বিজ্ঞাপন দিন

আচ্ছালামু আলাইকুম ওয়ারাহমাতুল্লাহ। ইসলামী ব্যাংক এজেন্ট ব্যাংকিং আউটলেট দক্ষিণগাও, শাহীবাগ বাজার এর পক্ষ থেকে সকল গ্রাহক, শুভাকাংখীসহ সবাইকে জানাই ঈদ উত্তর সালাম ও আন্তরিক শুভেচ্ছা। ব্যাংক খোলা এবং যথারীতি ব্যাংকিং কার্যক্রম চলছে। এই গ্রুপে যারা আছেন তাদের মাধ্যমে সংশ্লিষ্ট এলাকার এলাকারসকলকে ইসলামী ব্যাংকের মাধ্যমে বিদেশ থেকে রেমিটপন্স পাঠানোর আহবান জানাচ্ছি। ঢাকার সবুজবাগ থানার রাজারবাগ, কুসুমবাগ, দক্ষিনগাও, শাহীবাগ, মানিকদিয়া, বাইকদিয়া, নন্দিপাড়াসহ সকল এলাকার গ্রাহক, শুভাকাংখী, শুভানুধ্যায়ীদের প্রদত্ত মোবাইল নাম্বারে যোগাযোগ করার অনুরোধ করা হলোঃ ০১৭১১-৪৫৮১৫১, ০১৭০০৯২৫২৪১:b>ইসলামী ব্যাংক এজেন্ট ব্যাংকিং আউটলেট দক্ষিণগাও, শাহীবাগ বাজার

বুধবার, ২১ অক্টোবর, ২০২০

আলহাজ্ব মোহাম্মদ সোলাইমান সওদাগরের মৃত্যুতে শোক প্রকাশ

আমাদের বাংলাদেশ নিউজ 24 ডেস্কঃ সাতকানিয়া চিব্বাড়ির কৃতি সন্তান, চিব্বাড়ী মহিলা আলিম মাদরাসা,বায়তুশ শরফ শাহ জব্বারিয়া হেফজ খানা ও এতিমখানার প্রতিষ্ঠাতা,মধুবনের স্বত্বাধিকারী আলহাজ্ব মোহাম্মদ সোলাইমান সওদাগর চিকিৎসাধীন অবস্থায় ঢাকার একটি বেসরকারি হাসপাতালে গত রাত ১.৩০ মিনিটে ইন্তেকাল করেছেন।ইন্নালিল্লাহি ওয়াইন্না ইলাইহি রাজিউন। 

তার মৃত্যুতে তামাকুমন্ডি লেইন বনিক সমিতির দ্বিবার্ষিক নির্বাচনে ক্রীড়া ও সাংস্কৃতিক সম্পাদক পদ প্রার্থী  জনাব মোঃ ইদ্রিস চৌধুরীসহ  র্বিভিন্ন সামাজিক সংগঠন ও ব্যক্তি শোক প্রকাশ করে বিবৃতি প্রদান করেছেন।

 বিবৃতি দাতাগণ মরহুমের রূহের মাগফেরাত কামনা করেছেন এবং মরহুমের  শোকহত পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা জানিয়েছেন।

শনিবার, ১৭ অক্টোবর, ২০২০

নিখিল বিশ্ব কি ও কেন


১. সমগ্র বিশ্বজাহানের মালিক ও আইনদাতা:

যেহেতু আল্লাহ্‌ ব্যতীত নিখিল সৃষ্টির কোন ইলাহ নাই এবং নিখিল বিশ্বের সর্বত্র আল্লাহ্‌র প্রবর্তিত প্রাকৃতিক আইনসমূহ একমাত্র তাঁহারই বিচক্ষণতা, শ্রেষ্ঠত্ব ও সার্বভৌমত্বের সাক্ষ্য দান করিতেছে।
মহান আল্লাহর ঘোষনা:

إِنَّ رَبَّكُمُ اللَّهُ الَّذِى خَلَقَ السَّمٰوٰتِ وَالْأَرْضَ فِى سِتَّةِ أَيَّامٍ ثُمَّ اسْتَوٰى عَلَى الْعَرْشِ يُغْشِى الَّيْلَ النَّهَارَ يَطْلُبُهُۥ حَثِيثًا وَالشَّمْسَ وَالْقَمَرَ وَالنُّجُومَ مُسَخَّرٰتٍۭ بِأَمْرِهِۦٓ ۗ أَلَا لَهُ الْخَلْقُ وَالْأَمْرُ ۗ تَبَارَكَ اللَّهُ رَبُّ الْعٰلَمِينَ
প্রকৃতপক্ষে আল্লাহই তোমাদের রব, যিনি আকাশ ও পৃথিবী ছয় দিনে সৃষ্টি করেছেন। তারপর তিনি নিজের কর্তৃত্বের আসনে সমাসীন হন। তিনি রাত দিয়ে দিনকে ঢেকে দেন তারপর রাতের পেছনে দিন দৌড়িয়ে চলে আসে। তিনি সূর্য, চন্দ্র ও তারকা রাজী সৃষ্টি করেন। সবাই তাঁর নির্দেশের আনুগত। জেনে রাখো, সৃষ্টি তারই এবং নির্দেশও তাঁরই। আল্লাহ বড়ই বরকতের অধিকারী। তিনি সমগ্র বিশ্বজাহানের মালিক ও প্রতিপালক। (সূরা আল-আরাফ ৫৪)

لَهُۥ مَا فِى السَّمٰوٰتِ وَمَا فِى الْأَرْضِ وَمَا بَيْنَهُمَا وَمَا تَحْتَ الثَّرٰى
যা কিছু পৃথিবীতে ও আকাশে আছে, যা কিছু পৃথিবী ও আকাশের মাঝখানে আছে এবং যা কিছু ভূগর্ভে আছে সবকিছুর মালিক তিনিই। ( সূরা ত্ব-হা ৬)

سَبَّحَ لِلَّهِ مَا فِى السَّمٰوٰتِ وَمَا فِى الْأَرْضِ ۖ وَهُوَ الْعَزِيزُ الْحَكِيمُ
আসমান ও যমীনে যা কিছু আছে তা সবই আল্লাহর তাসবীহ করেছে। তিনি মহা- পরাক্রমশালী ও মহাজ্ঞানী।(সূরা সফ ১)

তিনি এ দুনিয়াকে অস্তিত্বশীল করার পর এর সাথে সম্পর্কচ্ছেদ করে কোথাও বসে যাননি। বরং কার্যত তিনিই সারা বিশ্ব-জাহানের ছোট বড় প্রত্যেকটি বস্তুর ওপর কর্তৃত্ব করছেন। পরিচালনা ও শাসন কর্তৃত্বের যাবতীয় ক্ষমতা কার্যত তাঁরই হাতে নিবদ্ধ। প্রতিটি বস্তু তাঁর নির্দেশের অনুগত। ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র বালুকণাও তাঁর নির্দেশ মেনে চলে। প্রতিটি বস্তু ও প্রাণীর ভাগ্যই চিরন্তনভাবে তাঁর নির্দেশের সাথে যুক্ত। যে মৌলিক বিভ্রান্তিটির কারণে মানুষ কখনো শিরকের গোমরাহীতে লিপ্ত হয়েছে, আবার কখনো নিজেকে স্বাধীন ক্ষমতা সম্পন্ন ঘোষণা করার মতো ভ্রান্ত পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে, কুরআন এভাবে তার মূলোৎপাটন করতে চায়। বিশ্ব-জাহানের পরিচালনা ও ব্যবস্থাপনা থেকে আল্লাহকে কার্যত সম্পর্কহীন মনে করার অনিবার্য ফল দাঁড়ায় দু’টি। মানুষ নিজের ভাগ্যকে অন্যের হাতে বন্দি মনে করবে এবং তার সামনে মাথা নত করে দেবে অথবা নিজেকেই নিজের ভাগ্যের নিয়ন্তা মনে করবে এবং নিজেকে সর্বময় কর্তৃত্বশালী স্বাধীন সত্তা মনে করে কাজ করে যেতে থাকবে।

আর বিশ্ব-জাহানের এ ব্যবস্থাপনা একটি পূর্ণাঙ্গ কেন্দ্রীয় ব্যবস্থা বিশেষ, যেখানে ঐ একক সত্তা, সমস্ত ক্ষমতা ও কর্তৃত্বের অধিকারী। কাজেই এ ব্যবস্থার মধ্যে যে ব্যক্তি বা দল নিজের বা অন্য কারুর আংশিক বা পূর্ণ কর্তৃত্বের দাবীদার হয়, সে নিজেকে নিছক প্রতারণার জালে আবদ্ধ করে রেখেছে। তাছাড়া এ ব্যবস্থার মধ্যে অবস্থান করে মানুষ পক্ষে ঐ একক সত্তাকে একই সাথে ধর্মীয় অর্থেও একমাত্র মাবুদ এবং রাজনৈতিক ও সামাজিক-সাংস্কৃতিক অর্থেও একমাত্র শাসক হিসেবে মেনে নেয়া ছাড়া দ্বিতীয় কোন সঠিক দৃষ্টিভংগী ও কর্মনীতি হতে পারে না।

