আমাদের বাংলাদেশ নিউজ24 ডেস্কঃ আমাদের দেশে অধিকাংশ ক্ষেত্রে মেয়ের বাবা-মা হওয়া যেন একটা মহা অপরাধ। ছেলের (মেয়ের জামাই) বাড়িতে একতরফাভাবে এটা পাঠাতে হবে, ওটা পাঠাতে হবে, আরো কত বদ রুসুম! ফলে জীবন যেমন জটিল হয়ে যায়, তেমনি জিল্লতির শেষ থাকেনা মেয়ের বাবা-মায়ের। চট্টগ্রামে এর প্রচলন খুব বেশি। এখানকার সবাই জমিদার (শহরে যারা বাড়ি ভাড়া দেয়) কি না তাই!
কুরবানির সময় ঘনিয়ে এলে চট্টগ্রামের কিছু মানুষের কুরবানি পশু হাদিয়া দেয়ার প্রবনতা পরিলক্ষিত হয়। বিশেষ করে কোন কোন মেয়ের বাবা ছেলের বাবার নিকট কুরবানির পশু গরু/ ছাগল/খাসি পাঠিয়ে থাকে। ছেলের বাবা কিন্তু মেয়ের বাবার জন্য কখনো কোথাও কুরবানির পশু প্রেরণ করেছে এমন কোন তথ্য অন্তত আমার জানা নেই। এ যেন জাতে মাতাল তালে ঠিক। এ প্রেরন যদি প্রেসার ক্রিয়েট করে হয়ে থাকে, কিংবা বিভিন্ন কলাকৌশলের মাধ্যমে হয়, তাহলে ইহা জায়েজ নেই। ইহাও এক ধরনের যৌতুক ।যৌতুকের মধ্যে শামিল। বেয়াইদের মধ্যে এতো ভালবাসা থেকে থাকলে,( সচ্ছল) ছেলের পিতা কি কখনো দায়গ্রস্ত মেয়ের পিতার জন্য কুরবানি পশু পাঠিয়েছে ? ।
হাঁ! কোন সচ্ছল মেয়ের বাবা কোন ধরনের প্রেসার ব্যাতিরেকে নিরেট ভালবাসার নিদর্শন হিসেবে ছেলের বাবা বেয়াইর নিকট হাদিয়া হিসেবে কুরবানি পশু প্রেরণ করে থাকে, তাহলে মেয়ের পিতার কুরবানির নিয়তে পশু প্রেরণ করা ও এ পশুর কারণে ছেলের পিতা (বেয়াইর) উপর ওই প্রেরিত পশু দিয়ে কুরবানি করার হুকুম কি ? তা নিম্নে দেয়া গেল।
মেয়ের বাবার নিয়তের কারণে ছেলের বাবার উপর কুরবানি ওয়াজিব হবে না। ছেলের বাবা সচ্ছল হয়ে থাকলে সচ্ছলতার কারণে তার উপর কুরবানি ওয়াজিব হবে।ছেলের বাবা গ্রহণের মধ্য দিয়ে উহার মালিক হয়ে যাবে।মালিক হিসেবে পশুর উপর ছেলের বাবার পূর্ণ ইখতিয়ার প্রতিষ্ঠিত হবে। ইচ্ছে করলে প্রেরিত পশুটি লালন জন্য রেখে দিতে পারে, বিক্রি কিংবা কাউকে হাদিয়াও দিতে পারে, অথবা উহা দিয়ে নিজে কুরবানিও করতে পারে। হাঁ তবে বেয়াইর পাঠানো পশু দ্বারা কুরবানি করা উত্তম। এতে প্রেরক বেয়াইর সন্তুষ্টিও অর্জিত হলো এবং প্রেরক বেয়াইর খোঁচা থেকেও বাঁচা গেল ।
মানুষ একটু সচেতন হলে মেয়ের পিতার উপর চাপিয়ে দেয়া এ বদ্ রসম ও কুপ্রথার বিলুপ্ত সাধন করা যায়। বিলুপ্ত সাধন করা উচিত। এ প্রতারণার মূলোৎপাটন করা অতীব জরুরী হয়ে পড়েছে।
লেককঃ মাহবুবুল আলম ছিদ্দিকী, উপাধ্যক্ষ,
দারুল উলুম কামিল মাদরাসা, চট্টগ্রাম।