বিজ্ঞাপন দিন

আচ্ছালামু আলাইকুম ওয়ারাহমাতুল্লাহ। ইসলামী ব্যাংক এজেন্ট ব্যাংকিং আউটলেট দক্ষিণগাও, শাহীবাগ বাজার এর পক্ষ থেকে সকল গ্রাহক, শুভাকাংখীসহ সবাইকে জানাই ঈদ উত্তর সালাম ও আন্তরিক শুভেচ্ছা। ব্যাংক খোলা এবং যথারীতি ব্যাংকিং কার্যক্রম চলছে। এই গ্রুপে যারা আছেন তাদের মাধ্যমে সংশ্লিষ্ট এলাকার এলাকারসকলকে ইসলামী ব্যাংকের মাধ্যমে বিদেশ থেকে রেমিটপন্স পাঠানোর আহবান জানাচ্ছি। ঢাকার সবুজবাগ থানার রাজারবাগ, কুসুমবাগ, দক্ষিনগাও, শাহীবাগ, মানিকদিয়া, বাইকদিয়া, নন্দিপাড়াসহ সকল এলাকার গ্রাহক, শুভাকাংখী, শুভানুধ্যায়ীদের প্রদত্ত মোবাইল নাম্বারে যোগাযোগ করার অনুরোধ করা হলোঃ ০১৭১১-৪৫৮১৫১, ০১৭০০৯২৫২৪১:b>ইসলামী ব্যাংক এজেন্ট ব্যাংকিং আউটলেট দক্ষিণগাও, শাহীবাগ বাজার

রবিবার, ১৩ জানুয়ারী, ২০১৯

জামায়াত নিয়ে ড. কামাল হোসেনের বক্তব্য স্ব-বিরোধীঃ ডা. মোস্তাফিজুর রহমান ইরা

Amader Bangladesh News24 Desk: একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের ব্যানারে জামায়াতে ইসলামীর নেতাদের প্রার্থী করা ‘ভুল’ ছিল- জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের আহ্বায়ক ও গণফোরাম সভাপতি ড. কামাল হোসেনের এমন মন্তব্যে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছেন বিএনপির নীতিনির্ধারণী ফোরামের এক নেতা।
গত শনিবার গণফোরামের কেন্দ্রীয় কমিটির বৈঠকের পর দলটির পক্ষ থেকে সাংবাদিকদের একটি লিখিত বক্তব্য দেয়া হয়। তাতে বলা হয়, ‘তাড়াতাড়ি জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট গঠন করতে গিয়ে অনিচ্ছাকৃত যেসব ভুলত্রুটি সংঘটিত হয়েছে, তা সংশোধন করে ভবিষ্যতের জন্য সুদৃঢ় জাতীয় ঐক্য গড়ে তুলতে হবে।’
ওই বক্তব্য নিয়ে সাংবাদিকদের করা প্রশ্নের জবাবে কামাল হোসেন বলেন, ‘আমরা অতীতে জামায়াতকে নিয়ে রাজনীতির চিন্তাও করিনি। ভবিষ্যতেও পরিষ্কার যে, জামায়াতকে নিয়ে রাজনীতি করব না।’
বিএনপিকে জামায়াত ছাড়তে বলবেন কিনা- এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘এটি বলা যেতে পারে। তারা যে ধানের শীষে জামায়াতের ২২ জনকে মনোনয়ন দেবে, সেটি আমরা জানতাম না।’
‘৩০ ডিসেম্বর নির্বাচনের আগে জামায়াতে ইসলামী বিএনপির টিকিট পাবে জানলে ঐক্যফ্রন্টের অংশ হতাম না।’ গত বছরের ২৭ ডিসেম্বর ভারতীয় সংবাদ মাধ্যম ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে ড. কামাল হোসেন বলেছিলেন, ‘আমি যদি আগে জানতাম (জামায়াত নেতারা বিএনপির টিকিট পাবে), তবে আমি এর অংশ হতাম না। কিন্তু যদি ওই ব্যক্তিগুলো ভবিষ্যতের সরকারে কোনো ধরনের ভূমিকা পালন করে, আমি একদিনও থাকব না।’
জামায়াত নিয়ে ড. কামাল হোসেনের বক্তব্যের প্রতিক্রিয়া জানতে চাইলে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার জমির উদ্দিন সরকার জাগো নিউজকে বলেন, ‘জামায়াতের সঙ্গে তো ড. কামাল সাহেবের কোনো কানেকশন নাই। জামায়াতের সঙ্গে রাজনীতি করার ইচ্ছা নাই- উনি (ড. কামাল) যে কথাটা বলেছেন, উনি কি জামায়াতের সঙ্গে রাজনীতি করেছেন? উনি তো জামায়াতের সঙ্গে রাজনীতি করেননি। যেখানে উনি জামায়াতের সঙ্গে রাজনীতি করেন না সেখানে ওনার ওই বক্তব্যটা কতটুকু যুক্তিযুক্ত?’
তিনি আরও বলেন, ‘আপনারা সাংবাদিক, একটা কথা লেখার ক্ষমতা নেই। গভর্নমেন্ট আওয়াজ করলে সঙ্গে সঙ্গে দৌড়ান। আর ড. কামালের একটা সাধারণ কথা, এটার জন্য আপনি আমাকে টেলিফোন করেছেন। আই উইশ ইউ গুড লাক।’
অন্যদিকে জামায়াতের ঘনিষ্ঠ বিএনপি নেতৃত্বাধীন ২০ দলীয় জোটের শরিক বাংলাদেশ লেবার পার্টির চেয়ারম্যান ডা. মোস্তাফিজুর রহমান ইরান বলেন, ‘ড. কামাল হোসেনের বক্তব্য স্ব-বিরোধী। উনি নির্বাচনকালীন সময় বাংলাদেশে ছিলেন। মূলত নির্বাচনী মাঠে জামায়াতের কোনো প্রার্থী ছিল না। যারাই প্রার্থী ছিলেন সবাই বিএনপির। জামায়াতে ইসলামীর নিবন্ধন বাতিল করা হয়েছে। তারা অনিবন্ধিত দল হিসেবে বাংলাদেশের রাজনীতিতে আছে। আরপিও অনুযায়ী নির্বাচন করতে পারে না জামায়াত। জামায়াত নির্বাচন করেনি। যে সমস্ত ব্যক্তি নির্বাচন করেছে তারা বিএনপির সদস্য হিসেবে নির্বাচন করেছে। বিএনপির প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করেছে।’
‘ড. কামাল হোসেন যে বক্তব্য দিয়েছেন এটা তার একান্ত ব্যক্তিগত। তার ওই বক্তব্য আমি মনে করি স্ব-বিরোধী। আজকের নির্বাচনের ফলাফল যা হয়েছে এটা জাতীয় ও আন্তর্জাতিক চক্রান্তের অংশ। একটা রাষ্ট্রীয় চক্রান্তের মাধ্যমে আমাদের হারানো হয়েছে।’
তিনি আরও বলেন, আজ যে সমস্ত কারণ নিয়ে কথা বলা হচ্ছে, আমি মনে করি না এগুলো মূল কারণ। কেন না, আমরা নির্বাচন প্রত্যাখ্যান করেছি। আমি মনে করি, এটা পাতানো নির্বাচন, ষড়যন্ত্রের নির্বাচন। এটার বিরুদ্ধে যথাযথ কর্মসূচি নিয়ে আমাদের মাঠে নামা দরকার।’
সুত্রঃ jagonews24

শনিবার, ১২ জানুয়ারী, ২০১৯

উইঘুরের কান্না!দেখার কি কেউ নেই?

পুর্ব তুর্কিস্তান, বর্তমানে চীনের জিনজিয়াং প্রদেশের নির্যাতিত উইঘুর জনগনের মুখপাত্র হয়ে কাজ করেন রাবিয়া কাদির। সম্প্রতি ভারতীয় উপমহাদেশের মুসলিমদের প্রতি একটি খোলা চিঠি লেখেন তিনি। মূল চিঠিটি ইংরেজিতে লেখা। বাংলা অনুবাদ করেছেন প্রিয় তৌফিক এলাহী ভাই..

রাবেয়া কাদের: বাঙালী ও ভারতীয় মুসলিমদের প্রতি খোলা চিঠি..