২. মানুষ আল্লাহর প্রতিনিধি :
তাই আল্লাহ্‌ মানুষকে তাহার প্রতিনিধিত্বের বা খিলাফতের দায়িত্ব সহকারে পৃথিবীতে প্রেরণ করিয়াছেন এবং মানব রচিত মতবাদের অনুসরণ ও প্রবর্তন না করিয়া একমাত্র আল্লাহ্‌ প্রদত্ত জীবন বিধানের ও প্রবর্তন করাকেই মানুষের দায়িত্ব ও কর্তব্য নির্ধারণ করিয়া দিয়াছেন।
মহান আল্লাহর ঘোষনা:

وَإِذْ قَالَ رَبُّكَ لِلْمَلٰٓئِكَةِ إِنِّى جَاعِلٌ فِى الْأَرْضِ خَلِيفَةً ۖ قَا
আবার সেই সময়ের কথা একটু স্মরণ কর যখন তোমাদের রব ফেরেশতাদের বলেছিলেন, “আমি পৃথিবীতে একজন খলীফা- প্রতিনিধি নিযুক্ত করতে চাই।” - (সূরা-বাক্বারাহ ৩০)

وَهُوَ الَّذِى جَعَلَكُمْ خَلٰٓئِفَ الْأَرْضِ وَرَفَعَ بَعْضَكُمْ فَوْقَ بَعْضٍ دَرَجٰتٍ لِّيَبْلُوَكُمْ فِى مَآ ءَاتٰىكُمْ ۗ إِنَّ رَبَّكَ سَرِيعُ الْعِقَابِ وَإِنَّهُۥ لَغَفُورٌ رَّحِيمٌۢ
তিনিই তোমাদের করেছেন দুনিয়ার প্রতিনিধি এবং যা কিছু তোমাদের দিয়েছেন তাতে তোমাদের পরীক্ষার উদ্দেশ্যে তোমাদের কাউকে অন্যের ওপর অধিক মর্যাদা দান করেছেন। নিঃসন্দেহে তোমার রব শাস্তি দেবার ব্যাপারে অতি তৎপর এবং তিনি অত্যন্ত ক্ষমাশীল ও করুণাময়। (সূরা আনয়াম ১৬৫)

وَعَدَ اللَّهُ الَّذِينَ ءَامَنُوا مِنكُمْ وَعَمِلُوا الصّٰلِحٰتِ لَيَسْتَخْلِفَنَّهُمْ فِى الْأَرْضِ كَمَا اسْتَخْلَفَ الَّذِينَ مِن قَبْلِهِمْ
আল্লাহ প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন, তোমাদের মধ্য থেকে যারা ঈমান আনবে ও সৎকাজ করবে তাদেরকে তিনি পৃথিবীতে ঠিক তেমনিভাবে খিলাফত দান করবেন যেমন তাদের পূর্বে অতিক্রান্ত লোকদেরকে দান করেছিলেন,- (সূরা আন্-নূর ৫৫)

يٰدَاوُۥدُ إِنَّا جَعَلْنٰكَ خَلِيفَةً فِى الْأَرْضِ فَاحْكُم بَيْنَ النَّاسِ بِالْحَقِّ وَلَا تَتَّبِعِ الْهَوٰى فَيُضِلَّكَ عَن سَبِيلِ اللَّهِ ۚ
(আমি তাঁকে বললাম) “হে দাউদ! আমি তোমাকে পৃথিবীতে প্রতিনিধি করেছি, কাজেই তুমি জনগণের মধ্যে সত্য সহকারে শাসন কর্তৃত্ব পরিচালনা করো - -( সূরা সোয়াদ ২৬)

অথাৎ : সমস্ত মানুষ পৃথিবীতে আল্লাহর প্রতিনিধি। এ অর্থে আল্লাহ‌ তাঁর সৃষ্টিলোকের বহু জিনিস মানুষের কাছে আমানত রেখেছেন এবং তা ব্যবহার করার স্বাধীন ক্ষমতা তাকে দান করেছেন।
দুই, আল্লাহ‌ নিজেই এ প্রতিনিধিদের মধ্যে মর্যাদার পার্থক্য সৃষ্টি করেছেন। কারোর আমানতের গণ্ডী ব্যাপক আবার কারোর সীমাবদ্ধ। কাউকে বেশী জিনিস ব্যবহারের ক্ষমতা দিয়েছেন, কাউকে দিয়েছেন কম। কাউকে বেশী কর্মক্ষমতা দিয়েছেন, কাউকে কম। আবার কোন কোন মানুষকে কোন কোন মানুষের কাছে আমানত রেখেছেন।
তিন, এ সবকিছুই আসলে পরীক্ষার বিষয়বস্তু। সারা জীবনটাই একটি পরীক্ষা ক্ষেত্র। আল্লাহ‌ যাকে যা কিছুই দিয়েছেন তার মধ্যেই তার পরীক্ষা। সে কিভাবে আল্লাহর আমানত ব্যবহার করলো? আমানতের দায়িত্ব কতটুকু অনুধাবন করলো এবং তার হক আদায় করলো? কতটুকু নিজের যোগ্যতা বা অযোগ্যতার স্বাক্ষর রাখলো? এ পরীক্ষার ফলাফলের ওপর নির্ভর করে জীবনের অন্যান্য পর্যায়ে মানুষের মর্যাদা নির্ধারণ।

৩. নবী-রাসূলগণকে পৃথিবীতে প্রেরণ:

আল্লাহ্‌ তাঁহার প্রদত্ত জীবন বিধানকে বাস্তব রূপদানের নির্ভুল পদ্ধতি শিক্ষাদান ও উহাকে বিজয়ী আদর্শ রূপে প্রতিষ্ঠিত করিবার উদ্দেশ্যে যুগে যুগে নবী- রাসূলগণকে পৃথিবীতে প্রেরণ করিয়াছেন।
পবিত্র কোরআনে আল্লাহ এরশাদ করেন:

لَقَدْ مَنَّ اللَّهُ عَلَى الْمُؤْمِنِينَ إِذْ بَعَثَ فِيهِمْ رَسُولًا مِّنْ أَنفُسِهِمْ يَتْلُوا عَلَيْهِمْ ءَايٰتِهِۦ وَيُزَكِّيهِمْ وَيُعَلِّمُهُمُ الْكِتٰبَ وَالْحِكْمَةَ وَإِن كَانُوا مِن قَبْلُ لَفِى ضَلٰلٍ مُّبِينٍ
আসলে ঈমানদারদের মধ্যে তাদেরই মধ্য থেকে একজন নবী পাঠিয়ে আল্লাহ‌ মুমিনদের প্রতি অনুগ্রহ করেছেন। সে তাঁর আয়াত তাদেরকে শোনায়, তাদের জীবনকে পরিশুদ্ধ ও সুবিন্যস্ত করে এবং তাদেরকে কিতাব ও জ্ঞান শিক্ষা দেয়। অথচ এর আগে এই লোকেরাই সুস্পষ্ট গোমরাহীতে লিপ্ত ছিল। (সূরা-ইমরান ১৬৪)

قُلْ يٰٓأَيُّهَا النَّاسُ إِنِّى رَسُولُ اللَّهِ إِلَيْكُمْ جَمِيعًا الَّذِى لَهُۥ مُلْكُ السَّمٰوٰتِ وَالْأَرْضِ ۖ لَآ إِلٰهَ إِلَّا هُوَ يُحْىِۦ وَيُمِيتُ ۖ فَـَٔامِنُوا بِاللَّهِ وَرَسُولِهِ النَّبِىِّ الْأُمِّىِّ الَّذِى يُؤْمِنُ بِاللَّهِ وَكَلِمٰتِهِۦ وَاتَّبِعُوهُ لَعَلَّكُمْ تَهْتَدُونَ
হে মুহাম্মাদ! বলে দাও, “হে মানব সম্প্রদায়, আমি তোমাদের জন্য সেই আল্লাহর রসূল হিসেবে এসেছি, যিনি পৃথিবী ও আকাশ মণ্ডলীর সার্বভৌম কর্তৃত্বের অধিকারী। তিনি ছাড়া আর কোন ইলাহ নেই। তিনিই জীবন দান করেন এবং তিনিই মৃত্যু ঘটান। কাজেই ঈমান আনো আল্লাহর প্রতি এবং তার প্রেরিত সেই নিরক্ষর নবীর প্রতি, যে আল্লাহ‌ ও তাঁর বাণীর প্রতি ঈমান আনে এবং তার আনুগত্য করে। আশা করা যায়, এভাবে তোমরা সঠিক পথ পেয়ে যাবে।
(সূরা আরাফ ১৫৮)

