দন্ড দেয়া হয়। অথচ নান্নু ভিডিও সাক্ষাৎকারে বলেছেন, তিনি মাওলানা মতিউর রহমান নিজামীকে ১৯৮৬ সালের জাতীয় নির্বাচনের আগে কোন দিন সরাসরি দেখেননি। তাকে সরকারি সাজানো চকে সাক্ষ্য দিতে রাজি করানো হয়েছে। রাজি করাতে তাঁর উপর চাপ সৃস্টির একটা বর্ণনাও তিনি দিয়েছেন। এই নান্নুর সাক্ষীতেই আবার মাওলনা নিজামীর ফাঁসিও দেয় আদালত।
সরকার পক্ষের দাবী হচ্ছে ভিডিও সাক্ষাৎকারে প্রচারিত বক্তব্য নান্নুর সংবাদ সম্মেলনের দাবী অনুযায়ী তিনি দেননি। একটি বিচারকে প্রশ্নবিদ্ধ করতে এই ভিডিও সাক্ষাৎকার হচ্ছে ষড়যন্ত্র। কিন্তু আসামী পক্ষের দাবী হচ্ছে ভিডিওসাক্ষাৎকার এবং প্রসিকিউশনের সাক্ষী নান্নু একই ব্যক্তি। ট্রাইব্যুনাল এবং আপিল বিভাগ আসামী পক্ষের দাবীকে কোন পাত্তাই দেয়নি। ভিডিও সাক্ষাৎকারে প্রচারিত বক্তব্য যিনি দিয়েছেন তিনি এবং প্রসিকিউশনের সাক্ষী হিসাবে হাজির হওয়া নান্নু একই ব্যক্তি কি না এটা পরীক্ষার দায়িত্ব হচ্ছে আদালতের। পরীক্ষা নীরিক্ষা ছাড়া সন্দেহের উর্ধ্বে উঠে সম্ভব নয়। সন্দেহের উর্ধ্বে না উঠে কাউকে মৃত্যুদন্ড দেয়াও আইনের দৃষ্টিতে অপরাধ। প্রশ্ন হচ্ছে আমাদের সুপ্রিমকোর্ট কি আইনের উর্ধ্বে উঠে সরকারি চক অনুযায়ী সাজানো ঘটনায় একটি রাজনৈতিক দলের প্রধান এবং একধিকবার জনগরে রায়ে নির্বাচিত সাবেক সংসদ সদস্যকে মৃত্যুদন্ড দেবেন?
ভিডিও সাক্ষাৎকারে প্রচারিত নান্নু আর সাক্ষ্য হিসাবে হাজির হওয়া নান্নু একই ব্যক্তি কিনা সেটা পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা কি খুব কঠিন বিষয়! দুনিয়াতে এখন প্রযুক্তির শেষ নেই। মানুষের ভয়েস, ফটো পরীক্ষা করার অনেক কৌশল আবিস্কার হয়েছে। হাত বাড়ালেই এসব প্রযুক্তি এবং সংশ্লিস্ট বিষয়ে এক্সপার্ট পাওয়া যায়। অতি সম্প্রতি গত ২৩ মার্চ লন্ডনের ইমেগ্রেশন আপার ট্রাইব্যুনালে একটি রায় হয়েছে। এই মামলা চলাকালীন ভয়েস এক্সপার্ট ডাকা হয়। এক ছাত্রের ভয়েস এবং সংশ্লিষ্ট দফতরের মৌখিক ইংলিশ টেষ্ট পরীক্ষায় ধারন করা ভিডিও’র ভয়েস একই ব্যক্তির কিনা, সেটা পরীক্ষা করা হয়। মামলাটি ছিল হোম অফিস ওই ছাত্রের ভিসা বাতিল করে দেয়। অভিযোগ হচ্ছে, মৌখিক ইংলিশ টেষ্ট নিজে না দিয়ে অন্যের মাধ্যমে দেয়ানো হয়েছে। পরীক্ষায় জালিয়াতি করা হয়েছে। ছাত্রটি তা চ্যালেঞ্জ করে আদালতে যায়। ইমিগ্রেশন আপার ট্রাইব্যুনাল ভয়েস এক্সপার্ট ডেকে টেপরেকর্ডে ধারন করা পরীক্ষার বক্তব্য এবং ছাত্রের সরাসরি বক্তব্য গ্রহন নেয়। দুই বক্তব্যে গলার স্বর পরীক্ষা করে ভয়েস এক্সপার্ট। এতে বের হয়ে আসে ওই ছাত্রের ভিসা বাতিল সঠিক হয়নি। কারন টেপ রেকর্ডে ধারন করা ভয়েস এবং ছাত্রের সরাসরি ভয়েসে কোন অমিল পাওয়া যায়নি। ভয়েস এক্সপার্টের রিপোর্টে ভিত্তি করে আদালত রায় দেয়।
অথচ মাওলানা মতিউর রহমান নিজামীর মামলায় সাক্ষী অ্যাডভোকেট সামসুল হক নান্নু এবং ইউটিউভে প্রচারিত ইন্টারভিউতে সামসুল হক নান্নুর ভিডিও চিত্র রয়েছে। শুধু ভয়েস নয়। ভিডিও চিত্র আর ভয়েস একসঙ্গে থাকায় এক্সপার্টের জন্য পরীক্ষার কাজটি আরো সহজ হওয়ার কথা। আরো কিছু ভিডিও চিত্র রয়েছে যা তদন্ত সংস্থা ধারন করেছে। এসব মিলিয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে নিশ্চিত হওয়া কোন কঠিন ব্যাপার নয়। আর এই পরীক্ষা-নিরীক্ষা ছাড়া আদালত নিজের এখতিয়ারে ফাঁসির জন্য ফাঁসি দিলে অনেক প্রশ্ন এবং রহস্য থেকেই যাবে। প্রশ্ন আর রহস্য জিয়ে রেখে কাউকে ফাঁসির দন্ডের মত খুনের আদেশ দেয়া কতটা ন্যায়বিচার সাপেক্ষ হবে সেটা ভবিষ্যৎ অনুসন্ধানের রায় বলে দেবে।