সম্মানিত বাঙালী ও ভারতীয় মুসলিম ভাই ও বোনেরা:
গত ১৩ ও ১৪ সেপ্টেম্বর (২০১৮) আপনারা আমাদের প্রতি যে সমর্থন ও চীন সরকারের প্রতি নিন্দা জানিয়েছেন তা আমাদের পূর্ব তুর্কিস্তানের ভেতরে ও বাইরের জনগণের অন্তরে আশার বীজ বপন করেছে। একজন উইঘুর কর্মী হিসেবে আমাদের কাছে এটা কোন আশ্চর্যের বিষয় নয় যে চীন ১০ লাখ উইঘুর মানুষকে আটকে রাখতে পারে। কারণ চীন সরকার জাতি হিসেবে আমাদের ধ্বংস করে দিতে ধীর্ঘদিন ধরে কাজ করে আসছে এবং আমাদের ভ’মি চিরতরে দখল নিয়ে নিতে চাচ্ছে। ১৯৪৯ সালে তারা আমাদের ভূমিতে অভিযান চালিয়েছিল এবং তখন থেকে তাদের দখল কার্যক্রম চালু রাখতে নানা ফন্দি ফিকির করে। আজকে তাদের ক্যাম্পগুলো তার জ্বলন্ত প্রমাণ। তারা প্রকাশ্যে আমাদের লোকদের ধ্বংস করার সংকল্প নিয়ে এগিয়ে যাচ্ছে। সবচেয়ে জঘন্য ব্যাপার হল এই নির্মম নির্যাতনের দৃশ্য দেখেও বিশ্ববাসী নিরব ছিল। বিশেষ করে কনসেন্ট্রেশন ক্যাম্পের খবর প্রকাশিত হবার পর ইসলামী দেশগুলো থেকে কোন (প্রতিবাদ) শব্দ শোনা যায় নি অথচ তারা আমাদের ভাই।
এ বছরের শুরুতে আমি পশ্চিমা এবং ইসলামী দেশগুলোর নিকট যাদের সাথে চীনের ক’টনৈতিক সম্পর্ক রয়েছে তাদের কাছে বিভিন্ন প্রতিবেদন জমা দিয়েছি এবং অনুরোধ করেছি। আমার অনুরোধ ছিল ক্যাম্পগুলো বন্ধ করা যেখানে নিয়ে নির্যাতন করে চীন সরকার। যদি সেটাও সম্ভব না হয় তবে ক’টনৈতিকভাবে অন্তত চীনকে বলা হয় নির্যাতন না করতে এবং নিন্দা জানানো হয়।
কিছুই হয় নি। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপীয় পার্লামেন্ট ব্যাপারটি গুরুত্বের সাথে নেয় কিন্তু যথাযথ পদক্ষেপ নেবার মত তা যথেষ্ট নয়। কিন্তু একটি মুসলিম দেশও টু শব্দ করে নি। বরং মুসলিম দেশগুলোর যেসব আমাদের সাথে কথা বলেছে তারা যেন বোবা, বধির। যেখানে পশ্চিমা দেশগুলো, তাদের সংস্থা-সংগঠন কথা বলছে সেখানে আমাদের মুসলিম দেশগুলো কেন কোন কথা বলে না? তারা কথা বলতে পারলে আমরা কেন চুপ মেরে থাকি।
যখন আমরা দেখি হাজার হাজার ভাইবোনেরা বাংলাদেশে এবং ভারতে আমাদের জন্য রাস্তায় নামেন তখন আমাদের আনন্দ ধরে না, আমরা অনুভব করি আমরা একা নই। আমরা দেখি অন্যায়ের বিরুদ্ধে মুসলিম বিশ্বের (শাসকদের) ভ’মিকা ও প্রতিবাদ যথেষ্ঠ না হলেও অন্তত মুসলিম ভাইবোনদের অন্তর থেকে অন্যায়ের বিরুদ্ধে ঘৃনা মুছে যায় নি। আমরা দেখি সেসব ভাইবোনদের যারা গরিব হলেও চায়না থেকে অর্থনৈতিক লাভের হিসাব না করে শুধু অসীম ঈমানী প্রাচুর্যকে দুনিয়াবী টাকা পয়সা অস্ত্রশস্ত্রর উপর প্রাধান্য দিয়েছেন।
আমরা প্রমাণ দেখি যে আল্লাহ মাজলুমের পক্ষে আছেন, জালেমের পক্ষে নয়। আজকে এক মিলিয়নেরও বেশি (১০লাখেরও বেশি) সেসব ক্যাম্পে বন্দি আছেন। সমগ্র উইঘুর পরিবারগুলোকে বিচ্ছিন্ন করে ফেলা হয়েছে। পরিবারের সদস্যরা একে অপরকে দেখেন না দেড় বছর ধরে। জানেন না তাদের প্রিয়মুখগুলো কোথায় আছে? কমন আছে? আমাদের লোকেরা এরকম নির্যাতন সয়ে আসছে দীর্ঘ ৬৮ বছর ধরে, শুধু ঈমানের বলে বলিয়ান হয়ে। এখন চীন আমাদের ঈমানের উপর আঘাত করছে। তারা আমাদের উঘুর এবং কাজাখ মুসলিম পরিচয়কে চায়না নাস্তিকতায় বদলে দিতে চায়।
আমাদের উইঘুর জাতীয়তা আমাদের নির্বাচিত নয়। এটা আল্লাহর পক্ষ হতে নির্বাচন করে দেয়া। তাই চীনের পক্ষে কখনোই সম্ভব না এই পরিচয় বদলে দেয়া। আমরা বিশ্বাস করি পৃথিবীতে কিয়ামত পর্যন্ত আমরা এই উইঘুর পরিচয় নিয়ে বেঁচে থাকবো। আর এভাবে লড়াই চালিয়ে যাব।
আমাদের ভাইদের কাছে আমাদের এটাই চাওয়া আপনারা স্বৈরাচারের পক্ষ নিবেন না। আপনারা আওয়াজ তুলুন। আমাদের পাশে থাকুন। সে সমর্তন শুধু আমাদের জন্য অনুপ্রেরণাই হবে না বরং মুসলিম বিশ্বের অন্যান্য অঞ্চলেও প্রেরণার বাতি জ্বালবে। জানবে, আমাদের লক্ষ লক্ষ ভাইবোন চীনের ক্যাম্পেগুলোতে বন্দি। দেখবে, রাজনীতিবীদরা কী করে, আর মিডিয়া রাষ্ট্রের কাছে প্রশ্ন করবে।
অধিকিন্তু, সেই সমর্থন এশিয়ার দেশগুলোকে এসব ক্যাম্প সম্পর্কে জানাতে ভূমিকা রাখবে এবং কার্যকরভাবে দ্রুত পদক্ষেপের দিকে নিয়ে যাবে।
ভাইয়েরা, আল্লাহ আপনাদের মঙ্গল করুন! আল্লাহ আপনাদের সংগঠনগুলোর এবং নেতাদের সফল করুন!
ওয়ার্ল্ড উইঘুর কংগ্রেস প্রেসিডেন্ট
রেবিয়া কাদির

বৃহস্পতিবার, ১০ জানুয়ারী, ২০১৯

কাতারে কুরআন প্রতিযোগিতায় সিলেটের সাঈদ প্রথমস্থান।

আমাদের বাংলাদেশ নিউজ ডেস্কঃ কাতারে অনুষ্ঠিত ২৫তম শেখ জসিম বিন মোহাম্মদ বিন থানি পবিত্র কুরআন প্রতিযোগিতায় অংশ গ্রহণ করে প্রথম স্থান অর্জন করেছে বাংলাদেশের সিলেটের বিশ্বনাথ উপজেলার লালটেক গ্রামের বাসিন্দা আব্দুল ইসলামের দ্বিতীয় পুত্র শিশু হাফিজ মো: সাইদ ইসলাম মাহি (১৩)।
সোমবার অনুষ্ঠিত চূড়ান্ত প্রতিযোগিতায় ২৬ জন প্রতিযোগীর মধ্যে সে প্রথম স্থান অধিকার করে। উল্লেখ্য এ প্রতিযোগিতায় ৪টি দেশের মধ্যে প্রায় ৫ হাজার প্রতিযোগী অংশগ্রহণ করে।
শিশু হাফিজ মো. সাঈদ ইসলাম মাহি কাতারে একটি প্রাইভেট হাফিজিয়া মাদরাসায় অধ্যায়নরত। হিফজুল কুরআন প্রতিযোগিতায় চার টি দেশের পাঁচ হাজার প্রতিযোগীকে পেছনে ফেলে প্রথম স্থান অর্জন করে মাহী। সে স্ব পরিবারে কাতারে বসবাস করে।
কাতারে ইসলামিক বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের স্টিয়ারিং কমিটি ২০১৮-এর প্রতিযোগিতাটি সংগঠিত করে।
কাতারে ইসলমী বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী এইচ এইচ ড. গণিত বিন মুবারক আল কুওভারী কাছ থেকে প্রথম পুরস্কার ১ লক্ষ রিয়াল (২৩ লক্ষ ৫০ হাজার টাকা পায়) গ্রহণ করে। সে ভবিষ্যতে আরো ভালো কিছু করতে সকলের কাছে দোয়া প্রার্থী।

Dr.Tuhin Malik স্যারের ওয়াল থেকে।


আমাদের বাংলাদেশ নিউজ ডেস্কঃ নির্বাচনী মৌসুম শেষ হতেই সারাদেশে ধর্ষণের মৌসুম শুরু হয়ে গেলো! নির্বাচনে বিজয়ের উৎসবটা শুরু হয়েছে ৪ সন্তানের জননীকে গণধর্ষন দিয়ে!
ধর্ষকের অভয়রাণ্যে দুই বছরের শিশুদেরও কোন নিস্তার নাই। এদেশে ধর্ষণের আইন থাকলেও বিচার নাই! এখানে আইনের চেয়ে ক্ষমতার দাপটই যেন মূখ্য! যেদেশে ধর্ষণের শতক পূরন করে বিশ্ববিদ্যালয়ে মিষ্টি বিতরন করা হয়, সেখানে ধর্ষণ যেন নেতা হবার আশ্চর্য এক যোগ্যতা! 
পুলিশ সদর দপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, প্রতিবছর গড়ে মাত্র ৪ শতাংশ ধর্ষণ মামলার সাজা হয়। বাকিদের অধিকাংশই মামলা থেকে অব্যাহতি পেয়েছে। বেসরকারী জরীপে, ধর্ষণ মামলার রায় ঘোষণার হার ৩ দশমিক ৬৬ ভাগ। আর সাজার হার শূন্য দশমিক ৪৫ শতাংশ।
ধর্ষণের শাস্তির এই দশাই বলে দেয়, ধর্ষণের বিচারহীনতাই ধর্ষণ সংঘটনের বড় উৎসাহের কারন! কেননা দেশে এই ধর্ষক পশুদের সামনে কোনো কঠোর শাস্তির দৃষ্টান্ত যে নেই!
অনেকেই সুযোগ পেলেই ইসলামের দৃষ্টান্তমূলক কঠিন শাস্তির সমালোচনা করেন। ইসলামে চুরির শাস্তি হাত কাটা। কিন্তু ইসলামী রাষ্ট্রে কতজনকে আপনারা হাতকাটা দেখেছেন? কালেভদ্রে চোরের হাত কাটা হয়। ধর্ষকের শিরোচ্ছেদ হয়। এগুলো দৃষ্টান্ত সৃষ্টির জন্য। কারন হাতকাটার ভয়ে সেখানে উম্মুক্ত স্বর্নের দোকানে ঢুকতেও কারো সাহসে কুলায় না। এটাকেই আমরা আমাদের জুরিসপ্রুডেন্স বা আইনবিজ্ঞানে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি বলি। অর্থাৎ দুয়েকজনকে কঠিনতম দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিয়ে সমাজ ও রাষ্ট্রে দৃষ্টান্ত সৃষ্টি করা, যাতে কঠোর শাস্তির ভয়ে কেউ এপথে পা না বাড়ায়।
ইদানীং অনেকেই ধর্ষণের বিচারহীনতার বিরুদ্ধে ইসলামের কঠোর দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির কথা বলে আসছেন। কেননা, ইসলামে ধর্ষককে দেখা হয় ‘মুহাররিব’ হিসেবে, যার অর্থ হচ্ছে, রাষ্ট্র ও আল্লাহ্‌র বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণাকারী। মুহারাবার বা ধর্ষকের শাস্তির ব্যাপারে আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘যারা আল্লাহ ও তার রাসুলের সঙ্গে সংগ্রাম করে এবং দেশে হাঙ্গামা সৃষ্টি করতে সচেষ্ট হয়, তাদের শাস্তি হচ্ছে, তাদেরকে হত্যা করা হবে অথবা শূলিতে চড়ানো হবে অথবা তাদের হস্তপদসমূহ বিপরীত দিক থেকে কেটে দেওয়া হবে অথবা দেশ থেকে বহিষ্কার করা হবে। এটি হলো- তাদের জন্য পার্থিব লাঞ্চনা আর পরকালে তাদের জন্যে রয়েছে কঠোর শাস্তি।’ (সুরা মায়েদা, আয়াত: ৩৩)
ইসলামের এই শাস্তির মত দুই একটা দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি যদি বাস্তবায়িত করা যেতো তাহলে দেশে আজ ধর্ষণের মৌসুম চলতো না, বরং মা বোন শিশু কন্যাদের জন্য স্বস্তির মৌসুম চলতো।

