বিজ্ঞাপন দিন

আচ্ছালামু আলাইকুম ওয়ারাহমাতুল্লাহ। ইসলামী ব্যাংক এজেন্ট ব্যাংকিং আউটলেট দক্ষিণগাও, শাহীবাগ বাজার এর পক্ষ থেকে সকল গ্রাহক, শুভাকাংখীসহ সবাইকে জানাই ঈদ উত্তর সালাম ও আন্তরিক শুভেচ্ছা। ব্যাংক খোলা এবং যথারীতি ব্যাংকিং কার্যক্রম চলছে। এই গ্রুপে যারা আছেন তাদের মাধ্যমে সংশ্লিষ্ট এলাকার এলাকারসকলকে ইসলামী ব্যাংকের মাধ্যমে বিদেশ থেকে রেমিটপন্স পাঠানোর আহবান জানাচ্ছি। ঢাকার সবুজবাগ থানার রাজারবাগ, কুসুমবাগ, দক্ষিনগাও, শাহীবাগ, মানিকদিয়া, বাইকদিয়া, নন্দিপাড়াসহ সকল এলাকার গ্রাহক, শুভাকাংখী, শুভানুধ্যায়ীদের প্রদত্ত মোবাইল নাম্বারে যোগাযোগ করার অনুরোধ করা হলোঃ ০১৭১১-৪৫৮১৫১, ০১৭০০৯২৫২৪১:b>ইসলামী ব্যাংক এজেন্ট ব্যাংকিং আউটলেট দক্ষিণগাও, শাহীবাগ বাজার

শনিবার, ২৫ জুলাই, ২০১৫

দুই টাকা থেকে পাঁচ কোটি- রেজোয়ান সিদ্দিকী

রেজোয়ান সিদ্দিকী
রাজধানীর বাংলামোটর ক্রসিং পার হয়ে ইস্কাটন-মগবাজারের দিকে রিকশা যাওয়া নিষেধ সেখানে আনসার বা ওই ধরনের কোনো বাহিনীর পোশাক পরা এক বা একাধিক লোক ডাণ্ডা হাতে দাঁড়িয়ে থাকে রিকশা পার হতে নিলে ডাণ্ডা দিয়ে থামায় এখানকার ডাণ্ডা রহস্য রিকশাচালকেরা জানেন তারা মাত্র দুটি টাকা গুঁজে দেন ওই ডাণ্ডাঅলা লোকটির হাতে ব্যস, রাস্তা ক্লিয়ার রিকশা যেতে পারে, কোনো বাধা নেই আমি এই দুই টাকার কথা বলছি বছরখানেক আগের এখন তা পাঁচ টাকা বা তারও বেশি হয়েছে কি না, আমার জানা নেই আর সর্বশেষ একজন রিয়াল এস্টেট ব্যবসায়ী ফজলুল হক রহিম পাঁচ কোটি টাকা দিয়েও পুলিশের হাত থেকে রেহাই পাননি মানবাধিকার কমিশন থেকে শুরু করে বিভিন্ন স্থানে নালিশ করে তিনি এখন নিখোঁজ রয়েছেন

ফজলুল হককে পুলিশ প্রথমে অগ্নিসংযোগ মামলায় গ্রেফতার করে ২৮ ফেব্রুয়ারি। তাকে যারা গ্রেফতার করে নিয়ে যায়, তাদের মধ্যে এসআই আবদুল আলিম নজরুল ইসলামও ছিলেন। তাকে মুক্ত করে আনতে ফজলুল হকের স্ত্রী তাহমিনা আক্তার দুটি ফ্ল্যাট কোটি টাকার বেশি মুক্তিপণ দেন। তাদের প্রাডো গাড়িটিও নিয়ে যায় পুলিশ, যা এখন পর্যন্ত ফেরত দেয়নি
প্রথম দফা জামিনে বেরিয়ে এসে ফজলুল হক সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন কর্র্তৃপক্ষের কাছে বিষয়ে অভিযোগ করেন। গত ২৯ জুন পুলিশ কমিটির সাথে তার বিষয়ে শুনানির দিন ধার্য ছিল। কিন্তু গত ২৫ জুন তাকে আবারো অপহরণ করা হয়। আজ অবধি তার কোনো সন্ধান পায়নি তার পরিবার। পুলিশের সদর দফতর ফজলুল হকের সন্ধান চালিয়ে যাচ্ছে। তবে তার ব্যাপারে কোনো অগ্রগতি নেই বলে কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে। ফলে তার পরিবার এখন আল্লাহ ভরসা বলে অপেক্ষা করছে। 
প্রায় একই ঘটনা ঘটেছে সিলেটের শিশু রাজন হত্যা নিয়ে। ক্ষেত্রে অভিযোগ আরো মারাত্মক। সৌদি প্রবাসী কামরুলের নেতৃত্বে একদল খুনি ভ্যান চুরির চেষ্টার অভিযোগ এনে গত জুলাই ভোরে ১৩ বছরের শিশু রাজনকে পিটিয়ে হত্যা করে। সেই হত্যাকাণ্ডের দৃশ্য ২৯ মিনিট ধরে মোবাইল ফোনে ধারণ করে তা এলাকায় ছড়িয়ে দেয়। রাজনের বাবা থানায় এর বিরুদ্ধে মামলা করতে গেলে তাকে পুলিশ গলাধাক্কা দিয়ে থানা থেকে বের করে দেয়। এরপর থানার কর্মকর্তারা খুনিদের সাথে গোপন বৈঠক করেন। অভিযোগ আছে, সেখানে কামরুল থানার সাথে ১২ লাখ টাকায় রফা করে। ছয় লাখ টাকা রাতারাতি দুটি সিএনজি অটোরিকশা বিক্রিকরে নগদে থানাকে পরিশোধ করা হয়। বাকি ছয় লাখ টাকা পরে দেয়া হবে বলে রফা হয়। সে অনুযায়ী কামরুল এক দিন পর পুলিশের সহায়তায় সৌদি আরব পাড়ি জমায়। সেখানে গিয়ে সে আটক হয় সৌদি প্রবাসীদের হাতে। এখন সে সৌদি আরবে কারাবন্দী আছে

