কিন্তু খুব অল্প সময়ের মধ্যে জাতীয় ও ছাত্র অঙ্গন থেকে ছিটকে পড়ে বাম সংগঠনগুলো। বাম রাজনীতির এই করুণ পরিণতির কারণ চমৎকারভাবে বিশ্লেষণ করে জনাব মহিউদ্দিন লিখেছেন“রাজনীতিতে পরিশীলিত ভাষা ব্যবহার করার চেয়ে জাসদ গালাগালি করতে অভ্যস্ত। জাসদকে কেউ বলতো ‘জারজ সন্তানের দল’, কেউ বলতো ‘ভারতের সেকেন্ড ডিফেন্স লাইন’। দলটির সমালোচনা হিসেবে সম্ভবত সবচেয়ে শোভন মন্তব্যগুলো ছিল ‘উগ্র’, ‘হঠকারী’ ও ‘বিভ্রান্ত’।
এদের আরেকটি প্রবণতা হলো, নিজ দলকে একমাত্র খাঁটি বিপ্লবী দল হিসেবে দাবি করা এবং অন্য সব দলকে কুচক্রী, ষড়যন্ত্রকারী, বিশ্বাসঘাতক ও দেশি-বিদেশি শক্তির এজেন্ট হিসেবে চিত্রিত করা।” জাসদ একটি রাজনৈতিক দল হিসেবে গড়ে উঠেছিল এবং চরমপন্থার দিকে ধীরে ধীরে ঝুঁকছিল। এ সময় অন্য বাম দলগুলোর মধ্যে বিশেষ করে যারা ‘সশস্ত্র বিপ্লবে’ বিশ্বাস করে, প্রচারধর্মী বক্তব্যই বেশি লক্ষ্য করা গেছে। এসব বক্তব্য অধিকাংশ ক্ষেত্রেই ছিল বাগাড়ম্বরে পরিপূর্ণ এবং মার্ক্স-এঙ্গেলস-লেনিন-স্ট্যালিন-মাও সেতুংয়ের উদ্ধৃতিতে ভরা। যেমন কিছু একটা বলতে চাইলে যুক্তি দেওয়া হতো---এটা করতে হবে, কেননা কমরেড লেনিন এ কথা বলেছেন..., ওভাবে যাওয়া যাবে না, কারণ চেয়ারম্যান মাও এ বিষয়ে এই কথা বলেছেন ইত্যাদি। বাম রাজনীতিতে এই পীরবাদী প্রবণতা স্বাধীন বুদ্ধিবৃত্তিক চর্চাকে প্রায় অন্ধকারে ঠেলে দিয়েছিল। তাদের কেউ কেউ ‘ভারতের দালাল-মুক্তিযোদ্ধাদের’ খতম করাকে বিপ্লবী কাজ মনে করত। (সুত্র: জা.উ.প-অস্থির সময়ের রাজনীতি)
বর্তমান মহাজোট সরকারের আলোচিত-সমালোচিত মন্ত্রীদের মধ্যে জনাব হাসানুল হক ইনু অন্যতম। তিনি অতি কথনকারী মন্ত্রী হিসাবেই বেশী পরিচিত। বে-রসিকরা বলে থাকেন ইনু সাহেবের দলের জনসমর্থন থেকে উনার কথার ওজন নাকি অনেক বেশী। এই বাম নেতাদের অনেকেই ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নির্বাচনে প্রার্থী হলে অনেকের জামানত হারানোর সম্ভাবনাই বেশী! জনাব ইনু সাহেব বিনা ভোটে এমপি, মন্ত্রী হয়ে ধরাকে যেন সরাজ্ঞান করছেন প্রতিনিয়ত। অবস্থা দেখে মনে হয় বাম রাজনীতির প্রতীক খদ্দর পাঞ্জাবী আর মোটা ফ্রেমের চশমা ছেড়ে ক্ষমতার দাপটে এখন তারা যেন বে-সামাল। বিএনপি-জামায়াতকে যত অ-শোভন ও রাজনৈতিক শিষ্টাচার বহির্ভূত ভাষায় গালাগালি করাই যেন ইনু-বাদল সাহেবদের একমাত্র মিশন।