ভিডিও চিত্রে ধারন করা নান্নু, সাক্ষী হিসাবে উপস্থিত হওয়া নান্নু এবং সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত নান্নুর ভিডিও চিত্রের লিঙ্ক এখানে পাঠকের বিচারের জন্য দেয়া হল। চাইলে কেউ ক্লিক করে দেখে নিতে পারেন। যাছাই করতে পারেন নিজে-----
https://www.youtube.com/watch?v=AVM5CJL6P2s

লেখক: অলিউল্লাহ নোমান, দৈনিক আমার দেশ-এর বিশেষ প্রতিনিধি, বর্তমানে যুক্তরাজ্যে নির্বাসিত।

সোমবার, ২৮ মার্চ, ২০১৬

“মুসলিমদের কলঙ্কিত করবেন না”

মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা তার দেশের জনগণের প্রতি ব্রাসেলসে ভয়াবহ বোমা হামলার ঘটনায় মুসলিমদের কলঙ্কিত না করার আহ্বান জানিয়েছেন। কেননা তিনি মনে করেন, মুসলিম সম্প্রদায়কে দোষারোপ করলে জঙ্গিদের বিরুদ্ধে চলমান লড়াইটি দুর্বল হয়ে পড়বে।
শনিবার সংবাদ মাধ্যমের উদ্দেশ্যে দেয়া প্রেসিডেন্টের সাপ্তাহিক ভাষণে ওবামা বলেছেন,‘ আমেরিকান মুসলিমরা হচ্ছে দেশের সবচাইতে গুরুত্বপূর্ণ অংশীদার যারা, জিহাদিদের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে ব্যাপক অবদান রেখে চলেছে।’ আমেরিকান মুসলিমদের ওই অবদানকে অস্বীকার করে তাদের দোষারোপ করার যে কোনো উদ্যোগকে প্রত্যাখ্যান করার আহ্বান জানিয়ে ওবামা বলেছেন, ‘আমাদের দেশ ও জাতীয় জীবনে তাদের অনেক অবদান রয়েছে।’
মুসলিমদের ওপর দোষারোপের এই প্রবণতা মার্কিনীদের চরিত্র, মূল্যবোধ, ইতিহাস এবং ধর্মীয় স্বাধীনতার ধারণাটির সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ নয় বলেও মনে করেন ওবামা। এই ধরনের প্রচেষ্টা সন্ত্রাসীদের হাতকেই শক্তিশালী করবে যারা দুটি সম্প্রদায়কে পরস্পরের বিরুদ্ধে বিষোধাগার ছড়াতে ব্যস্ত। তাই তিনি বিদ্বেষ ছড়ানো থেকে সকল মার্কিনীকে দূরে থাকার আহ্বান জানিয়েছেন।
মঙ্গলবার ব্রাসেলস হামলায় ৩১ জন নিহত এবং আরো আড়াইশ’ জন আহত হয়েছে যাদের মধ্যে ১৪ মার্কিন নাগরিকও রয়েছে। প্রেসিডেন্ট ওবামা ওই ১৪ জনসহ হামলায় আহতদের দ্রুত সেরে ওঠার জন্যও প্রার্থণা করেছেন। Courtesy by The Global News 24.com