إِنَّآ أَوْحَيْنَآ إِلَيْكَ كَمَآ أَوْحَيْنَآ إِلٰى نُوحٍ وَالنَّبِيِّۦنَ مِنۢ بَعْدِهِۦ ۚ وَأَوْحَيْنَآ إِلٰىٓ إِبْرٰهِيمَ وَإِسْمٰعِيلَ وَإِسْحٰقَ وَيَعْقُوبَ وَالْأَسْبَاطِ وَعِيسٰى وَأَيُّوبَ وَيُونُسَ وَهٰرُونَ وَسُلَيْمٰنَ ۚ وَءَاتَيْنَا دَاوُۥدَ زَبُورًا
হে মুহাম্মাদ! আমি তোমার কাছে ঠিক তেমনিভাবে অহী পাঠিয়েছি, যেমন নূহ ও তার পরবর্তী নবীদের কাছে পাঠিয়ে ছিলাম। আমি ইবরাহীম, ইসমাঈল, ইসহাক, ইয়াকুব ও ইয়াকুব সন্তানদের কাছে এবং ঈসা, আইয়ুব, ইউনুস, হারুন ও সুলাইমানের কাছে অহী পাঠিয়েছি। আমি দাউদকে যবূর দিয়েছি।
(সূরা নিসা ১৬৩)

অর্থাৎ এই সমস্ত পয়গম্বর পাঠাবার একটিই মাত্র উদ্দেশ্য ছিল। সে উদ্দেশ্যটি ছিল এই যে, আল্লাহ‌ মানব জাতির কাছে নিজের দায়িত্ব পূর্ণ করার প্রমাণ পেশ করতে চাইছিলেন। এর ফলে শেষ বিচারের দিনে কোন পথভ্রষ্ট অপরাধী তাঁর কাছে এই ওজর পেশ করতে পারবে না যে, সে জানতো না এবং আল্লাহ‌ যথার্থ অবস্থা সম্পর্কে তাকে অবহিত করার জন্য কোন ব্যবস্থা গ্রহণ করেননি। এই উদ্দেশ্যে আল্লাহ‌ দুনিয়ার বিভিন্ন স্থানে পয়গাম্বর পাঠিয়েছেন এবং কিতাব নাযিল করেছেন। এ পয়গাম্বরগণ অসংখ্য লোকের নিকট সত্যের জ্ঞান পৌঁছিয়ে দিয়েছেন। তাঁরা দুনিয়া থেকে বিদায় নিয়েছেন; কিন্তু এখানে রেখে গেছেন তাঁদের বিভিন্ন কিতাব। মানুষকে পথ দেখাবার জন্য অবশ্যি প্রতি যুগে এ কিতাবগুলোর মধ্য থেকে কোন না কোন কিতাব দুনিয়ায় মওজুদ থেকেছে। এরপর যদি কোন ব্যক্তি গোমরাহ হয়, তাহলে সেজন্য আল্লাহ‌ ও তাঁর পয়গাম্বরকে অভিযুক্ত করা যেতে পারে না। বরং এজন্য ঐ ব্যক্তি নিজেই অভিযুক্ত হবে। কারণ তার কাছে পয়গাম পৌঁছে গিয়েছিল কিন্তু সে তা গ্রহণ করেনি। অথবা সেইসব লোক অভিযুক্ত হবে যারা সত্য-সঠিক পথ জানতোঃ কিন্তু আল্লাহর বান্দাদের গোমরাহীতে লিপ্ত দেখেও তাদেরকে সত্য পথের সন্ধান দেয়নি।

চলবে - - -

বৃহস্পতিবার, ১ অক্টোবর, ২০২০

একটা সিজার মানে একটা মায়ের মৃত্যুর আগ পযর্ন্ত প্রতিবন্ধি হয়ে বেঁচে থাকা

আমাদের বাংলাদেশ নিউজ 24 ডেস্কঃ একটা সিজার মানে বাচ্চা জন্মের পর থেকে একটা মায়ের মৃত্যুর আগ পযর্ন্ত প্রতিবন্ধি হয়ে বেঁচে থাকা।

আরে যাদের নরমালে বেবী হয় তাদের নাড়ি ছেড়া ধন হয়,,,,, আর যাদের সিজার হয় তাদের হয়তো নাড়ি ছেড়া হয়না কিন্তু নাড়ি কাটা ধন হয়।
সিজারে কীসের কষ্ট শুধু পেট কাটে!!! ৭টা পর্দা কেটে বেবীটাকে দুনিয়াতে আনতে হয়।
হয়তোবা সিজার করার আগে এ্যানেসথেসিয়ার জন্য বুঝা যায়না পেট কাটাটা। আধা ঘন্টার ভিতর ৩টা স্ল্যালাইন শেষ হয়।
কিন্তু মোটা সিরিন্জের মেরুদন্ডে দেওয়া এই ইনজেকশনটা সারাজীবন কষ্ট দেয়।
কখনো অবস হয়ে থাকে আবার কখনো বসা থেকে উঠা যায়না,,,,,কাপড় কাচা যায়না,,,,ভারী কিছু উঠানো যায়না তবুও আমরা সব কিছু করি এবং করার চেষ্টা করি। করতেও হবে কারণ আমরা মেয়ে । বিশ্বাস কর যখন অবসের মেয়াদটা চলে যায় তখন একটা গলা কাটা মুরগীর মতো ছটফট করতে হয়।
আপনজন ছেড়ে পোস্ট অপারেটিভ রুমে থাকতে হয় ২৪ ঘন্টায় ২৪ স্যালাইন চলে আর ইনজেকশন কাটা জায়গায় কী যে কষ্ট বলার মতো না,,,, তার সাথে খিচুনি, শরীরের কাপুনি। হাতে ক্যানোলাই স্যালাইন চলছে,,, প্রসাবের রাস্তায় ক্যাথেতার নিথর শরীর থরথর কাঁপছে,,, মাথাটাও ভারী হয়ে আছে তবুও শত কষ্ট উপেক্ষা করে বাচ্চাকে বেস্ট ফিডিং করায়।
তারপর ও বাচ্চার প্রতি টান নেই বলা যায় কী।??????
মৃত্যুকে হার মানিয়ে এসে যদি শুনতে হয় পেট কেটে বাচ্চা হলে কীসের কষ্ট।
যদি শুনতে হয় সিজারিয়ান মায়েদের বাচ্চাদের প্রতি টান নেই কেমন লাগে কথাটা শুনতে। খুব কষ্ট লাগে তখন!

শনিবার, ২৬ সেপ্টেম্বর, ২০২০

রূপগঞ্জে পুলিশের ওপেন হাউজ ডে অনুষ্ঠিত

 

আমাদের বাংলাদেশ নিউজ 24 ডেস্কঃ রূপগঞ্জ-থানা পুলিশের উদ্যোগে শনিবার (২৬ সেপ্টেম্বর) বিকেলে থানা চত্তরে পুলিশের ওপেন হাউজ ডে অনুষ্ঠিত হয়েছে।

থানার ওসি মাহমুদুল হাসানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত উক্ত অনুস্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন নারায়ণগঞ্জ জেলা অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ) টি.এম. মোশাররফ হোসেন। অন্যান্যের মধ্যে আরো উপস্থিত  ছিলেন ’গ’ সার্কেলের এসপি মাহিন ফরাজি, ওসি তদন্ত এইচ. এম. জসিম উদ্দিন প্রমূখ।

সভায় মাদক, সন্ত্রাস, চাঁদাবাজি, বাল্যবিবাহসহ আইনশৃংখলা বিষয়ে জনসচেতনতা তৈরি ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে পুলিশের ভূমিকা তুলে ধরা হয়। 

সভায় বিভিন্ন জনপ্রতিনিধি ও সাধারণ মানুষ প্রশ্ন করেন। এ সময় উপস্থিত ছিলেন, মুড়াপাড়া ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান তোফায়েল আহমেদ আলমাছ, কাউন্সিলর আনোয়ার হোসেন, কায়েতপাড়া ইউনিয়ন পরিষভদের প্যানেল চেয়ারম্যান মোঃ বজলুর রহমান, রূপগঞ্জ উপজেলা যুব মহিলা লীগের সভাপতি ফেরদৌসী আক্তার রিয়া প্রমূখ। 

পুলিশ জানায়, রূপগঞ্জ উপজেলার মধ্যে সবচেয়ে বেশি অপরাধ সংগঠিত হয় কায়েতপাড়া ইউনিয়নে। এক জড়িপে এ তথ্য জানা গেছে। এ ছাড়া দাউদপুর ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন  সুষ্ঠু করতে পুলিশ তৎপর রয়েছে বলেও জানান বক্তারা।

সৌজন্যেঃ সংবাদচর্চা

শুক্রবার, ১৮ সেপ্টেম্বর, ২০২০

আল্লামা শাহ আহমদ শফীর ইন্তেকালে বাংলাদেশ জাতীয় মুফাস্সির পরিষদ’র গভীর শোক প্রকাশ

 