শুক্রবার, ৪ জানুয়ারী, ২০১৯

আমার ব্যক্তিগত উপলব্ধি: ড.মুফতি মাওলানা আবুল কালাম আজাদ বাশার।

* ইক্বামাতে দ্বীনের কাজ শখের বশে নয়, এটাকে ফরজ জেনে করতে হয়। আর ফরজ কাজ থেকে কোন মুসলিম বিরত থাকতে পারে না।
* বহমান নদী বাঁধা প্রাপ্ত হয়ে যেমনি নিজের পথ নিজে করে নেয়, ইক্বামাতে দ্বীনের কাজও ঠিক তাই, এটা বহমান থাকবেই, তার গতিরোধ করার সাধ্য কার?
* ষড়যন্ত্র ও নির্যাতন বিহীন ইসলামী আন্দোলন তেমনি অসম্ভব, ছায়াহীন গাছের কল্পনা যেমন অসম্ভব।
* বিশ্ব নবীর জীবনের মূল লক্ষ্য ছিল দ্বীনের বিজয়, যে ব্যক্তি দ্বীনের বিজয়কে নিজ জীবনের মূল লক্ষ্য বানায় নি, সে রাসূল সা, কে জীবনের আদর্শ হিসেবে গ্রহণ করে নি।
* সৃষ্টি যার, আইন চলবে শুধু তাঁর। এ বিষয়ের উপর ঈমান আনা ফরজ। বিপরীত মনোভাব পোষণ করা কুফরী।
* দ্বীন চাপিয়ে দেয়ার বিষয় নয়, স্বত:স্পূর্ত ভাবে গ্রহণ করার বিষয়। তাই ব্যাপকভাবে দাওয়াতি কাজের বিকল্প নেই।
* আখেরাতের সফলতা নির্বাচনে জয়ী হওয়ার সাথে সম্পৃক্ত নয়, বরং দ্বীন বিজয়ের প্রচেষ্টার সাথে সম্পৃক্ত। তাই যেন-তেন উপায়ে তাড়াহুড়ো করে নির্বাচনে জয়ী হওয়ার প্রবণতা পরিত্যাগ করা আবশ্যক।
* নির্বাচনে পরাজয়ে ইসলামী আন্দোলনের কর্মীদের কিচ্ছু আসে যায় না, কেননা মুখলেস কর্মীরা তাদের কর্মের সাওয়াব নিশ্চয়ই পেয়ে গেছে।
* টিসি, টি এস, শব্বেদারী, দারসে কুরআন, দারসে হাদীস, বিষয় ভিত্তিক আলোচনা ইত্যাদি আবার কোন কৌশলে চালু করা যায়, তা নিয়ে গভীরভাবে ভাবতে হবে।
* সমাজ বিপ্লবের জন্য মাসজিদের মিম্বারগুলোকে দাওয়াতী কাজের প্রধান ক্ষেত্র বানাতে হবে। সাড়ে তিন লাখ মাসজিদে কমপক্ষে পাঁচ কোটি মুসলমান সপ্তাহে প্রায় এক ঘন্টা দ্বীনি কথা শুনতে বাধ্য হয়। তাই পরিকল্পিত ভাবে ইমাম তৈরী করা আবশ্যক।
* রাজনীতি ও নির্বাচন কেন্দ্রীক 25% বা 30% কর্মসূচী রেখে, বাকী 70% বা75% কর্মসূচী থাকা দরকার দাওয়াত ও প্রশিক্ষণ কেন্দ্রীক।
* নিজের ব্যক্তিগত জীবনে ও পরিবারের সকল সদস্যকে ইসলামী অনুশাসন মেনে চলায় অভ্যস্ত করে তুলতে হবে।
* রাজনীতির ময়দানে মুনাফিক বন্ধুদের উপর ভরসা না করে, আল্লাহর উপর ভরসা করা আবশ্যক। মুনাফিক বন্ধুর চেয়ে, প্রকাশ্য শত্রু অনেক ভালো।
* ইসলামের ইতিহাস সাক্ষ্য দেয়-
বান্দার চেষ্টা যেখানে শেষ হয়, আল্লাহর সাহায্য সেখান থেকে শুরু হয়।
আমরা অবিরত চেষ্টা চালিয়ে যাব এবং আল্লাহর সাহায্যের অপেক্ষা করব।
আমরা দরাজ কণ্ঠে ঘোষণা করতে চাই-
মেঘ দেখে কেউ করিসনে ভয়, আড়ালে তার সূর্য হাসে। রাত্রি যত গভীর হয়, প্রভাত তত ঘনিয়ে আসে।
ড.মুফতি মাওলানা আবুল কালাম আজাদ বাশার।।।


আমার ব্যক্তিগত উপলব্ধি (পর্ব-2)

* ব্যক্তিগত জীবনে দ্বীন মেনে চলা যেমন ফরজ, রাষ্ট্রীয় জীবনে দ্বীন কায়েমের প্রচেষ্টা করাও তেমনি ফরজ। তবে সে প্রচেষ্টার পরিধিটা হবে ব্যক্তির সামর্থ্য অনুযায়ী। এ প্রচেষ্টায় আন্তরিকতা থাকা লাগবে 100% তে 100% । না হয় হাশরের মাঠে ধরা পড়া লাগবে।
* ব্যক্তিগত জীবনের সাথে সংশ্লিষ্ট দ্বীনি বিধিবিধান না মানলে হাশরের মাঠে ব্যক্তি জিজ্ঞাসীত হবে, রাষ্ট্রীয় জীবনের সাথে সম্পৃক্ত বিধিবিধান না মানলে রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্বে নিয়োজিত ব্যক্তিগণ জিজ্ঞাসীত হবে। তবে সাধারণ জনগণ জিজ্ঞাসীত হবে- তারা কেমন মানুষকে রাষ্ট্র পরিচালনায় সমর্থন করেছিল? 
* যারা খারাপ লোকদের সমর্থনকারী ছিলো, অথবা যাদের নিরবতার কারণে খারাপ লোকেরা ক্ষমতা প্রাপ্ত হয়েছিল, তারা খারাপ লোকদের পাপের বোঝাও বহন করতে বাধ্য হবে। কেননা খারাপ লোকেরা তাদের কারণেই নেতৃত্ব পেয়েছিল। 
* 100% আন্তরিকতা নিয়ে, সামর্থ্যের সবটুকু দিয়ে দ্বীন কায়েমের প্রচেষ্টা করার পরও যদি রাষ্ট্রে দ্বীন কায়েম না হয়, হাশরের দিন বান্দা তার প্রভুর পাকড়াও থেকে নিষ্কৃতি পেয়ে যাবে। কেননা আল্লাহ সামর্থ্যের বাহিরে কোন দায়িত্ব চাপিয়ে দেন না।
* আখেরাতে মুক্তির জন্য দ্বীন কায়েমের আন্তরিক প্রচেষ্টা একান্ত জরুরি। তবে দ্বীন কায়েম হওয়া আখেরাতের মুক্তির সাথে শর্তযুক্ত নয়। 
* তাই প্রচেষ্টার ক্ষেত্রে শরীয়াত পরিপূর্ণ সমর্থন করে না, এমন কোন উপায় অবলম্বন করে বা এমন কোন কর্মসূচী দিয়ে দ্বীন কায়েমের প্রচেষ্টা করা অনুচিৎ। যেমন- জন জীবনে দূর্ভোগ সৃষ্টি করে এমন কোন কর্মসূচী প্রদান করা। 
* সমাজে দ্বীন কায়েম করা মোটেও সহজ কাজ নয়। এ কাজে আল্লাহর সরাসরি সাহায্য লাগবেই। আর আল্লাহর সাহায্য পেতে হলে সকল প্রচেষ্টা ও সকল কর্মসূচী হওয়া লাগবে আল্লাহর বিধান সমর্থিত। 
* দ্বীন কায়েম করতে বিশ্বনবী মুহাম্মাদ সা, এর মত মহামানবেরও 23 বছর লেগেছিল। আমাদের 100/200 বছর লাগলেও ধৈর্য্য হারা হওয়া যাবেনা। তাই যেন-তেন উপায়ে, তাড়াহুড়ো করে নির্বাচনে কিছু আসন জিতে নেয়ার পরিকল্পনা নয়, বরং জনশক্তিকে কত বেশি তাকওয়ার মানে উন্নীত করা যায়, প্রশিক্ষীত করা যায় সে পরিকল্পনা করা দরকার। 
* আবারো আগের মত টি সি, টি এস, শব্বেদারী সহ প্রশিক্ষণ মূলক প্রোগ্রাম গুলেো যে কোন উপায়ে, যে কোন কৌশলে শুরু করতে হবে। যে প্রোগ্রামগুলোর আলোচনা শুনে চোখের পানিতে ক্বলব ধৌত হয়ে যেত। "যে অতীত প্রেরণা যোগায়"- এ আলোচনা শুনে ঈমানী তেজ হাজার গুণ বেড়ে যেত। শব্বেদারীর ভোর রাতের মুনাজাতের তৃপ্তি আজও ভুলতে পারিনি। 
* ইসলামী আন্দোলনের সাথে সম্পৃক্ত 100% জনশক্তিকে কিভাবে জান্নাতি মানুষের চরিত্রে গড়ে তোলা যায়, সে পরিকল্পনা হাতে নেয়া আবশ্যক। আমাদের হাজারো প্রচেষ্টার পরও যদি দ্বীন কায়েম না হয়, কিন্তুু আন্দোলন জনশক্তির সবাই যদি জান্নাতি হতে পারে, এটাই হলো ইসলামী আন্দোলনের চুড়ান্ত সফলতা। আর যদি দ্বীন বিজয়ী হয়ে যায়, এটা হবে আল্লাহর অশেষ করুণায় আমাদের বাড়তি পাওনা। 
* 18 থেকে 3, আবার 3 থেকে 0, এটা দেখে হতাশ হওয়ার কিছু নেই। কারণ আমরা বিশ্বাস করি আগের তুলনায় আন্দোলনের জনশক্তি অনেক বেড়েছে, মোটেও কমেনি। জেল- যুলুমের কারণে জনশক্তির ঈমানী দৃঢ়তাও আগের তুলনায় বহুগুণ বৃদ্ধি পেয়েছে। সুতরাং হতাশা কিসের? 
* জনসমর্থন নিয়ে নির্বাচনে 200 আসন পাওয়ার পরও তাগুতি শক্তির ষড়যন্ত্রে বাংলাদেশের ইসলামী আন্দোলনের অবস্থা মিশসেরর ইখওয়ানের মত হবে না, তারই বা গ্যারান্টি কোথায়? আল্লাহ না করুন, যদি তা-ই হয়, তখন কি আমরা হতাশ হয়ে ইসলামী আন্দোলন ছেড়ে দেব? 
কক্ষনো নয়, কেননা আসন পাওয়া-না পাওয়া, বা রাষ্ট্র ক্ষমতায় টিকে থাকা-না থাকার মধ্যে আমাদের সফলতা নয়। আমাদের সফলতা আখেরাতে মুক্তি পাওয়ার মধ্যে। আর আখেরাতে মুক্তি পাওয়ার জন্যই আমরা ইসলামী আন্দোলন করি। 
সুতরাং 
হে দ্বীনের বীর সেনানীরা! 
কিসের হতাশা! 
জেগে উঠো, তাকবীর দাও!
ঘোষণা কর- "সৃষ্টি যার, আইন চলবে শুধু তার"।