রিট বাতিল সাজানো নাটক, সব কৃতিত্ব আন্দোলনকরীদের: ব্যারিস্টার রাজ্জাক


রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম বাতিল করতে রিট আবেদন খারিজ করার ঘটনাকে সাজানো নাটক বলে দাবি করেছেন জামায়াতের সহকারি সেক্রেটারি জেনারেল ব্যারিস্টার আব্দুর রাজ্জাক। আজকের রিট আবেদন বাতিল হওয়াকে জন্য রাজপথে ও ফেসবুকে আন্দোলনরত মুসলিমদেরকে কৃতিত্ব হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন তিনি। আজ সোমবার রাষ্ট্রধর্ম ইসলামের বিরুদ্ধে করা রিট খারিজ করে দেয়ার পর সামাজিক যোগাযোগের অন্যতম মাধ্যম ফেসবুকে নিজের পেইজে দেয়া এক স্ট্যাটাসে তিনি এ দাবি করেন।
স্ট্যাটাসে তিনি বলেন, 'যদি আজকে মুসলমানরা চুপ করে বসে থাকতো, তবে বিভিন্ন আইনের অজুহাতে আজকে রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম বাতিল করা হতো। কিন্তু যেহেতু মুসলমানরা তীব্র আন্দোলন করেছে, তাই ভীত হয়ে আইনের অজুহাত দিয়েই বাতিল করা হলো কথিত রিট আবেদন। তাই আজকের রিট আবেদন বাতিল হওয়ার মূল কৃতিত্ব ছিলো রাজপথে ও ফেসবুকে আন্দোলনরত মুসলিম সমাজের।'
ফেসবুকে দেয়া স্ট্যাটাসে তিনি লিখেন, 'কোর্ট শুরু হয়েছে ২:০০ টায়, সুপ্রীম কোর্টের এনএক্স ভবনের ২০ নম্বর রুম। তিন জাস্টিস (নাইমা হায়দার, কাজী রেজাউল হক ও বিচারপতি আশরাফুল কামাল বসে আছে। রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবি (অ্যার্টনী জেনারেল) মাহবুবে আলম উপস্থিত ছিলো না, ছিলো তার সহযোগী অ্যার্টনী জেনারেল মুরাদ রেজা। সে কোর্টের কাছে আরো সময় চায়। এ সময় জাস্টিস কাজী রেজাউল হক তাকে বসিয়ে দেন। এ সময় দাড়ায় থার্ড পার্টি হিসেবে ইন্টারভেনারদের (ইসলামের পক্ষে) আইনজীবি টিএইচ খান ও এবিএম নুরুল ইসলামসহ আরো অসংখ্য আইনজীবি। এ সময় জাস্টিস কাজী রেজাউল হক তাকেও বসিয়ে দেন। বলেন-্আগে রিট আবেদনকারীদের (রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম বাতিলের পক্ষে) কথা শুনবো। এ সময় দাড়ায় রিট পক্ষের (ইসলাম বাতিলের পক্ষে) আইনজীবি সুব্রত চৌধুরী, যে হিন্দুদের অন্যতম নেতা। সে বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদের সাবেক সভাপতি এবং বর্তমানে হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের প্রেসিডিয়াম সদস্য। তার কাছে কাজী রেজাউল হক জানতে চায়- রিট দায়েরকারী কথিত ‘স্বৈরাচার ও সাম্প্রদায়িকতা প্রতিরোধ কমিটির’ লোকাস স্ট্যান্ডি (রিট দায়ের করার আইনী বৈধতা) আছে কি না ? কিন্তু হিন্দু নেতা সুব্রত চৌধুরী তা দিতে সক্ষম হয় না। ফলে কোর্ট শুরুর মাত্র ১০ মিনিটের মধ্যে জাস্টিস কাজী রেজাউল হক বলেন- রিট খারিজ, রুল ডিসচার্জ।'
রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম বাতিল হওয়ায় রিটকারীদের আইনজীবি ড.কামালের মেয়ের ইহুদী জামাই রাগান্বিত হয়ে কোর্ট থেকে বেরিয়ে গেছেন বলে ওই স্ট্যাটাসে দাবি করেন ব্যারিস্টার রাজ্জাক।
এ রিটকে ইসলাম বরোধী আন্তর্জাতিক সুদূরপ্রসারী চক্রান্ত আখ্যায়িত করে ফেসবুকে দেয়া স্ট্যাটাসে এ বিষয়ে তিনি লিখেন, 'তবে একজন জানালো- রায় ঘোষণা হওয়ার পর কোর্ট থেকে চরম রাগান্বিত অবস্থায় এক সাদা চামড়ার ইউরোপীয় ব্যক্তিকে সে হন হন করে বের হয়ে যেতে দেখেছে। ঐ ব্যক্তির নাম ডেভিড বার্গম্যান। সে ড. কামাল হোসেনের মেয়ে সারা হোসেনের জামাই, সে একজন ব্রিটিশ ইহুদী। এখান থেকে বলা যায়- বাংলাদেশের রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম বাতিল করার চক্রান্ত কত সুদূর প্রসারী ছিলো।'
প্রিয়দেশ অনলাইন, ঢাকা:

রবিবার, ২৭ মার্চ, ২০১৬

রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম বাতিল করার ষড়যন্ত্রের প্রতিবাদে নারায়ণগঞ্জ ওলামা পরিষদের বিক্ষোভ মিছিল

বাংলাদেশ বার্ত: রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম বাতিল করার ষড়যন্ত্রের প্রতিবাদে নারায়ণগঞ্জ ওলামা পরিষদের বিক্ষোভ মিছিল। শতকরা ৯২ ভাগ মুসলমানের এই দেশে কোন ইস্যু ছাড়াই  গুটিকতক ধর্ম ও ইসলাম বিদ্বেষীকে কুশী করতে বাংলাদেশের সংবিধান থেকে রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম বাতিলের ষড়যন্ত্রের প্রতিবাদের ফুসেঁ উঠেছে সারা দেশ।
২৫ মার্চ ২০১৬ ইং তারিখ বাংলাদেশ বার্ত: রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম বাতিল করার ষড়যন্ত্রের প্রতিবাদে নারায়ণগঞ্জ ওলামা পরিষদ বিক্ষোভ মিছিল করে। মিছিলে অংশগ্রহণকারীরা তীব্র প্রতিবাদ ও নিন্দা জানিয়ে রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম বাতিলের ষড়যন্ত্রের প্রতিবাদ জানায়। 