আমাদের বাংলাদেশ নিউজ 24 ডেস্কঃ উপমহাদেশের অন্যতম শ্রেষ্ঠ আলেমে দ্বীন, হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের মুহতারাম আমীর। লাখো আলেমের ওস্তাদ, আল্লামা শাহ আহমদ শফী (রহঃ) আজ সন্ধ্যা ৬.২০টায় ঢাকার আজগর আলী হাসপাতালে ইন্তিকাল করেছেন। "ইন্নালিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন"।

তার ইন্তেকালে বাংলাদেশ জাতীয় মুফাচ্ছির পরিষদ চট্টগ্রাম বিভাগ গভীর শোক প্রকাশ করে মুফতি মাওলানা ফারুক ছিদ্দিকী,মোহাম্মদ, সভাপতি মোহছেন আল হোসাইনী-সেক্রেটারী, এক যৌথ বিবৃতি দিয়েছেন। বিবৃতিতে নেতৃবৃন্দ গভীর শোক প্রকাশ করেন, মরহুমের আত্মার মাগফিরাত কামনা করেন এবং শোকাহত পরিবারের প্রতি সমবেদনা জ্ঞাপন করেন। বিবৃতিতে আরো উল্লেখ করেন, আল্লাহ তায়ালা মরহুমের ভূলত্রুটি গুলো ক্ষমা করুন। দ্বীনের জন্য তাঁর খেদমতকে কবুল করুন। তাঁকে জান্নাতুন ফেরদৌসের আ'লা মাকাম দান করুন।

বৃহস্পতিবার, ১৭ সেপ্টেম্বর, ২০২০

মুসলিম বিজ্ঞানীদের আড়াল করার চক্রান্ত : ল্যাটিন অনুবাদে নাম পরিবর্তন।

 

আমাদের বাংলাদেশ নিউজ 24 ডেস্কঃ স্বর্ণযুগে মুসলিম বিজ্ঞানীদের সবগুলাে বই ল্যাটিনসহ অন্যান্য ভাষায় অনুবাদ করা হয়। তবে অনূদিত গ্রন্থগুলােতে পরিকল্পিতভাবে মুসলিম বিজ্ঞানীদের নামও ল্যাটিনে অনুবাদ করা হয়। অন্য যে কোনাে ভাষায় কোনাে লেখকের বই অনুবাদ করার সময় কেবলমাত্র বইয়ের বিষয়বস্তু অনুবাদ করা হয়। কখনাে লেখকের নাম অনুবাদ করা হয়। । লেখকের নাম অনুবাদ করার এমন অদ্ভুত উদাহরণ ইতিহাসে আর কোথাও খুঁজে পাওয়া যায় না। পৃথিবীর সব দেশের কবি, সাহিত্যিক, বিজ্ঞানী ও দার্শনিকদের নাম অক্ষত রেখে অনুবাদ কর্ম সম্পাদন করা হলেও স্বর্ণযুগের মুসলিম দার্শনিক ও বিজ্ঞানীদের নাম অক্ষত রাখা হয়নি।

ল্যাটিন ভাষায় মুসলিম পণ্ডিত ও বিজ্ঞানীদের নাম বিকৃত করার এই হীন প্রচেষ্টা অধ্যাপক সারটনের উক্তিকে সত্য বলে প্রমাণ করছে। আরবী গ্রন্থগুলাে ইউরােপীয় ভাষায় অনুবাদ করা হলেও গ্রন্থকারের ল্যাটিন নাম দেখে বুঝার উপায় নেই যে, তারা মুসলমান। প্রত্যেক মুসলমান গ্রন্থকারের নাম আরবীতে লম্বাচুরা হলেও ল্যাটিন ভাষায় তাদের নাম দেয়া হয়েছে, একটি মাত্র শব্দে।
ইবনে সিনার পুরাে নাম আবু আলী আল-হুসাইন ইবনে আবদুল্লাহ ইবনে সিনা। কিন্তু ল্যাটিন ভাষায় তার নাম ‘আভিসিনা’ (Avicenna)।
বীজগণিতের জনক খাওয়ারিজমির পূর্ণ নাম আবু আবদুল্লাহ মােহাম্মদ ইবনে মুসা আল-খাওয়ারিজমি। ল্যাটিন ভাষায় তার নাম ‘এলগােরিজম’ (Algorism)।
ইবনে বাজ্জাহর পুরাে নাম আবু বকর মােহাম্মদ ইবনে ইয়াহিয়া ইবনে আল-সায়িগ। কিন্তু তার ল্যাটিন নাম ‘অ্যাভামপেস (Avempace)।
আল-ফরগানি আবুল আব্বাস আহমদ ইবনে মােহাম্মদ ইবনে কাছির হলাে আলফরগানির পূর্ণ নাম। কিন্তু ল্যাটিনে তার নাম ‘আলফ্রাগানাস’ (Alfraganus)।
পৃথিবীর প্রথম মানচিত্র অঙ্কনকারী আল-ইদ্রিসীর পূর্ণ নাম আবু আবদুল্লাহ মােহাম্মদ ইবনে মােহাম্মদ ইবনে আবদুল্লাহ ইবনে ইদ্রিস আল-শরীফ আল-ইদ্রিসী। কিন্তু ল্যাটিন ভাষায় তিনি ‘দ্রেসেস’ (Dreses) নামে পরিচিত।
শুধু ইবনে সিনা, খাওয়ারিজমি, ইবনে বাজ্জাহ, আল-ফরগানি কিংবা আল-ইদ্রিসী নয়, সব মুসলিম বিজ্ঞানীর প্রতি ল্যাটিন ইউরােপ এ অবিচার করেছে।
মুসলিম বিজ্ঞানীদের শুধু নামের বিকৃতি নয়, খােদ তাদের পরিচয় নিয়েও বিভ্রান্তি সৃষ্টি করা হচ্ছে। তাদের কারাে কারাে ক্ষেত্রে বলা হচ্ছে, তারা আদৌ মুসলমান নন, জরােস্ত্রীয় অথবা ইহুদী কিংবা ইউরােপীয়। রসায়নের জনক জাবির হাইয়ান এমন এক অপপ্রচারের শিকার। ইউরােপের কোনাে কোনাে ঐতিহাসিক দাবি করছেন, জাবির ইবনে হাইয়ান ছাড়া আরেকজন জাবির ছিলেন। তার নাম ‘জিবার’ এবং এ জিবার হলেন ইউরােপীয় ।
বীজগণিতের জনক আল-খাওয়ারিজমি সম্পর্কেও অনুরূপ কথা বলা হচ্ছে। কোনাে কোনাে ঐতিহাসিক তাকে জরােস্ত্রীয় হিসাবে দাবি করছেন। খাওয়ারিজমির বিপরীতে আরেকজন ‘খাওয়ারিজমি’র অস্তিত্ব আবিষ্কার করা হয়েছে। বলা হচ্ছে দ্বিতীয় খাওয়ারিজমি হলেন গণিতে প্রথম শূন্য ব্যবহারকারী।
পৃথিবীর ব্যাস নির্ণয়কারী আলফরগানিও ষড়যন্ত্রের শিকার। তার পরিচয় নিয়ে ধুম্রজাল সৃষ্টি করে বলা হচ্ছে, ফরগানি হলেন দু’জন।
এমনি আরাে কতভাবে বিজ্ঞানে মুসলমানদের অবদান অস্বীকার অথবা তাদের অবদানকে খাটো করার হীন চক্রান্ত চালানাে হচ্ছে তার শেষ নেই। আমরা সবাই একনামে কোপার্নিকাস, গ্যালিলিও ও নিউটনের মতাে ইউরােপীয় বিজ্ঞানীদের চিনি। চিনি না কেবল তাদের গুরু ইবনে বাজ্জাহ, ইবনে রুশদ অথবা নাসিরুদ্দিন তুসিকে। আমরা না চিনলেও ইতিহাস থেকে তারা হারিয়ে যাবেন না। বিজ্ঞান যতদিন টিকে থাকবে মুসলিম বিজ্ঞানীরাও ততদিন ইতিহাসের পাতায় অমর হয়ে থাকবেন ।
– সাহাদত হোসেন খান

বুধবার, ১৬ সেপ্টেম্বর, ২০২০

মুঘল সম্রাট আওরঙ্গজেব কি সত্যিই হিন্দু বিদ্বেষী ছিলেন ?