এই ঘটনায় পুলিশের তদন্ত রিপোর্টেই দেখা গেছে, ওই হত্যার ঘটনায় পুলিশের গাফিলতি ঘটনা ধামাচাপা দেয়ার একটি চেষ্টা ছিল। অভিযোগ ছিল সংশ্লিষ্ট থানার ওসি দুই এসআইয়ের বিরুদ্ধে। গত শুক্রবার ওসি আলমগীর হোসেনকে ক্লোজড করা হয়েছে এবং এসআই আমিনুল ইসলাম জাকির হোসেনকে বরখাস্ত করা হয়েছে। শুক্রবার সকালেই স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেছেন, যেসব পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে গাফিলতির প্রমাণ মিলেছে, তাদের ছাড় দেয়া হবে না। জানা গেছে, এই ঘটনা ধামাচাপা দেয়ার ক্ষেত্রে রাজনৈতিক ব্যক্তিদের সংশ্লিষ্টতারও প্রমাণ পাওয়া গেছে
রকম অভিযোগের সহস্র তীর এখন পুলিশের বিরুদ্ধে। কোথাও কোনো জবাবদিহিতার লেশমাত্র নেই। পুলিশের হাতে কেউ যদি নিহত বা গুম-খুন হয়, তবে তাদের একটা তৈরী সহজ জবাব আছে, তা হলো সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির নামে থানায় একাধিক মামলা রয়েছে। থানায় একাধিক মামলা থাকার কী অর্থ বহন করে তা আমাদের কাছে স্পষ্ট নয়। পুলিশের মামলার ধরনে বৈপ্লবিক পরিবর্তন হয়েছে। কোনো ঘটনায় ১০-১৫ জনের নাম লিখে কখনো কখনো হাজার হাজার অজ্ঞাত লোককে এসব মামলার আসামি করা হয়। তারপর নিজেদের উদ্দেশ্য হাসিলের প্রয়োজন হলে যে কাউকে ওই মামলার আসামি হিসেবে ধরে ক্রসফায়ারের ভয় দেখিয়ে মুক্তিপণ আদায় করা যায়। ছাড়া কোনো মামলায় আসামি হিসেবে কেউ নাম ঢুকিয়ে দিলেই সে ব্যক্তি অপরাধী হয়ে যান না। আর কেউ অপরাধী হলে তার বিচার করবেন আদালত। মামলা আছে, এই অভিযোগে কাউকে হত্যা করা জায়েজ হতে পারে না
আবার এসব ঘটনায় পুলিশ দায়িত্ব অস্বীকার করলেও কারো কিছু বলার থাকে না। সম্পর্কে এক সহযোগী পত্রিকা সাম্প্রতিক কয়েকটি ঘটনার উল্লেখ করে দেখিয়েছে, কোনো কোনো ক্ষেত্রে প্রকৃত পুলিশ নয়, ভুয়া পুলিশ নাগরিকদের মুক্তিপণের জন্য অপহরণ করছে। গত ১২ জুলাই সকাল সাড়ে ১০টায় এমন একটি ঘটনা ঘটেছে সায়েন্স ল্যাবরেটরি এলাকায়। ব্যস্ত ঈদবাজারে শত শত লোকের সামনে একটি কালো কাচের সাদা রঙের মাইক্রোবাস থেকে ঝটপট নামল পাঁচজন সশস্ত্র লোক। নিজেদের গোয়েন্দা পুলিশের লোক পরিচয় দিয়ে তারা দ্রুত দুই ভাইকে মাইক্রোবাসে তুলে নেয়। মাইক্রোবাসের ভেতর থেকে তারা সাহায্যের জন্য চিৎকার করছিল। কিন্তু কেউ এগিয়ে আসেনি। এই অপহরণকারীদের প্রত্যেকের হাতে ছিল ওয়াকিটকি, কোমরের হোলস্টারে গোঁজা ছিল পিস্তল আর কোমরেই ঝোলানো ছিল হ্যান্ডকাফ। যারা তাদের দেখেছেন, তাদের কাছে এই অপহরণকারীদের প্রকৃতই ডিবির লোক বলে মনে হয়েছিল
কিন্তু পরদিন প্রকৃত ডিবির লোক ওই অপহরণকারীদের তিনজনকে গ্রেফতার করে এবং তাদের কাছ থেকে ছিনতাইকৃত সাড়ে ২০ লাখ টাকার ৫০ হাজার টাকা উদ্ধার করে। অপহৃতদের একজন ছিলেন মানি এক্সচেঞ্জার। ভাগ্যগুণে ওই দুই ভাই অপহরণকারীদের হাত থেকে জীবিত ফিরে এসেছেন। কিন্তু বেশির ভাগেরই পরে আর কোনো খোঁজ পাওয়া যায় না
পুলিশের রেকর্ড অনুযায়ী গত বছর দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে ৯২০ জন লোক অপহৃত হয়েছিলেন। এদের কাউকে কাউকে পুলিশ উদ্ধার করেছে। মুক্তিপণ দিয়ে কেউ কেউ ছাড়া পেয়েছেন অপহরণকারীদের কাছ থেকে। বাকিদের কোনো খবর নেই। তাদের ভাগ্যে কী ঘটেছে, কেউ বলতে পারে না। ডিবি বা পুলিশ পরিচয়ে যারা অপহরণ করে তারা প্রকৃতই পুলিশের লোক কি না তা শনাক্ত করার কোনো বুদ্ধি নাগরিকদের কাছে নেই। সম্পর্কে পুলিশের বক্তব্যও বেশ দায়সারা। এরা বলেন, পুলিশের পোশাক, হ্যান্ডকাফ, জুতা এগুলো বাজারে কিনতে পাওয়া যায়। তা কী করে সম্ভব? এগুলো যারা বিক্রি করে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা কেন নিতে পারে না পুলিশ? সম্প্রতি পার্বত্য চট্টগ্রামের এক ছবিতে দেখলাম, ফুটপাথে রীতিমতো দোকান সাজিয়ে বিক্রি করা হচ্ছে পুলিশের পোশাক, জুতা, ব্যাজ প্রভৃতি সামগ্রী। এটাও কী করে সম্ভব, বোঝা দায়। আর আগ্নেয়াস্ত্র? টাকা হলে তার কোনো অভাব এখন আর বাংলাদেশে নেই
তবে কথা সত্য নয় যে, সব অপহরণই পেশাদার অপরাধীরা করছে। মানবাধিকার সংস্থা আইন সালিস কেন্দ্র (আসক) জানিয়েছে, বছর গত জানুয়ারি থেকে জুন পর্যন্ত আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে অপহৃত হয়েছেন কমপক্ষে ২৯ জন নাগরিক। আসকের সাম্প্রতিক রিপোর্টে দেখা যায়, অপহৃতদের চারজনের মৃতদেহ পাওয়া গেছে। একজনকে পরে মুক্তি দেয়া হয়েছে। আরেকজনকে গ্রেফতার দেখানো হয়েছে। বাকি ২৩ জনের কোনো খবর নেই। যেন তাদের কোনো অস্তিত্বই ছিল না। পুলিশ সাধারণত কোনো অপহরণের দায়ই প্রকাশ্যে স্বীকার করে না। তবে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক কর্মকর্তার বরাত দিয়ে সহযোগী জানিয়েছে, তারা দু-একজনকে অপহরণ করে থাকে। তা কখনো কখনো রাজনৈতিক কারণে, কখনো বা টাকার জন্য। এই অপহৃতদের পেশাগত রাজনৈতিক পরিচয়ের কারণে কখনো কখনো মিডিয়ায় ব্যাপকভাবে এসব ঘটনা প্রচারিত হয়
ব্যাপারে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের যুগ্ম কমিশনার মনিরুল ইসলাম আরেক ধাপ এগিয়ে বলেছেন, অতীতে আমরা দেখেছি, গোয়েন্দা পরিচয় দিয়ে কিছু সংস্থার লোকজন কোনো কোনো লোককে তুলে নিয়ে গেছে। পরে তাদের গ্রেফতার দেখানো হয়েছে। কথা তিনি বলেছেন ১৩ জুলাই, যেদিন পুলিশ দুই ভাইকে অপহরণের ঘটনায় তিনজন ভুয়া ডিবির লোককে গ্রেফতার করা হয়। মনিরুল জানান, গত ছয় মাসেই তারা প্রায় ১০০ ভুয়া ডিবি পুলিশকে গ্রেফতার করেছেন
আসক পরিচালক নূর খান লিটন জানিয়েছেন, বছর যতগুলো অপহরণের ঘটনা ঘটেছে, তার ২৫-৩০ শতাংশ ঘটনা তারা তদন্ত করেছেন। তাতে তারা দেখতে পেয়েছেন, অভিযোগের তীর আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর দিকেই। সে হিসেবে অন্তত ২৯টি ক্ষেত্রে দেখা যায়, অপহরণের সাথে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীই জড়িত। কখনো দেখা যায়, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীই অপরাধীর বেশে অপহরণ করছে। আবার কখনো দেখা যায়, আসল অপরাধীরা আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারীর পরিচয়ে অপহরণ করছে। এই কৌশল উভয় ক্ষেত্রেই বেশ কাজ দেয়। বিষয়ে অপরাধ বিজ্ঞানের অধ্যাপক আজিজুর রহমান বলেছেন, অপরাধীদের আইনের আওতায় আনা হয় না বলেই পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে
আমরা পরিস্থিতি থেকে পরিত্রাণ চাই। 
লেখক : সাংবাদিক সাহিত্যিক
rezwansiddiqui@yahoo.com