ছাত্রজনতাকে রাজপথে ঝাঁপিয়ে পড়ার আহ্বান জানিয়েছে ছাত্রশিবির

সংবিধানে রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম বহাল রাখার দাবিতে ছাত্রজনতাকে রাজপথে ঝাঁপিয়ে পড়ার আহ্বান জানিয়েছে ছাত্রশিবির।
রোববার রাতে গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে শিবিরের কেন্দ্রীয় সভাপতি আতিকুর রহমান ও সেক্রেটারি জেনারেল ইয়াছিন আরাফাত এ আহ্বান জানান।
বিবৃতিতে শিবির নেতৃবৃন্দ বলেন, নাস্তিক্যবাদী রাষ্ট্র গঠন করার ষড়যন্ত্রের অংশ হিসেবে সংবিধান থেকে রাষ্ট্রধর্ম ইসলামকে বাদ দেয়ার চক্রান্ত করছে সরকার। রাষ্ট্রধর্ম নিয়ে সম্প্রতি কালে কোন বিতর্ক না থাকলেও সরকার তাদের অশুভ উদ্দেশ্য বাস্তবায়ন করতে ২৮ বছর আগের একটি রিটকে সচল করেছে। একের পর এক ইসলাম বিদ্বেষী কর্মকাণ্ডের পর এখন সরাসরি দেশকে ইসলাম শুন্য করার পাঁয়তারা করছে। কিন্তু সরকারের এই ঘৃণ্য ষড়যন্ত্র জনগণ মানবে না।
তারা বলেন, আওয়ামীলীগ ক্ষমতায় আসার পর থেকেই একের পর এক ইসলাম বিদ্বেষী কর্মকাণ্ড চালিয়ে যাচ্ছে। দেশের অসংখ্য ধর্মীয় শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ ও কুরআনের মাহফিলে ১৪৪ ধারা জারি করে আওয়ামী লীগ তাদের ইসলাম বিদ্বেষী চরিত্রের বহিঃপ্রকাশ ঘটিয়েছে। শুধু তাই নয়, দেশের শীর্ষ আলেম ও দেশপ্রেমিক ইসলামী নেতৃবৃন্দের উপর যে নির্যাতন চালানো হয়েছে তার আরেকটি উদাহারণ ইতিহাসে বিরল। সরকার দেশের জনগণের গণতান্ত্রিক অধিকারকে হরণ করার পর এবার ধর্মীয় অধিকারকেও হরণ করতে চায়।
শিবির নেতৃবৃন্দ আরও বলেন, ৯২ ভাগ মুসলমানের দেশে ইসলাম বিরোধী তৎপরতা কার স্বার্থে? দেশের সর্বস্তরের মানুষ এর বিরুদ্ধে ফুঁসে উঠেছে। রাজধানীসহ সারাদেশে মানুষ রাজপথে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করেছে। ষড়যন্ত্রের প্রতিবাদে আগামীকাল জামায়াতে ইসলামী শান্তিপূর্ণ হরতাল কর্মসূচি আহবান করেছে। আমরা এই হরতালকে পুরোপুরি সমর্থন করছি। একই সাথে দেশের সর্বস্তরের ছাত্রজনতাকে ইসলাম রক্ষার এই সংগ্রামে ঝাঁপিয়ে পড়ার আহবান জানাচ্ছি। আমরা সরকারকে বলতে চাই, দেশের মানুষ এখনো শান্তিপূর্ণ উপায়ে ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে তাদের কর্মসূচি পালন করছে। কিন্তু ইসলাম এদেশের মানুষের কাছে জীবনের চেয়ে বেশি প্রিয়। কোন হঠকারী সিদ্ধান্ত নিলে জনগণ তা মানবে না। সুতরাং সরকারের উচিৎ জনগণের অনুভূতিকে সম্মান দেখিয়ে আত্মঘাতি এ ষড়যন্ত্র থেকে সরে আসা।

রাষ্ট্রধর্ম মামলার আবেদনকারী থেকে পিছু হটলেন বদরুদ্দীন উমর


রাষ্ট্রধর্ম নিয়ে করা রিটের সঙ্গে নিজের কোনও সম্পর্ক নেই বলে বিবৃতি দিয়েছেন জাতীয় মুক্তি কাউন্সিলের সভাপতি ও কলামিস্ট বদরুদ্দীন উমর। রবিবার সন্ধ্যায় গণমাধ্যমে এ বিবৃতি পাঠানো হয়।
. বিবৃতিতে বদরুদ্দীন উমর বলেন, ১৯৮৮ সালে এরশাদ সরকার রাষ্ট্রধর্ম আইন করার সময় যে প্রতিরোধ কমিটি হয়েছিল, আমি তার প্রেসিডিয়ামের সদস্য ছিলাম। কমিটির পক্ষ থেকে একটি মামলা তার বিরুদ্ধে করা হয়েছিল, কিন্তু কিছুই হয়নি। এখন সেই মামলা পুনরুজ্জীবিত করা হয়েছে। আমার নামও তার সঙ্গে জড়ানো হয়েছে। আমি একজন রাজনৈতিক ব্যক্তি, রাজনৈতিকভাবেই আমরা সে সময় আন্দোলন করেছিলাম এবং আন্দোলনের অংশ হিসেবেই মামলা করা হয়েছিল। কিন্তু তখন যে পরিস্থতিতে মামলা করা হয়েছিল সে পরিস্থিতি এখন আর নেই।
বিবৃতিতে বদরুদ্দীন উমর আরও বলেন, এখন যারা ক্ষমতায় আছেন, সে সময় এরশাদের প্রস্তাবিত আইনটির বিরোধিতা তারাও করেছিলেন। ইচ্ছা থাকলে তারা ১৯৯৬ ও ২০০৯ সালে সরকার গঠনের পর এই আইন বাতিল করতে পারতেন। কিন্তু তারা তা করেনি। উপরন্তু তারা সংবিধানের পঞ্চদশ সংশোধনীতে রাষ্ট্রধর্ম আইন বহাল রেখেছেন। তাদের বর্তমান অবস্থান থেকে এটা স্পষ্ট যে, তারা এই আইনের পক্ষপাতী। এই পরিপ্রেক্ষিতে সেই পুরনো মামলা পুনরুজ্জীবিত করা অর্থহীন। এই মামলা পুনরুজ্জীবিত করার আগে আমাকে কিছুই জিজ্ঞাসা করা হয়নি। এই মামলার সঙ্গে আমার কোনও সম্পর্ক নেই।

৩য় বারের মত চেয়ারম্যান নির্বাচিত হলেন উপজেলা জামায়াতের আমীর আলহাজ্ব অধ্যক্ষ নুর আহমদ আনোয়ারী