 

আমাদের বাংলাদেশ নিউজ 24 ডেস্কঃ মুঘল সম্রাটদের মধ্যে কেবল একজনই ভারতীয়দের মধ্যে স্থান করে নিতে ব্যর্থ হয়েছেন - তিনি আলমগীর আওরঙ্গজেব।

সাধারণ মানুষের মধ্যে আওরঙ্গজেবের ইমেজ হলো একজন ধর্মীয় গোঁড়া ব্যক্তি হিসেবে, যিনি হিন্দুদের ঘৃণা করতেন আর যিনি নিজের রাজনৈতিক লক্ষ্য অর্জনে এমনকি নিজের বড় ভাই দারা শিকোহ'কে পর্যন্ত রেহাই দেননি।

আর তিনিই সেই ব্যক্তি যিনি বৃদ্ধ পিতাকে আগ্রার একটি দুর্গে তাঁর জীবনের শেষ সাড়ে সাত বছর বন্দী করে রেখেছিলেন।

সম্প্রতি পাকিস্তানী নাট্যকার শাহীদ নাদীম লিখেছেন যে ভারত ভাগের বীজ সত্যিকার অর্থে সেদিনই বপন করা হয়েছিল, যেদিন আওরঙ্গজেব তাঁর ভাই দারাকে পরাজিত করেছিলেন।

জওহরলাল নেহরুও ১৯৪৬ সালের প্রকাশিত তাঁর বই 'ডিসকভারি অব ইন্ডিয়া'তে আওরঙ্গজেবকে একজন গোঁড়া ব্যক্তি হিসেবেই চিহ্নিত করেছেন।

তবে মার্কিন ইতিহাসবিদ অড্রে ট্রাশকা তাঁর বই 'আওরঙ্গজেব - দ্যা ম্যান অ্যান্ড দ্যা মিথ' বইয়ে লিখেছেন যে আওরঙ্গজেব হিন্দুদের ঘৃণা করতেন আর তাই মন্দির ধ্বংস করেছেন বলে যে দাবী করা হয়, তা ভুল।

ইউনিভার্সিটি অব নিউয়ার্কে দক্ষিণ এশিয়ার ইতিহাস পড়ান ট্রাশকা।

তিনি লিখেছেন, ব্রিটিশদের শাসনের সময় তাদের 'ডিভাইড অ্যান্ড রুল' অর্থাৎ জনগোষ্ঠীকে 'বিভাজন আর শাসন করো' নীতির আওতায় ভারতে হিন্দু বর্ণবাদী ধারণা উস্কে দেয়ার কাজটি করেছিলেন যেসব ইতিহাসবিদরা, তারাই মূলত: আওরঙ্গজেবের এমন একটি ইমেজ তৈরির জন্য দায়ী।

তিনি তাঁর বইয়ে আরও বলেছেন যে আওরঙ্গজেবের শাসন যদি ২০ বছর কম হতো, তাহলে হয়তো আধুনিক ইতিহাসবিদরা তাকে অন্যভাবে দেখতেন।

ভারতে ৪৯ বছরের শাসন

দেড় কোটি মানুষকে ৪৯ বছর ধরে শাসন করেছিলেন আওরঙ্গজেব। তাঁর রাজত্বকালে মুঘল সাম্রাজ্য প্রথমবারের মতো এতটা বিস্তৃত হয়েছিল যে প্রায় পুরো উপমহাদেশ তাঁর শাসনের করায়ত্ত হয়েছিল।

ট্রাশকা লিখেছেন যে আওরঙ্গজেবকে দাফন করা হয়েছিল মহারাষ্ট্রের খুলদাবাদে একটি কাঁচা কবরে।

ঠিক এর বিপরীতে, হুমায়ূনের জন্য দিল্লিতে একটি লাল পাথরের মকবরা তৈরি করা হয়েছিল, আর সম্রাট শাহ জাহানকে দাফন করা হয়েছিল জাঁকজমকপূর্ণ তাজমহলে।

ট্রাশকার মতে, "এটা একটা ভুল ধারণা যে আওরঙ্গজেব হাজার হাজার হিন্দু মন্দির ধ্বংস করেছিলেন। ডজনখানের মতো মন্দির তাঁর সরাসরি আদেশে ভাঙ্গা হয়েছিল। তাঁর সময়ে এমন কোন ঘটনা ঘটেনি যাকে হিন্দুদের গণহত্যা হিসেবে বর্ণনা করা যেতে পারে। সত্যিকার অর্থে আওরঙ্গজেব হিন্দুদেরকে সরকারের অনেক গুরুত্বপূর্ণ পদে বসিয়েছিলেন।"

আওরঙ্গজেব ও সাহিত্য

আওরঙ্গজেবের জন্ম হয়েছিল ১৬১৮ সালের ৩রা নভেম্বর। তখন সম্রাট ছিলেন তাঁর পিতামহ জাহাঙ্গীর।

তিনি ছিলেন শাহ জাহানের তৃতীয় পুত্র। শাহ জাহান ছিলেন চার ছেলের পিতা, আর এদের সবার মা ছিলেন মমতাজ মহল। ইসলাম ধর্মীয় সাহিত্য চর্চার বাইরে তিনি তুর্কি সাহিত্য এবং বিভিন্ন পাণ্ডুলিপি পড়েছেন।

অন্যসব মুঘল সম্রাটদের মতোই, আওরঙ্গজেব ছোটবেলা থেকেই হিন্দিতে অনর্গল কথা বলতে পারতেন।

একেবারে তরুণ বয়স থেকে শাহ জাহানের চার ছেলেই মুঘল সাম্রাজ্যের সিংহাসনে বসার চেষ্টা চালাচ্ছিলেন। মুঘলরা মধ্য এশিয়ার ওই প্রথায় বিশ্বাস করতেন যে রাজনৈতিক ক্ষমতা পাওয়ার ক্ষেত্রে সব ভাইদেরই সমান অধিকার রয়েছে।

শাহ জাহান চেয়েছিলেন বড় ছেলে দারা শিকোহ তাঁর উত্তরাধিকারী হোক। কিন্তু আওরঙ্গজেব বিশ্বাস করতেন মুঘল সালতানাতে তাঁর চেয়ে যোগ্য আর কেউ নেই।

অড্রে ট্রাশকা দারা শিকোহর বিয়ের পরের একটি ঘটনার উল্লেখ করেছেন।

শাহ জাহান বিয়ের উৎসব উদযাপন করার অংশ হিসেবে সুধাকর ও সুরাত-সুন্দর নামের দুই হাতির মধ্যে লড়াইয়ের আয়োজন করেন। মুঘলরা এ ধরণের বিনোদন খুব পছন্দ করতো।

পাশেই আওরঙ্গজেব একটি ঘোড়ায় বসেছিলেন। হঠাৎ সুধাকর ঘোড়াটির দিকে ছুটে যায়। তখন আওরঙ্গজেব হাতিটির কপালে একটি বর্শার আঘাত হানেন, যা সুধাকরকে আরও ক্রুদ্ধ করে তোলে।

দারা শিকোহর সঙ্গে শত্রুতা

হাতিটি এত জোরে ঘোড়াটিকে ধাক্কা দেয় যে আওরঙ্গজেব মাটিতে পড়ে যান। ঘটনাটি যারা দেখছিলেন, তাদের মধ্যে ছিলেন তাঁর ভাই শুজা ও রাজা জয় সিংহ। তাঁরা আওরঙ্গজেবকে বাঁচাতে চেষ্টা করেন।

তবে এরই মধ্যে অন্য হাতিটি সুধাকরের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে সক্ষম হয় এবং তাকে লড়াইয়ে ফিরিয়ে আনে।

শাহ জাহানের দরবারের রাজকবি আবু তালিব তাঁর কবিতায় ঘটনাটি উল্লেখ করেছেন।

আরেকজন ইতিহাসবিদ, আকিল খাসিন রাজি, তাঁর বই 'ওয়াকিতাত-ই-আলমগীরী'তে লিখেছেন যে পুরো ঘটনার সময় দারা শিকোহ পেছনে দাঁড়িয়ে ছিলেন, কিন্তু আওরঙ্গজেবকে বাঁচাতে কোন চেষ্টাই করেননি।

শাহ জাহানের দরবারের ইতিহাসবিদরাও এই ঘটনার কথা উল্লেখ করেছেন এবং ১৬১০ সালের একটি ঘটনার সঙ্গে এর তুলনা করেছেন - যখন শাহ জাহান তাঁর পিতা জাহাঙ্গীরের সামনে একটি সাংঘাতিক বাঘকে বশ মানিয়েছিলেন।

আরেকজন ইতিহাসবিদ ক্যাথরিন ব্রাউন 'আওরঙ্গজেব কি সঙ্গীতের ওপরে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছিলেন?' - শীর্ষক একটি নিবন্ধ লিখেছেন।

তাতে তিনি উল্লেখ করেছেন যে আওরঙ্গজেব একবার তাঁর চাচীর সঙ্গে দেখা করতে বুরহানপুর গিয়েছিলেন। আর সেখানেই তিনি তাঁর ভালোবাসার মানুষ হিরাবাঈ জাইনাবাদীকে খুঁজে পেয়েছিলেন।

হিরাবাঈ ছিলেন একজন গায়িকা ও নৃত্যশিল্পী।
আওরঙ্গজেব তাকে প্রথম দেখেছিলেন একটি গাছ থেকে আম পারার সময়ে।

তাকে দেখে আওরঙ্গজেব এতটাই দিওয়ানা হন যে তিনি মদ না খাওয়ার প্রতিজ্ঞা ভাঙ্গতেও সে মূহুর্তে রাজী ছিলেন। তবে আওরঙ্গজেব যখন মদের গ্লাসে চুমুক দিতে যাচ্ছেন, ঠিক ওই সময়ে হিরাবাঈ তাকে থামান।

তাদের এই প্রেম কাহিনী মাত্র এক বছরের মধ্যেই শেষ হয়ে যায় - হীরাবাঈয়ের মৃত্যুর সঙ্গেই।

তাকে আওরঙ্গাবাদে দাফন করা হয়।

দারা শিকোহ যদি সম্রাট হতেন

ভারতীয় ইতিহাসের একটি বড় প্রশ্ন হলো কট্টর আওরঙ্গজেবের বদলে যদি উদারপন্থী দারা শিকোহ ৬ষ্ঠ মুঘল সম্রাট হতেন, তাহলে কী হতো?