ভারতে মেডিকেল কলেজে ভর্তি পরীক্ষায় হিজাব ও লম্বা হাতাওয়ালা পোশাক নিষিদ্ধের নীতিমালা বহাল রেখেছে দেশটির সর্বোচ্চ আদালত

ভারতে মেডিকেল কলেজে ভর্তি পরীক্ষায় হিজাব ও লম্বা হাতাওয়ালা পোশাক নিষিদ্ধের নীতিমালা বহাল রেখেছে দেশটির সর্বোচ্চ আদালত। তিন মুসলিম ছাত্রী ও একটি ইসলামী ছাত্র সংস্থার আবেদন নাকচ করে গত শুক্রবার আদালত এ নির্দেশ দেয় বলে এক প্রতিবেদনে জানায় টাইমস অব ইন্ডিয়া। সম্প্রতি ভর্তি পরীক্ষায় ব্যাপক নকল ঠেকাতে শিক্ষার্থীদের পোশাকের ক্ষেত্রে নতুন নিয়ম প্রবর্তন করে দেশটির মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ড। নতুন নীতিমালা অনুযায়ী, শিক্ষার্থীদের ছোট বোতামের হাফ-হাতা পোশাক পরে আসতে হবে। মাথার চুলে পিন বা ব্যান্ড ব্যবহার করা যাবে না। এছাড়া শিক্ষার্থীদের খোলা স্লিপারওয়ালা জুতা পরতে হবে। পরীক্ষার হলে আনতে পারবে না ক্যালকুলেটর, কলম, হাতব্যাগ বা ওয়ালেট। আবেদনকারীরা উল্লেখ করেছেন, নতুন এই নীতিমালার একটি বিষয় মুসলিম রীতির বিরোধী। ইসলামের বিধানমতে জনসম্মুখে নারীদের সবসময়ই পর্দা রক্ষা করতে হবে। বিষয়টি বিবেচনা করে মুসলিম মেয়েদের জন্য হিজাব ও লম্বা হাতাওয়ালা জামা পরে পরীক্ষা দেয়ার অনুমতি চাওয়া হয়। একই সঙ্গে এক্ষেত্রে সম্প্রতি কেরালা হাইকোর্ট দুই মুসলিম মেয়েকে হিজাব পরে পরীক্ষা দিতে অনুমোদন দেয়ার কথাও উল্লেখ করা হয়। এ ব্যাপারে প্রধান বিচারক এইচ এল দত্ত, বিচারক অরুণ মিশ্র ও অমিতাভ রায়ের বেঞ্চ বলেন, পরীক্ষায় অস্বচ্ছতা ঠেকাতে শিক্ষা বোর্ড এই নিয়ম করেছে। এটা তো মাত্র তিন ঘণ্টার ব্যাপার। যারা হিজাব পরেন তারা পরীক্ষার সময়টুকু শুধু নতুন নীতিমালা অনুযায়ী পোশাক পরবেন। এর আগে ও পরে হিজাব পরতে কোনো বাধা নেই। আবেদনকারীদের পক্ষের আইনজীবী সঞ্জয় হেজ বলেন, এই নীতি ইসলামবিরোধী। এর ফলে অনেক মুসলিম মেয়েই পরীক্ষায় অংশ নিতে পারবে না। এর জবাবে বিচারকরা এটাকে স্রেফ ‘ইগো ইস্যু’ (আত্মসম্মানের প্রশ্ন) হিসেবে উল্লেখ করে আবেদন খারিজ করে দেন। 

যারা মনে করেন বিএনপির দুর্দশার জন্য জামায়াত দায়ী তারা আসলে আওয়ামী রাজনীতিই করছেন: ফরহাদ মজহার