কক্সবাজার টেকনাফ হোয়াইকং ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে ৩য় বারের মত চেয়ারম্যান নির্বাচিত হলেন উপজেলা জামায়াতের আমীর আলহাজ্ব অধ্যক্ষ নুর আহমদ আনোয়ারী। ২২ মার্চ ২০১৬ই তারিখে অনুষ্ঠিত টেকনাফ উপজেলঅয় ইউপি নির্বাচনকে কেন্দ্র করে ব্যাপক সহিংসতায় ২ ব্যক্তি নিহত এবং অর্ধশত ব্যক্তি আহত হওয়ার পর তুমুল সমালোচনার মুখে পরে প্রশাসন।
সহিংসঘটনাবহুল টেকনাফের ৬টি ইউনিয়নের মধ্যে ৪টির নির্বাচন সম্পন্ন হলে সবার দৃষ্টি থাকে হ্নীলা ও হোয়াইক্যং ইআুনিয়ন পরিষদ নির্বাচনের দিকে। আর এই নির্বাচনকে ঘিরে দায়িত্বরত আইন-শৃংখলা বাহিনীর সদস্যরা নিরপেক্ষ ও কঠোর ভূমিকায় থাকায় শত চেষ্টা করেও এখানে আওয়ামীলীগ সমর্থিত প্রার্থী ও তার সমর্থকেরা সুবিধা করতে পারে নি। 
বিগত দিনের সততা ও যোগ্যতার প্রমাণ দিয়ে আওয়ামীলীগ ও বিএনপি প্রার্থীদের পরাজিত করে টানা তৃতীয়বারের মত তিন হাজার ভোটের বিশাল ব্যবধানে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হলেন উপজেলা জামায়াতের আমীর আলহাজ্ব অধ্যক্ষ নুর আহমদ আনোয়ারী।

