বিজ্ঞাপন দিন

আচ্ছালামু আলাইকুম ওয়ারাহমাতুল্লাহ। ইসলামী ব্যাংক এজেন্ট ব্যাংকিং আউটলেট দক্ষিণগাও, শাহীবাগ বাজার এর পক্ষ থেকে সকল গ্রাহক, শুভাকাংখীসহ সবাইকে জানাই ঈদ উত্তর সালাম ও আন্তরিক শুভেচ্ছা। ব্যাংক খোলা এবং যথারীতি ব্যাংকিং কার্যক্রম চলছে। এই গ্রুপে যারা আছেন তাদের মাধ্যমে সংশ্লিষ্ট এলাকার এলাকারসকলকে ইসলামী ব্যাংকের মাধ্যমে বিদেশ থেকে রেমিটপন্স পাঠানোর আহবান জানাচ্ছি। ঢাকার সবুজবাগ থানার রাজারবাগ, কুসুমবাগ, দক্ষিনগাও, শাহীবাগ, মানিকদিয়া, বাইকদিয়া, নন্দিপাড়াসহ সকল এলাকার গ্রাহক, শুভাকাংখী, শুভানুধ্যায়ীদের প্রদত্ত মোবাইল নাম্বারে যোগাযোগ করার অনুরোধ করা হলোঃ ০১৭১১-৪৫৮১৫১, ০১৭০০৯২৫২৪১:b>ইসলামী ব্যাংক এজেন্ট ব্যাংকিং আউটলেট দক্ষিণগাও, শাহীবাগ বাজার

বুধবার, ৫ ডিসেম্বর, ২০১৮

মাঠে আওয়ামী লীগ আদালতে বিএনপি

একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আর বাকী মাত্র ২৪দিন। নির্বাচনে অংশগ্রহণকারী রাজনৈতিক দলগুলো তাদের প্রার্থী ঘোষণা করেছে। বিএনপি প্রতিটি আসনে একাধিক প্রার্থী দিলেও আওয়ামী লীগ দুএকটি ছাড়া প্রায় অধিকাংশ আসনেই তাদের একক প্রার্থী ঘোষণা করেছে। ফলে দলটির প্রার্থীরা বিজয়ী হতে ইতোমধ্যেই মাঠে নেমে পড়েছেন। নিজ নিজ এলাকায় গণসংযোগ,নেতাকর্মীদের চাঙ্গা করার কাজ করছেন। যেসব আসনে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী রয়েছে তাদেরকে বসিয়ে দিতে কেন্দ্র থেকেও দেয়া হচ্ছে কঠোর বার্তা। কিন্তু নির্বাচনের মাঠে আওয়ামী লীগ জোটের প্রধান প্রতিদ্বদ্বী বিএনপি এখনো নির্বাচনের মাঠেই নামতে পারেনি। 
একদিকে দলটির নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে হাজার হাজার মামলানেতাকর্মীরা ঘর-বাড়ি ছাড়া। তফসিল ঘোষণার পরই প্রায় সহস্রাধিক নেতাকর্মীকে গ্রেফতারের অভিযোগ করেছে দলটি। প্রতিদিনই শত শত নেতাকর্মী দেশের সবকটি আদালতে হাজির হচ্ছেন জামিন নিতে। যাদের জামিন হচ্ছে না ঠাঁই হচ্ছে কারাগারে। অন্যদিকে গণহারে দলটির জনপ্রিয় ও হেভিওয়েট প্রার্থীদের প্রার্থীতা বাতিল হওয়ায় বেকায়দায় পড়েছে দলটি। ফলে এখনো বিএনপি তাদের প্রার্থী চূড়ান্তই করতে পারেনি। দলটির প্রথম সারির দেড় শতাধিক নেতার মনোনয়ন বাতিল করার কারণে প্রার্থী চূড়ান্ত করতে অনেকটা হিমশিম খেতে হচ্ছে। আবার যাদেরকে প্রার্থী ঘোষণা করা হবে তাদের অনেকেই মামলার কারণে নিজ এলাকায় যেতে পারছেন না। 
তাদের পক্ষে প্রচারণায় অংশ নিতে পারছেন না মামলা থাকা দলটির নেতাকর্মীরাও। এই অবস্থায় অবাধ,সুষ্ঠুনিরপেক্ষ নির্বাচনের কোন সুযোগ দেখছেনা বিএনপি। শেষ মুহূর্তে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ডের আশা করলেও তার পরিবর্তে সরকারি দলকে জেতানোর জন্য নির্বাচন কমিশন কাজ করছে বলেও অভিযোগ করেছেন দলটির শীর্ষ নেতারা। বিএনপির ভাইস-চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু বলেনএখনো সুষ্ঠু নির্বাচনের কোন পরিবেশ নাই। বিএনপি ও বিরোধী দলের প্রার্থী এবং তাদের কর্মী-সমর্থকরা মাঠে নামতে পারছে না। হাজার হাজার গায়েবি মামলার কারণে এলাকায় যেতে পারছে না। বাড়িতে থাকতে পারছে না। এভাবে নির্বাচনে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড হয় না। নির্বাচন কমিশনের সমালোচনা করে তিনি বলেননির্বাচন কমিশন একচোখা নীতি গ্রহণ করেছে। নির্বাচনকে তারা তামাশার বিষয় করে তুলেছে। তারা এমন একটি নির্বাচনী পরিবেশ তৈরি করেছে যেখানে সরকার দলীয় প্রার্থীকে সিল মেরে দেয়ার সুযোগ করে দেয়া। ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির মত প্রতিদ্বিদ্বতাহীন একটি নির্বাচন করার চেষ্টা করছে। এরপরও বিএনপি নির্বাচনে গেছে কেন সে বিষয়ে ব্যাখ্যা দিয়ে শামসুজ্জামান দুদু বলেনএখনো আমরা একটা ভাল নির্বাচনের আশা করছি। আমরা নির্বাচনকে গণতন্ত্র ও ভোটের অধিকার ফিরে পাবার আন্দোলন হিসেবে নিয়েছি।
নির্বাচন কমিশন সূত্রে জানা যায়একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রার্থী হতে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছে ৩ হাজার ৬৫ জন। এর মধ্যে ৩৯টি নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলের প্রার্থী ২ হাজার ৫৬৭জন এবং স্বতন্ত্র ৪৯৮ জন। জমা দেয়া প্রার্থীদের মধ্য থেকে যাচাই-বাছাই শেষে গত রোববার প্রাথমিক প্রার্থীভাবে ২ হাজার ২৭৯ জনকে বৈধ ঘোষণা করেছে। আর রাজনৈতিক দলগুলোর ২হাজার ৫৬৭ জনের মধ্যে বৈধ ঘোষণা করা হয়েছে ২ হাজার ১৬৫জনকে এবং বাতিল করা হয়েছে ৪০২ জনের মনোনয়নপত্র। যার মধ্যে বিএনপির ১৪১জন এবং আওয়ামী লীগের মাত্র তিনজনে অবৈধ ঘোষণা করা হয়েছে। প্রার্থী বাতিল করার কারণে ইতোমধ্যে ঢাকা-১বগুড়া-৭মানিকগঞ্জ-২সুনামগঞ্জ-৩জামালপুর-৪ ও শরীয়তপুর-১ আসনে প্রার্থী শূণ্য হয়ে গেছে বিএনপির।
মনোনয়নপত্রে ভুলঋণ খেলাপিবিল খেলাপিমামলায় সাজা হওয়ার কারণে মনোনয়নপত্র বাতিলের কথা নির্বাচন কমিশনের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে। তবে বিএনপির পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছে নানা অজুহাতে,ছোটখাটো ভুলে সরকারের নির্দেশে নির্বাচন কমিশন বেছে বেছে সারাদেশে বিএনপির হেভিওয়েট ও জনপ্রিয় প্রার্থীদের মনোনয়নপত্র বাতিল করা হয়েছে। সরকার দলীয় প্রার্থীদের বিজয়ী করতেই এধরণের কৌশল নেয়া হয়েছে বলেও মনে করেন দলটির নেতারা। প্রাথমিক যাচাই-বাছাইয়ে এরই মধ্যে বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াস্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস (প্রথমে গ্রহণ করা না হলেও গতকাল আদালত গ্রহণ করার নির্দেশ দিয়েছে)চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য আমানউল্লাহ আমানভাইস চেয়ারম্যান এম মোর্শেদ খানশাহ মোফাজ্জল হোসেন কায়কোবাদডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেনগিয়াস কাদের চৌধুরীযুগ্ম মহাসচিব আসলাম চৌধুরীসাংগঠনিক সম্পাদক রুহুল কুদ্দুস তালুকদার দুলুমহিলা দলের সভাপতি আফরোজা আব্বাসগোলাম মাওলা রনিঢাকার নবাবপুরের উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আশফাক হোসেনসহ বিএনপির ১৪১ নেতা। যারা অন্তত ৮০টি আসন থেকে নির্বাচনে প্রতিদ্বিদ্বতা করার কথা রয়েছে। এছাড়া বিএনপির জোটসঙ্গী গণফোরামের প্রার্থী রেজা কিবরিয়ারলিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টির (এলডিপি) এমএ করিম আব্বাসীরও মনোনয়নপত্র বাতিল করা হয়েছে। 
বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেনটার্গেট করে বিএনপির হেভিওয়েট ও জনপ্রিয় নেতা এবং সাবেক এমপিদের মনোনয়ন বাতিল করা হয়েছে। বেগম খালেদা জিয়াসহ বিএনপির অসংখ্য মনোনয়ন প্রার্থীর মনোনয়ন পত্র বাতিল করা হয়েছে। তিনি বলেনবিনা অজুহাতেই বিএনপি প্রার্থীদের মনোনয়নপত্র বাতিল করা হয়েছে। রিটার্নিং অফিসারদের কক্ষ সংলগ্ন ছোট রুম’ আছে। বিএনপি প্রার্থীদের মনোনয়ন পত্র বাতিল করা হবে কি হবে না সেটি জানার জন্য বারবার রিটার্নিং অফিসার ঐ ছোট রুমে ছুটে যান। মূলত: সরকারের নির্দেশ শোনার জন্যই রিটার্নিং অফিসারকে বারবার ঐ রুমে যেতে হয়। বিএনপির প্রার্থীদের অনেকেরই মনোনয়নপত্র নির্ভূল থাকার পরেও ওই ছোট রুম থেকে ফিরে এসে রিটার্নিং অফিসার (ডিসি) বলেনউপরের নির্দেশ আছে বলেই এই মনোনয়নপত্রটি বাতিল করতে আমি বাধ্য হচ্ছি। 
প্রাথমিক যাচাই-বাছাইয়ে মনোনয়নপত্র বাতিল হলেও এখনো আপিল করে প্রার্থীতা ফিরে পাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। আজ প্রার্থীতা ফিরে পেতে আপিল করার শেষ দিন। যেসব অবৈধ ঘোষিত প্রার্থী আপিল করবেন তাদের বিষয়ে ৬ থেকে ৮ ডিসেম্বর পর্যন্ত শুনানি শেষে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবে ইসি। তবে এক্ষেত্রে সরকার এবং নির্বাচন কমিশন খুব একটা নমনীয় হবে বলে মনে করেন না বিএনপি নেতারা। এছাড়াও একই কারণে বিএনপির প্রার্থীর মনোনয়নপত্র বাতিল করা হলেও আওয়ামী লীগের ক্ষেত্রে বহাল রাখা হয়েছে বলেও দাবি করে বিএনপি। 
রুহুল কবির রিজভী বলেনক্ষমতাসীন দলের প্রার্থীদের মনোনয়নপত্রে অসংখ্য ত্রুটি থাকার পরেও সেগুলোকে বাতিল করা হয়নি। দুর্নীতি মামলায় দন্ডিত হওয়ার তথ্য গোপনের অভিযোগ থাকার পরেও সরকারি দলের প্রার্থীদের মনোনয়নপত্র বাতিল করা হয়নি। তিনি বলেনদন্ড হওয়ার কারণ দেখিয়ে বেগম খালেদা জিয়া,ডাঃ এ জেড এম জাহিদ হোসেন ও আমানউল্লাহ আমানসহ বিএনপির পাঁচ নেতার আবেদন নাকচ করা হলেও একই কারণ বিদ্যমান থাকলেও মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া এবং কক্সবাজারের এমপি আব্দুর রহমান বদির মনোনয়নপত্র বৈধ করা হয়েছে। 
চূড়ান্ত বাছাইয়ে বিএনপির প্রার্থীরা প্রার্থিতা ফিরে না পেলে বেশ সঙ্কটেই পড়তে হবে বলে মনে করেন দলটির শীর্ষ নেতারা। এছাড়া এর সাথে রয়েছে বিএনপির নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে মামলা। দলটির তৃণমূলের নেতাদের সাথে কথা বলে জানা যায়দলের পক্ষ থেকে যাদের মনোনয়ন দেয়া হয়েছে এবং তাদের পক্ষ হয়ে যেসব নেতাকর্মী ও সমর্থকরা মাঠে কাজ করবেন তাদের প্রত্যেকের বিরুদ্ধে রয়েছে একাধিক মামলা। কারো কারো বিরুদ্ধে এই মামলার সংখ্যা আড়াইশও ছাড়িয়ে গেছে। দলটির ঢাকা-১২ আসনে বিএনপির প্রার্থী সাইফুল আলম নিরবের বিরুদ্ধে ২৬৭টি মামলাব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ আসনের প্রার্থী ব্যারিস্টার রুমিন ফারহানার মামলা ২৫টিঢাকা-১৮ আসনের প্রার্থী এসএম জাহাঙ্গীরের মামলা ১৩৮টিনবীউল্লাহ নবী ১২১শামসুর রহমান শিমুল বিশ্বাসের ১০৮টিখোদ বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের বিরুদ্ধে মামলা প্রায় শতাধিক। একইভাবে দলের শীর্ষ নেতা থেকে তৃণমূলের কর্মী-সমর্থকদের বিরুদ্ধেও একাধিক মামলা রয়েছে বলে জানিয়েছে বিএনপি। 
মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেনদলের এমন কোন নেতা নাই যার বিরুদ্ধে কোন মামলা নাই। ২০০৯ সালের পর গত ১০ বছরে বিএনপির বিরুদ্ধে ৯০ হাজার মামলা করা হয়েছে এবং এসব মামলায় আসামী করা হয়েছে ২৫ লাখ ৭০ হাজার আসামী। আর গত ১ সেপ্টেম্বর বিএনপির প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর পরথেকে দলের ৮৫ হাজার নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে ৪ হাজার ১২৬টি গায়েবি মামলা করা হয়েছে বলেও জানান তিনি। এই অবস্থায় দলটির নেতাকর্মীদের নির্বাচনের মাঠের পরিবর্তে আদালত-কারাগারে চক্কর খেতে হচ্ছে। 
দলটির তৃণমূল নেতাকর্মীরা জানান- মনোনয়ন পাওয়ার পরও নিজ নিজ নির্বাচনী এলাকায় অনেক বিএনপি প্রার্থীই যেতে পারবেন কিনা তা নিয়ে সন্দেহ-সংশয় রয়েছে। এছাড়া প্রার্থীদের পক্ষেধানের শীষের পক্ষে যারা মাঠে নামবেন সেই কর্মী-সমর্থকরাও মামলা-হামলার কারণে এলাকা ছাড়া। নির্বাচনকে কেন্দ্র করে এলাকায় গেলেই নতুন করে দিয়ে দেয়া হচ্ছে মামলা। আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা বিএনপি নেতাকর্মী দেখলেই খবর দিচ্ছে পুলিশকেপুলিশও ছো মেরে নেতাকর্মীদের নিয়ে যাচ্ছে। যাদের পাচ্ছে না তাদের বিরুদ্ধে দিচ্ছে নতুন মামলা।
দলের যুগ্ম মহাসচিব মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল বলেননির্বাচনের এখন পর্যন্ত যে পরিবেশ তাতে আওয়ামী লীগ নির্বাচনী প্রচারণা করছে আর বিএনপি ও তাদের প্রার্থীরা থানা-আদালত-কারাগারে ঘুরপাক খাচ্ছে। এই অবস্থায় কি নির্বাচন হবেতা সহজেই অনুমান করা যায়। 