আমাদের বাংলাদেশ অনলাইন নিউজ: ২৫ জুলাই ২০১৫; নির্বাচনই গণতন্ত্র- এ ধরনের একটি ধারণার প্রকট প্রাবল্য বাংলাদেশে দীর্ঘকাল ধরে আমরা দেখেছি। তবে ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারি জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে যে তামাশা জনগণ দেখেছে, সে কারণে নির্বাচন ও গণতন্ত্রের সম্পর্ক নিয়ে কিছু কিছু ভাবনা শুরু হয়েছে বটে; কিন্তু আমার অনুমান সেটা খুবই ক্ষীণ। সাধারণ মানুষের মধ্যে রাষ্ট্রক্ষমতার ন্যায্যতা কিংবা রাষ্ট্রের ধরন নিয়ে পর্যালোচনামূলক দৃষ্টিভঙ্গি না থাকাটা অন্যায় কিছু নয়। তারপরও জনগণ তাদের মতো করে রাষ্ট্রকে বোঝার এবং রাজনৈতিক প্রক্রিয়ায় অংশগ্রহণের চেষ্টা করে। নির্বাচন তাদের কাছে গুরুত্বপূর্ণ এ কারণে যে, এই একটিমাত্র ক্ষেত্রে তারা রাজনৈতিক ও রাষ্ট্রীয় বিষয়ে তাদের সিদ্ধান্ত জানানোর সুযোগটুকু পায়। একটি গণবিরোধী ও অগণতান্ত্রিক রাষ্ট্র যেখানে সাধারণ মানুষকে সমাজ, অর্থনীতি, সংস্কৃতিসহ জীবনের প্রতিটি গুরুত্বপূর্ণ ক্ষেত্র থেকে নির্বাসিত করেছে এবং ক্ষমতা অল্পকিছু ব্যক্তি ও পরিবারের হাতে কুক্ষিগত করেছে, সেই পরিস্থিতিতে ভোট দিতে পারার অধিকার অনেক বড় হয়ে জনগণের সামনে হাজির হয়। ফলে নির্বাচন গণতন্ত্র নয় ঠিক; কিন্তু গণবিরোধী ও কেন্দ্রীভূত ক্ষমতার প্রতিষ্ঠান হিসেবে ঘাড়ের ওপর ভূতের মতো রাষ্ট্রের চেপে বসে থাকার মধ্যে ভোট দিতে পারা একদম নিঃশ্বাস নেয়ার মতো গুরুত্বপূর্ণ।এতটুকু যদি বুঝে থাকি তাহলে সাম্প্রতিককালে আন্দোলন করে ক্ষমতাসীনদের উৎখাত করতে ব্যর্থ হয়েছে বলে প্রধান বিরোধী দল হিসেবে বাংলাদেশের রাজনীতিতে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল দুর্বল বা ক্ষীয়মান হয়ে গিয়েছে বা অচিরেই হবে বলে আমি মনে করি না। কিছু কিছু দৈনিকে এ ধরনের বিশ্লেষণ চোখে পড়েছে যার কোনো বাস্তব ভিত্তি নাই। এটা পরিষ্কার, বিএনপি বাংলাদেশ রাষ্ট্রের গণতান্ত্রিক রূপান্তর ঘটানো কিংবা বাংলাদেশকে রাজনৈতিকভাবে বিকাশের অভিমুখ নির্দেশ করার ক্ষেত্রে কোনো অবদান রাখতে অক্ষম। কিংবা শেখ মুজিবুর রহমানের আওয়ামী লীগের মতো বাংলাদেশের বর্তমান রাজনৈতিক সন্ধিক্ষণে এমন কোনো নেতৃত্বের দৃষ্টান্ত স্থাপন করতে পারবে না, যা বাংলাদেশের ইতিহাসে গুণগত রূপান্তর ঘটাতে সক্ষম। যদিও এর পূর্ণ সুযোগ এক-এগারোর সময় থেকে ২০১৩ সালের শেষ নাগাদ বাংলাদেশে পুরাপুরি জারি ছিল। বাংলাদেশের জনগণ একটি গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে সরকার ও রাষ্ট্রের রূপান্তরের জন্য মানসিকভাবে তৈরি ছিল। কিন্তু বিএনপি পুরনো ভাঙা রেকর্ডের মতো নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবি ছাড়া বিদ্যমান ক্ষমতা ও রাষ্ট্রের গণতান্ত্রিক রূপান্তরের নীতি ও কৌশল সম্পর্কে জনগণকে কোনো দিশা দিতে পারেনি। কিন্তু নির্বাচনী দল হিসেবে বিএনপির দুর্বল হওয়ার সম্ভাবনা খুবই ক্ষীণ। বিএনপি যদি তার দলের মধ্যে ঘাপটি মেরে থাকা আওয়ামী লীগের এজেন্টদের বের করার পদক্ষেপ গ্রহণ করে- এখন সেটা খুবই ভালো সময়। আগামী নির্বাচনে, যদি শেখ হাসিনা দয়াপরবশ হয়ে এমন কোনো অসম্ভব সিদ্ধান্ত আদৌ নিয়ে ফেলেন, তাহলে এই নেতারা অন্তত বিএনপির ভেতরে বসে কোনো অন্তর্ঘাতমূলক তৎপরতা চালাতে সক্ষম হবে না।
আন্দোলনের ব্যর্থতার জন্য বিএনপি বা খালেদা জিয়া যতোটা দায়ী, তার চেয়ে বেশি দায়ী বাংলাদেশের বুদ্ধিজীবী শ্রেণী, যাদের আমরা ঠাট্টা করে কিংবা আদর করে সুশীল বলে সম্বোধন করতে পছন্দ করি। এরা ধর্মনিরপেক্ষ রাজনীতির পক্ষাবলম্বনের নামে বাংলাদেশের এক-এগারোর মধ্য দিয়ে গড়ে ওঠা একটি চরম ফ্যাসিস্ট এবং নাগরিক ও মানবিক অধিকারবিরোধী রাজনৈতিক ক্ষমতার পক্ষে নির্লজ্জভাবে দাঁড়িয়েছে। নির্বাচনপন্থী দল হিসেবে বিএনপি ও তার নেতৃত্বাধীন জোট সমাজের বাইরের কোনো বিচ্ছিন্ন দ্বীপ নয়। সমাজের ক্ষমতাসীন শ্রেণীর প্রতিনিধিত্বকারী সুশীল সমাজের এই রাজনৈতিক মূর্খতা ও অদূরদর্শিতা বাংলাদেশে অনির্বাচিত ও অবৈধ ফ্যাসিস্ট ক্ষমতাকে প্রলম্বিত করেছে। অর্থাৎ নির্বাচনী রাজনীতি বাংলাদেশ রাষ্ট্রের মর্ম ও কাঠামোগত সমস্যার কোনো সমাধান নয়, এ ব্যাপারে জনমত গড়ে তোলার দায়িত্ব সমাজের বুদ্ধিজীবী শ্রেণীর। কিন্তু তারা দুটি রাজনৈতিক শিবিরে বিভক্ত হয়ে এখন একবার খালেদা জিয়া আরেকবার শেখ হাসিনাকে দোষারোপ করে নিজদের বুদ্ধিজীবিতা ফলিয়ে যাচ্ছে। যা অতিশয় বিরক্তিকর।