বৃহস্পতিবার, ৩ জানুয়ারী, ২০১৯

দেশবাসীকে ভোটাধিকার বঞ্চিত করা হয়েছে, ভোট ডাকাতির নির্বাচন বাতিল কর:- বাম গণতান্ত্রিক জোট



আমাদের বাংলাদেশ নিউজ 24 ডেস্কঃ নজিরবিহীন ভোট ডাকাতির নির্বাচন বাতিল ও নিরপেক্ষ তদারকি সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবিতে আজ সকাল ১১টায় জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে বাম গণতান্ত্রিক জোটের উদ্যোগে মুখে কালো কাপড় বেঁধে মানববন্ধন ও অবস্থান কর্মসূচি পালন করা হয়েছে।
এসময় বিভিন্ন শ্রেণিপেশার নেতাকর্মী ও সাধারণ মানুষ এই কর্মসূচিতে যোগ দেয়। কর্মসূচি শেষে লিখিত বক্তব্য তুলে ধরেন বাম গণতান্ত্রিক জোটের অন্যতম নেতা সিপিবি কেন্দ্রীয় কমিটির সম্পাদক রুহিন হোসেন প্রিন্স। মানববন্ধন ও অবস্থানে বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি)’র সভাপতি মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম, বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল বাসদের সাধারণ সম্পাদক খালেকুজ্জামান, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক, বাসদ (মার্কসবাদী)’র কেন্দ্রীয় নেতা শুভ্রাংশ চক্রবর্তী, গণতান্ত্রিক বিপ্লবী পার্টির সাধারণ সম্পাদক মোশরেফা মিশু, ইউনাইটেড কমিউনিস্ট লীগের মোশাররফ হোসেন নান্নু, গণসংহতি আন্দোলনের কেন্দ্রীয় নেতা ফিরোজ আহমেদ, বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক আন্দোলনের হামিদুল হকসহ বাম জোটের সাজ্জাদ জহির চন্দন, আবদুল্লাহ ক্বাফী রতন, বজলুর রশীদ ফিরোজ, রাজেকুজ্জামান রতন, বহ্নিশিখা জামালী, আকবর খান, আজিজুর রহমান, আব্দুস সাত্তার, মানস নন্দী, ফখরুদ্দিন কবির আতিক, মনির উদ্দিন পাপ্পু, বাচ্চু ভূঁইয়া, মমিনুর রহমান মমিনসহ বিভিন্ন শ্রেণিপেশার নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
রুহিন হোসেন প্রিন্স বলেন, গোটা দেশকে অবরুদ্ধ করে কোটি কোটি ভোটারের ভোটাধিকার হরণ করে আরও একবার যে জবরদস্তিমূলক প্রহসনের নির্বাচন মঞ্চস্থ করা হলো, বাম গণতান্ত্রিক জোট এই নির্বাচন ও নির্বাচনের ফলাফলকে প্রত্যাখ্যান করছে। 
নির্বাচনের দিনের আগের রাতে ব্যালট বাক্সে ভর্তি করে রাখা, নিরাপত্তার নামে নজিরবিহীন ভয়ভীতি ও আতঙ্কের পরিবেশ সৃষ্টি, আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও নির্বাচন সংশ্লিষ্ট সকল প্রতিষ্ঠানের প্রতি নিরঙ্কুশ কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠা ও ন্যাক্কারজনক ভূমিকা, বাম জোটের একাধিক প্রর্থীসহ বিরোধীদলগুলোর প্রার্থী ও এজেন্টদের আটক, শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত, কেন্দ্র থেকে জোর করে বের করে দেওয়ার মধ্য দিয়ে অধিকাংশ দেশবাসীকে ভোটাধিকার বঞ্চিত করা হয়েছে।

প্রতিদ্বন্দ্বিতামূলক নির্বাচনী ব্যবস্থাকে ভেঙে দিয়ে গোটা নির্বাচনকে ব্যর্থ করে দেয়া হয়েছে ও আশঙ্কানুযায়ী নির্বাচনে সরকারের ছকেরই বাস্তবায়ন করা হয়েছে। ভোর থেকেই দেশব্যাপী ভোট কেন্দ্র দখল, প্রকাশ্য জালিয়াতি, ব্যালট পেপারে প্রকাশ্যে নৌকা মার্কার সিল মারতে বাধ্য করা, বিরোধী দলীয় ভোটারদের জোর করে ভোট কেন্দ্র থেকে বের করে দেওয়া, কোথাও সকাল ১০টা থেকে ১২টার মধ্যে ব্যালট পেপার শেষ হয়ে যাওয়া প্রভৃতি অসংখ্য ঘটনার মধ্যে দিয়ে সমগ্র নির্বাচনকে পুরোপুরি অর্থহীন ও হাস্যকর করে তোলা হয়েছে।
এই সমুদয় তৎপরতার মধ্য দিয়ে দেশব্যাপী ভোটারদের মধ্যে ভোট নিয়ে যেটুকু আগ্রহ তৈরি হয়েছিল তা পুরোপুরি নষ্ট করে দেয়া হয়েছে। দলীয় সরকারের অধীনে বাংলাদেশে ন্যূনতম গণতান্ত্রিক পরিবেশে অবাধ, নিরপেক্ষ, গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের যেকোন অবকাশ নেই তা আরেকবার প্রমাণ হল।
তাই এই নির্বাচন ফলাফল গ্রহণযোগ্য হবে না। এই নির্বাচনে জনগণের মতামতের কোনো প্রতিফলন ঘটেনি।
কোটি কোটি ভোটারের ভোটাধিকার হরণ করে সংগঠিত নজিরবিহীন ভোট ডাকাতির নির্বাচন বাতিল ও নিরপেক্ষ তদারকি সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবিতে আজ আমরা ঢাকায় জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে ও দেশব্যাপী মুখে কালো কাপড় বেঁধে অবস্থান কর্মসূচি পালন করছি। 
৩০ ডিসেম্বর অবাধ নির্বাচনের মাধ্যমে দেশবাসীকে তাদের প্রতিনিধি নির্বাচনের অধিকার থেকে বঞ্চিত করা হয়েছে। ‘ভুয়া ভোটে’ যাদেরকে নির্বাচিত বলে ঘোষণা করা হয়েছে তাদের প্রায় সবাইকে জনগণ ‘ভুয়া প্রতিনিধি’ হিসেবে বিবেচনা করছে। জনগণের কাছে ‘জনগণের প্রতিনিধি’ বলে দাবিদারদের কোন বৈধতা নেই।
এমতাবস্থায়, সংগঠিত প্রহসনের নির্বাচনের ফলাফল বাতিল করে অবাধ-নিরপেক্ষ নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য নিরপেক্ষ তদারকি সরকার গঠন, নির্বাচনের অর্থ-পেশীশক্তি-প্রশাসনিক কারসাজি-সাম্প্রদায়িকতার ব্যবহার নিষিদ্ধ ও ‘সংখ্যানুপাতিক প্রতিনিধিত্ব ব্যবস্থা’ চালুসহ গোটা নির্বাচন ব্যবস্থার আমূল সংস্কার সাধন করে নতুন নির্বাচন অনুষ্ঠান করাই গণতন্ত্রের দাবি। এই পদক্ষেপ গ্রহণের জন্য আমরা সরকার ও নির্বাচন কমিশনের প্রতি দাবি জানাচ্ছি। একইসাথে জনগণের প্রতি দৃঢ় মনোবল অক্ষুণœ রেখে রুটি-রুজি ও গণতন্ত্র-ভোটাধিকারের সংগ্রাম অব্যাহত রাখার আহ্বান জানাচ্ছি।”

দেশব্যাপী কর্মসূচিতে দেশের বিভিন্ন জেলায় একই ধরনের কর্মসূচি পালিত হয়।
কর্মসূচির শেষে জানানো হয় আগামী ১১ জানুয়ারি শুক্রবার সকাল ১০টায় জাতীয় প্রেসক্লাব মিলনায়তনে বাম গণতান্ত্রিক জোটের প্রার্থীদের নিয়ে গণশুনানী অনুষ্ঠিত হবে।