মঙ্গলবার, ৪ ডিসেম্বর, ২০১৮

নির্বাচন কমিশনের ব্যাখ্যা ভুল -প্রফেসর ড. শাহদীন মালিক

আমাদের বাংলাদেশ নিউজ 24 ডেস্কঃ উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান, পৌরসভার মেয়র ইত্যদি পদাধিকারীদের স্ব স্ব পদ থেকে ইস্তফা দিয়ে আগামী সংসদ নির্বাচনের মনোনয়নপত্র জমা দিতে হবে-গত সপ্তাহে এ গোছের সংবাদ নজরে এসেছিল। এই ব্যাখ্যার উৎস নির্বাচন কমিশন। এর ফলে দুই ধরনের ঘটনা ঘটল। সংসদ নির্বাচনে অংশগ্রহণের জন্য বর্তমানে চেয়ারম্যান বা মেয়র আছেন এমন অনেকেই তাড়াহুড়ো করে তাঁদের পদত্যাগপত্র প্রযোজ্য কর্তৃপক্ষের কাছে জমা দিলেন। দ্বিতীয়ত, রিটার্নিং কর্মকর্তাদের মনোনয়নপত্র যাচাই-বাছাই শেষে জানা গেল যে পদত্যাগী চেয়ারম্যান-মেয়রদের অনেকেরই মনোনয়নপত্র বাতিল হয়েছে এ কারণে যে তাঁদের পদত্যাগপত্র সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ গ্রহণ করেছে এ মর্মে কোনো কাগজপত্র তাঁরা দাখিল করেননি। অর্থাৎ, পদত্যাগ কার্যকর হয়েছে সে-সংক্রান্ত প্রয়োজনীয় কাগজ তাঁরা জমা দেননি। ফল দাঁড়াল, এই চেয়ারম্যান-মেয়ররা মনোনয়নপত্র যাচাই-বাছাইয়ের সময় যেহেতু তাঁদের স্ব স্ব পদে বহাল আছেন, সেহেতু তাঁদের মনোনয়নপত্র বাতিল বা অবৈধ হিসেবে ঘোষিত হলো। কিন্তু ইসি এবং রিটার্নিং কর্মকর্তাদের এ ধরনের ব্যাখ্যা ও সিদ্ধান্ত ভুল।
২. 
আমাদের স্থানীয় সরকার পাঁচ প্রকারের-ইউনিয়ন পরিষদ, উপজেলা পরিষদ, পৌরসভা, জেলা পরিষদ ও সিটি করপোরেশন। প্রতিটি স্থানীয় সরকারের জন্য আলাদা আলাদা আইন আছে। যেমন স্থানীয় সরকার (ইউনিয়ন পরিষদ) আইন, ২০০৯; স্থানীয় সরকার (পৌরসভা) আইন, ২০০৯; ইত্যাদি। ইউনিয়ন পরিষদ, উপজেলা পরিষদ ও জেলা পরিষদের নির্বাচিত প্রধান হলেন চেয়ারম্যান। পৌরসভা ও সিটি করপোরেশনের মেয়র।