অড্রে ট্রাশকার উত্তর: "বাস্তবতা হলো মুঘল সাম্রাজ্য চালানো কিংবা জয় করার ক্ষমতা দারা শিকোহ'র ছিলো না। ভারতের সিংহাসন নিয়ে চার ভাইয়ের মধ্যে যখন প্রতিযোগিতা চলছিলো, তখন অসুস্থ্য সম্রাটের সমর্থন ছিলো দারার প্রতি। কিন্তু আওরঙ্গজেবের মতো রাজনৈতিক প্রজ্ঞা তাঁর ছিলো না।"

১৬৫৮ সালে আওরঙ্গজেব ও তাঁর ছোট ভাই মুরাদ আগ্রা দুর্গে অবরোধ সৃষ্টি করেন। তাদের পিতা শাহ জাহান সেই সময়ে দুর্গের ভেতরেই ছিলেন। তাঁরা দুর্গে পানির সরবরাহ বন্ধ করে দেন।

কয়েক দিনের মধ্যে শাহ জাহান দুর্গের দ্বার খুলে বেরিয়ে আসেন - দুই ছেলের হাতে তুলে দেন তাঁর সম্পদ, অস্ত্র-শস্ত্র এবং নিজেকেও।

নিজের মেয়েকে সালিশ মেনে শাহ জাহান তাঁর সাম্রাজ্যকে পাঁচ ভাগ করার প্রস্তাব দেন - তিনি চেয়েছিলেন চার ছেলে পাবেন সাম্রাজ্যের একেকটি ভাগ, আর পঞ্চম ভাগটি পাবেন আওরঙ্গজেবের বড় ছেলে মোহাম্মদ সুলতান।

কিন্তু আওরঙ্গজেব ওই প্রস্তাবে রাজী হননি।

দারা শিকোহ ধরা পরেন ১৬৫৯ সালে, নিজেরই এক বিশ্বস্ত সহযোগী মালিক জীবনের হাতে।

দিল্লি নিয়ে আসার পরে দারা শিকোহ আর তাঁর ১৪ বছরের ছেলে সিফির শিকোহকে আওরঙ্গজেব সেপ্টেম্বরের প্রচণ্ড গরমে চর্মরোগগ্রস্ত একটি হাতির পিঠে বসিয়ে গোটা দিল্লি ঘুরিয়েছিলেন।

একজন সৈন্য খোলা তরবারি নিয়ে তাঁর পাশে ছিলেন - কারণ তিনি যদি পালাতে চেষ্টা করেন, তাহলে তাঁর শিরশ্ছেদ করা হবে।

ইতালির ইতিহাসবিদ নিক্কোলাও মানুচ্চি ওই সময়ে ভারতে এসেছিলেন। তিনি তাঁর 'স্তোরিয়া দো মগর' বা মুঘল ভারত বইয়ে লিখেছেন, "যেদিন দারা মারা গেলেন, সেদিন আওরঙ্গজেব তাকে জিজ্ঞেস করেছিলেন যে যদি নিয়তি উল্টোটা হতো, তাহলে ঠিক কী ঘটতো? দারার উত্তর ছিল যে তিনি আওরঙ্গজেবের শরীরকে চার ভাগ করে একেকটি ভাগ দিল্লির প্রধান চার সিংহ-দরজায় ঝুলিয়ে রাখতেন।"

আওরঙ্গজেব তাঁর ভাইকে দাফন করেন হুমায়ূনের মাজারের পাশে। পরে তিনি তার মেয়ে জাব্বাতুন্নিসাকে বিয়ে দেন দারা শিকোহ'র ছেলে সিফির শিকোহর সঙ্গে।

পিতা শাহ জাহানকে আওরঙ্গজেব আগ্রা দুর্গে বন্দী রেখেছিলেন সাড়ে সাত বছর, যেখানে তাকে প্রায়ই সঙ্গ দিতেন তাঁর বড় কন্যা জাহানারা।

তবে এই ঘটনায় তাকে সবচেয়ে বেশী বিপদে পড়তে হয়েছিল যখন মক্কার শাসক তাকে ভারতের শাসক হিসেবে মেনে নিতে অস্বীকৃতি জানান। বছরের পর বছর তাঁর পাঠানো উপঢৌকন তিনি গ্রহণ করতে রাজী হননি।

আওরঙ্গজেব ১৬৭৯ সালে দিল্লি ছেড়ে দক্ষিণ ভারতে চলে যান। মৃত্যুর আগে তিনি আর উত্তর ভারতে ফিরে আসেননি।

আম ছিল তাঁর ভীষন প্রিয়

হাজার হাজার লোক-লস্কর, সেপাই, কর্মচারী সঙ্গে নিয়ে তিনি দাক্ষিণাত্যে গিয়েছিলেন। শাহজাদা আকবর বাদে বাকি সব ছেলেদের আর গোটা হারেমটাই তিনি সঙ্গে করে নিয়ে গিয়েছিলেন।

তাঁর অবর্তমানে দিল্লিকে একটি ভূতুরে নগরীর মতো মনে হতে লাগলো। লাল কিল্লায় এতো ধুলো জমে গেল যে বিদেশী অতিথিদের আর এটা দেখানো হতো না।

আওরঙ্গজেব তাঁর পুস্তক 'রুকাত-ই-আলমগীরী'তে লিখেছিলেন যে দক্ষিণ ভারতে যেটির অভাব তিনি সবচেয়ে বেশী অনুভব করতেন, তা হলো আম। জামশেদ বিলিমোরিয়া এই বইটি অনুবাদ করেছেন।

বাবর থেকে শুরু করে সব মুঘল সম্রাটই আম খুব পছন্দ করতেন।

ট্রাশকা লিখেছেন আওরঙ্গজেব নিয়মিতই তার সভাসদদের নির্দেশ দিতেন যে তাঁর জন্য যে উত্তর ভারতের আম পাঠানো হয়। কয়েকটা আমের হিন্দি নামকরণও করেছিলেন তিনি, যেমন সুধারস আর রসনাবিলাস।

১৭০০ সালে ছেলে শাহজাদা আজম-এর কাছে লেখা একটি চিঠিতে আওরঙ্গজেব তাকে ছেলেবেলার কথা মনে করিয়ে দেন। আজম নাকি ছোটবেলায় নাকাড়া বাজানোর নকল করে আওরঙ্গজেবের জন্য একটা হিন্দি সম্বোধন তৈরি করেছিলেন - 'বাবাজী ধুন, ধুন।'

জীবনের শেষ দিনগুলো আওরঙ্গজেব কাটিয়েছেন ছোট ছেলে কামবাখশ-এর মা উদয়পুরীর সঙ্গে। উদয়পুরী ছিলেন একজন সঙ্গীত শিল্পী।

মৃত্যুশয্যা থেকে কামবাখশের কাছে লেখা এক চিঠিতে আওরঙ্গজেব লিখেছিলেন যে রোগে-শোকে উদয়পুরী তাঁর সঙ্গে আছেন, মৃত্যুর সময়ও তাঁর সঙ্গে থাকবেন।

আওরঙ্গজেবের মৃত্যুর মাত্র কয়েক মাস পরেই ১৭০৭ সালের গ্রীষ্মে মৃত্যুবরণ করেন উদয়পুরী।
সংগৃহীত

রবিবার, ১৩ সেপ্টেম্বর, ২০২০

লাল চিনি ক্রয় করে নিজে বাঁচুন দেশকে বাঁচান।

আমাদের বাংলাদেশ নিউজ 24 ডেস্কঃ মিল রেট ৬০ টাকা দরে চিনি বিক্রি না হওয়ায় বেতন পাচ্ছে না রাজশাহী চিনি কলের কর্মচারীরা।