এই সীমাবদ্ধতার মধ্যেও খালেদা জিয়া আন্দোলন-সংগ্রামের মধ্য দিয়ে তার রাজনীতির সীমিত পরিসরে গণতন্ত্র ও ফ্যাসিস্ট ক্ষমতার দ্বন্দ্ব নিরসনের চেষ্টা করেছেন। আলবৎ ব্যর্থ হয়েছেন। কিন্তু সে কারণে বিএনপি ভেঙে যাবে তার সম্ভাবনা নাই। যদি ভাঙা বলতে বিএনপি থেকে আওয়ামীপন্থীরা বহিষ্কৃত বা নিজেরা বেরিয়ে যায় সেটা ভিন্ন তর্ক। একই কারণে আন্দোলন-সংগ্রামে পূর্বের মূল্যায়ন এখনও সহজ নয়। কারণ বিএনপি ও বিএনপির নেতৃত্ব্াধীন অভ্যন্তরীণ বিরোধ ও দ্বন্দ্বের স্পষ্ট ছবি আমাদের কাছে নাই। এটা বোঝা যাচ্ছে, একটি শক্তিশালী ধারা বিএনপির মধ্যে কাজ করছে, যারা মনে করে ইসলামপন্থী, বিশেষত জামায়াতে ইসলামীর সঙ্গ বিএনপির ত্যাগ করা উচিত। বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের দল হিসেবে ইসলাম প্রশ্ন বিএনপি কিভাবে নীতিগত ও কৌশলগতভাবে মোকাবেলা করবে তা নিয়ে অবশ্যই তর্ক হতে পারে, কারণ আদর্শগত মর্মের দিক থেকে বাংলাদেশের বর্তমান ও আগামী রাজনীতির নির্ধারক ইসলাম। একে এড়িয়ে যাওয়ার উপায় নাই। মর্মের দিক থেকে এটাই নির্ধারক প্রশ্ন। গণতন্ত্রের দিক থেকে কৌশলগত দিক হচ্ছে, পাশ্চাত্য লিবারেল রাজনীতির কাঠামোর মধ্যে বাংলাদেশের সংখ্যাগরিষ্ঠ জনগণের ধর্মীয় আবেগ, সংবেদনা, স্বপ্ন ও সংকল্প বিএনপি তার জাতীয়তাবাদী রাজনীতির বয়ানের মধ্যে কিভাবে অন্তর্ভুক্ত করতে সক্ষম হয়। কিন্তু বিএনপিকে জামায়াতে ইসলামী থেকে বিচ্ছিন্ন করা যে একান্তই ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের প্রধান কৌশল, এটা বোঝার জন্য খুব একটা রাজনৈতিক জ্ঞানের প্রয়োজন হয় না।
নির্বাচনী রাজনীতির দিক থেকে বাংলাদেশের রাজনৈতিক সংকটের মূল জায়গাটা কী? শেখ হাসিনা স্পষ্টই জানেন, সেটা হল তার পক্ষে কোনো জনসমর্থন নাই। তার পাবলিক রেটিং নিুমুখী, একে ঊর্ধ্বমুখী করার কায়দা নাই বললেই চলে। অথচ তিনিই ক্ষমতায় থাকতে চান। তাই তাকে যেভাবেই হোক নিজেকে ক্ষমতায় রেখেই সংকটের সমাধান খুঁজতে হবে। এর কোনো বিকল্প নাই। দুনিয়ায় বলপ্রয়োগ করে গুম, খুন, আইনবহির্ভূতভাবে হত্যা, জেল-জুলুমসহ হেন কোনো অত্যাচার-নির্যাতন নাই, যা করা সম্ভব নয়। কিন্তু আফসোস, যা করা যায় না তা হল বলপ্রয়োগ করে পাবলিক রেটিং বা জনসমর্থন বাড়ানো। এমনকি নিজের পক্ষে গণমাধ্যমগুলোর সরকারিকরণেও ফায়দা নাই বললেই চলে।
দেশের রাজনৈতিক সংকট হিসেবে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের প্রধান বয়ান হচ্ছে, বাংলাদেশের রাজনীতিতে জামায়াতের উপস্থিতিই বুঝি বর্তমান রাজনৈতিক সংকটের প্রধান কারণ- এটাকেই প্রচার-প্রপাগান্ডা তৎপরতার প্রধান এজেন্ডা বানিয়েছেন শেখ হাসিনা এবং নিরন্তর তা প্রচার করছেন। যদিও তিনি মুখে বলেন, বাংলাদেশের রাজনীতির প্রধান সমস্যা জামায়াত, আসলে তিনি বোঝাতে চান ইসলামী বা ইসলামপন্থী রাজনীতি। আওয়ামী লীগের দিক থেকে এটা অবশ্য সঠিক নির্ণয়। তার পক্ষে পাশ্চাত্য পরাশক্তির সমর্থনের মূল জায়গাটা এখানে। তিনিই বাংলাদেশে ইসলামী সন্ত্রাস দমনের প্রধান শক্তি ও সেনাপতি। শেখ হাসিনার রাজনৈতিক কৌশল হচ্ছে, জামায়াতে ইসলামীর বিরুদ্ধে বাঙালি জাতীয়তাবাদী শক্তিকে ঐক্যবদ্ধ করে বাংলাদেশে ইসলামপন্থী রাজনীতিকে দমন করা। বিএনপি কেন জামায়াতের সঙ্গে জোট বেঁধেছে, একেই তিনি বাংলাদেশের রাজনীতির প্রধান সমস্যায় পরিণত করেছেন। কিন্তু এ কাজ করতে গিয়ে তিনি গণসমর্থনের ভিত্তি হারিয়েছেন। নির্বাচনী রাজনীতির পরিমণ্ডলে শেখ হাসিনার ইসলামপন্থী রাজনীতির বিরোধিতা তার সমর্থনের পরিসর বাড়াচ্ছে না, বরং সংকুচিত করে এনেছে। এ পরিস্থিতিতে নির্বাচন দেয়ার অর্থ হচ্ছে তার হেরে যাওয়া। যে কারণে পঞ্চদশ সংশোধনীর মধ্য দিয়েই তত্ত্বাবধায়ক সরকার বাতিল করে তিনি বুঝিয়ে দিয়েছিলেন, তিনি নির্বাচন দেবেন না। যদি আদৌ দেন সেটা তার অধীনেই হতে হবে যাতে তিনি নির্বাচিত হয়ে আসেন।
এটা যদি আমরা বুঝে থাকি তাহলে বিএনপির রাজনৈতিক দুর্দশার জন্য জামায়াতই দায়ী- বিএনপির মধ্যে যারা এই ধারা বহন করেন তারা আসলে আওয়ামী রাজনীতিই করছেন। খালেদা জিয়াকে নেতা না মেনে তারা শেখ হাসিনাকে নেতা মানতেই পারেন। সেক্ষেত্রে তাদের উচিত আওয়ামী লীগে যোগদান করা এবং জামায়াতসহ বাংলাদেশে ইসলামপন্থী রাজনীতির বিরোধিতা করা। সেটাই হবে সৎ রাজনীতি।