সব স্থানীয় সরকার আইন এবং চেয়ারম্যান ও মেয়রদের নিয়ে আইনি ব্যাখ্যা করতে গেলে আলোচনাটা দীর্ঘ ও জটিল হয়ে পড়বে। তাই শুধু স্থানীয় সরকার (পৌরসভা) আইন, ২০০৯ থেকে দেখাব যে পৌরসভার নির্বাচিত মেয়র স্বপদে বহাল থেকে জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রার্থী হয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে পারেন। সংসদ নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার জন্য তাঁকে প্রার্থী হওয়ার আগে পদত্যাগ করতে হবে না। আর যেহেতু পদত্যাগ করতে হবে না, সেহেতু পদত্যাগপত্র গৃহীত হয়েছে কি না, সেই প্রশ্নটা অবান্তর।
পৌরসভার আইনে ৩৩ ধারায় কোন কোন ক্ষেত্রে পৌরসভার মেয়রের পদ শূন্য হবে সে-সংক্রান্ত বিধান আছে। স্বভাবতই মেয়র মৃত্যুবরণ করলে তাঁর পদ শূন্য হবে। এ ছাড়া পদত্যাগ ও অন্য কিছু কারণে পদ শূন্য হতে পারে। এই আলোচনায় আমাদের জন্য যেটা গুরুত্বপূর্ণ সেটা হলো, ৩৩ ধারার (১) (ঙ), যেখানে বলা আছে, ‘মেয়রের পদ শূন্য হইবে যদি তিনি সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন।’ এই বিধান থেকে এটা দিনের আলোর মতো স্পষ্ট যে পৌরসভার একজন মেয়র স্বপদে থেকে সংসদ নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে পারবেন। সংসদ নির্বাচনে তিনি যদি জয়লাভ করেন, তাহলে তাঁর মেয়রের পদ শূন্য হবে। কিন্তু সংসদ নির্বাচনে অংশগ্রহণ করে মেয়র যদি সাংসদ হিসেবে নির্বাচিত হতে না পারেন, তাহলে তিনি তাঁর মেয়র পদে বহাল থাকবেন। অন্য কথায়, পৌরসভার একজন মেয়রকে পদত্যাগপত্র জমা দিয়ে সেই পদত্যাগপত্র গৃহীত হলে তিনি জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ নিতে পারবেন, আইনের এ রকম অদ্ভুত ব্যাখ্যা চমকপ্রদ। এ ধরনের বিধান একটু অন্যভাবে ইউনিয়ন পরিষদ, উপজেলা পরিষদ ও জেলা পরিষদ আইনেও আছে।
চেয়ারম্যান বা মেয়র (সিটি করপোরেশন ব্যতীত) প্রজাতন্ত্রের লাভজনক পদে অধিষ্ঠিত না। অন্য কথায়, তাঁরা প্রজাতন্ত্রের বা সরকারের পদে আছেন সেই জন্য পদত্যাগ না করে নির্বাচনে অংশ নিতে পারবেন না, সেটাও আইনের ভুল ব্যাখা। শেষে মোদ্দাকথা, আইনের একটা ভুল ব্যাখ্যার কারণে বেশ কিছু চেয়ারম্যান বা মেয়র প্রার্থী হওয়ার জন্য তাঁদের স্ব স্ব পদ থেকে পদত্যাগ করেছেন। কিন্তু পদত্যাগ করেও অনেকেই বৈধ প্রার্থী হতে পারেননি। কারণ, তাঁদের পদত্যাগপত্র এখনো গৃহীত হয়নি। এ ধরনের ভুল ব্যাখ্যার ফাঁদে পড়ে বেচারাদের আমও গেছে, ছালাও গেছে।
ড. শাহদীন মালিক: বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী এবং ইউনিভার্সিটি অব এশিয়া প্যাসিফিকের আইনের শিক্ষক।
দৈনিক প্রথম আলো
০৪ ডিসেম্বর ২০১৮

দু’টি আসনে জামায়াতের প্রার্থীতা বাতিলের দাবি: ২৩ দলীয় জোটের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছে খুলনা জেলা বিএনপি