লাল চিনি বাজারে বিক্রি হচ্ছে না। তাই বেতনহীন মানবেতর জীবনযাপন করছেন রাজশাহীর চিনিকল শ্রমিকরা।
চিনিকল শ্রমিকদের কথা না হয় বাদ দিলাম। আমি, আপনি ধবধবে সাদা চিনি খেয়ে ডায়াবেটিস, হার্ট এট্যাক, লিভার বিকল করছি সে খবর কি রাখছেন?
লাল চিনি হলো সরাসরি আখ থেকে তৈরি অপরিশোধিত চিনি। লাল চিনিতে থাকে আখের সব উপাদান। যেমনঃ শর্করা, ক্যালসিয়াম, পটাশিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম, লৌহ, ম্যাঙ্গানিজ, উপকারি অ্যামাইনো অ্যাসিড, জিঙ্ক, থায়ামিন, রাইবোফ্লেবিন, ফলিক এসিড, অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ইত্যাদি।
লাল চিনির উপকারী মাত্র কয়েকটি দিক বলছি।
১) প্রচুর মাত্রায় ক্যালসিয়াম থাকার কারণে লাল চিনি খেলে হাড় শক্তপোক্ত হয়। সেই সঙ্গে দাঁতের স্বাস্থ্যেরও উন্নতি ঘটে। ক্যাভিটি এবং ব্যাকটেরিয়াল ইনফেকশন হওয়ার আশঙ্কাও দূর হয়।
২) আখের অ্যাটিঅক্সিডেন্ট ক্যান্সার প্রতিরোধ করে এবং শরীরের ভিতরে উপস্থিত ক্ষতিকর টক্সিক উপাদান বের করে দেয়।
৩) লিভার সুস্থ রাখে।
৪) জন্ডিসের প্রকোপ কমায়।
৫) কোষ্ঠকাঠিন্যে দূর করে।
৬) আখে থাকা অ্যালকেলাইন প্রপাটিজ গ্যাস-অম্বলের প্রকোপ কমাতেও বিশেষ ভূমিকা পালন করে।
৭) শরীরের মিনারেল তথা খনিজ পদার্থের চাহিদা পূরণ করে মস্তিষ্কে রক্ত প্রবাহ স্বাভাবিক রাখে যা স্ট্রোক প্রতিরোধ করে।
৮) শরীরের ভিটামিনের চাহিদা পূরণ করে।
কিন্তু লাল চিনি রিফাইন বা পরিশোধন করতে গিয়ে ভিটামিন, মিনারেল, প্রোটিন, এনজাইম এবং অন্যান্য উপকারি পুষ্টি উপাদান দূর হয়ে যায়। চিনি পরিশোধন করতে ব্যবহার করা হয় সালফার এবং হাড়ের গুঁড়ো।
সাদা চিনি বা রিফাইন করা চিনি যে শরীরের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর সে সম্পর্কে ড. উইলিয়াম কোডা মার্টিন এক গবেষণাপত্র বের করেছিলেন। ড. উইলিয়াম কোডা মার্টিন গবেষণাপত্রে বলেন-
চিনি রিফাইন করে সাদা করার জন্য চিনির সাথে যুক্ত প্রাকৃতিক ভিটামিন ও মিনারেল সরিয়ে শুধু কার্বোহাইড্রেট বা শর্করা রাখা হয়। কিন্তু শুধু কার্বোহাইড্রেট শরীর গ্রহণ করতে পারে না। মিনারেল ও ভিটামিনবিহীন কার্বোহাইড্রেট দেহের মধ্যে টক্সিক মেটাবোলাইট সৃষ্টি করে। এতে শরীরের বিভিন্ন অঙ্গপ্রতঙ্গের স্বাভাবিক কার্যক্ষমতা নষ্ট হতে থাকে। ফলে কোষ অক্সিজেন পায় না এবং অনেক কোষ মারা যায়। ড. উইলিয়াম কোডা মার্টিন গবেষণা লব্ধ ফলাফল দিয়ে প্রমাণ করে- রিফাইন করা চিনি খেলে শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা নষ্ট হয়ে যায়। হার্ট ও কিডনী ধীরে ধীরে কার্যক্ষমতা হারিয়ে ফেলে এবং ব্রেনের উপর মারাত্মক ক্ষতিকর প্রভাব সৃষ্টি করে।
আরো সহজ করে সাদা চিনির ক্ষতিকর দিক বর্ণনা করা যায়।
১) যেহেতু পরিশোধনের সময় চিনির মিনারেল বা প্রাকৃতিক খনিজ উপাদান দূর হয়ে যায়। তাই সহজেই বলা যায়, এতে করে মস্তিষ্কে রক্ত প্রবাহ কমে যায়। নিউরন কোষগুলো ধীরে ধীরে মারা যায়। যা স্ট্রোক ঘটায়।
২) ভিটামিন সরিয়ে ফেলায় শরীর পুষ্টি উপাদান পায় না।
৩) সাদা চিনিতে অতিরিক্ত পরিমাণে ফ্রুক্টোজ থাকে। ফ্রুক্টোজ হজম করাতে সাহায্য করে লিভার বা কলিজা। কিন্তু অতিরিক্ত ফ্রুক্টোজ লিভার হজম করাতে না পারায় লিভারে তা ফ্যাট আকারে জমা হয়। এতে করে লিভার ড্যামেজ বা লিভার নষ্ট হয়ে যায়।
৪) চিনি পরিশোধনে ব্যবহার হয় সালফার আর হাড়ের গুড়ো যা কিডনি বিকলাঙ্ক করে দেয়।
৫) সালফার ইনসুলিন নিঃসরণে প্রধান বাঁধা হয়ে দাঁড়ায়। ফলে শরীরের গ্লুকোজের পরিমাণ বেড়ে যায় এবং ডায়াবেটিস হয়।
এত এত অপকারী বা বিধ্বংসী দিক থাকার কারণেই ড. উইলিয়াম কোডা মার্টিন সাদা চিনিকে বলেছেন বিষ। আমাদের দেশের মানুষ টাকা দিয়ে ধবধবে সাদা বিষ খাবে তবুও লাল চিনি কিনবে না। নিজে তো মরছে, দেশীয় চিনিকলের শ্রমিকদেরও বিনাবেতনে মারছে।

শিরোনামহীন

আমাদের বাংলাদেশ নিউজ 24 ডেস্কঃ আপনি পর্দার খুব গভীর ব্যাখ্যা দিয়ে নিজের দীনদারির গভীরতা দেখাচ্ছেন, অথচ সামগ্রিক ইসলামের জ্ঞানে আপনার এতটুকু গভীরতা নেই যে মাসালা এখানে বোরকা পরে ক্রিকেট খেলার বৈধতা নিয়ে নয়। মাসালা ইসলামের ন্যূনতম সৌন্দর্য দেখে বিবেক-প্রতিবন্ধীদের এলার্জি রোগের।

আপনি একজন সাধারণ (নন আলেম) ফ্যামিলির অসাধারণ মায়ের ভেতর খুঁজছেন তাকওয়ার সবোর্চ্চ স্তর, অথচ দেখতে পাচ্ছেন না ওদের গায়ে কী প্রচণ্ড আগুন ধরে গেছে। একজন আধুনিক মাকে বোরকা পরা আর তাঁর সন্তানকে মাদ্রাসায় দেওয়া ওদের উন্মাদ বানিয়ে দিয়েছে।

একজন জাতীয় দলের ফুটবলারের বোন, একজন জাতীয় নারী খেলোয়াড়ের কত বড় রূপান্তর! মুখ ঢাকা বোরকা পরছেন। সন্তানকে দিয়েছেন মাদ্রাসায়। এমন একটা পরিবার ও প্রেক্ষাপট থেকে যারা দীনের পথে আসেন, তাদের যে নিজের পরিবার-প্রতিবেশে কত লড়াই করতে সেটা কি আপনারা অনুধাবন করেন?

সবার প্রতি শ্রদ্ধা রেখেই বলছি, আপনারা যারা জন্মের পর থেকে পরিবারের সবাইকে ইসলামের ভেতর পেয়েছেন, তারা কখনো এই ভাইরাল মহিলার স্বপ্ন ও সাধনার মাহাত্ম্য বুঝতে পারবেন না। চৌদ্দ গোষ্ঠীর মধ্যে প্রথম আমাকে মাদ্রাসায় ভর্তি করিয়ে দেওয়ার পর আমি ও বাবা-মা কত পরীক্ষা দিয়েছি তা আমরাই জানি। এই ক্রিকেটার মাদ্রাসার ছাত্রটিকে দেখে নিজের অনেক অতীত আনন্দ-বেদনা জাগরূক হয়েছে।

পরিশেষে একটি আত্মসমালোচনামূক কথা বলি, সাহাবায়ে কেরাম অন্যের সামান্য দীনদারিকেও বড় মূল্যায়ন করতেন। আর নিজের গভীর পরহেজগারিকেও ভাবতেন সামান্য। আমরা তাঁদের সম্পূর্ণ উল্টো। অন্যের এত এত আমল-আখলাক দেখেও তার মন্দ বা দুর্বল দিকগুলোই সামনে আনি। অথচ নিজের লেবাস আর গতানুগতিক আমলেই আত্মতুষ্ট থাকি। নিজের বড় বড় গলদ ও গুনাহকেও তুচ্ছ মনে করি। 

(সংগৃহীত)

রবিবার, ৩০ আগস্ট, ২০২০

প্রসঙ্গ: আশুরার কমেডি, কারবালার ট্র্যাজেডি: প্রফেসর ড. আ ক ম আবদুল কাদের

 