বুধবার, ২ জানুয়ারী, ২০১৯

আমি হতাশ নই,আশাবাদী দলের লোক।কিন্তু কিছু বিষয় আমার জানার অধিকার আছে।

এ প্রশ্নগুলি জবাব দিতে পারবেন কি শ্রদ্ধাভাজন ড.কামাল হোসেন, জনাব তারেক রহমান এবং জনাব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সাহেব 
#সংলাপে ২০ দল ছাড়া কেন গিয়েছিলেন? গণফোরামের ৭জন যাওয়া কি জরুরী ছিলো? এটা কি প্রীতিভোজ ছিল?
#জামায়াতে ইসলামী আন্দোলন,সংগ্রামে ও ভোটের দিক দিয়ে অন্যতম সহযোগী হওয়ার পরও আওয়ামীলীগ কুটকৌশলের কাছে হেরে গিয়ে জামায়াতকে কোথাও রাখেননি কেন?
#নির্বাচনে অংশগ্রহণ আন্দোলনের অংশ বলার পরও আন্দোলন কোথায় করেছিলেন?
#সংলাপে আপনাদের কোন দাবি মানলোনা শেখ হাসিনা! অথচ নির্বাচনে থেকে গেলেন কেন? এ বিষয়টি পরে কেন চেপে গেলেন?
#জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের স্টান্ডিং কমিটি ঘোষণা দিয়েছিল জেলা ও থানা ভিত্তিক কমিটি হবে।সারাদেশে কয়টা কমিটি হয়েছিল? সেন্ট্রাল কমিটিতে ২০ দিলের কেউ ছিলোনা কেন?
#কেন্দ্রভিত্তিক কমিটির ঘোষণা করেছিলেন। কয়টা কমিটি করা হয়েছে?
#১৯৯৯ সালের সর্বদলীয় ছাত্রঐক্য গঠন ও তার আন্দোলনের ফসল ২০০১ সালের নির্বাচনে ৪ দলীয় ঐক্যজোটের বিপুল বিজয়। অথচ ২০০৯ সাল থেকেই ছাত্রশিবির আপনাদের ধারে ধারে ঘুরেছে কিন্তু কোন কারণে সর্বদলীয় ছাত্রঐক্য গঠন করেননি? বিষয়টি স্পষ্ট হওয়া জরুরি।
#কথা নেই,বার্তা নেই জামায়াতকে দেয়া ২৫ আসন থেকে ২২ আসনে নামিয়ে আনার সঠিক ব্যাখ্যা সেদিন কেউ পায়নি।যাদের মনে কষ্ট দিয়েছিলেন তাদের মান ভাংগাতে কি উদ্যোগ ছিল আপনাদের। তারেক রহমানের উচিৎ ছিলো জামায়াতের কাছে ক্ষমা চাওয়া।
#বিগত ১০ টি বছর আওয়ামীলীগের নিষ্ঠুর আঘাতে জর্জরিত কর্মীদের খবর না নিয়ে নির্বাচনে জানবাজ কর্মী পাওয়ার আশা কেন করেছিলেন?
#আওয়ামীলীগ পুরো রাষ্ট্রযন্ত্র নিয়ে যেখানে ঝাপিয়ে পড়েছে সেখানে সুনির্দিষ্ট দিকনির্দেশনা ছিলো কি কর্মীদের কাছে? শুধু প্রেস ব্রিফিং দিয়ে সময় পার করা ঠিক হলো?
#নির্বাচনে, আন্দোলনে জানবাজ দেশপ্রেমিক কর্মী জামায়াতের মধ্যে অথচ এক সাথে নির্বাচন করা কালীন ড.কামাল হোসেন ও ড.জাফরুল্লাহ চৌধুরী জামায়াতকে নিয়ে অযাচিত মন্তব্য করা কি জরুরি ছিলো? মিডিয়াতে কভারেজ পাওয়ার চেয়ে ঐক্য সুসংহত জরুরি ছিলো কিনা?
#ভারতীয় আধিপত্যবাদী ভূমিকার কারণে আওয়ামীলীগ আজ ক্ষমতায় সেটা দিবালাকের মতো স্পষ্ট ।অথচ ভারতের ব্যাপারে আপনাদের নিরব ভূমিকা কেন?
#ব্যরিষ্টার মঈনুল হোসেন জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট গঠনে ভূমিকা রাখায় আধিপত্যবাদীদের চক্ষুশূলের কারণে আজ ঠুনকো মামলায় কারাগারে অথচ উনার মুক্তির দাবিতে আপনাদের কন্ঠ এতো ক্ষীণ কেন? নির্বাচনের আগে উনার মুক্তি কেন নিশ্চিত করতে পারেননি? 
এই লোকটি বাকশালীদের অনেক ষড়যন্ত্রের জবাব সাহসের সাথে দেয়ার হিম্মতওয়ালা মানুষ।
#সকাল-সন্ধ্যা প্রার্থী বাতিল,মার্কা বদল করা হলো অথচ জনগণের কাছে সুস্পষ্ট বক্তব্য পৌঁছাতে পারেননি কেন?
#ঢাকাতে জনসভা, গণসংযোগ যৌথভাবে করার কথা ছিলো সেটা বাতিল করলেন কেন? ঢাকার মানুষ আন্দোলিত হলে এর প্রভাব দেশব্যাপী পড়তো ।
আমাদের বাংলাদেশ নিউজ 24 ডেস্কঃ ইসি সচিব একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ২৯৯টি আসনের মধ্যে ২৯৮টি আসনের ফল ঘোষণা করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)।
আগারগাঁওস্থ নির্বাচন ভবন চত্ত্বরে সোমবার ভোর চারটার দিকে দল ভিত্তিক ফলাফলা ঘোষণা করেন ইসি সচিব হেলালুদ্দীন আহমদ। তিনি বলেন, প্রার্থীর মৃত্যুজনিত কারণে একটি আসনের ভোটা স্থগিত করা হয়েছে। যেটি ২৭ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত হবে। 
এছাড়া আরেকটি আসন ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ আসনে তিনটি কেন্দ্রের ভোট স্থগিতথাকায় ২৯৮টি আসনের ফলাফলা ঘোষণা করা হচ্ছে। 
এরমধ্যে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ নৌকা মার্কা ২৫৯টি সিট, জাতীয় পার্টি লাঙ্গল ২০, বিএনপি ধানের শীষ ৫, গণফোরাম ২, বিকল্পধারা বাংলাদেশ ২, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (জাসদ) ২, বাংলাদেশ ওয়ার্কার্স পার্টি ৩, তরিকত ফেডারেশন ১টি, জাতীয় পার্টি (জেপি) ১ এবং স্বতন্ত্র প্রার্থী ৩টি আসনে জয় লাভ করেছে। 

তিনি বলেন, ১০টি ব্যতিত বাকিগুলো সব মহাজোটের। মহাজোট ২৮৮টি আসন পেয়েছে। এর আগে সাড়ে তিনটায় ফলাফল ঘোষণা শেষ হওয়া পর ইসি সচিব বলেন, রাজনৈতিক সরকারের অধীনে অনুষ্ঠিত একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন দেশের গণতন্ত্রের ইতিহাসে উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে বলে মন্তব্য করেছেন নির্বাচন কমিশন সচিব হেলালুদ্দীন আহমদ। একই সঙ্গে তিনি বিপুল জয়ের জন্য ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগকে অভিনন্দন জানান।

৩০_ডিসেম্বরের_জয়_পরাজয়•••••• (প্রথম কিস্তি) - মজিবুর রহমান মনজু

আমাদের বাংলাদেশ নিউজ ডেস্কঃ
একজন আমাকে প্রশ্ন করলেন ৩০ ডিসেম্বর আপনি বা আপনারা কী হেরে গেছেন? নাকি এটাকে আপনাদের নৈতিক বিজয় মনে করছেন? 
আমি বললাম- ইয়েস ৩০ ডিসেম্বর আমরা হেরে গেছি। অন্তত: ব্যক্তিগতভাবে আমি মনেকরি আমি অবশ্যই হেরে গেছি। 
কেন? কীভাবে হারলেন?
কারণ ৩০ তারিখ স্বৈরতন্ত্রের পতন হবার কথা ছিল। গণতন্ত্র ও দেশ মুক্ত হবার কথা ছিল। লক্ষ কোটি জনতার স্মত:স্ফূর্ত সমর্থনে ফ্যাসিবাদ পরাজিত হবার কথা ছিল। এসব আশা নিয়েই আমি-আমরা ধানের শীষকে সমর্থন দিয়েছিলাম। ধানের শীষ বুকে জড়িয়ে ঐক্যবদ্ধ হয়েছিলাম। 
কিন্তু আমরা জিততে পারিনি, পরাজিত হয়েছি। এই পরাজয়ে আমার যতটুকু দায় তা আমি স্বীকার করছি।
আমি যদি জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের আহবায়ক হতাম, আ.স.ম আবদুর রব, কাদের সিদ্দিকী, মাহমুদুর রহমান মান্না কিংবা বিএনপি বা ২০ দলীয় জোটভুক্ত কোন দলের শীর্ষ নেতা হতাম তাহলে দায়িত্বপূর্ণ পদ থেকে পদত্যাগ করতাম। আমার সেরকম উল্লেখযোগ্য কোন পদ বা দায়িত্ব নেই। তবুও আমি আমার ব্যক্তিগত দায় থেকে এই পরাজয় স্বীকার করে নিচ্ছি। 
আপনারা হয়তো ভাবছেন কেন আমার এই স্বেচ্ছা স্বীকারাক্তি!
হ্যাঁ আমি তার ব্যখ্যা দিচ্ছি-
একজন ক্ষুদে রাজনৈতিক কর্মী হিসেবে আমি এবং আমার মতো অনেকেই জানতো দলীয় সরকারের অধীনে কোন নির্বাচন সুষ্ঠু হয়না। দলীয় সরকারের অধীন নির্বাচনে চুরি হয়, ডাকাতি হয়, কেন্দ্র দখল হয়। 
কিছুদিন আগে যেসব সিটি কর্পোরেশনে চুরি-ডাকাতির নির্বাচন হয়েছে সেগুলোতে অন্তত: পোস্টার লাগানো গেছে, প্রচার প্রচারণা মিছিল সমাবেশ করা গেছে। কিন্তু এই নির্বাচনে কিছুই করা যায়নি। উপরন্তু নির্বাচনের আগেই ধানের শীষের প্রার্থীদের পাইকারী মনোনয়ন পত্র বাতিল করা হয়েছে, প্রার্থীদের গ্রেফতার করা হয়েছে, প্রার্থীদের উপর নারকীয় হামলা চালানো হয়েছে, কর্মীদের গণহারে গ্রেফতার করা হয়েছে, এমনকি পোলিং এজেন্ট দেয়ার মত প্রতিটি লোককে এলাকা ছাড়া করা হয়েছে। 
কিন্তু এসবের মধ্যেও ঐক্যফ্রন্ট ও ২০ দলীয় জোট শেষ পর্যন্ত নির্বাচন করেছে। নিজেদের মধ্যে আসন ভাগাভাগি আর প্রার্থী নির্বাচন করতে লম্বা সময় নষ্ট করেছে। নির্বাচনী ইশতেহার আর ফেসবুক প্রচারনায় ব্যাপক মেধা খাটিয়েছে। অর্থাৎ তারা শুধু গতানুগতিক নির্বাচন নিয়েই ব্যস্ত ছিল। নির্বাচন কে আন্দোলন হিসেবে নেয়ার যে প্রতিশ্রুতি তারা দিয়েছিল তা তারা রক্ষা করেনি। নির্বাচন কালীন নির্যাতন, নিপীড়ন, জুলুম ও ভয়ানক সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে তারা কার্যকর কোন আন্দোলনের উদ্যোগ নেননি। 
এটা কী তাদের কৌশল ছিল! না ব্যর্থতা?
আমি মনেকরি এটা অমার্জনীয় ব্যর্থতা।
এর দায় একান্তভাবে নেতৃত্বের।
অর্থাৎ একবাক্যে আমি বলতে চাইছি- নির্বাচন কে আন্দোলন হিসেবে নিয়ে আন্দোলন না করাটা এবং আন্দোলন সংগ্রাম ছাড়া শেষ পর্যন্ত নির্বাচনে অটল থাকাটা ছিল মস্তবড় ভুল। এই ভুল যারা করেছেন এবং সেই ভুল সত্বেও আমরা যারা তাদের কাজে সহযোগিতা দিয়েছি তারা উভয়ে ভুল করেছি। এই ভুলের জন্য যারা আমাদের সমর্থন দিয়েছেন, ধানের শীষের জন্য কাজ করেছেন তাদের সবার কাছে আমাদের ক্ষমা চাওয়া উচিত। 
আমাদের ঘাড়ে যে ভয়ংকর ফ্যাসিবাদ চেপে বসেছে তাকে সরাতে হলে আমাদের সবাইকে প্রচন্ড নৈতিক শক্তিতে বলীয়ান হতে হবে। 
যে নেতৃত্বের ভুল স্বীকার করার নৈতিক সাহস নেই তাদের ডাকে জনগণ কখনো সাড়া দেবেনা। এটা আমার সুস্পষ্ট বুঝ। কেউ যদি আমার এই মন্তব্য ও বুঝ কে ভুল প্রমাণ করতে পারেন তাহলে খুব খুশী হবো। 
তবে এ প্রসঙ্গে আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ কথা হলো- 
বিশ্বের নিকৃষ্টতম, নির্লজ্জ, বেহায়া এই হিংস্র ফ্যাসিবাদী শাসনের কাছে বোকামীপূর্ণ পরাজয় সত্বেও এবারের নির্বাচনে আমাদের জন্য শিক্ষামূলক কিছু কী নেই?
আমি মনেকরি অবশ্যই আছে। পরাজয়ে মানুষ শুধু হারায় না বড় কিছু অর্জনও করতে পারে। তাই একই সাথে আমি মনেকরি এই নির্বাচনে আমাদের শিক্ষা এবং প্রাপ্তি অনেক অনেক বেশী। যদি আমরা সঠিক উপলব্ধি থেকে সেসব নিয়ে পথ খুঁজতে চাই তাহলেই কেবল তা থেকে সুফল পাওয়া সম্ভব। 
সে সম্পর্কে দ্বিতিয় কিস্তিতে কিছু লিখার আশা আছে।
আপাতত: আজকের লিখাটি ভুল স্বীকার এবং ক্ষমা চেয়েই শেষ করছি, ধন্যবাদ।
সাবেক কেন্দ্রীয় সভাপতি
বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির।