আমাদের বাংলাদেশ নিউজ 24 ডেস্কঃ : ২৩ দলীয় জোটের কেন্দ্রীয় সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছেন খুলনা জেলা বিএনপির সভাপতি এডভোকেট এসএম শফিকুল আলম মনা। তিনি গতকাল রোববার তার অনুসারীদের নিয়ে নগরীর কেডি ঘোষ রোডস্থ মহানগর জেলা বিএনপির দলীয় কার্যালয়ে পৃথক পৃথক সভা-সমাবেশ করেছেন।
সমাবেশে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফকরুল ইসলাম আলমগীর স্বাক্ষরিত জামায়াতে ইসলামী দুই প্রার্থী খুলনা-৫ (ডুমুরিয়া-ফুলতলা) আসনে অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার ও খুলনা-৬ (কয়রা-পাইকগাছা) আসনে মাওলানা আবুল কালাম আজাদের মনোয়ন দেয়ায় তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করা হয়েছে। কেন্দ্রীয় সিদ্ধান্ত পরিবর্তন না করা হলে ধানের শীষ প্রতীক নেয়া প্রার্থীদেরকে এলাকায় অবাঞ্ছিত ঘোষণা করবেন বলে হুশিয়ারি উচ্চারণ করা হয়।
খুলনা জেলা বিএনপির সহ দপ্তর সম্পাদক রফিকুল ইসলাম বাবু স্বাক্ষরিত গণমাধ্যমের ই-মেইল বার্তায় উল্লেখ করা হয়, খুলনা-৬ আসন থেকে বিএনপির মনোনয়নে ধানের শীষ প্রতীকের প্রার্থী হিসেবে জেলা বিএনপির সভাপতি এডভোকেট এস এম শফিকুল আলম মনাকে দাবি করেছেন স্থানীয় কয়রা-পাইকগাছা বিএনপির নেতৃবৃন্দ।
তাদের দাবি, এখানে সাংগঠনিকভাবে বিএনপি শক্ত ভিত্তির ওপর দাড়িয়ে আছে। উপজেলা পরিষদ, ইউনিয়ন পরিষদসহ স্থানীয় সরকারের সকল নির্বাচনের ফলাফলে বিএনপির প্রার্থীরা এগিয়ে রয়েছে। অপরদিকে যুদ্ধাপরাধের দায়ে জামায়াতের শীর্ষ নেতারা অভিযুক্ত এবং নাশকতাসহ নানা অভিযোগে দলটির তৃণমূল বিপর্যন্ত হয়ে পড়ায় সাংগঠনিকভাবে তারা দূর্বল হয়ে পড়েছে।
এ অবস্থায় জামায়াতের প্রার্থীর পক্ষে নির্বাচনী বৈতরণী পার হওয়া অসম্ভব। একই সাথে খুলনা-৫ আসনেও জামায়াত নয়, বিএনপির প্রার্থী দাবি করেছেন দলটির তৃণমূলের নেতাকর্মীরা। তাদের অভিমত, বিশেষ রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে কৌশলের অবলম্বন নিয়ে একবারমাত্র এই আসনে জামায়াত প্রার্থী নির্বাচিত হলেও তারা সম্পূর্ণভাবে নির্ভর করেছিলেন বিএনপির সাংগঠনিক ভিত্তির ওপর। এরপর জামায়াত প্রার্থী এমপি নির্বাচিত হয়ে বিএনপির উপকারের পরিবর্তে ব্যাপক ক্ষতির শিকার হয়েছে। চার দলীয় জোট ক্ষমতায় থাকলেও বিএনপির ২৩ নেতাকর্মী খুন, দুই শতাধিক আহত ও পঙ্গু, আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
পক্ষান্তরে ক্ষমতায় থাকার সুবাদে নানানভাবে আর্থিক ক্ষেত্রে লাভবান হয়েছে জামায়াত। যে কারণে এবারের ভোটে তারা ধানের শীষ প্রতীক জামায়াতের হাতে তুলে দিতে নারাজ। তাদের দাবি বিএনপির টিকিট পাওয়া এই আসনের সাবেক এমপি ডাঃ গাজী আব্দুল হক কিংবা জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য ড. মামুন রহমানকে বিএনপির প্রার্থী করতে হবে।
রোববার দুপুরে নগরীর কে ডি ঘোষ রোডে বিএনপি কার্যালয়ে ডুমুুরিয়া উপজেলা বিএনপির এবং পরে একই স্থানে অনুষ্ঠিত কয়রা উপজেলা বিএনপির পৃথক দুই সভা থেকে এই দাবি ওঠে। কেন্দ্র থেকে দাবি মানা না হলে বিএনপির তৃণমূলের কর্মীরা কঠোরতর কর্মসূচি, এমনকি ধানের শীষ প্রতীক নেয়া বহিরাগতদেরকে এলাকায় অবাঞ্ছিত ঘোষণা করবেন বলে জানান।
ডুমুরিয়া উপজেলা বিএনপির সভায় সভাপতিত্ব করেন খান আলী মুনসুর। ওহিদুজ্জামান রানার পরিচালনায় সভায় বক্তব্য রাখেন গাজী তফসির আহমেদ, মনিরুল হাসান বাপ্পী, মোল্লা মোশারফ হোসেন মফিজ, মুর্শিদুর রহমান লিটন, শামীম কবির, তৈয়েবুর রহমান, আব্দুল মান্নান মিস্ত্রি, শেখ হাফিজুর রহমান, আবুল বাশার, জহুরুল হক, হারুনর রশিদ, ইসমাইল হোসেন, নাদিমুজ্জামান জনি, সরোয়ার হোসেন, ওয়াহিদুজ্জামান নান্না, কবির হোসেন, জহুর আকুঞ্জী, ফজলুল করিম সেলিম, মোল্লা আইযুব হোসেন, শফিকুর রহমান, এম এম জাফর, হালিম শেখ, মোল্লা মশিউর রহমান, শফিক আহমেদ মেজবা, নজরুল মোল্লা, আল শাকিল, আহাদ আলী শেখ। সভা থেকে ইঞ্জিনিয়ার মনির হাসান টিটোর ওপর সন্ত্রাসী হামলার নিন্দা এবং হামলার সাথে জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানানো হয়।
এদিকে কয়রা উপজেলা বিএনপির নির্বাহী সভায় সভাপতিত্ব করেন এডভোকেট মোমরেজুল ইসলাম। নুরুল আমিন বাবুলের পরিচালনায় সমাবেশে প্রধান অতিথি ছিলেন এডভোকেট এস এম শফিকুল আলম মনা। বক্তব্য রাখেন মনিরুজ্জামান মন্টু, কামরুজ্জামান টুকু, এডভোকেট কে এম শহিদুল আলম, মুর্শিদুর রহমান লিটন, আব্দুল মান্নান মিস্ত্রি, মশিউর রহমান যাদু, জাফরী নেওয়াজ চন্দন, মনিরুজ্জামান বেল্টু, সরদার মতিয়ার রহমান, জসিমউদ্দিন লাবু, জাবির আলী, ডি এম নুরুল ইসলাম, আব্দুল মান্নান মিস্ত্রি, মঞ্জুরুল আলম নান্নু, মনিরুজ্জামান মনি, রফিকুল ইসলাম মিস্ত্রি, জি এম রফিকুল ইসলাম, আবুল কালাম আজাদ, হাফিজুর রহমান, হাবিবুর রহমান, জি এম সিরাজুল ইসলাম, লিটন মোল্লা, রেজাউল ইসলাম রেজা, আব্দুর রহমান, ফয়জুল করিম মোল্লা প্রমুখ।
উল্লেখ্য, গত ২০০১ সালের নির্বাচনে খুলনা-৫ আসন থেকে তৎকালীন চারদলীয় জোটের ব্যানারে খুলনা মহানগরী জামায়াতের আমীর অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। স্বাধীনতাত্তোর ওই বারই ছিল আওয়ামী লীগের বাইরে কোন রাজনৈতিক দলের প্রার্থী হয়ে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হওয়া। ২০০৮ সালের নির্বাচনেও জামায়াত নেতা গোলাম পরওয়ার এই আসনে প্রার্থী ছিলেন।
অপরদিকে খুলনা-৬ আসনে ১৯৯১ সালের নির্বাচনে জামায়াতের কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য অধ্যক্ষ শাহ মুহাম্মদ রুহুল কুদ্দুস নির্বাচিত হন। এছাড়া ২০০১ সালের নির্বাচনে চারদলীয় ঐক্যজোটের ব্যানারে তিনি সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। ২০০৮ সালের নির্বাচনেও তিনি বিএনপি-জামায়াত জোটের প্রার্থী ছিলেন।
জামায়াতে ইসলামীর নিবন্ধন বাতিল হওয়ায় এ দু’টি আসনে বিএনপির নেতারা প্রার্থী হওয়ার জন্য তৎপর হয়ে উঠেছে। তবে, বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফকরুল ইসলাম আলমগীর স্বাক্ষরিত জামায়াতে ইসলামীর এই দুই প্রার্থীর চিঠি দেখে বিএনপির মধ্যে নানা গুঞ্জন শুরু হয়েছে। তারা তাদের প্রার্থী বাতিল করে দলীয় প্রার্থী দেয়ার আন্দোলন শুরু করেছে।
২৩ দলীয় জোটের সিদ্ধান্ত মোতাবেক জামায়াতে ইসলামীকে ২৫টি আসন ছেড়ে দেয়ার মধ্যে খুলনার এ দু’টি আসন থাকায় প্রার্থীদের পক্ষে জামায়াত-শিবিরের নেতাকর্মীরা নির্বাচনী কার্যক্রম শুরু করেছে।

জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের_খসড়া_ ইশতেহারঃ-


🌾সামরিক বাহিনী ও পুলিশ ব্যতীত সকল সরকারি চাকরিতে বয়সসীমা তুলে দেওয়া এবং ৩ বছরের মধ্যে সরকারি সকল শূন্যপদে নিয়োগ দেয়া হবে।
🌾 অনগ্রসর জনগোষ্ঠী ও প্রতিবন্ধীদের জন্য কোটা চালু করা হবে।
🌾ত্রিশোর্ধ্ব শিক্ষিত বেকারের জন্য বেকার ভাতা চালু করা হবে।
🌾পিএসসি ও জেএসসি পরীক্ষা বাতিল করা হবে।
🌾সব পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে সমন্বিত ভর্তি পরীক্ষার ব্যবস্থা করা হবে।
🌾প্রথম বছর থেকেই ডাকসুসহ সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে নিয়মিত ছাত্র সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠান নিশ্চিত করা হবে।
🌾বেসরকারি শিক্ষা পুরোপুরি ভ্যাটমুক্ত হবে।
🌾মাদ্রাসার শিক্ষার্থীদের কারিগরি শিক্ষা দিয়ে বিদেশে কর্মসংস্থান করা হবে।
🌾দুর্নীতির বিচারে বিশেষ ট্রাইব্যুনাল গঠন করা হবে।
🌾পরপর দুই মেয়াদের বেশি প্রধানমন্ত্রী থাকা যাবেনা।
🌾মুঠোফোনে ইন্টারনেটের খরচ অর্ধেকে নামিয়ে আনা হবে। দেশের বিভিন্ন গণজমায়েতের স্থানে ফ্রি ওয়াই-ফাইয়ের ব্যবস্থা করা হবে।
🌾সংখ্যালঘু মন্ত্রণালয় প্রতিষ্ঠা করা হবে। সংখ্যালঘুদের ওপর যেকোনো রকম হামলার বিচার হবে বিশেষ ট্রাইব্যুনালে।
🌾নিরাপদ সড়ক আন্দোলনের সময় শিক্ষার্থীদের ওপর নৃশংস হামলাকারীদের দ্রুত বিচারের আওতায় আনা হবে।
🌾শহরে গণপরিবহনকে প্রাধান্য দিয়ে পরিবহন নীতি প্রণয়ন করা হবে।
🌾তিস্তাসহ অভিন্ন নদীর পানিবণ্টন, রোহিঙ্গা সমস্যাসহ অন্যান্য দ্বিপক্ষীয় সমস্যা আলোচনার মাধ্যমে দ্রুত সমাধান করা হবে।
🌾সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যদের জন্য কল্যাণমূলক প্রকল্প গ্রহণ করা হবে।
🌾দেশের দারিদ্র্যপ্রবণ জেলাগুলোতে শিল্পায়নে বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হবে।
🌾ক্ষমতায় এলে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন বাতিল করবে ঐক্যফ্রন্ট।
🌾সরকারি পদক্ষেপ এবং সরকারের পদধারীদের বিরুদ্ধে সমালোচনা, এমনকি ব্যঙ্গ-বিদ্রূপেরও অধিকার থাকবে।
🌾সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমসহ সব গণমাধ্যমের ওপর কোনো রকম প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ সরকারি নিয়ন্ত্রণ থাকবে না।
🌾ন্যায়পাল নিয়োগ করা হবে এবং সংবিধান-নির্দেশিত সব দায়িত্ব পালনে ন্যায়পালকে পূর্ণ স্বাধীনতা দেওয়া হবে।
🌾দুর্নীতি দমন কমিশনকে সম্পূর্ণ স্বাধীনভাবে কাজ করতে দেওয়া হবে। দুর্নীতিবাজ সরকারি কর্মকর্তা গ্রেপ্তারে সরকারের অনুমতির বিধান (সরকারি চাকরি আইন-২০১৮) বাতিল করা হবে।
🌾ব্যাংকিং খাতে ও শেয়ারবাজারে লুটপাটে জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
🌾নারীর জন্য সংরক্ষিত আসনের প্রথার পরিবর্তে সরাসরি নির্বাচনের ক্ষেত্রে নারীর জন্য বাধ্যতামূলক ২০ শতাংশ মনোনয়নের বিধান করা হবে।
🌾প্রবাসীদের ভোটাধিকার নিশ্চিত করা হবে। ইউরোপ, জাপানসহ এশিয়ার বিভিন্ন দেশের শ্রমশক্তির রপ্তানির জন্য নতুন নতুন বাজার খুঁজে বের করা হবে।
🌾দায়িত্বপ্রাপ্তির এক বছরের মধ্যে মানুষকে ভেজাল ও রাসায়নিকমুক্ত নিরাপদ খাদ্য পাওয়ার নিশ্চয়তা প্রদান করা হচ্ছে।
🌾অতিদরিদ্র ও দুস্থদের জন্য বিনা মূল্যে খাদ্য বিতরণ এবং বিনা মূল্যে চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হবে।
🌾বয়স্ক ভাতা, দুস্থ মহিলা ভাতা, বিধবা ও স্বামী পরিত্যক্তাদের ভাতার পরিমাণ এবং আওতা বাড়ানো হবে।
🌾শ্রমিক-খেতমজুরসহ গ্রাম ও শহরের দরিদ্র জনগোষ্ঠীর জন্য সুলভ মূল্যে রেশনিং চালু করা হবে।
🌾ঐক্যফ্রন্ট সরকারের দায়িত্ব পেলে সব খাতের শ্রমিকদের ন্যূনতম মজুরি নির্ধারণ করা হবে।
🌾গার্মেন্টসসহ অন্য সব শিল্প এলাকায় শ্রমিকদের জন্য বহুতল ভবন নির্মাণের মাধ্যমে আবাসনের ব্যবস্থা করা হবে।
🌾কৃষি ভর্তুকি বাড়িয়ে সার বীজ ও অন্যান্য কৃষি উপকরণ সহজলভ্য করা হবে।