এদেশের সর্বজন শ্রদ্ধেয় আলেম আল্লামা শফি সাহেবকে তেঁতুল হুজুর এবং হেফাজতে ইসলামীকে আরো কত কি তুচ্ছ-তাচ্ছিল্য বিশ্লেষণে আখ্যায়িত করেন তা সকলেরই জানা। আলেম-উলামা, দাঁড়ি-টুপিকে সব সময় জনাব ইনু সাহেব কাঁটাক্ষ করেই চলেছেন। আলেম-উলামাকে অ-সম্মান করলে আল্লাহ তা সহ্য করেন না। বিশেষ করে বাংলাদেশের তিনবারের সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া ও শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান সম্পর্কে ইনু সাহেবের অশালীন, অশোভন কটুক্তি যেন আমাদের রাজনৈতিক সংস্কৃতিকে দারুণভাবে কলুষিত করছে। এমন জাতীয় নেতাদের থেকে আমাদের নতুন প্রজন্ম কি শিখছে!! তাই যেন আজ বড় প্রশ্ন হয়ে দাঁড়িয়েছে।
সম্প্রতি অনুষ্ঠিত জাসদের কাউন্সিলের মধ্য দিয়ে দলটি আবার ভাঙ্গনের মুখে পড়ল। এজন্য দলীয় নেতা-কর্মীরা মন্ত্রী হাসানুল হক ইনুর অশাসনতান্ত্রিক একপেশে ও ক্ষমতার অপব্যবহারকে দায়ী করছে। গত কয়েকদিন আগে রাজধানীর মহানগর নাট্যমঞ্চে জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের (জাসদ) কাউন্সিল অধিবেশন থেকে বের হয়ে দলের একাংশ নতুন কমিটি ঘোষণা করেছে। ঘোষিত ওই কমিটির সভাপতি হয়েছেন শরীফ নূরুল আম্বিয়া। সাধারণ সম্পাদক হয়েছেন নাজমুল হক প্রধান। (সুত্র: প্রথম আলো-মার্চ ১৩, ২০১৬)
এদিকে মন্ত্রী হওয়ার পর হাসানুল হক ইনুর আর্থিক অস্বচ্ছতা, স্বেচ্ছাচারিতা ও ব্যক্তিগত অনুরাগের কারণে জাসদে ফের ভাঙন সৃষ্টি হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন দলটির একাংশের কার্যকরী সভাপতি মঈনুদ্দিন খান বাদল। জাতীয় সংসদ ভবনে নজি কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ অভিযোগ করেন। মঈনুদ্দিন খান বাদল বলেন, এই বিস্ফোরণ হওয়ার নেপথ্যে কাজ করেছে মন্ত্রী হওয়ার পর উনার (ইনু) আর্থিক অস্বচ্ছতা। তার আর্থিক আচরণ সম্পর্কে দলে বার বার প্রশ্ন উঠেছে। এ ব্যাপারে অস্পষ্টতা আছে, অস্বচ্ছতা আছে। দলীয় সভাপতি হিসেবে ব্যক্তিগত রাগ-অনুরাগ, ব্যক্তিগত সম্পর্কের ভিত্তিতে কোনো সিদ্ধান্ত নিতে পারেন না। তিনি তাই নিয়েছেন। আপনার (ইনু) হঠকারী, তথাকথিত মন্ত্রীত্বের ঔদ্ধ্যত্বের কারণে সব কিছু ধ্বংস করছেন। এর উত্তর উনাকেই দিতে হবে। আর এ কারণেই আজ দলের এ অবস্থা। (সুত্র:১৩ র্মাচ, ২০১৬ শীর্ষ নিউজ)