কাগজে দেখেছি, খালেদা জিয়া তার দলের কিছু কিছু নেতাকে আওয়ামী লীগ করার উপদেশ দিয়েছেন। এটা ভালো পরামর্শ। বিএনপির ঘাড়ের ওপর এই নেতাদের বসে থাকার কোনো যুক্তি আসলেই নাই। ফলে বাংলাদেশের রাজনীতির মেরুকরণ স্বাভাবিক যেভাবে হওয়ার কথা সেভাবে ত্বরান্বিত হলে তা বিএনপির নির্বাচনী রাজনীতির জন্য খুবই ভালো হবে।
একটি দৈনিক পত্রিকায় দেখেছি, সিরিজ লেখার মধ্য দিয়ে বিএনপির ময়নাতদন্ত চলছে। দেখে খুব কৌতুক বোধ করেছি। কেউ মারা গেলে বা খুন হলে ময়নাতদন্ত হয়। ধরে নেয়া হয়েছে, বিএনপিকে কেউ হত্যা করেছে এবং হত্যার ক্লু বের করার জন্য ময়নাতদন্ত চলছে। বিএনপির রাজনীতির দিক থেকে গত এক দশকের জাতীয় রাজনীতির একটা মূল্যায়ন হতেই পারে। কিন্তু বিএনপি এখনই নিহত, আর গণমাধ্যম তার ময়নাতদন্ত করছে দেখে খুবই আমোদ লাভ করেছি।
শেখ হাসিনা সত্বর কোনো নির্বাচন দেবেন, এটা মনে হয় না। তিনি দমন-পীড়নের পথেই থাকবেন এবং কোনো না কোনো মামলায় খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানকে শাস্তি দিয়ে তাদের নির্বাচনের অযোগ্য করবেন, তারপর একটি মধ্যবর্তী নির্বাচন দেবেন- এটাই গুজব আকারে আমরা শুনছি। এটা কতটা সম্ভব বলা মুশকিল।
বাংলাদেশে রাজনীতি ও রাষ্ট্রের গণতান্ত্রিক রূপান্তরের প্রশ্ন এখনও গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র, নাগরিক ও মানবিক অধিকার, বিচার বিভাগের স্বচ্ছতা ও নাগরিক অধিকার রক্ষার ক্ষেত্রে বিচার বিভাগের দায় ও কর্তব্যের উপলব্ধি এবং সর্বোপরি জনগণের সাংগঠনিক ক্ষমতা, অর্থাৎ গণক্ষমতা অর্জনের ওপর নির্ভর করছে। কিন্তু এ পর্যায়ে বুদ্ধিবৃত্তিক লড়াই-সংগ্রাম, অর্থাৎ গণতন্ত্র নির্ভর করছে রাষ্ট্র কায়েমের নীতি ও কৌশল সম্পর্কে জনগণকে অবহিত ও সচেতন করার ওপর। এই কাজ বাংলাদেশে ধীরগতিতে ঘটছে, সেটা খালেদা জিয়া কিংবা শেখ হাসিনার দোষ না।
আমাদের উচিত আয়নায় নিজেদের মুখ দেখা। সেখানে বাংলাদেশে বুদ্ধিজীবিতার অপ্রাপ্তবয়স্ক সুরত আমাদের আরও দীর্ঘদিন আমোদিত রাখতে পারবে। ইনশাল্লাহ।