জামায়াতে ইসলামী ও ছাত্রশিবিরের বিরুদ্ধে ঘৃণ্য অপপ্রচার চালানো থেকে বিরত থাকার জন্য দৈনিক জনকণ্ঠ পত্রিকা কর্তৃপক্ষের প্রতি আহ্বান



আমাদের বাংলাদেশ নিউজ 24 ডেস্কঃ দৈনিক জনকণ্ঠ পত্রিকার শেষ পৃষ্ঠায় ৩ ডিসেম্বর প্রকাশিত ১টি রিপোর্টে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী এবং ইসলামী ছাত্রশিবিরের বিরুদ্ধে ভিত্তিহীন মিথ্যা প্রচারণার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় প্রচার বিভাগের সেক্রেটারী অধ্যাপক মোঃ তাসনীম আলম আজ ৩ ডিসেম্বর প্রদত্ত এক বিবৃতিতে বলেন, “বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী ও ইসলামী ছাত্রশিবিরের ভাবমর্যাদা ক্ষুন্ন করার হীন উদ্দেশ্যেই দৈনিক জনকণ্ঠ পত্রিকায় বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী ও ইসলামী ছাত্রশিবিরের বিরুদ্ধে ভিত্তিহীন মিথ্যা অপপ্রচার চালানো হয়েছে। আমি দৈনিক জনকণ্ঠ পত্রিকার কাল্পনিক রিপোর্টের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি।
দৈনিক জনকণ্ঠ পত্রিকার রিপোর্টে পুলিশ প্রশাসন এবং গোয়েন্দা সংস্থার অমূলক আশঙ্কার উপর ভিত্তি করে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী ও ইসলামী ছাত্রশিবিরের বিরুদ্ধে যে সব কথা লেখা হয়েছে তা সর্বৈব মিথ্যা। দৈনিক জনকণ্ঠের গোটা রিপোর্টটিই অবাস্তব। দৈনিক জনকণ্ঠ পত্রিকার সংশ্লিষ্ট রিপোর্টার ঐ পত্রিকায় অতীতে বিভিন্ন সময়ে প্রকাশিত ভিত্তিহীন মিথ্যা রিপোর্টগুলোই অবিকল অনুসরণ করেছেন। তাদের এ রিপোর্টের জবাবে আমি স্পষ্ট ভাষায় জানাতে চাই যে, বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী ও ইসলামী ছাত্রশিবির গণতান্ত্রিক পন্থায় রাজনীতি করছে। নাশকতা কিংবা সন্ত্রাসকে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী ও ইসলামী ছাত্রশিবির সব সময়ই ঘৃণা করে। কাজেই পুলিশের উপর হামলা চালানো কিংবা নাশকতার পরিকল্পনা করার প্রশ্নই আসে না। এগুলো সংশ্লিষ্ট রিপোর্টারের অলীক কল্পনা ছাড়া আর কিছুই নয়। দৈনিক জনকণ্ঠের রিপোর্ট দেশের জনগণ কখনো বিশ্বাস করে না।
অতএব, বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী ও ইসলামী ছাত্রশিবিরের বিরুদ্ধে ঘৃণ্য অপপ্রচার চালানো থেকে বিরত থাকার জন্য আমি দৈনিক জনকণ্ঠ পত্রিকা কর্তৃপক্ষের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি।”

সোমবার, ৩ ডিসেম্বর, ২০১৮

তাবলীগের ইজতেমার ময়দানে হামলার প্রতিবাদে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে বিক্ষোভ !


আমাদের বাংলাদেশ নিউজ ডেস্কঃ টঙ্গী ইজতিমার ময়দানে তাবলীগের বিতর্কিত আলেম মাওলানা সা’দ কান্ধলবীর অনুসারীদের নগ্ন সন্ত্রাসী‌ হামলার প্র‌তিবা‌দে ও নেতৃত্ব দানকারী ওয়া‌সিফ ও নাসী‌মের বিচা‌রের দাবী‌তে নারায়নগ‌ঞ্জের ঢাকা চট্টগ্রাম মহাসড়‌কে বি‌ক্ষোভ মি‌ছিল ও সমা‌বেশ অনুষ্ঠিত হ‌য়ে‌ছে। রবিবার(০২ ডিসেম্বর) এ বি‌ক্ষোভ মি‌ছিল অনুষ্ঠিত হয়। এ‌তে তাবলীগের মুস‌ল্লি ও আ‌লেম ওলামা অংশগ্রহণ ক‌রে।
‌বি‌ক্ষোভ শে‌ষে বক্তব্য রা‌খেন শীর্ষস্থানীয় ওলামা মাশা‌য়েখগণ। বক্ত‌ব্যে বলেন বাংলা‌দে‌শে বিতর্কিত আলেম মাওলানা সা’দ কান্ধলবীর অনুসারীদের কো‌নো তৎপরতা চল‌তে দেওয়া হ‌বেনা। কাকরাইল ট‌ঙ্গি সহ সব জায়গা থে‌কে তা‌দের‌কে অবা‌ঞ্চিত কর‌তে হ‌বে।
তারা ব‌লেন, আমরা দে‌খে‌ছি, তারা ওলামা‌দের উপ‌রে আক্রম‌নের জন্য পাথর, হ‌কি‌স্টিক, লোহা, হেলমেট, হ্যান্ড‌গ্রিপ সহ সর্ব প্রকা‌রের পূর্ব প্রস্তু‌তি নি‌য়ে মা‌ঠে প্র‌বেশ ক‌রে এবং নি‌র্বিচা‌রে ওলামা‌য়ে কেরা‌মের উপর ঝা‌পি‌য়ে প‌ড়ে। তারা অসংখ্য ছাত্র আলেম ও মুসল্লী‌কে আহত ক‌রে এবং বেশ ক‌য়েকজন‌কে পি‌টি‌য়ে হত্যা ক‌রে। এধর‌নের প‌রিক‌ল্পিত হত্যাকা‌ন্ডের ক‌ঠিন বিচার ও দোষিদের‌কে দ্রুত শা‌স্তি দাবী ক‌রেন তারা।
বি‌ক্ষোভ সমাবেশে মাদানী নগর মাদরাসার মুহা‌দ্দিস মুফ‌তি বশীরুল্লাহর সভাপ‌তিত্বে বক্তব্য রা‌খেন মুহা‌দ্দিস মাওলানা ফয়সাল, মুফতী নোমান কা‌সেমী, মুফ‌তি ইসমাইল হো‌সেন সিরাজী,মাওলানা রাশেদ বিন নুর, বিশিষ্ট ব্যবসায়ী নুরুল ইসলাম রাহী, আহত মজলুম মাওলানা গাজী খা‌লেদ বিন নূরসহ আ‌রো ওলামা‌য়ে কেরাম।
‌বি‌ক্ষোভ শে‌ষে রবিবার সংবা‌দিক স‌ম্মেল‌নে ঘো‌ষিত সমস্ত কর্মসূ‌চী বাস্তবায়‌নের প্র‌তিশ্রু‌তি ব্যক্ত ক‌রে সমা‌বেশ সমাপ্ত করা হয়।
সুত্র- Insaf24.com

আসন্ন একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সংসদ সদস্য প্রার্থী হিসেবে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর অন্তত ৩৪ জন প্রার্থীর মনোনয়ন বৈধতা পেয়েছে