ষোড়শ শতাব্দী থেকেই মূলত কাল্পনিক সমাজতন্ত্রের চিন্তা শুরু হয়। চার্লস ফ্যুরিয়ার, সেন্ট সাইমন, রবার্ট ওয়েন প্রমুখ এ ঘরানার দার্শনিকদের মাধ্যমে। ১৯১৭ সালে লেনিনের নেতৃত্বে বলশেভিক পার্টি রাশিয়ায় প্রথম সমাজতান্ত্রিক রাষ্ট্র কায়েম করে। কিন্তু বিংশ শতাব্দীর ৮০-এর দশক থেকেই শুরু হয় সমাজতন্ত্রের পতন। সোভিয়েত ইউনিয়ন ও পূর্ব ইউরোপের সমাজতান্ত্রিক দেশসমূহ আনুষ্ঠানিকভাবে সমাজতন্ত্রকে বর্জন করে তাদের মুক্তির জন্য গণতান্ত্রিক ধারা ও শাশ্বত বিধান আল-ইসলামের দিকে ঝুঁকে পড়ে। সেখান থেকে সমাজতন্ত্রীদের আক্রোশের বস্তুতে পরিণত হয় ইসলাম ও গণতন্ত্র। সত্তরের দশকে সোভিয়েত ইউনিয়নের পতনের পর বাম রাজনীতির অনেকটাই ছন্নছাড়া অবস্থা দেখা দেয়। বিশ্ব রাজনীতিতে পিছিয়ে পড়া ভাব কাটিয়ে উঠতে অনেকেই আশ্রয় নিয়েছে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের আশ্রয়-প্রশ্রয়ে টিকে থাকার সংগ্রামে। বাংলাদেশেও এর ব্যতিক্রম হয়নি। এর মধ্যে অনেকে তওবা করে বাম রাজনীতি ছাড়লেও বিরাট অংশ এখন অন্য দলের আড়ালে,আবডালে থেকে নিজেদের রাজনৈতিক উদ্দেশ্য ও নিজেদের স্বার্থ হাসিলে সবচেয়ে বেশি তৎপর। এরই মধ্যে কেউ কেউ আবার উদ্ভট মন্তব্য করে আর বড় দলগুলোকে কুপরামর্শ দিয়েও অতীতের প্রতিশোধ কিছুটা মিটিয়ে নিচ্ছেন। সেই অভিযোগটি এখন তুঙ্গে মহাজোট সরকারের বাম ঘরানা মন্ত্রী, এমপি এবং প্রশাসনের কর্তা ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে।
বাংলাদেশে ক্ষমতার রাজনীতিতে জাসদ এখন ছাগলের বাছুর তিন নম্বরটার ভূমিকায় অবতীর্ণ। এক সময় আওয়ামীলীগের প্রচন্ড প্রতিদ্বন্ধী হলেও এখন ক্ষমতা ভোগী আর লুটপাটের অংশীদারিত্ব নিয়ে বাঘ-সিংহ যেন এখন এক ঘাটে পানি খায়। ইনু সাহেবের উদ্ভট মন্তব্যের দায় আওয়ামীলীগকেই নিতে হচ্ছে। শেখ মুজিবুর রহমানের হত্যা ক্ষেত্র তৈরীতে জাসদের ভূমিকা নিয়ে আওয়ামীলীগের অনেক নেতাই এখন প্রশ্ন তুলছেন।
জাসদ মনে করে মুক্তিযুদ্ধ হচ্ছে ‘কুকুরে-কুকুরে কামড়াকামড়ি’ :-
জাসদের একটি অংশ পাকিস্তান সেনাবাহিনী ও মুক্তিযোদ্ধাদের মধ্যকার লড়াইকে বলেছিল ‘কুকুরে-কুকুরে কামড়াকামড়ি’। মতিয়া চৌধুরী বলেছিল” শেখ মুজিবের চামড়া দিয়ে ডুগডুিগ বাজামু” ”কর্নেল তাহের সম্ভবত জানতেন না ১৫ আগস্ট তারিখটিই অভ্যুত্থানের জন্য নির্ধারিত হয়ে আছে। তবে এরকম একটা ঘটনা যে ঘটতে পারে, তা তাঁর অজানা থাকার কথা নয়। কোটি টাকার প্রশ্ন ছিল, কবে, কখন? শেখ মুজিবের প্রতি তাঁর ক্ষোভ ছিল অপরিসীম। তাহের মনে করতেন, ‘মুজিব সরকার সেনাবাহিনীর উন্নয়নে চরম অবহেলা দেখিয়েছে এবং রক্ষীবাহিনীর মতো একটা