২৪ জুলাই ২০১৫। ৯ শ্রাবণ ১৪২২

দেশের স্বার্থ রক্ষায় সোচ্চার থাকতে হবে -শিবির সভাপতি


আমাদের বাংলাদেশ অনলাইন নিউজ: ২৫ জুলাই ২০১৫; ছাত্রশিবির ঢাকা মহানগরী পূর্ব আয়োজিত সদস্যদের ঈদ পুনর্মিলনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখছেন কেন্দ্রীয় সভাপতি আবদুল জব্বার
ইসলামী ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় সভাপতি আবদুল জব্বার বলেছেন, শুধু জনগণের জানমাল নয় বরং দখলদার অপশক্তি দেশের স্বার্থও জলাঞ্জলি দিয়ে যাচ্ছে। তাই নেতাকর্মীদের দেশের স্বার্থ রক্ষায় সোচ্চার থাকতে হবে। 
গতকাল শুক্রবার রাজধানীর এক মিলনায়তনে ছাত্রশিবির ঢাকা মহানগরী পূর্বের উদ্যোগে সদস্যদের ঈদ পুনর্মিলনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। শাখা সভাপতি এম শামিমের সভাপতিত্বে ও সেক্রেটারি শরিফুল ইসলামের পরিচালনায় অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন কেন্দ্রীয় সাহিত্য সম্পাদক মোবারক হোসেন। 
শিবির সভাপতি বলেন, দেশের মানুষের অধিকার হরণের পাশাপাশি দেশের স্বার্থও বিলিয়ে দেয়ার প্রতিযোগিতা চলছে। সম্প্রতি আমাদের পার্শ্ববর্তী দেশ আন্তঃনদী সংযোগ প্রকল্প বাস্তবায়নের উদ্যোগ নিয়েছে। এর আগে পরীক্ষামূলকভাবে ফারাক্কা বাঁধ চালুর কথা বলা হলেও তারা তা স্থায়ী করে নিয়েছে। ফলে বাংলাদেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের প্রায় ৬ কোটি মানুষকে এর খেসারত দিতে হচ্ছে। এখন আন্তঃনদী সংযোগ প্রকল্প চালু হলে বাংলাদেশ প্রকৃতপক্ষেই মরুভূমিতে পরিণত হবে। এটি জনগণের বাঁচা-মরার সাথে জড়িত হলেও নতজানু এ সরকারের কোন উদ্যোগ নেই। এই নীরবতা দেশের ধ্বংসের সম্মতি ছাড়া কিছু নয়। সরকারের এই আত্মঘাতী নীরবতা কোন গোপন চুক্তির অংশ কি না দেশের মানুষ তা জানতে চায়। 
তিনি আরও বলেন, দেশের স্বার্থ রক্ষায় বলিষ্ঠ ভূমিকা পালন করে থাকে ছাত্রসমাজ। কিন্তু দুঃখের বিষয় জাতির এই ক্রান্তিলগ্নে ছাত্রসমাজের একটি অংশ লেজুড়বৃত্তিকে বেছে নিয়েছে। ছাত্র রাজনীতিকে আয়ের মাধ্যম বানিয়ে প্রতিদিনই জাতিকে লজ্জাজনক ঘটনা উপহার দিচ্ছে। গতকালও মাগুড়ায় ছাত্রলীগের অভ্যন্তরীণ কোন্দলের বলি হয়েছে মাতৃগর্ভে থাকা একটি শিশু ও তার মা। পাষ-দের গুলীতে ক্ষতবিক্ষত হয়েছে গর্ভে থাকা এই শিশুটি। এই নজিরবিহীন বর্বরতা ছাত্রসমাজ ও জাতির জন্য চরম লজ্জা বয়ে এনেছে। ছাত্রলীগ তাদের অনুষ্ঠিতব্য সম্মেলনকে নিষ্পাপ এক শিশুর রক্তে রাঙ্গিয়ে নিয়েছে। অথচ সরকারের পক্ষ থেকে টু শব্দটিও করা হয়নি। এই জনসমর্থহীন রাষ্ট্রীয় শক্তি দিয়ে দেশ ও জাতির স্বার্থ জলাঞ্জলি দেয়া ছাড়া রক্ষা হবে না তা বার বার প্রমাণ হয়েছে। কিন্তু ছাত্রশিবির দেশ ও জনগণের স্বার্থ রক্ষায় প্রতিজ্ঞাবদ্ধ। সুতরাং কারো দিকে তাকানোর সময় নেই। যার যার অবস্থানে থেকে দেশ ও জনগণের স্বার্থ রক্ষায় সোচ্চার ভূমিকা পালন করতে হবে। জনগণের সামনে দেশ ও ইসলামের শত্রুদের মুখোশ উন্মোচন করে দিতে হবে। প্রয়োজনে ছাত্রজনতাকে সাথে নিয়ে স্বার্থ ও অধিকার রক্ষায় যে কোন ত্যাগের জন্য প্রস্তুতি গ্রহণ করতে হবে।