আমাদের বাংলাদেশ নিউজ24 ডেস্কঃ আসন্ন একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সংসদ সদস্য প্রার্থী হিসেবে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর অন্তত ৩৪ জন প্রার্থীর মনোনয়ন বৈধতা পেয়েছে। তবে আরও ২ জন প্রার্থীর মনোনয়ন নিয়ে রিট করা হয়েছে বলে দাবি করেছে দলটি।
জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য মাওলানা আব্দুল হালিম বলেন, ‘আয়কর এর কাগজপত্র দাখিল না করার অভিযোগে দিনাজপুর-১ আসনের জোটের প্রার্থী মো. আবু হানিফের মনোয়নপত্র বাতিল করেছে নির্বাচন কমিশন।’
তিনি বলেন, ‘এটি ঠুনকো অভিযোগ। আমরা এ ব্যাপারে আইনের আশ্রয় নেবো। আপিলে সব টিকে যাবে ইনশাআল্লাহ।’
২৩ দলীয় জোটের মনোনীত প্রার্থী হিসেবে যাদের মনোনয়নপত্র বৈধ ঘোষিত হয়েছেঃ
১) ঠাকুরগাঁও – ২ – মাওলানা আব্দুল হাকিম
২) দিনাজপুর – ৬ – মোহাম্মদ আনোয়ারুল ইসলাম
৩) নীলফামারী – ২ – মুক্তিযোদ্ধা মনিরুজ্জামান মন্টু
৪) নীলফামারী – ৩ – মোহাম্মদ আজিজুল ইসলাম
৫) গাইবান্ধা – ১ – মাজেদুর রহমান সরকার
৬) সিরাজগঞ্জ – ৪ – মাওলানা রফিকুল ইসলাম খান
৭) পাবনা – ৫ – মাওলানা ইকবাল হুসাইন
৮) ঝিনাইদহ – ৩ – অধ্যাপক মতিয়ার রহমান
৯) যশোর – ২ – আবু সাঈদ মুহাম্মদ শাহদাত হোসাইন
১০) বাগেরহাট – ৩ – এডভোকেট আব্দুল ওয়াদুদ
১১) বাগেরহাট – ৪ – অধ্যাপক আব্দুল আলিম
১২) খুলনা – ৫ – অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার
১৩) খুলনা – ৬ – মাওলানা আবুল কালাম আজাদ
১৪) সাতক্ষীরা – ২ – মুহাদ্দিস আব্দুল খালেক
১৫) সাতক্ষীরা – ৩ – মুফতি রবিউল বাশার
১৬) সাতক্ষীরা – ৪ – গাজী নজরুল ইসলাম
১৭) পিরোজপুর – ১ – আলহাজ্ব শামীম সাঈদী
১৮) ঢাকা – ১৫ – ডা. শফিকুর রহমান
১৯) সিলেট – ৫ – মাওলানা ফরিদ উদ্দিন চৌধুরী
২০) সিলেট – ৬ – মাওলানা হাবিবুর রহমান
২১) কুমিল্লা – ১১ – ডা. সৈয়দ আব্দুল্লাহ মুহাম্মদ তাহের
২২) চট্টগ্রাম – ১৫ – আনম শামসুল ইসলাম
২৩) কক্সবাজার – ২ – হামিদুর রহমান আযাদ
*** দিনাজপুর – ১ ও রংপুর – ৫ রিট করা হয়েছে। এখনো রায় পাওয়া যায়নি।
স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে যাদের মনোনয়নপত্র বৈধ ঘোষিত হয়েছেঃ
১) জয়পুরহাট – ১ (সদর-পাঁচবিবি) – ডা. ফজলুর রহমান সাঈদ
২) বগুড়া – ২ (শিবগঞ্জ) – অধ্যক্ষ শাহাদাতুজ্জামান
৩) চাঁপাইনবাবগঞ্জ – ৩ (সদর) – নুরুল ইসলাম বুলবুল
৪) পাবনা – ১ (সাঁথিয়া-বেড়া) – ডাঃ আব্দুল বাসেত, নাজিবুর রহমান মোমেন
৫) পাবনা – ৪ (আটঘরিয়া-ঈশ্বরদী) – অধ্যাপক আবু তালেব মণ্ডল
৬) মেহেরপুর – ১ – তাজউদ্দিন
৭) যশোর – ৫ – গাজী এনামুল হক
৮) যশোর – ৬ (কেশবপুর) – অধ্যাপক মুক্তার আলী
৯) ময়মনসিংহ – ৬ (ফুলবাড়িয়া) – অধ্যাপক জসিম উদ্দিন
১০) চট্টগ্রাম – ১০ (ডাবলমুরিং) – আলহাজ্ব শাহজাহান চৌধুরী
১১) চট্টগ্রাম – ১৬ (বাঁশখালী) – মাওলানা জহিরুল ইসলাম
জামায়াত সূত্রে জানা যায়, এক মহিলা স্বাক্ষর দেয়ার বিষয়টি অস্বীকার করার অভিযোগে নীলফামারী-১ এর স্বতন্ত্র প্রার্থী আবদুস সাত্তারের মনোনয়ন বাতিল হয়েছে। এ ব্যাপারে ওই প্রার্থী আব্দুস সাত্তার বলেন, ‘যে মহিলার স্বাক্ষর নিয়ে জেলা রিটার্নিং কর্মকর্তা অভিযোগ তুলেছেন তাকে হাজির করা হলেও তারা তা মানেননি। আমার মনোনয়নপত্র বাতিল করেছেন। আমাদের আপিলে যেতে বলেছেন তারা। আমরা আপিল করবো।’
একজন স্বাক্ষর অস্বীকার করায় পটুয়াখালী-২ আসনে জামায়াতের ড. শফিকুল ইসলাম মাসুদের মনোনয়নপত্র বাতিল করা হয়েছে। কুষ্টিয়া-২ আবদুল গফুরের ৭ জনের স্বাক্ষর সমস্যা, লালমনিরহাট-১ আবু হেনা এরশাদ হোসেন সাজুর ক্ষেত্রে ৩ জনের স্বাক্ষর সমস্যাজনিত কারণে মনোয়নপত্র বাতিল হয়েছে।
অন্যদিকে উপজেলা চেয়ারম্যানের পদ থেকে পদত্যাগ না করার অভিযোগে বগুড়া-৪ আসনের জামায়াতের স্বতন্ত্র প্রার্থী মাওলানা তায়েব আলীর মনোয়নপত্র বাতিল করা হয়েছে।
এ ব্যাপারে ওই প্রার্থীর অভিযোগ, ‘উপজেলা চেয়ারম্যানের পদ থেকে পদত্যাগ করেছি। কিন্তু এখন তারা বলছেন একসেপ্ট করেনি। এটা চাপে রাখার কৌশল। আমরা আপিল করবো।’
একই কারণ দেখিয়ে বগুড়া-৫ আসনের দবিবুর রহমানের মনোনয়পত্র বাতিল হয়েছে।
অনদিকে দু’জন স্বাক্ষর অস্বীকারের অভিযোগে চুয়াডাঙ্গা-২ আসনে রুহুল আমিনের, লক্ষীপুর-২ আসনে জেলা জামায়াতের আমির রুহুল আমীনের মনোনয়নপত্র বাতিল হয়েছে।
মাত্র একজন স্বাক্ষর অস্বীকার করার অভিযোগে গাইবান্ধা-৪ এর স্বতন্ত্র প্রার্থী ও জেলা আমির ডা. আব্দুর রহিমের মনোয়নপত্র বাতিল হয়েছে। ভোটার স্বাক্ষর সমস্যাজনিত কারণে কুড়িগ্রাম-৪ আসনে মোস্তাফিজুর রহমান ও চাঁপাইনবাবগঞ্জ-২ এর ইয়াহয়িয়া খালেদের মনোনয়নপত্র বাতিল করা হয়েছে।
মনোনয়নপত্রের সঙ্গে দাখিল করা ভোটার তালিকায় অসঙ্গতির কারণ দেখিয়ে রাজশাহী-১ (তানোর-গোদাগাড়ী) আসনে দলের কেন্দ্রীয় নায়েবে আমির অধ্যাপক মুজিবুর রহমান এবং রাজশাহী-২ (পবা-মোহনপুর) আসনে দলরি জেলা কর্মপরিষদ সদস্য ও সাবেক কাটাখালি পৌর মেয়র অধ্যাপক মাজেদুর রহমানের মনোয়নপত্র বাতিল করেছে রাজশাহী জেলা প্রশাসক ও রিটানিং কর্মকর্তা এসএম আবদুল কাদের।

রবিবার, ২ ডিসেম্বর, ২০১৮

নির্বাচন যতই ঘনিয়ে আসছে সরকারের তাণ্ডব বাড়ছে : জামায়াত

আমাদের বাংলাদেশ নিউজ ডেস্কঃ বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারী জেনারেল ডা. শফিকুর রহমান বলেছেন, নির্বাচন যতই ঘনিয়ে আসছে ততই সরকারের সন্ত্রাসী তাণ্ডব ও গ্রেফতারের মাত্রা বেড়ে যাচ্ছে। জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার উদ্দেশ্যে যারা মনোনয়ন পত্র দাখিল করেছে তাদেরও অন্যায়ভাবে গ্রেফতার করা হচ্ছে।
শনিবার এক বিবৃতিতে তিনি এ কথা বলেন।
ডা. শফিকুর রহমান বলেন, জামায়াতে ইসলামীসহ বিরোধী দলকে নির্বাচন থেকে সরে যেতে বাধ্য করে ভোট ডাকাতির প্রহসনের নাটক মঞ্চস্থ করার উদ্দেশ্যেই সরকার গ্রেফতার করছে। অধ্যাপক জসিম উদ্দিন ময়মনসিংহ জেলার ফুলবাড়িয়া থেকে জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার লক্ষ্যে মনোনয়পত্র দাখিল করেছেন। অথচ তাকে অন্যায়ভাবে গ্রেফতার করা হয়েছে। সরকারের এ ধরনের বেআইনী কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে গণপ্রতিরোধ গড়ে তোলার জন্য তিনি দেশবাসীর প্রতি আহ্বান জানান।