মঙ্গলবার, ১ জানুয়ারী, ২০১৯

আদর্শচ্যুত রাজনীতির অবধারিত পরিনাম - মাহমুদুর রহমান

আমাদের বাংলাদেশ নিউজ24 ডেস্কঃ আমি রাজনীতির সাথে জড়িত হয়েছি ২০০৭ সাল থেকে। আমার মত একজন সাধারন ব্যক্তি সম্পর্কেও খোঁজখবর রাখেন এমন বোদ্ধা পাঠক প্রতিবাদ করে বলে উঠতে পারেন, আপনি সত্য বলছেন না কারন বিনিয়োগ বোর্ডের নির্বাহী চেয়ারম্যান হয়ে ২০০১ সালের নভেম্বরে আপনি সরকারে যোগদান করেছেন।
আমি সবিনয়ে বলবো যে সরকারে টেকনোক্রেট হিসেবেই যোগ দিয়েছিলাম। আমার কাজ-কর্ম রাষ্ট্রীয় অর্থনৈতিক গন্ডির মধ্যেই সীমাবদ্ধ ছিল। তৎকালিন প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া দলীয় কাজ-কর্মে আমাকে একেবারেই সম্পৃক্ত করেননি। এমনকি কোন রাজনৈতিক বিষয়ে আমার কাছ থেকে কোনদিন কোন মতামত চাননি। ২০০৭ সালে জেনারেল মইনের নেতৃত্বে এক বিভ্রান্ত সেনাবাহিনী শত্রু দেশের কাছে স্বাধীনতা বন্ধক দিলে তারই প্রতিবাদে আমার রাজনীতিতে আগমন। আমার লেখক সত্তার জন্মও সেই সময়েই।
আমি শহীদ জিয়ার বাংলাদেশী জাতীয়তাবাদ তত্ত্বের একজন অনুসারী। রাজনীতিতে সম্পৃক্ত হওয়ার পর থেকে কখনও সেই আদর্শ অনুসরণে কোন রকম কপটতা কিংবা সুবিধাবাদিতার আশ্রয় গ্রহন করিনি। সাময়িক এবং সস্তা কোন জনপ্রিয় অভিমতকে গ্রহন করিনি। একজন বাঙালী মুসলমানের বিশ্বাস, ঐতিহ্য এবং আদর্শকে ধারন করে স্রোতের বিপরীতে অনেক সময় অবস্থান নিয়েছি। এক এগারোর সরকার প্রাথমিক পর্যায়ে জনগনকে বিভ্রান্ত করে সাময়িক জনপ্রিয়তা অর্জনে সক্ষম হয়েছিল। বিএনপির নেতৃবৃন্দের মধ্যে অধিকাংশই তখন সেনা সমর্থিত সরকারের কৃপা ভিক্ষার জন্যে দোরে দোরে ঘুরেছেন। অনেকেই দেশ ছেড়ে পালিয়েছিলেন। তথাকথিত ‘আয়রন লেডি’ শেখ হাসিনাও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং যুক্তরাজ্যে পাড়ি দিয়েছিলেন। সেই বৈরী সময়েও জেনারেল মইনের জাতির পিতা তত্বের বিরোধিতা করে নয়া দিগন্ত পত্রিকায় আমি লিখেছিলাম, দেশে-বিদেশে জাতির পিতা ফেব্রুয়ারী, ২০০৭)। শেখ মুজিবকে আমাদের জাতির পিতা মানতে আমি অস্বীকার করেছিলাম এবং এখনও করি।