বৃহস্পতিবার, ২৪ মার্চ, ২০১৬

ইনুর জাসদের এক করুণ উপাখ্যান -ড. মুহাম্মদ রেজাউল করিম


জাসদ ভাঙ্গার খবরটি এখন ”ট্যক অব দ্যা কান্ট্রি”। প্রতিদিনই আসছে পাল্টাপাল্টি কমিটি গঠনের খবর। এতো অল্প লোকের দল! তাও আবার দু’ভাগ? তাহলে দু’দলে কয়জন করে নেতা-কর্মী থাকবে? ব্যাপারটি তো খুবই জটিল! দেশে বাম দলগুলো এখন যে কয় দলে বিভক্ত তা রীতিমত পরীক্ষার প্রশ্নপত্রে আসার মত একটি ঘটনা। এর উত্তরও রীতিমত বিস্ময়কর! অধিকাংশ বাম দলই এখন ব্যানার সর্বস্ব। এক সময় ছাত্রলীগ ভেঙে গঠিত হয়েছিল জাসদ ছাত্রলীগ। এককালে বেশ অনেক জৌলস ছিল ছাত্ররাজনীতিতে। দেশের অধিকাংশ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ছিল নিজেদের একক অবস্থান। 
কিন্তু খুব অল্প সময়ের মধ্যে জাতীয় ও ছাত্র অঙ্গন থেকে ছিটকে পড়ে বাম সংগঠনগুলো। বাম রাজনীতির এই করুণ পরিণতির কারণ চমৎকারভাবে বিশ্লেষণ করে জনাব মহিউদ্দিন লিখেছেন“রাজনীতিতে পরিশীলিত ভাষা ব্যবহার করার চেয়ে জাসদ গালাগালি করতে অভ্যস্ত। জাসদকে কেউ বলতো ‘জারজ সন্তানের দল’, কেউ বলতো ‘ভারতের সেকেন্ড ডিফেন্স লাইন’। দলটির সমালোচনা হিসেবে সম্ভবত সবচেয়ে শোভন মন্তব্যগুলো ছিল ‘উগ্র’, ‘হঠকারী’ ও ‘বিভ্রান্ত’। 
এদের আরেকটি প্রবণতা হলো, নিজ দলকে একমাত্র খাঁটি বিপ্লবী দল হিসেবে দাবি করা এবং অন্য সব দলকে কুচক্রী, ষড়যন্ত্রকারী, বিশ্বাসঘাতক ও দেশি-বিদেশি শক্তির এজেন্ট হিসেবে চিত্রিত করা।” জাসদ একটি রাজনৈতিক দল হিসেবে গড়ে উঠেছিল এবং চরমপন্থার দিকে ধীরে ধীরে ঝুঁকছিল। এ সময় অন্য বাম দলগুলোর মধ্যে বিশেষ করে যারা ‘সশস্ত্র বিপ্লবে’ বিশ্বাস করে, প্রচারধর্মী বক্তব্যই বেশি লক্ষ্য করা গেছে। এসব বক্তব্য অধিকাংশ ক্ষেত্রেই ছিল বাগাড়ম্বরে পরিপূর্ণ এবং মার্ক্স-এঙ্গেলস-লেনিন-স্ট্যালিন-মাও সেতুংয়ের উদ্ধৃতিতে ভরা। যেমন কিছু একটা বলতে চাইলে যুক্তি দেওয়া হতো---এটা করতে হবে, কেননা কমরেড লেনিন এ কথা বলেছেন..., ওভাবে যাওয়া যাবে না, কারণ চেয়ারম্যান মাও এ বিষয়ে এই কথা বলেছেন ইত্যাদি। বাম রাজনীতিতে এই পীরবাদী প্রবণতা স্বাধীন বুদ্ধিবৃত্তিক চর্চাকে প্রায় অন্ধকারে ঠেলে দিয়েছিল। তাদের কেউ কেউ ‘ভারতের দালাল-মুক্তিযোদ্ধাদের’ খতম করাকে বিপ্লবী কাজ মনে করত। (সুত্র: জা.উ.প-অস্থির সময়ের রাজনীতি)
বর্তমান মহাজোট সরকারের আলোচিত-সমালোচিত মন্ত্রীদের মধ্যে জনাব হাসানুল হক ইনু অন্যতম। তিনি অতি কথনকারী মন্ত্রী হিসাবেই বেশী পরিচিত। বে-রসিকরা বলে থাকেন ইনু সাহেবের দলের জনসমর্থন থেকে উনার কথার ওজন নাকি অনেক বেশী। এই বাম নেতাদের অনেকেই ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নির্বাচনে প্রার্থী হলে অনেকের জামানত হারানোর সম্ভাবনাই বেশী! জনাব ইনু সাহেব বিনা ভোটে এমপি, মন্ত্রী হয়ে ধরাকে যেন সরাজ্ঞান করছেন প্রতিনিয়ত। অবস্থা দেখে মনে হয় বাম রাজনীতির প্রতীক খদ্দর পাঞ্জাবী আর মোটা ফ্রেমের চশমা ছেড়ে ক্ষমতার দাপটে এখন তারা যেন বে-সামাল। বিএনপি-জামায়াতকে যত অ-শোভন ও রাজনৈতিক শিষ্টাচার বহির্ভূত ভাষায় গালাগালি করাই যেন ইনু-বাদল সাহেবদের একমাত্র মিশন। 
এদেশের সর্বজন শ্রদ্ধেয় আলেম আল্লামা শফি সাহেবকে তেঁতুল হুজুর এবং হেফাজতে ইসলামীকে আরো কত কি তুচ্ছ-তাচ্ছিল্য বিশ্লেষণে আখ্যায়িত করেন তা সকলেরই জানা। আলেম-উলামা, দাঁড়ি-টুপিকে সব সময় জনাব ইনু সাহেব কাঁটাক্ষ করেই চলেছেন। আলেম-উলামাকে অ-সম্মান করলে আল্লাহ তা সহ্য করেন না। বিশেষ করে বাংলাদেশের তিনবারের সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া ও শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান সম্পর্কে ইনু সাহেবের অশালীন, অশোভন কটুক্তি যেন আমাদের রাজনৈতিক সংস্কৃতিকে দারুণভাবে কলুষিত করছে। এমন জাতীয় নেতাদের থেকে আমাদের নতুন প্রজন্ম কি শিখছে!! তাই যেন আজ বড় প্রশ্ন হয়ে দাঁড়িয়েছে। 
সম্প্রতি অনুষ্ঠিত জাসদের কাউন্সিলের মধ্য দিয়ে দলটি আবার ভাঙ্গনের মুখে পড়ল। এজন্য দলীয় নেতা-কর্মীরা মন্ত্রী হাসানুল হক ইনুর অশাসনতান্ত্রিক একপেশে ও ক্ষমতার অপব্যবহারকে দায়ী করছে। গত কয়েকদিন আগে রাজধানীর মহানগর নাট্যমঞ্চে জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের (জাসদ) কাউন্সিল অধিবেশন থেকে বের হয়ে দলের একাংশ নতুন কমিটি ঘোষণা করেছে। ঘোষিত ওই কমিটির সভাপতি হয়েছেন শরীফ নূরুল আম্বিয়া। সাধারণ সম্পাদক হয়েছেন নাজমুল হক প্রধান। (সুত্র: প্রথম আলো-মার্চ ১৩, ২০১৬)