তিনি অধ্যাপক জসিম উদ্দিনসহ সারা দেশে জামায়াত ও ছাত্রশিবিরসহ অন্যান্য বিরোধী দলের গ্রেফতারকৃত নেতা-কর্মীদের নিঃশর্তভাবে মুক্তি দেয়ার জন্য তিনি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের প্রতি আহ্বান জানান।
তিনি জামায়াতের ময়মনসিংহ জেলা শাখার সাবেক আমীর অধ্যাপক জসিম উদ্দিন, নোয়াখালী জেলা শাখা জামায়াতের সেক্রেটারী মাওলানা নিযাম উদ্দিন ফারুকক, ফুলবাড়িয়া উপজেলা শাখা জামায়াতের ডা. আবদুর রাজ্জাক ও মুক্তাগাছা উপজেলা শাখা জামায়াতের বায়তুলমাল সেক্রেটারী ডা. আজহারুল ইসলাম শাহীন, দিনাজপুর জেলার বিরামপুর উপজেলার দিওড় ইউনিয়ন জামায়াতের সভাপতি এবং বিজুল কামিল মাদ্রাসার এবতেদায়ি শাখার প্রধান মাওলানা নজরুল ইসলাম, নবাবগঞ্জ উপজেলার নারায়ণপুরের শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের ইউনিয়নের সেক্রেটারী মো. সেকেন্দার আলীকে পুলিশের গ্রেফতারের নিন্দা ও প্রতিবাদ জানান।

শনিবার, ১ ডিসেম্বর, ২০১৮

কেন্দ্রে ভোটাররা আসলে সরকারের পতন হবেই : মওদুদ আহমেদ

আমাদের বাংলাদেশ নিউজ 24 ডেস্কঃ ভোট কেন্দ্রে যদি ভোটাররা আসে, তবে এই সরকারের পতন হবেই বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার মওদুদ আহমেদ। শুক্রবার (৩০ নভেম্বর) জাতীয় প্রেসক্লাবের কনফারেন্স লাউঞ্জে আদর্শ নাগরিক আন্দোলন ও জাতীয় মানবাধিকার আন্দোলনের উদ্যোগে ‘গণতন্ত্র ও আইনের শাসন প্রতিষ্ঠার প্রয়োজন লেভেল প্লায়িং ফিল্ড এবং নির্বাচন কমিশনের উদ্যোগ’ শীর্ষক জাতীয় সেমিনারে এ মন্তব্য করেন তিনি।
তিনি বলেন, ভোট কেন্দ্রে যদি ভোটাররা আসে, তবে এই সরকারের পতন অবশ্যই হবে। এটি আমাদের জন্য একটি বিরাট সুযোগ। ঐক্যফন্টের জন্য, বিএনপির জন্য, জোটের জন্য এবং সারা বাংলাদেশের মানুষের জন্য এটি একটি বিরাট এবং শেষ সুযোগ। আর কোনোদিন এ ধরনের সুযোগ আসবে কিনা আমি বলতে পারি না।
তিনি আরো বলেন, কোন দলীয় সরকারের অধীনে সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব না। দলীয় সরকারে থেকে কোন নির্বাচন কমিশনার জন্য নিরপেক্ষ কাজ করা সম্ভব নয়। দলীয় সরকার ক্ষমতায় থাকলে পুলিশ প্রশাসন এবং সিভিল প্রশাসন কারো পক্ষে নিরপেক্ষভাবে কাজ করা সম্ভব নয়। সে ভবিষ্যৎবাণী আজকে সত্য প্রমাণিত হয়েছে।
নির্বাচন কমিশন দাবি করেছে পুলিশ এখন তাদের কথায় চলছে। কিন্তু বাস্তবে দেখতে পাচ্ছি পুলিশ সক্রিয়ভাবে এখনও সরকারি দলের হয়ে কাজ করছে। সিভিল প্রশাসন রিটার্নিং অফিসার তিনি একজন জেলা প্রশাসক। নির্বাচন কমিশনের রিটার্নিং কর্মকর্তা ঠিকই কিন্তু তিনি তো নির্বাচন কমিশনের কোন কোন কর্মকর্তা না। তিনি সরকারের কর্মকর্তা।
তার সাধ্য নাই সরকারের ইচ্ছার বিরুদ্ধে কোনো একটি সিদ্ধান্ত নেওয়া রিটার্নিং অফিসার হিসেবে। আমি তাকে দোষ দিচ্ছি না। কারণ তিনি জানেন, আমি তো আমার মেইন স্ট্রিম, আমার প্রমোশন, আমার পোস্টিং সব নির্ভর করছে বর্তমান প্রধানমন্ত্রী হাতে। নির্বাচন কমিশন মুখে যত কথাই বলছেন তার একটা কথাও বিশ্বাস করবেন না। মুখে এক কথা মনের মধ্যে অন্য কিছু। তারা জানে তাদের কোনো কথা পুলিশ প্রশাসন ও সিভিল কর্মকর্তারা শোনে না। আজ পর্যন্ত একটা দৃষ্টান্ত দেখান যে, কোন পুলিশ কর্মকর্তাকে বা সিভিল প্রশাসন কর্মকর্তা কে নির্বাচন কমিশন তাদের কথা অনুযায়ী বদলি করেছেন?
মওদুদ আহমেদ বলেন, আমার ভোট আমি দেবো, লড়াই করে ভোট দেবো। এখন অবস্থাটা ওই পর্যায়ে এসে গেছে। এটাই আমাদের শেষ ভোট বাংলাদেশের নামে। বাংলাদেশের অস্তিত্বের জন্য, বাংলাদেশের গণতন্ত্রের জন্য, বাংলাদেশের আইনে সন্তানের জন্য, বিচার বিভাগের স্বাধীনতার জন্য, গণমাধ্যমের স্বাধীনতার জন্য, সুস্থ ও সভ্য সমাজ গঠনের জন্য একমাত্র পথ হলো এই ভোট। গত দুই দিনে আমাদের তিনজন প্রার্থী এখন জেলখানায়। গ্রেফতার আরও বাড়বে এবং গায়েবি মামলা চলতেই থাকবে। নানা ধরনের নির্যাতন চালাবে যাতে বিএনপির কোনো নেতা-কর্মী, সমর্থক বাড়িতে থাকতে না পারে। আর থাকলেও গ্রেফতার করে নিয়ে যাবে। তবে এই সরকার জানে, তারা যতই কলা-কৌশল করুক আর যতই নীল নকশা ও পরিকল্পনা করুক না কেন। কিন্তু মাঠ পর্যায়ে তাদের ভোট নাই।
জাতীয় মানবাধিকার আন্দোলনের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান মাহমুদুল হাসানের সভাপতিত্বে সভায় নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না, গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ডা জাফরুল্লাহ চৌধুরী, বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য আবু নাসের মুহাম্মদ রহমাতুল্লাহ , শাহাবাগ থানা কৃষকদ‌লের সভাপ‌তি এম জাহাঙ্গীর আলম প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন ।

কাদের মোল্লার উস্তাভাজি- ডাল, বৈকালিক গান এবং একটি চিরকুটের ইতিকথা... -গোলাম মওলা রনি .