কুখ্যাত আধা সামরিক বাহিনী তৈরি করেছে।” ১৯৭১ সালে নঈম ১১ নম্বর সেক্টরে তাহেরের সহযোদ্ধা ছিলেন এবং প্রায়ই তাঁর সঙ্গে দেখাসাক্ষাৎ করতেন। তাহের আক্ষেপ করে নঈমকে বললেন, ওরা বড় রকমের একটা ভুল করেছে। শেখ মুজিবকে কবর দিতে অ্যালাও করা ঠিক হয়নি। এখন তো সেখানে মাজার হবে। উচিত ছিল লাশটা বঙ্গোপসাগরে ফেলে দেওয়া। ১৫ আগস্টের পর গণবাহিনীর পক্ষ থেকে একটি লিফলেট প্রচার করা হয়। লিফলেটের শিরোনাম ছিল, ‘খুনি মুজিব খুন হয়েছে---অত্যাচারীর পতন অনিবার্য।’ (জাসদের উত্থান পতন : অস্থির সময়ের রাজনীতি, পৃষ্ঠা নং- ১৭৯) এ নিয়ে রাজনৈতিক উভয় দলের স্নায়ু যুদ্ধ শুরু হলে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কড়া নির্দেশে তা আপাতত থেমে গেলেও যে কোন সময় তা আবার মাথাচাড়া দিতে পারে।
জনাব মহিউদ্দীন লিখেছেন- ”জাসদের এক প্রচারপত্রে শিরোনামে ‘এই কি সোনার বাংলা---শেখ মুজিব জবাব দাও’ সভা, জমায়েত, মিছিল, ধর্মঘট ইত্যাদি জনগণের আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত মৌলিক অধিকার। কিন্তু প্রধানমন্ত্রী শেখ মুজিব ফরমান জারি করে সেগুলোও নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছেন, যাতে জনগণ কুকুরের মত মরতে থাকলেও আর প্রতিবাদ করতে না পারে! যত্রতত্র জারি করা হয়েছে ১৪৪ ধারা; হয়রানি চলছে নিরীহ মানুষদের। এটাই মুজিববাদী গণতন্ত্রের স্বরূপ। ‘বাংলাদেশে আজ ভয়াবহ দুর্ভিক্ষ’ বলে উল্লেখ করা হয়। গত ২৫ মাসে গুম ও খুন হয়েছে প্রায় ৩০ হাজার। রক্ষীবাহিনী ও পুলিশের হামলা হয়েছে প্রায় ২৪ হাজার পরিবারে। জেলে রাজবন্দী আছে ১৮ হাজারের ওপর। হুলিয়া আছে প্রায় ২৫ হাজার নেতা ও কর্মীর নামে। বাড়ি পুড়েছে প্রায় আড়াই হাজার। নারী ধর্ষণ অসংখ্য। প্রগতিশীল নেতা ও কর্মীদের গুম ও খুন করার জন্য এক ঢাকা শহরেই নামানো হয়েছে প্রায় দেড়’শ স্কোয়াড।
শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো আজ খুনের আড্ডা। ১৯৭৩-এর নির্বাচনে আওয়ামী লীগ যত ভোট পেয়েছে, তার শতকরা ৫২ ভাগ জাল, আর প্রায় ২০ ভাগ মানুষের দারিদ্র্যের সুযোগে লোভ-লালসার মাধ্যমে ঠকিয়ে নেওয়া। উপনির্বাচন এবং স্কুল-কলেজের নির্বাচনও বস্তুত ব্যালট বাক্স ছিনতাই ও বুলেট ব্যবহারের নির্বাচন।” এটি ছিল আওয়ামীলীগের বিরুদ্ধে আপনাদের বক্তব্য। আজ ক্ষমতার লোভে আওয়ামীলীগের সব অপকর্মই এখন ইনু-বাদল আর মেনন সাহেবদের কাছে হালাল এবং জায়েজ!!