এদিকে মন্ত্রী হওয়ার পর হাসানুল হক ইনুর আর্থিক অস্বচ্ছতা, স্বেচ্ছাচারিতা ও ব্যক্তিগত অনুরাগের কারণে জাসদে ফের ভাঙন সৃষ্টি হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন দলটির একাংশের কার্যকরী সভাপতি মঈনুদ্দিন খান বাদল। জাতীয় সংসদ ভবনে নজি কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ অভিযোগ করেন। মঈনুদ্দিন খান বাদল বলেন, এই বিস্ফোরণ হওয়ার নেপথ্যে কাজ করেছে মন্ত্রী হওয়ার পর উনার (ইনু) আর্থিক অস্বচ্ছতা। তার আর্থিক আচরণ সম্পর্কে দলে বার বার প্রশ্ন উঠেছে। এ ব্যাপারে অস্পষ্টতা আছে, অস্বচ্ছতা আছে। দলীয় সভাপতি হিসেবে ব্যক্তিগত রাগ-অনুরাগ, ব্যক্তিগত সম্পর্কের ভিত্তিতে কোনো সিদ্ধান্ত নিতে পারেন না। তিনি তাই নিয়েছেন। আপনার (ইনু) হঠকারী, তথাকথিত মন্ত্রীত্বের ঔদ্ধ্যত্বের কারণে সব কিছু ধ্বংস করছেন। এর উত্তর উনাকেই দিতে হবে। আর এ কারণেই আজ দলের এ অবস্থা। (সুত্র:১৩ র্মাচ, ২০১৬ শীর্ষ নিউজ) 
ষোড়শ শতাব্দী থেকেই মূলত কাল্পনিক সমাজতন্ত্রের চিন্তা শুরু হয়। চার্লস ফ্যুরিয়ার, সেন্ট সাইমন, রবার্ট ওয়েন প্রমুখ এ ঘরানার দার্শনিকদের মাধ্যমে। ১৯১৭ সালে লেনিনের নেতৃত্বে বলশেভিক পার্টি রাশিয়ায় প্রথম সমাজতান্ত্রিক রাষ্ট্র কায়েম করে। কিন্তু বিংশ শতাব্দীর ৮০-এর দশক থেকেই শুরু হয় সমাজতন্ত্রের পতন। সোভিয়েত ইউনিয়ন ও পূর্ব ইউরোপের সমাজতান্ত্রিক দেশসমূহ আনুষ্ঠানিকভাবে সমাজতন্ত্রকে বর্জন করে তাদের মুক্তির জন্য গণতান্ত্রিক ধারা ও শাশ্বত বিধান আল-ইসলামের দিকে ঝুঁকে পড়ে। সেখান থেকে সমাজতন্ত্রীদের আক্রোশের বস্তুতে পরিণত হয় ইসলাম ও গণতন্ত্র। সত্তরের দশকে সোভিয়েত ইউনিয়নের পতনের পর বাম রাজনীতির অনেকটাই ছন্নছাড়া অবস্থা দেখা দেয়। বিশ্ব রাজনীতিতে পিছিয়ে পড়া ভাব কাটিয়ে উঠতে অনেকেই আশ্রয় নিয়েছে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের আশ্রয়-প্রশ্রয়ে টিকে থাকার সংগ্রামে। বাংলাদেশেও এর ব্যতিক্রম হয়নি। এর মধ্যে অনেকে তওবা করে বাম রাজনীতি ছাড়লেও বিরাট অংশ এখন অন্য দলের আড়ালে,আবডালে থেকে নিজেদের রাজনৈতিক উদ্দেশ্য ও নিজেদের স্বার্থ হাসিলে সবচেয়ে বেশি তৎপর। এরই মধ্যে কেউ কেউ আবার উদ্ভট মন্তব্য করে আর বড় দলগুলোকে কুপরামর্শ দিয়েও অতীতের প্রতিশোধ কিছুটা মিটিয়ে নিচ্ছেন। সেই অভিযোগটি এখন তুঙ্গে মহাজোট সরকারের বাম ঘরানা মন্ত্রী, এমপি এবং প্রশাসনের কর্তা ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে।
বাংলাদেশে ক্ষমতার রাজনীতিতে জাসদ এখন ছাগলের বাছুর তিন নম্বরটার ভূমিকায় অবতীর্ণ। এক সময় আওয়ামীলীগের প্রচন্ড প্রতিদ্বন্ধী হলেও এখন ক্ষমতা ভোগী আর লুটপাটের অংশীদারিত্ব নিয়ে বাঘ-সিংহ যেন এখন এক ঘাটে পানি খায়। ইনু সাহেবের উদ্ভট মন্তব্যের দায় আওয়ামীলীগকেই নিতে হচ্ছে। শেখ মুজিবুর রহমানের হত্যা ক্ষেত্র তৈরীতে জাসদের ভূমিকা নিয়ে আওয়ামীলীগের অনেক নেতাই এখন প্রশ্ন তুলছেন।
জাসদ মনে করে মুক্তিযুদ্ধ হচ্ছে ‘কুকুরে-কুকুরে কামড়াকামড়ি’ :-
জাসদের একটি অংশ পাকিস্তান সেনাবাহিনী ও মুক্তিযোদ্ধাদের মধ্যকার লড়াইকে বলেছিল ‘কুকুরে-কুকুরে কামড়াকামড়ি’। মতিয়া চৌধুরী বলেছিল” শেখ মুজিবের চামড়া দিয়ে ডুগডুিগ বাজামু” ”কর্নেল তাহের সম্ভবত জানতেন না ১৫ আগস্ট তারিখটিই অভ্যুত্থানের জন্য নির্ধারিত হয়ে আছে। তবে এরকম একটা ঘটনা যে ঘটতে পারে, তা তাঁর অজানা থাকার কথা নয়। কোটি টাকার প্রশ্ন ছিল, কবে, কখন? শেখ মুজিবের প্রতি তাঁর ক্ষোভ ছিল অপরিসীম। তাহের মনে করতেন, ‘মুজিব সরকার সেনাবাহিনীর উন্নয়নে চরম অবহেলা দেখিয়েছে এবং রক্ষীবাহিনীর মতো একটা কুখ্যাত আধা সামরিক বাহিনী তৈরি করেছে।” ১৯৭১ সালে নঈম ১১ নম্বর সেক্টরে তাহেরের সহযোদ্ধা ছিলেন এবং প্রায়ই তাঁর সঙ্গে দেখাসাক্ষাৎ করতেন। তাহের আক্ষেপ করে নঈমকে বললেন, ওরা বড় রকমের একটা ভুল করেছে। শেখ মুজিবকে কবর দিতে অ্যালাও করা ঠিক হয়নি। এখন তো সেখানে মাজার হবে। উচিত ছিল লাশটা বঙ্গোপসাগরে ফেলে দেওয়া। ১৫ আগস্টের পর গণবাহিনীর পক্ষ থেকে একটি লিফলেট প্রচার করা হয়। লিফলেটের শিরোনাম ছিল, ‘খুনি মুজিব খুন হয়েছে---অত্যাচারীর পতন অনিবার্য।’ (জাসদের উত্থান পতন : অস্থির সময়ের রাজনীতি, পৃষ্ঠা নং- ১৭৯) এ নিয়ে রাজনৈতিক উভয় দলের স্নায়ু যুদ্ধ শুরু হলে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কড়া নির্দেশে তা আপাতত থেমে গেলেও যে কোন সময় তা আবার মাথাচাড়া দিতে পারে।