আমাদের বাংলাদেশ নিউজ 24 ডেস্কঃ আমার কিছু শিষ্য ও শুভানুধ্যায়ী আমাকে আশুরার উপর কিছু আলোকপাত করার জন্য অনুরোধ করেন। গতকাল রাতেও আমি ইউরোশিয়া ইয়ুথ ডেভেলপমেন্ট ফোরাম কর্তৃক আয়োজিত একটি অনুষ্ঠানে এই বিষয়ে কথা বলি। আমি সাধারণত বিষয়টিকে তিনটি পয়েন্টে বিভক্ত করে আলোকপাত করে থাকি। এক. বিভিন্ন নবী- রাসূলগণের জীবনে ঘটে যাওয়া গুরুত্বপূর্ণ ইতিবাচক ও সুসংবাদের বার্তাবহ ঘটনাপঞ্জি, দুই . মহানবী সা. এর প্রিয় দৌহিত্র ইমাম হুসাইন রা. ও তাঁর পরিবারের সদস্যবৃন্দের জীবনে কারবালার প্রান্তরে ঘটে যাওয়া বিয়োগাত্মক লোমহর্ষক নারকীয় ঘটনা এবং তিন. মুহাররাম মাস ও আশুরার দিনে মুসলিম উম্মাহর করণীয়। এই আলোকে আমি অনেক আগে একটি গবেষণামূলক প্রবন্ধ রচনা করি যা ১৯৯৭ সালে একটি গবেষণা জার্নালে প্রকাশিত হয়। যেহেতু এই বিষয়ে মসজিদ, মাদ্রাসা, বিভিন্ন মাহফিল ও সেমিনারে অনেক গুরুত্বপূর্ণ আলোচনা হয়ে থাকে, তাই আমি এই প্রসঙ্গে দুই একটা পয়েন্ট আলোচনা করবো সাধারণত যা এই সব মজলিসে আলোচনা করা হয় না।

হিজরী ৬০ সাল। যিলহাজ্জ মাসের প্রথম দিকে ইমাম হুসাইন রা. ছিলেন পবিত্র মক্কা নগরীতে। এর আগে তিনি পবিত্র মদীনায় অবস্থান করছিলেন। কিন্তু এখানে ইয়াজীদের উত্তরাধিকার সূত্রে প্রাপ্ত রাষ্ট্রক্ষমতা গ্রহণ বিষয়ে বায়'আত হওয়ার জন্য তাঁর উপর চাপ প্রয়োগ করা হলে তিনি মক্কা চলে যান। তখন লোকজন পবিত্র হজ্জ্ব পালনের নিমিত্তে পবিত্র মক্কা নগরীতে এসে পৌঁছছিলেন। আর এখানেও তাঁর উপর একই রকম চাপ প্রয়োগ অব্যাহত থাকে। আর এই সময় কূফা গমনের জন্য অসংখ্য পত্র পেয়ে তিনি কূফার উদ্দেশ্যে রওনা হন। কিছু সংখ্যক ভক্ত অনুরক্ত ও কয়েকজন বিশিষ্ট সাহাবী তাঁকে পবিত্র হজ্জ্ব পালনের পর যাওয়ার পরামর্শ দেন। কিন্তু ইমাম হুসাইন রা. চিন্তা করলেন, এই হজ্জ্ব তো পালিত হবে আমীর মুয়াভিয়্যাহ রা. কর্তৃক মনোনীত আমীরের তত্ত্বাবধানে। এই মনোনয়ন ছিল খুলাফা রাশিদূনের যুগে খলীফা নির্বাচনের অনুসৃত ধারার ব্যাতিক্রম। যেহেতু তিনি ইয়াযীদকে বৈধ খলীফা মনে করেন না, তাই তাঁর তত্ত্বাবধানে হজ্জ্ব পালন করে ইয়াযীদের খিলাফতকে বৈধতা দিতে চান না।

এখন প্রশ্ন হলো, যেখানে মহানবীর সা. সাহাবীগণ এমন কি তাঁর আত্মীয় স্বজন এবং তাবিয়ীগণ ইয়াযীদের খিলাফত মেনে নিয়ে বায়'আত হন সেখানে ইমাম হুসাইন রা. কেন তাঁর হাতে বায়'আত করতে অস্বীকার করেন। এই বিষয়টি বুঝতে হলে আমাদেরকে Principles of Islamic Jurisprudence এর দিকে ফিরে যেতে হবে। এখানে দুটি বিষয় আলোচিত হয়। এক. 'আযীমাত আর দুই. রুখসাত। 'আযীমাত হলো যে কোন বিধানের যথাযথ অনুসরণ। আর রুখসাত হলো একাধিক অবকাশ থাকলে তার মধ্য হতে সুবিধাজনক বিধানের অনুসরণ।

ইয়াযীদের খিলাফত প্রশ্নে সাহাবীগণ ধরে নিয়েছেন এটি উম্মাহর একটি আভ্যন্তরীণ সমস্যা। এই সমস্যার সাথে কোন বহিঃ জাতি, গোষ্ঠী কিংবা ভিন্ন ধর্মের অনুসারীদের কোন প্রকার ষড়যন্ত্র জড়িত নয়। তাই এই বিষয়টি নিয়ে উম্মাহর মধ্যে বিভক্তি সৃষ্টি করা উচিত হবে না। আর ইমাম হুসাইন রা. চিন্তা করলেন, আহলে বায়তের একজন গুরুত্বপূর্ণ সদস্য এবং মহানবীর সা. এর দৌহিত্র হিসাবে তাঁকে 'আযীমাতের পথটি অনুসরণ করা উচিত। নতুবা 'আযীমাতের পথ অনুসরণের কথা উম্মাহ বিস্মৃত হয়ে যাবে। তা ছাড়া, খিলাফত প্রশ্নে রাজনীতিতে উত্তরাধিকার মনোনয়নের মাধ্যমে রাজতন্ত্রের যে বিদ'আতের অনুপ্রবেশ ঘটেছে তা যদি প্রতিহত করা না হয় তা হলে নবী সা. এর দৌহিত্র ইয়াজীদের হাতে বায়'আত হওয়ার ফলে এটি অনুমোদন দেওয়ার কারণে তা সুন্নাহর রূপ পরিগ্রহ করবে, যা কোন ক্রমেই কাম্য হতে পারে না। তাই তিনি এই বিষয়ে কঠিন পথ তথা 'আযীমাতের পথটি অনুসরণ করেন, যার পরিসমাপ্তি ঘটে তাঁর শাহাদাতের মধ্য দিয়ে।

ইমাম হুসাইন রা. তাঁর শাহাদাতের প্রাক্কালে ফোরাত নদীর তীরে দাঁড়িয়ে ইয়াযীদ কর্তৃক নিয়োজিত সেনাবাহিনীকে উদ্দেশ্য করে এক হৃদয়গ্রাহী ভাষণ দেন। এই ভাষণটি ইমাম তাবারী তাঁর "তারীখ আল উমাম ওয়াল মলূক" গ্রন্থে উল্লেখ করেছেন। এই ভাষণে তিনি নিজের অবস্থান এবং এখানে আগমনের উদ্দেশ্য ও তিনি কারো জন্য হুমকি নন বলে সুস্পষ্ট ভাবে ঘোষণা করেন। এবং তিনি নিজেকে মহানবীর সা. একমাত্র জীবিত দৌহিত্র হিসাবে দাবী করেন। এর পরও কেন তাঁকে শহীদ করা হয় এটি একটি বিরাট প্রশ্ন। আমার যা মনে হয়েছে, ইয়াযীদ কিংবা তাঁর বাহিনী মনে করেছে , মহানবীর সা. এর দৌহিত্র মানে মুসলিম উম্মাহর আবেগের কেন্দ্রস্হল। যদি তাঁকে জীবিত রাখা হয় তা হলে তাঁকে কেন্দ্র করে মুসলিম উম্মাহ ঐক্যবদ্ধ হতে পারে, যা পুনরায় ইসলামী খিলাফত প্রতিষ্ঠার আন্দোলনকে ত্বরান্বিত করার সমূহ সম্ভাবনা থেকে যায়। তাই তারা তাঁকে শহীদ করাকেই নিজেদের ক্ষমতা পাকা পোক্ত করার নিরাপদ ব্যবস্থা বলে মনে করেছে। কিন্তু ভাগ্য ইয়াজীদের সহায়ক হয় নি। এই ঘটনার মাত্র তিন বছরের মধ্যেই তাঁকে অনেক রক্তের বিনিময়ে অর্জিত ক্ষমতা ছেড়ে এই পৃথিবীর বুক থেকে চিরতরে বিদায় নিতে হয়েছে।

About

ব্লগ সংরক্ষাণাগার

আমার ব্লগ তালিকা

Translate

Translate

আমাদের বাংলাদেশ নিউজ 24

সর্বশেষ

অনুসরণকারী