জাসদের উপর আওয়ামীলীগের নির্মম নির্যাতন: -
জাসদের কর্মীদের প্রতি জাতীয় রক্ষীবাহিনীর সদস্যদের আচরণ ছিল নির্মম। রক্ষীবাহিনীর হাতে নির্যাতিত জাসদের কর্মীদের অভিজ্ঞতা ছিল ভয়াবহ। তেহাত্তর সালে এসব ‘সংঘর্ষে’ জাসদের ২৩ জন কর্মী নিহত হন বলে দলীয় সূত্রে জানা যায়। জাসদের কর্মী খুঁজে বের করে গুলি করে হত্যা করার অভিযোগ ছিল রক্ষীবাহিনীর বিরুদ্ধে। পঁচাত্তরের ১ জানুয়ারি সিরাজ শিকদারকে চট্টগ্রাম থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। ওই রাতেই তাঁকে হত্যা করা হয়। লেখা হয় ‘ক্রসফায়ারের’ চিত্রনাট্য। একটা প্রেস নোটে বলা হয়, পুলিশ তাঁকে নিয়ে অস্ত্রের সন্ধানে সাভারে গিয়েছিল। গাড়ি থেকে লাফিয়ে পালিয়ে যাওয়ার সময় পুলিশের গুলিতে সিরাজ শিকদার নিহত হন। (জাসদের উত্থান পতন : অস্থির সময়ের রাজনীতি) এভাবে দেশে সর্বপ্রথম ‘ক্রসফায়ারের’ নামে হত্যার রাজনীতি শুরু করে আওয়ামীলীগ। ইনু-বাদল সাহেবরা এখন সেই রক্তের সাথে গাদ্দারী করছেন না?
এইডা হাসানুল হক ইনুর কামঃ-
১৭ মার্চের মিছিল এবং স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর বাসভবন ঘেরাও নিয়ে জাসদের মধ্যে অনেক বিতর্ক হয়। এটা ছিল দলকে আন্ডারগ্রাউন্ডে নিয়ে যাওয়ার পরিকল্পনার একটি অংশ। পরিকল্পনাটি সফল হয়। অনেক চড়াই-উতরাই সত্ত্বেও জাসদের রাজনীতির গণতান্ত্রিক ধারাটি এত দিন বজায় ছিল। ১৭ মার্চ এ ধারার পরিসমাপ্তি ঘটে। এ প্রসঙ্গে জাসদের কেন্দ্রিয় কমিটির কৃষি সম্পাদক হাবিবুল্লাহ চৌধুরীর ভাষ্য এরকম : প্রথমে শুনলাম, গুলি করেছে হাবিবুল হক খান বেনু। পরে জানলাম, এইডা হাসানুল হক ইনুর কাম।”(সুত্র: জাসদের উত্থান পতন : অস্থির সময়ের রাজনীতি)
রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, শেখ মুজিবুর রহমান সবচেয়ে বেশি আক্রান্ত হয়েছেন নিজ দলের চাটুকারদের মাধ্যমে। শেখ মুজিবুর রহমানকে এই শ্রেণীর বামরাই প্রলুদ্ধ করে বাকশাল কায়েম করিয়ে ছিলেন। ইতিহাসের বিচারে এটিই ছিল তার সবচেয়ে বড় রাজনৈতিক ভুল। ২৮ অক্টোবর ২০০৬ পল্টন ময়দানে আওয়ামীলীগ লগি-বৈঠা দিয়ে প্রকাশ্য মানুষ হত্যা করে লাশের ওপর নাচানাচি করে উল্লাস প্রকাশ করেছে বাম ছাত্রসংগঠনের নেতা-কর্মীরা। এই বামরাই শাহবাগের জন্ম দিয়ে জাতিকে বিভক্ত করে নাস্তিকতার বিষবাষ্প ছড়াচ্ছে। আওয়ামীলীগ ও ছাত্রলীগের মধ্যে ভাঙ্গন সৃষ্টির জন্য বামরাই দায়ী, এখন আবার বামপন্থীদের কু-বুদ্ধি আর উদ্ভট বক্তব্য দিয়ে শেখ হাসিনার জনসমর্থনকে শূন্যের কোটায় নিয়ে গিয়েছে। এখন চলছে রাষ্ট্রধর্ম ইসলামকে সংবিধান থেকে মুছে ফেলার চক্রান্ত। জাতিকে বিপদগামী করতে ইনু সাহেবদের বিভাজনের রাজনীতির মাশুল গোটা জাতিকেই হয়ত একদিন গুনতে হবে।