জনাব মহিউদ্দীন লিখেছেন- ”জাসদের এক প্রচারপত্রে শিরোনামে ‘এই কি সোনার বাংলা---শেখ মুজিব জবাব দাও’ সভা, জমায়েত, মিছিল, ধর্মঘট ইত্যাদি জনগণের আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত মৌলিক অধিকার। কিন্তু প্রধানমন্ত্রী শেখ মুজিব ফরমান জারি করে সেগুলোও নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছেন, যাতে জনগণ কুকুরের মত মরতে থাকলেও আর প্রতিবাদ করতে না পারে! যত্রতত্র জারি করা হয়েছে ১৪৪ ধারা; হয়রানি চলছে নিরীহ মানুষদের। এটাই মুজিববাদী গণতন্ত্রের স্বরূপ। ‘বাংলাদেশে আজ ভয়াবহ দুর্ভিক্ষ’ বলে উল্লেখ করা হয়। গত ২৫ মাসে গুম ও খুন হয়েছে প্রায় ৩০ হাজার। রক্ষীবাহিনী ও পুলিশের হামলা হয়েছে প্রায় ২৪ হাজার পরিবারে। জেলে রাজবন্দী আছে ১৮ হাজারের ওপর। হুলিয়া আছে প্রায় ২৫ হাজার নেতা ও কর্মীর নামে। বাড়ি পুড়েছে প্রায় আড়াই হাজার। নারী ধর্ষণ অসংখ্য। প্রগতিশীল নেতা ও কর্মীদের গুম ও খুন করার জন্য এক ঢাকা শহরেই নামানো হয়েছে প্রায় দেড়’শ স্কোয়াড। 
শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো আজ খুনের আড্ডা। ১৯৭৩-এর নির্বাচনে আওয়ামী লীগ যত ভোট পেয়েছে, তার শতকরা ৫২ ভাগ জাল, আর প্রায় ২০ ভাগ মানুষের দারিদ্র্যের সুযোগে লোভ-লালসার মাধ্যমে ঠকিয়ে নেওয়া। উপনির্বাচন এবং স্কুল-কলেজের নির্বাচনও বস্তুত ব্যালট বাক্স ছিনতাই ও বুলেট ব্যবহারের নির্বাচন।” এটি ছিল আওয়ামীলীগের বিরুদ্ধে আপনাদের বক্তব্য। আজ ক্ষমতার লোভে আওয়ামীলীগের সব অপকর্মই এখন ইনু-বাদল আর মেনন সাহেবদের কাছে হালাল এবং জায়েজ!!
জাসদের উপর আওয়ামীলীগের নির্মম নির্যাতন: -
জাসদের কর্মীদের প্রতি জাতীয় রক্ষীবাহিনীর সদস্যদের আচরণ ছিল নির্মম। রক্ষীবাহিনীর হাতে নির্যাতিত জাসদের কর্মীদের অভিজ্ঞতা ছিল ভয়াবহ। তেহাত্তর সালে এসব ‘সংঘর্ষে’ জাসদের ২৩ জন কর্মী নিহত হন বলে দলীয় সূত্রে জানা যায়। জাসদের কর্মী খুঁজে বের করে গুলি করে হত্যা করার অভিযোগ ছিল রক্ষীবাহিনীর বিরুদ্ধে। পঁচাত্তরের ১ জানুয়ারি সিরাজ শিকদারকে চট্টগ্রাম থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। ওই রাতেই তাঁকে হত্যা করা হয়। লেখা হয় ‘ক্রসফায়ারের’ চিত্রনাট্য। একটা প্রেস নোটে বলা হয়, পুলিশ তাঁকে নিয়ে অস্ত্রের সন্ধানে সাভারে গিয়েছিল। গাড়ি থেকে লাফিয়ে পালিয়ে যাওয়ার সময় পুলিশের গুলিতে সিরাজ শিকদার নিহত হন। (জাসদের উত্থান পতন : অস্থির সময়ের রাজনীতি) এভাবে দেশে সর্বপ্রথম ‘ক্রসফায়ারের’ নামে হত্যার রাজনীতি শুরু করে আওয়ামীলীগ। ইনু-বাদল সাহেবরা এখন সেই রক্তের সাথে গাদ্দারী করছেন না?
এইডা হাসানুল হক ইনুর কামঃ-
১৭ মার্চের মিছিল এবং স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর বাসভবন ঘেরাও নিয়ে জাসদের মধ্যে অনেক বিতর্ক হয়। এটা ছিল দলকে আন্ডারগ্রাউন্ডে নিয়ে যাওয়ার পরিকল্পনার একটি অংশ। পরিকল্পনাটি সফল হয়। অনেক চড়াই-উতরাই সত্ত্বেও জাসদের রাজনীতির গণতান্ত্রিক ধারাটি এত দিন বজায় ছিল। ১৭ মার্চ এ ধারার পরিসমাপ্তি ঘটে। এ প্রসঙ্গে জাসদের কেন্দ্রিয় কমিটির কৃষি সম্পাদক হাবিবুল্লাহ চৌধুরীর ভাষ্য এরকম : প্রথমে শুনলাম, গুলি করেছে হাবিবুল হক খান বেনু। পরে জানলাম, এইডা হাসানুল হক ইনুর কাম।”(সুত্র: জাসদের উত্থান পতন : অস্থির সময়ের রাজনীতি)
রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, শেখ মুজিবুর রহমান সবচেয়ে বেশি আক্রান্ত হয়েছেন নিজ দলের চাটুকারদের মাধ্যমে। শেখ মুজিবুর রহমানকে এই শ্রেণীর বামরাই প্রলুদ্ধ করে বাকশাল কায়েম করিয়ে ছিলেন। ইতিহাসের বিচারে এটিই ছিল তার সবচেয়ে বড় রাজনৈতিক ভুল। ২৮ অক্টোবর ২০০৬ পল্টন ময়দানে আওয়ামীলীগ লগি-বৈঠা দিয়ে প্রকাশ্য মানুষ হত্যা করে লাশের ওপর নাচানাচি করে উল্লাস প্রকাশ করেছে বাম ছাত্রসংগঠনের নেতা-কর্মীরা। এই বামরাই শাহবাগের জন্ম দিয়ে জাতিকে বিভক্ত করে নাস্তিকতার বিষবাষ্প ছড়াচ্ছে। আওয়ামীলীগ ও ছাত্রলীগের মধ্যে ভাঙ্গন সৃষ্টির জন্য বামরাই দায়ী, এখন আবার বামপন্থীদের কু-বুদ্ধি আর উদ্ভট বক্তব্য দিয়ে শেখ হাসিনার জনসমর্থনকে শূন্যের কোটায় নিয়ে গিয়েছে। এখন চলছে রাষ্ট্রধর্ম ইসলামকে সংবিধান থেকে মুছে ফেলার চক্রান্ত। জাতিকে বিপদগামী করতে ইনু সাহেবদের বিভাজনের রাজনীতির মাশুল গোটা জাতিকেই হয়ত একদিন গুনতে হবে।

About

ব্লগ সংরক্ষাণাগার

আমার ব্লগ তালিকা

Translate

Translate

আমাদের বাংলাদেশ নিউজ 24

সর্বশেষ

অনুসরণকারী