ভারত-মার্কিন-ইসরায়েলী লবির সঙ্গে ষড়যন্ত্রক্রমে এক এগারোর সেনা সমর্থিত সরকার শেখ হাসিনাকে ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত করার পর থেকেই দিল্লির দালাল সকারের চরিত্র আমার দেশ পত্রিকায় অব্যাহতভাবে উন্মোচিত করে গেছি। ইসলাম বিদ্বেষী সেক্যুলার সরকারের দুর্নীতির খবর ছেপেছি তাদের ক্ষমতা লাভের এক বছরে মধ্যেই। বিএনপির অনেক বিজ্ঞ নেতা আমাকে হঠকারী বলে গালমন্দ করেছে। বলেছে সরকারের প্রথম বছরেই এত কথা পত্রিকায় লেখার দরকার কী? এগুলো বাড়াবাড়ি। সবার আগে উচ্চ আদালতের কদাকার এবং দলবাজ চেহারা জাতির সামনে তুলে ধরেছি। আদালত অবমাননার মামলা হলে বিএনপির তাবৎ আইনজীবী এবং নীতিনির্ধারকবৃন্দ ক্ষমা চাওয়ার জন্য আমার ওপর চাপ সৃষ্টি করলেও নীতির প্রশ্নে অবিচল থেকেছি। পুলিশ হেফাজতে অমানুষিক অত্যাচার সহ্য করেও আপীল বিভাগে দাঁড়িয়ে বলেছি, ক্ষমা চাইব না, যা লিখেছি সত্য লিখেছি।
২০১২ সালে স্কাইপ কেলেংকারীর তথ্য হাতে এলে সেগুলো যাচাই-বাছাই করে নিশ্চিত হওয়ার পর প্রকাশ করতে এতটুকু দ্বিধা করিনি। সরকার, বিচারবিভাগ এবং দিল্লির হুমকির পরওয়া করিনি। ২০১৩ সালে দেশি-বিদেশি মিডিয়া সম্মিলিতভাবে দিল্লির প্রকল্প, গনজাগরন মঞ্চকে গৌরবান্বিত করলেও তার বিরুদ্ধে একা আমার দেশ লড়াই করেছে। ইসলাম বিদ্বেষী শহুরে মধ্যবিত্তদের বিরাগভাজন হব জেনেও পত্রিকার শিরোনাম করেছি, শাহবাগে ফ্যাসিবাদের পদধ্বনি। বিএনপির সুবিধাবাদী নেতারা আবারও অসন্তুষ্ট হয়েছেন। তারা তখন বেগম খালেদা জিয়াকে শাহবাগে নেয়ার জন্য পায়তারা করছেন। এদের মধ্যে বদ্ধমূল ধারনা জন্মেছে যে ভারতের কৃপা ব্যতীত ক্ষমতায় প্রত্যাবর্তন সম্ভব নয়। শহীদ জিয়ার আদর্শকে জলাঞ্জলি দেয়ার জন্য সব এক পায়ে খাড়া। তাদের কাছে মনে হলো গনজাগরনে যোগদান করলে দিল্লি খুশী হবে। সেক্যূলার বিএনপির ধারনা দলের মধ্যে অবয়ব নিতে আরম্ভ করেছে।
জেল থেকে মুক্তি পেলাম ২০১৬ সালের ২৩ নভেম্বর। এর মধ্যে ২০১৪ সালের ভুয়া নির্বাচন হয়ে গেছে এবং বিএনপির ২০১৪ এবং ২০১৫ সালের আন্দোলন ফ্যাসিস্ট সরকারকে হটাতে ব্যর্থ হয়েছে। দ্বিতীয় দফার চার বছরের জেল জীবনে বিএনপি এবং জামাতের অসংখ্য নেতা-কর্মীদের সঙ্গে রাজনৈতিক আলোচনার সুযোগ পেয়েছি। বিস্ময়ের সঙ্গে লক্ষ্য করেছি যে বিএনপির অধিকাংশ শীর্ষ নেতাই ২০১৪ সালের নির্বাচন বর্জন করার জন্য বেগম জিয়াকে দোষারোপ করছেন। বেগম জিয়ার সিদ্ধান্ত সঠিক বিবেচনা করে আমি তাদের সাথে অনবরত তর্ক করেছি। এবং পরিনামে অধিকতর বিরাগভাজন হয়েছি। বিএনপির ভারত অভিমুখি যাত্রার বিষয়টি জেলে বসেই টের পাচ্ছিলাম। কাশিমপুর থেকে বেরিয়ে জানলাম দলের ভিতরকার ভারতপন্থী গোষ্ঠী শীর্ষ নেতৃত্বকেও প্রভাবিত করতে সক্ষম হয়েছে। বিভিন্ন সভা-সেমিনারে ভারতের বিষয়ে আমার অনড় অবস্থান তাদের অস্বস্তিতে ফেলছে। এমনকি বেগম খালেদা জিয়াও ভারত এবং ইসলাম প্রশ্নে আমাকে আকারে-ইঙ্গিতে সংযত হতে পরামর্শ দিলেন। আমার কারনে নাকি ভারত এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বিএনপির প্রতি বিরক্ত হচ্ছে। আমি বেগম জিয়াকে বোঝানোর চেষ্টা করেছি যে দিল্লি কখনও শেখ হাসিনার পরিবর্তে তাকে মসনদে বসাবে না। শেখ পরিবারের সাথে ভারতীয় গোয়েন্দা সংস্থা এবং দিল্লির এস্টাবলিশমেন্টের সেই পাকিস্তানী আমল থেকে গভীর সম্পর্ক।
বিজেপি কিংবা কংগ্রেস, দিল্লিতে যারাই ক্ষমতায় থাকুক না কেন, আওয়ামী লীগ এবং শেখ পরিবারই তাদের মিত্র। একবিংশ শতকের ভূ-রাজনৈতিক বাস্তবতায় আমেরিকাও ভারতের ইচ্ছার বিরুদ্ধে বাংলাদেশে কোন দলকে সমর্থন করবে না। তাছাড়া, ইসলাম বিদ্বেষের মাপকাঠিতে শেখ হাসিনা, হিন্দুত্ববাদী ভারত এবং জায়নবাদী শ্বেতাঙ্গ গোষ্ঠী একে অপরের পরিপূরক। বাংলাদেশের সংখ্যাগুরু জনগোষ্ঠীকে ঐক্যবদ্ধ করেই বিএনপিকে লড়াই করে যেতে হবে। বলা বাহুল্য, বিএনপির নীতিনির্ধারনী ফোরামে আমার রাজনৈতিক আদর্শ ইউটোপিয়ান এবং হঠকারী বিবেচিত হলো। এক সময় লক্ষ্য করলাম, দলটির ইন্টেলেকচুয়াল ফোরাম থেকে আমাকে বাদ দেয়া হচ্ছে। এক এগারোর সুবিধাবাদী এবং ভারতপন্থী বুদ্ধিজীবীদের আগমন ঘটলো চেয়ারপার্সনের গুলশান কার্যালয়ে। এই নব্য বিএনপি বুদ্ধিজীবীদের রাজনৈতিক নেতৃত্বে থাকলেন দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এবং স্থায়ী কমিটির সদস্য আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী। এই বুদ্ধিজীবীরা সময়ের অনেক আগেই ভারতের পরামর্শ অনুযায়ী বিএনপিকে একতরফা নির্বাচনের ট্রেনে তুলে ফেলেছেন। বিএনপি নেতৃত্ব আমার পরামর্শে কান দিচ্ছে না জেনেও তাদেরকে জিয়াউর রহমানের আদর্শে ফেরানোর সর্বাত্বক চেষ্টা করেছি। সব চেষ্টাই ব্যর্থ হয়েছে। বিএনপির মধ্যকার ভারতীয় দালালগোষ্ঠী শেখ হাসিনার অবৈধ শাসনামলকে বৈধতা দেয়ার নীল নকশা তৈরী করে ততদিনে তার বাস্তবায়ন শুরু করেছে। ২০১৪ সালের নির্বাচন বর্জন ভুল ছিল শ্লোগান তুলে বেগম জিয়াকেও মানসিকভাবে দূর্বল করে ফেলেছিল একই চিহ্নিত গোষ্ঠী। এই প্রসঙ্গে ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতার একটি ঘটনার উল্লেখ করছি।
জেল থেকে বের হওযার পর নতুন এবং পুরনো ১২৫ মামলার হাজিরা দিতে আমাকে সারা দেশ চষে বেড়াতে হত। সেরকম এক হাজিরায় দিনাজপুর গেছি। আদালতে দিনাজপুরের কোন এক আসনের বিএনপি দলীয় সাবেক সংসদ সদস্য আখতারুজ্জামানের সঙ্গে সাক্ষাৎ হলো। সজ্জন মানুষ, এলাকার দলের নেতা-কর্মীদের খোঁজ-খবর রাখেন। রাজনীতি নিয়ে আলোচনার এক পর্যায়ে তিনি বলে উঠলেন, ২০১৪ সালে নির্বাচন বর্জন করে বেগম জিয়া পর্বতসম ভুল করেছেন, ২০১৮ সালেও বর্জন করলে দল থাকবে না। আমি সাধ্যমত চেষ্টা করলাম শেখ হাসিনাকে বৈধতা না দেয়ার পক্ষে যুক্তি দিয়ে তাকে বোঝাতে । কোন কাজ হলো না। তিনি জোর দিয়ে বললেন যে বিএনপির মহাসচিবসহ সকল সম্ভাব্য প্রার্থীরাই নাকি নির্বাচনের পক্ষে। সেদিনই নিশ্চিৎ হয়ে গেলাম যে বিএনপিতে আত্মঘাতী রাজনীতির পচন আরোগ্যের উর্ধ্বে চলে গেছে। আদর্শচ্যুত, সুবিধাবাদী গোষ্ঠী দলের Rank and File কে বিভ্রান্ত করতে সক্ষম হয়েছে। আমি জানি না সেই আখতারুজ্জামান তামাশার নির্বাচনে মনোনয়ন পেয়েছেন কিনা কিংবা পেয়ে থাকলে তার জামানত রক্ষা পেয়েছে কিনা। সে খবর জানারও আমার কোন আগ্রহ নেই। কেবল ভাবি আখতারুজ্জামানের মত পুরনো এবং তৃণমূল রাজনীতিবিদদের বিভ্রান্তি দল এবং দেশের বড় ক্ষতি করে দিল। এক ভয়ংকর ফ্যাসিস্ট শাসকের অধীনে নির্বাচনে অংশগ্রহনের ভুল কৌশলের চোরাবালিতে একা আখতারুজ্জামান পা দেন নি, আমার ধারনা বিএনপির বিভিন্ন পর্যায়ের নেতৃত্বের বিপুল সংখ্যাগরিষ্ঠ অংশ একই কাজ করেছেন। এমনকি শুধু বিএনপি নয়, জামায়াতে ইসলামীর নেতৃত্বও একই বোকার স্বর্গে বাস করেছেন। নির্বাচন করতেই হবে, এই উন্মাদনায় দলের নিবন্ধন না থাকলেও তারা ধানের শীষ নিয়ে কাড়াকাড়ি করেছেন। দিল্লি এবং শেখ হাসিনা এবং জামাতে ইসলামীকে যে একটি আসনও দিতে পারে না এই সহজ সত্য দলের নেতৃবৃন্দ দেখতে পাননি। এই কৌশলকে কি নামে ডাকবো. অবিমৃষ্যকারিতা, সুবিধাবাদিতা নাকি স্রেফ নির্বুদ্ধিতা?
বিএনপি নেতৃত্বের আত্মবিশ্বাসের ঘাটতি তাদের নেতা ভাড়া করে আনার মধ্য দিয়েও প্রমানিত হয়েছে। দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল অনেক কাঠখড় পুড়িয়ে সাবেক আওয়ামী লীগারদের জোটে ভিড়িয়ে ড: কামালের নেতৃত্বে নির্বাচনী লড়াইয়ে নেমেছিলেন। ড: কামাল, কাদের সিদ্দিকী, আ স ম রব, মাহমুদুর রহমান মান্না, ইত্যাদিদের কেন প্রয়োজন হলো তার একটা ব্যাখ্যা খোঁজার চেষ্টা করেছি। ইন্দো-মার্কিন বলয়কে সন্তুষ্ট করার লক্ষ্যে বিএনপি যথাসম্ভব তাদের কল্পিত ইসলামী লেবাস ত্যাগ করবার চেষ্টা করেছে। এক সময়ের আওয়ামী নেতাদের দলে ভেড়ানোর উদ্যোগ বর্ণিত কৌশলেরর অংশ বলেই আমার কাছে মনে হয়েছে। দলের মহাসচিবের এই উদ্যোগে বেগম জিয়া এবং তারেক রহমানের যে সম্পূর্ন সায় ছিল তাতে সন্দেহ পোষন করারও কোন কারণ নেই। মজার কথা হলো বিএনপির নীতিনির্ধারনী মহলে ব্যক্তিজীবনে সেক্যুলারদেরই একচেটিয়া প্রাধান্য।
দূর্ভাগ্যবশত: তাদের গায়ে ইসলামী লেবাস লেগে যাওয়ার কারন হলো দলের প্রতিষ্ঠাতার বাংলাদেশী জাতীয়তাবাদের আদর্শ এবং জামাতে ইসলামীর সাথে নির্বাচনী মৈত্রী। আশ্চর্য্যরে বিষয় হল জামায়াতে ইসলামীকে ত্যাগ না কলেও বিএনপি নেতৃত্ব এবার জিয়াউর রহমানকে পরিত্যাগ করতে দ্বিধা করেনি। নির্বাচনের আগে কিংবা পরে ড: কামালের মুখে জিয়া নামটি একবারের জন্যও উচ্চারিত হয়নি। মির্জা ফখরুলকে পাশে বসিয়ে তিনি সারাক্ষন বাংলাদেশের প্রথম গনতন্ত্র হত্যাকারী শেখ মুজিবের বন্দনা করে গেছেন। প্রবাসে বসে শুনেছি যে নির্বাচনী ইশতেহারে বিসমিল্লাহির রাহমানুর রাহীম রাখা নিয়ে বিএনপি নীতিনির্ধারকদের মধ্যে যথেষ্ট দোদূল্যমানতা ছিল। আওয়ামী লীগের ইসলাম বিদ্বেষ সর্বজনবিদিত এবং প্রাচীন। শেখ হাসিনা অবলীলাক্রমে বাংলাদেশের সংবিধান থেকে আল্লাহর প্রতি আস্থা এবং পূর্ন বিশ্বাসের ঘোষনা প্রত্যাহার করতে পারেন। তাই বলে তারই অনুকরনে বিএনপি নেতৃবৃন্দ আল্লাহর নাম নিয়ে দ্বিধায় ভুগবেন এটা মেনে নেয়া কঠিন।
বিএনপির রাজনীতির দেউলিয়াত্ব নির্বাচনের প্রাক্কালে ভারতীয় পত্রিকায় দেয়া মহাসচিব মির্জা ফখরুলের ইন্টারভিউ থেকেও দৃশ্যমান। তিনি অবলীলায় স্বীকার করেছেন যে বিএনপি ভারতের ক্ষমতাসীন হিন্দুত্ববাদী বিজেপির সাধারন সম্পাদকের সাথে ব্যাংককে বৈঠকের আপ্রান চেষ্টা করেও অন্য পক্ষের অনীহার কারনে ব্যর্থ হয়েছে। ঢাকাস্থ ভারতীয় দূতাবাসের লোকজনও নাকি বিএনপিকে পাত্তা দিতে চায় না। এর আগে তারেক রহমানের ব্যক্তিগত সহকারী জনৈক হুমায়ুন কবির, স্থায়ী কমিটির সদস্য আমির খসরু এবং ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল আউয়াল মিন্টু অযাচিত ভাবে ভারতে গিয়ে জিয়াউর রহমান ও বেগম জিয়ার রাজনীতির প্রকাশ্য সমালোচনা করে দিল্লির মনোরঞ্জনের আপ্রান চেষ্টা করেছেন। আদর্শচ্যূত এবং আত্মসম্মানহীন একটি রাজনৈতিক দল দেশে এবং বিদেশে কোথাও যে মর্যাদা পাবে না এটাই প্রত্যাশিত।
অনলাইন সংবাদ মাধ্যমের তথ্য অনুযায়ী বিএনপি এবং গনফোরামকে শেখ হাসিনা সর্বমোট সাতটি আসনের ভিক্ষা দিয়েছেন। ভিক্ষা প্রাপ্তদের মধ্যে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরও আছেন। তবে তাকে ঠাকুরগাঁও এর নিজস্ব আসন না দিয়ে বগুড়ার বেগম জিয়ার আসন থেকে বিজয়ী ঘোষনা করা হয়েছে। শেখ হাসিনার অধীনে নির্বাচনে অংশ নিলে তার পরিনতি সম্পর্কে দেশের জনগনকে আমি একাধিকবার সতর্ক করে বলেছিলাম যে, বিরোধী দল কটি আসন পাবে এবং কারা বিজয়ী হবে সেটি শেখ হাসিনা এবং ভারতীয় গোয়েন্দা সংস্থা ‘র’ মিলে নির্ধারন করবে। আমার আশংকা সত্যে পরিনত হয়েছে।