আমাদের বাংলাদেশ নিউজ 24 ডেস্কঃ ছোট্ট একটি ব্যক্তিগত দায় থেকে আজকের লেখাটির অবতারণা। কাসিমপুর জেল থেকে মুক্তির দিন সকালেই ঘটলো ঘটনাটি। মুক্তি লাভের আশা আর জেল গেটে পুনরায় গ্রেফতার হবার আশংকার দোলা চলে দুলতে দুলতে আমি আমার মালপত্র গুছাচ্ছিলাম। এমন সময় লুঙ্গি পরা এক ব্যক্তি আমার রুমে ঢুকে সালাম দিলো এবং বললো- কাদের মোল্লা সাহেব আপনাকে একটি চিঠিদিয়েছেন। মুহুর্তের মধ্যে আমি কিং কর্তব্য বিমূঢ় হয়ে পড়লাম। সিদ্বান্ত নিতে পারছিলাম না, চিঠিটি কি গ্রহণ করবো না ফেরত পাঠাবো। এরই মধ্যে আগন্তক টেবিলের ওপর চিঠিটি রেখে তড়িৎ গতিতে চলে গেলেন। আমি কম্পিত হস্তে চিঠিটি খুললাম। একটি ছেড়া ছোট কাগজে ৩/৪টি বাক্য লিখেছেন কাদের মোল্লা। কিন্তু বাক্যগুলোর তীর্যক অভিব্যক্তি আমাকে যারপরনাই আহত করলো।
.
সেই চিরকুটের ইতি কথা বলার পূর্বে আরো কিছু প্রসঙ্গ পাঠকগণকে জানাতে চাই-
কাসিমপুর জেলে ঢোকার পর পরই আমার জেলমেটগণের নিকট কাদের মোল্লার সম্পর্কে বহু কথা শুনছিলাম হররোজ। বিশেষ করে খাবার টেবিলে তার সম্পর্কে আলোচনা হতো সব চেয়ে বেশি। ট্রাইব্যুনালের রায়ে দোষী সাবস্ত হবার পূর্বে ডিভিশন প্রাপ্ত বন্দী হিসেবে সুরমা সেলেই ছিলেন। ডায়াবেটিসের রুগি। খাবার টেবিলে বসে প্রথমেই বলতেন কিছুই খাবেন না। তার পর একটার পর একটা খাবারের দিকে তাকাতেন। শিশুর মতো হাসি দিয়ে বলতেন মামুন- গোস্তের রংটা বোধ হয় ভালই হয়েছে। তার পর মাহমুদুর রহমান সাহেবের দিকে তাকিয়ে বলতেন ঘ্রানটাও তো চমৎকার। মীর কাসিম বা অন্য বন্দীদের দিকে তাকিয়ে এমন ভাব করতেন যেন কাদের মোল্লা সাহেবকে খাওয়ার জন্য একটু অনুরোধ করেন। এক সময় তিনি অনুরোধে সাড়া দিয়ে খাওয়া শুরু করতেন এবং হই-হল্লোড়, হাসি- তামাসা এবং নানা রকম গল্প উপাখ্যান বলে পুরো খাবার টেবিল মাতিয়ে রাখতেন। বিষন্ন বন্দীরা তাই কাদের মোল্লার উপস্থিতিটাকে এক ধরনের প্রশান্তি হিসেবে গণ্য করতো।
.
অমি যখন জেলে ছিলাম তখন কাদের মোল্লা ছিলেন অন্য সেলে সাধারণ বন্দীদের মতো। যুদ্ধাপরাধের সাজাপ্রাপ্ত আসামী হিসেবে তার প্রতি ছিলো জেল কর্তৃপক্ষের সতর্ক প্রহরা। ফলে প্রতি বিকেলে পাশাপাশি সেলের বন্দীরা নিজেদের সীমানা প্রচীরের দরজার সামনে দাঁড়িয়ে কথা বার্তা বলার চেষ্টা করতো আবার পুরোনো বন্দীদের কেউ কেউ রাস্তায়ও বের হয়ে আসতো। কিন্তু কাদের মোল্লাকে সেই সূযোগ দেয়া হতো না। কাদের মোল্লার সেবক সকাল বিকালে আমাদের সেলে আসতো ফ্রিজ থেকে ইনসুলিন নেবার জন্য। জেল কর্তৃপক্ষের অনুমতি নিয়ে কে বা কারা যেনো সুরমা সেলে ছোট্ট একটি ফ্রিজ বসিয়েছিলো কেবল মাত্র কাদের মোল্লার ওষুধ পত্র রাখার জন্য। সেই ফ্রিজে কাদের মোল্লার ডায়াবেটিসের ওষুধ পত্র থাকতো। সেবক যখন ওষুধ নিতে আসতো তখন তার নিকট থেকে কাদের মোল্লা সম্পর্কে টুকটাক জানতে পারতাম।
.
বন্দী জীবনের নিরন্তর সময় যেনো আর কাটতে চাইতো না। ফলে আমরা সময় টুকুকে যথাসম্ভব আনন্দ মূখর করার জন্য সর্বাত্মক চেষ্টা করতাম। যার যতো জ্ঞান বা প্রতিভা ছিলো- সবই উজার করে দিতাম সহযাত্রীদেরকে আনন্দ দেবার জন্য। একদিন বিকেলে বসেছিলাম সুরমা সেলের বারান্দায়। পাশাপাশি চেয়ার নিয়ে আমরা সবাই- গিয়াসউদ্দিন আল মামুন, মাহামুদু রহমান, মীর কাসিম আলী আর এটিএম আজাহার। হঠাৎ নীরব হয়ে গেলাম অজানা কারনে। অর্থ্যাৎ বলার মতো কোন কথা ছিলোনা কারো মূখে। হঠাৎ মামুনই বলে উঠলো- এই সময় মোল্লা ভাই থাকলে আমাদের সবাইকে গান শোনাতেন। জামাতের লোক আবার গান গায় নাকি- মনে মনে টিটকারী কেটে জিজ্ঞাসা করলাম- কি গান গাইতেন? রবীন্দ্র সঙ্গীত- অসাধারণ তার গায়কী গলা আর সুরের ঢং- মাহমুদুর রহমান বললেন।
.
আমি নিজে টুকটাক গাইতে জানি। তাই প্রস্তাব করলাম কিছু একটা গাওয়ার জন্য। তারা আগ্রহ দেখালে আমি একটি রবীন্দ্র সঙ্গীত গাইলাম- ‘মনে কি দ্বিধা রেখে গেলে চলে’। সবাই শুনলেন এবং প্রশংসা করলেন। তবে একথা বললেন যে, আমার চেয়েও কাদের মোল্লা সুন্দর করে গান করেন। তার গান পরিবেশনের সময় তিনি উপস্থিত লোকজনের সঙ্গে এমনভাবে চোখের ভাব বিনিময় করেন যে শ্রোতাগণ তার সঙ্গে গুণগুনিয়ে কন্ঠ মেলাতে বাধ্য হন। ফলে পুরো অনুষ্ঠান হয়ে উঠে প্রাণবন্ত। অন্যদিকে আমি গান করি চোখ বুঝে। যখন আমার সঙ্গী-সাথীগণ যখন আমাকে চোখ খোলা রেখে আরো একটি গান গাইতে অনুরোধ করলেন তখন আমি ভারী লজ্বা পেয়ে গেলাম এবং আর এগুতো পারলাম না। ফলে তারা আবার পুনরায় কাদের মোল্লার প্রশংসা করতে থাকলেন।
একদিন আমরা সকলে খাবার টেবিলে বসে দুপুরের খাবারের জন্য অপেক্ষা করছিলাম। সেবকরা তখন খাবার পরিবেশনের জন্য এঞ্জাম করছিল। এমন সময় কাদের মোল্লার সেবক এসে গিয়াস উদ্দিন আল মামুনের নিকট ছোট একটি চিঠি ধরিয়ে দিল। চিঠিটি পড়ার পর মামুনের মূখমন্ডল ক্ষোভ, লজ্বা আর রাগে লাল হয়ে গেল। এরপর সে চিঠিটি মীর কাসেম আলীর হাতে দিল। কাসেম সাহেব চিঠিটি পড়ে কাদঁতে আরম্ভ করলেন। 
.
আমার হাতে যখন চিঠিটি এলো তখন দেখলাম কাদের মোল্লা লিখেছেন-
প্রিয় মামুন,
সালাম। নিতান্ত বাধ্য হয়েই তোমার সেবক মতির বিরুদ্ধে তোমার নিকট নালিশ জানালাম। ইদানিং কোনো জানি আমার বেশি বেশি ডাল আর উস্তা ভাজি খেতে ইচ্ছে করে। আমার নিজের অর্থ দিয়ে এসব কিনে খাওয়া যে সম্ভব নয় তা তুমি জানো। তুমি আমার জন্য এ যাবৎ অনেক কিছু করেছ- আর তাই তোমার উপর অজানা এক অধিকার জন্ম নিয়েছে। সেই অধিকার বলে আমার সেবককে বলেছিলাম চোখায় (রান্না ঘরে) যখন খাবার ভাগাভাগি হয় তখন মামুনদের ভাগ থেকে একটু ডাল আর উস্তাভাজি বেশি করে নিও আমার জন্য। কিন্তু তোমার সেবক আমাকে এই সূযোগ দেয়নি। জীবন-মৃত্যুর শেষপ্রান্তে দাড়িয়ে এই অভাগা তার ছোট ভাইয়ের নিকট একটু ডাল আর উস্তাভাজি চেয়ে যদি অন্যায় করে থাকি তবে মাফ করে দিয়ো। ইতি-
.
চিঠি পড়ে আমরা সবাই স্তম্ভিত হয়ে গেলাম। মাহমুদুর রহমান সাহেব বললেন- কাল থেকে মোল্লা সাহেবের জন্য আলাদা ডাল আর উস্তাভাজি রান্না হবে। সব বিল আমি দেব। মামুন ক্রোধে কাঁপছিল আর সেবককে শাসাচ্ছিল। আর অন্যরা একধরনের বিষন্নতার নষ্টালজিয়ায় ভুগতে লাগলাম।
.
এবার আমি বলছি- আমার কাছে লিখা কাদের মোল্লার চিরকুট কাহিনী। তিনি লিখেছেন-
.
প্রিয় রনি,
যদি কখনও সময় পাও এবং তোমার ইচ্ছা হয় তবে আমার ফাঁসির পর একবার হলেও বলো বা লিখো- কাদের মোল্লা আর কসাই কাদের এক ব্যক্তি নয়। আমার আত্মা কিয়ামত পর্যন্ত কাঁদবে আর কসাই কাদের তখন কিয়ামত পর্যন্ত হাসবে।

About

ব্লগ সংরক্ষাণাগার

আমার ব্লগ তালিকা

Translate

Translate

আমাদের বাংলাদেশ নিউজ 24

সর্বশেষ

অনুসরণকারী