ডেমরায় জামায়াতের ঈদ পুনর্মিলনী: সকল শ্রেণী পেশার মানুষের কাছে ইসলামের দাওয়াত পৌঁছে দিতে হবে -মুহাম্মদ সেলিম উদ্দিন


আমাদের বাংলাদেশ অনলাইন নিউজ ডেস্ক: ২৫ জুলাই ২০১৫,  দলমত, ধর্মবর্ণ নির্বিশেষে সকল শ্রেণী পেশার মানুষের কাছে ইসলামের দাওয়াত সঠিকভাবে তুলে ধরতে নেতাকর্মীদের প্রতি আহবান জানিয়েছেন জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরীর সহকারী সেক্রেটারি মুহাম্মদ সেলিম উদ্দিন। 
গতকাল শুক্রবার রাজধানীতে স্থানীয় একটি মিলনায়তনে জামায়াতেইসলামী ডেমরা থানা আয়োজিত ঈদ পুনর্মিলনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ আহবান জানান। জামায়াতে ইসলামী ডেমরা থানা আমীর মুহাম্মদ হাফিজুর রহমানের সভাপতিত্বে এতে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন থানা কর্মপরিষদ সদস্য মোহাম্মদ আলী, সফিকুল ইসলাম, আব্দুল কুদ্দুস, মিজানুর রহমান, মির্জা হেলাল উদ্দিন প্রমুখ।
সেলিম উদ্দিন বলেন, সমাজের সকল শ্রেণী পেশার মানুষ তথা ছাত্র-যুবক, কামার-কুমার, জেলে-তাঁতী, দিনমজুর-বস্তিবাসী থেকে শুরু করে সমাজের উচ্চশিক্ষিত সকলের নিকট ইসলামের দাওয়াত সঠিকভাবে পৌঁছে দিতে হবে। একটি ইসলামী আন্দোলন হিসেবে এটিই জামায়াতে ইসলামীর নেতাকর্মীদের দায়িত্ব। তিনি বলেন, ইসলাম হলো আমাদের জীবনাচরণকে কুরআন ও সুন্নাহর আলোকে বাস্তবে প্রয়োগ করার নাম, যা মানুষের কল্যাণ সাধনের মাধ্যমেই বাস্তবায়ন সম্ভব। জামায়াতে ইসলামীর নেতাকর্মীদেরকে ইসলামী আদর্শ ধারণ করে সমাজের সকল ক্ষেত্রে নিজেকে নিয়োজিত করে জনগণের কল্যাণে এগিয়ে আসতে হবে।
নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, জামায়াতে ইসলামী এদেশের বঞ্চিত অবহেলিত মানুষের সেবায় সাধ্যমত কাজ করে যাচ্ছে। তাই এদেশের মানুষ জামায়াতে ইসলামী সম্পর্কে জানতে চায়, বুঝতে চায়। তাই ঘরে ঘরে ব্যাপক গণসংযোগের মাধ্যমে জামায়াতের দাওয়াত পৌঁছে দিতে হবে।
জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল ও সাবেক সফল মন্ত্রী আলী আহসান মোহাম্মদ মুজাহিদসহ জামায়াতের সকল নেতাকর্মীর মুক্তি দাবি করে সেলিম উদ্দিন বলেন, জামায়াত নেতাদের অপরাধ তাঁরা মানুষকে ইসলামের দিকে আহ্বান জানান এবং বাংলাদেশের জমিনে ইসলামী আদর্শ প্রতিষ্ঠা করতে চান। 
তিনি আরো বলেন, নেতাকর্মীদের ওপর জুলুম-নির্যাতন-নিপীড়ন চালিয়ে, মিথ্যা মামলায় গ্রেফতার করে, শহীদ করে জামায়াতে ইসলামীর এই আদর্শিক আন্দোলনকে কখনই দমন করা যাবে না।

About

ব্লগ সংরক্ষাণাগার

আমার ব্লগ তালিকা

Translate

Translate

আমাদের বাংলাদেশ নিউজ 24

সর্বশেষ

অনুসরণকারী