বিরোধী দলের ৭ আসন প্রাপ্তি প্রসঙ্গে পুরনো দুটি তথ্যের কথা মনে পড়লো। বাংলাদেশে তামাশার নির্বাচনের সূচনা হয়েছিল ১৯৭৩ সালে। বিএনপি দ্বারা বৈধতাপ্রাপ্ত ফ্যাসিস্ট প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পিতা সেই সময় বিরোধী দলকে একইভাবে ৭টি আসন দিয়ে বাকি ২৯৩ আসনে আওয়ামী লীগকে বিজয়ী দেখিয়েছিলেন। ওই নির্বাচনে ঐক্যফ্রন্টের ড: কামালও আওয়ামী লীগের প্রার্থী হয়ে এক আসনে জিতেছিলেন। শেখ মুজিবের কন্যা পিতার আদর্শ অক্ষরে অক্ষরে পালন করেছেন। এখানে ৭ আসন সংখ্যাটি কাকতালীয় নয়। এমন ভয়ানক ফ্যাসিজম মোকাবেলার সক্ষমতা বিএনপি এবং জামাতের বর্তমান নেতৃত্বের আছে কিনা সেই প্রশ্ন জনমনে উত্থাপিত হচ্ছে। দ্বিতীয় ঘটনা ১৯৯১ সালের। নির্বাচনের আগে ভারতীয় পত্রিকায় প্রদত্ত সাক্ষাৎকারে শেখ হাসিনা ভবিষ্যদ্বানী করেছিলেন যে, তিনি প্রধানমন্ত্রী হবেন এবং জেনারেল এরশাদের জাতীয় পার্টি দ্বিতীয় অবস্থানে থাকবে।
বিএনপি সম্পর্কে তার মন্তব্য ছিল দলটি সর্বোচ্চ দশ আসন পেতে পারে। আমার ধারনা ঘটনাটি শেখ হাসিনার স্মরণে ছিল। তিনি কথা রেখেছেন। ৩০ ডিসেম্বরের নির্বাচনী তামাশায় জাতীয় পার্টি ২২ আসন পেয়ে দ্বিতীয় হয়েছে। আর ড: কামালকে ভাড়া করেও বিএনপি দশ আসন পায়নি। ২০০৭ সালে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী ভারতের কাছে আমাদের স্বাাধীনতা বিসর্জনের যে প্রক্রিয়া শুরু করেছিল সেটি ২০১৮ সালের ৩০ ডিসেম্বরে বিএনপি-জামাতের সহায়তাক্রমে শেখ হাসিনা সম্পন্ন করলেন। পলাশীর ট্রাজেডির মত করেই দেশপ্রেমিকের দাবীদার বাংলাদেশ সেনাবাহিনী ও নিশ্চল দাঁড়িয়ে থেকে পরাধীনতার দলিলে সিলমোহর লাগাতে দেখলো। বাংলা এবং ভারতের স্বাধীনতা পুনরুদ্ধারে ১৯০ বছর লেগেছিল। আমাদের কত বছর লাগবে সেটি দেখার জন্য হয়ত পৃথিবীতে থাকব না। তবু স্বাধীনতা পুনরুদ্ধারের স্বপ্ন নিয়েই জীবন কাটাতে চাই। বাংলাদেশের জনগনের উদ্দেশ্যে বহুবার বলা কথা আবারও বলছি। স্বাধীনতা কিংবা অধিকার কেউ স্বেচ্ছায় দেয় না। অনেক লড়াই করে, বহু প্রানের বিনিময়ে ওটা অর্জন করতে হয়। গোলামী যেন দেশবাসসির অভ্যাসে পরিনত না হয় মহান আল্লাহতালার কাছে সেই প্রার্থনাই করছি।।
ভিন্ন প্রসঙ্গ: নির্বাচনের আগের দিন বিকেল থেকে সরকারপন্থী দুই টেলিভিশন চ্যানেল, সময় এবং ডিবিসিতে একেবারে অপ্রাসঙ্গিকভাবে আমাকে নিয়ে তথ্য সন্ত্রাস চালানো হয়েছে। মিনিট খানেকের একটি অডিও বাজিয়ে দাবী করা হয়েছে যে ২০১৭ সালের ডিসেম্বরে ওমরাহ পালনকালে আমি নাকি আইএসআই এর কোন এজেন্টের সাথে সাক্ষাৎ করেছি।
এক বছর পুরনো ঘটনা টেনে এনে এমন অপপ্রচার কোন উদ্দেশ্যে চালানো হয়েছে তার ব্যাখ্যা বাংলাদেশের ক্ষমতাসীন ভারতীয় দালাল সরকার এবং দুই টেলিভিশন চ্যানেলের কর্তৃপক্ষই ভাল করে দিতে পারবে।
আমি অডিওটি শুনেছি। সেখানে জনৈক মেহমুদ আমার সঙ্গে সাক্ষাৎ চেয়ে ফোন করেছেন। আমি জবাবে বলেছি যে পরের দিনই পবিত্র মদিনা ছেড়ে যাব। তাই দেখা করতে চাইলে তাকে ওই দিনই হোটেলে আসতে হবে। অডিওটি শুনলেই যে কেউ বুঝবেন যে, ফোনের অপর প্রান্তের মেহমুদের পরিচয় আমি জানি না এবং পূর্বে তার সঙ্গে আমার কখনও সাক্ষাৎ হয়নি। এখন মেহমুদ যে ভারতীয় গোয়েন্দা সংস্থা ‘র’ কিংবা মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থা, সিআই এর এজেন্ট নন তার প্রমান কী? মক্কা এবং মদীনায় হাজারো মানুষের সঙ্গে আমার সাক্ষাৎ ঘটেছে। তারা সকলেই মুসলামান কারন বিধর্মীদের ওই দুই পবিত্র শহরে যাওয়ার সুযোগ নেই। আমি দেশে এবং বিদেশে মোটামুটি পরিচিত।
তাছাড়া মানুষের সঙ্গ আমাকে আনন্দ দেয়। তাদের সঙ্গে কথা বলে আমি সর্বদাই জ্ঞানলাভ করি, অনুপ্রানিত হই। কারো সঙ্গে দেখা করতেই আমার আপত্তি নেই। ওই অচেনা ভদ্রলোকের নাম মেহমুদ না হয়ে যদি মোদি হতো তাহলেও আমি আগ্রহ নিয়ই দেখা করতাম। কে, কার এজেন্ট এটা জানার আমার কোন সুযোগ নেই।
আরো মজার কথা হলো সংবাদে দাবী করা হয়েছে যে, আমি নাকি বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফের পক্ষ থেকে ওই মেহমুদের সাথে দেখা করেছি। আরে ভাই, ড. খন্দকার মোশাররফ এবং আমার গ্রামের বাড়ি দাউদকান্দিতে হলেও তার সাথে আমার যে বিশেষ কোন প্রীতির সম্পর্ক নাই এটা বেগম খালোদ জিয়া সহ বিএনপির অনেকেই জানেন।
২০০১ থেকে ২০০৬ সাল সরকারে থাকতে খন্দকার মোশাররফ আমার বিরুদ্ধে নালিশ নিয়ে বেগম জিয়ার কাছে উপস্থিত হয়েছিলেন। আমাদের মধ্যে অপ্রীতিপূর্ন ডিও চালাচালিও হয়েছিল। সবচেয়ে বড় বিষয় হলো, আমি ভীষনভাবে স্বাধীনচেতা এবং একগুঁয়ে মানুষ। কারো পক্ষ হয়ে বিদেশী এজেন্টের সঙ্গে সাক্ষাৎ করা আমার চরিত্রের সাথে যায় না। এতদিনে দেশবাসীর আমার সম্পর্কে জানা হয়ে গেছে। অতএব, এসব মিথ্যাচার থেকে বিরত থাকুন।
সর্বশেষ কথা, বাংলাদেশে নাকি কী সব ডিজিটাল আইন হয়েছে। টেলিভিশন চ্যানেলে এইসব বানোয়াট ফোনালাপ ফাঁস কী ডিজিটাল আইন অনুযায়ী ফৌজদারী অপরাধের মধ্যে পড়ে? ফ্যাসিবাদের পতন হলে এই সব চ্যানেলের কর্তাব্যক্তিরা কোথায় থাকবেন তাই ভাবছি। এই সব মিথ্যাচার করে ফ্যাসিবাদ এবং ভারতীয় আধিপত্যবাদ বিরোধী লড়াই থেকে আমাকে নিবৃত করতে পারবেন না। বাংলাদেশের প্রকৃত দেশপ্রেমিক জনগন আমার পক্ষেই থাকবেন ইনশাআল্লাহ্ ।।
সম্পাদক, দৈনিক আমার দেশ।

About

ব্লগ সংরক্ষাণাগার

আমার ব্লগ তালিকা

Translate

Translate

আমাদের বাংলাদেশ নিউজ 24

সর্বশেষ

অনুসরণকারী