বিজ্ঞাপন দিন

আচ্ছালামু আলাইকুম ওয়ারাহমাতুল্লাহ। ইসলামী ব্যাংক এজেন্ট ব্যাংকিং আউটলেট দক্ষিণগাও, শাহীবাগ বাজার এর পক্ষ থেকে সকল গ্রাহক, শুভাকাংখীসহ সবাইকে জানাই ঈদ উত্তর সালাম ও আন্তরিক শুভেচ্ছা। ব্যাংক খোলা এবং যথারীতি ব্যাংকিং কার্যক্রম চলছে। এই গ্রুপে যারা আছেন তাদের মাধ্যমে সংশ্লিষ্ট এলাকার এলাকারসকলকে ইসলামী ব্যাংকের মাধ্যমে বিদেশ থেকে রেমিটপন্স পাঠানোর আহবান জানাচ্ছি। ঢাকার সবুজবাগ থানার রাজারবাগ, কুসুমবাগ, দক্ষিনগাও, শাহীবাগ, মানিকদিয়া, বাইকদিয়া, নন্দিপাড়াসহ সকল এলাকার গ্রাহক, শুভাকাংখী, শুভানুধ্যায়ীদের প্রদত্ত মোবাইল নাম্বারে যোগাযোগ করার অনুরোধ করা হলোঃ ০১৭১১-৪৫৮১৫১, ০১৭০০৯২৫২৪১:b>ইসলামী ব্যাংক এজেন্ট ব্যাংকিং আউটলেট দক্ষিণগাও, শাহীবাগ বাজার

সোমবার, ১৬ নভেম্বর, ২০১৫

চট্টগ্রামে শিবির নেতাকে গ্রেপ্তার ও তাকে ষড়যন্ত্রমূলক ভাবে ব্লগার নিলয় হত্যা মামলায় জড়ানোর তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ


চট্টগ্রামের শিবির নেতা তারেক হোসেনকে অন্যায় ভাবে গ্রেফতার এবং তাকে ষড়যন্ত্রমূলক ভাবে ব্লগার নিলয় হত্যা মামলার সাথে জড়ানোর তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির।
এক যৌথ প্রতিবাদ বার্তায় ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় সভাপতি আবদুল জব্বার ও সেক্রেটারী জেনারেল আতিকুর রহমান বলেন, তারেক হোসাইনকে শনিবার রাত ১১ টায় ঘুমন্ত অবস্থায় বাসা থেকে অন্যায়ভাবে আটক করে পাঁচলাইশ থানা পুলিশ। পরে পুলিশ তাকে রবিবার বিকেল পর্যন্ত থানা হাজতে আটকে রেখে ডিবি পুলিশের হাতে তুলে দেয়। ডিবি পুলিশ তাকে ঢাকায় খুন হওয়া ব্লগার নিলয় হত্যাকান্ড মামলায় গ্রেফতার দেখায়। অথচ ব্লগার নিলয় খুন হওয়ার কয়েকদিন পরেই নিহতের স্ত্রী খিলগাঁও থানায় ১১/৭/১৫ নং যে মামলাটি দায়ের করেছেন তার এজাহারে তারেকের নাম নেই। এ ঘটনার সাথে তারেক জড়িত থাকতে পারে এমন কথা নিহতরে আত্বীয় স্বজন, তদন্ত কর্মকর্তা বা অন্য কেউ সামান্যতম উচ্চারন না করলেও এত দিন পরে এসে এই নিরীহ মেধাবী ছাত্রকে এই মামালায় জড়ানো হয়েছে। এটা সম্পূর্ণ পরিকল্পিত ও সাজানো। মূলত সরকার ও পুলিশ প্রকৃত হত্যাকারীদের গ্রেফতার করতে না পেরে নিজেদের লজ্জাজনক ব্যর্থতা আড়াল করতে এই মেধাবী ছাত্রকে বলির পাঠা বানাতে চাইছে। এটি শাক দিয়ে মাছ ঢাকার অপকৌশল মাত্র। আমরা দৃঢ়ভাবে বলতে চাই ছাত্রশিবিরের কোন নেতা কর্মী এই ধরনের কোন কাজের সাথে জড়িত নয়। সরকার শুধুমাত্র রাজনৈতিক প্রতিহিংসা চরিতার্থ করতেই শিবির নেতা তারেক কে গ্রেফতার করেছে।
নেতৃবৃন্দ বলেন, স্বার্থান্বেষী মহলের এজেন্ডা বাস্তবায়ন করতে পুলিশের একের পর এক বেআইনি কর্মকান্ড দেখতে দেখতে দেশের মানুষ বিরক্ত ও ক্ষুদ্ব। নিরাপরাধ ছাত্রদের গ্রেপ্তার করে তাদের নিয়ে নাটক সাজানো ও ইচ্ছামত মামলায় জড়িয়ে দেয়া পুলিশের নিত্যদিনের কাজে পরিণত হয়েছে। এই অমানবিক ও দায়িত্বহীন আচরণ এক দিকে যেমন অনেক নিরীহ ছাত্রের জীবন ধ্বংস করে দিচ্ছে অন্য দিকে আইনশৃঙ্খলা বাহীনির ভাব মর্যাদা ক্ষুন্ন করছে। যা একটি রাষ্ট্রের জন্য চরম লজ্জাজনক। আমরা অবিলম্বে নিরাপরাধ শিবির নেতাকে মিথ্যা মামলা থেকে অব্যাহতি দিয়ে তার মুক্তির দাবী জানাচ্ছি। একই সাথে ভবিষ্যতে এমন আইনের শাসনের পরিপন্থী কাজ থেকে বিরত থাকতে সংশ্লিষ্ট সকলের প্রতি আহবান জানাচ্ছি।

৫ বছরে জার্মানে মুসলমানের সংখ্যা চারগুণ বাড়বে


16 Nov, 2015 আগামী ৫ বছরের মধ্যে জার্মানে মুসলমানের সংখ্যা চারগুণ বৃদ্ধি পেয়ে ২ কোটিতে পৌঁছবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। 
সম্প্রতি আমেরিকার আন্তর্জাতিক পলিসি ইন্সটিটিউট কাউন্সিল স্টোন গেট এক প্রতিবেদনে এমন আশঙ্কার কথা জানিয়েছে। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, জার্মান সরকার এবার (২০১৫ সালে) প্রায় ১৫ লাখ শরণার্থীকে আশ্রয় দিয়েছে এবং ২০১৬ সালে এ সংখ্যা আরও বৃদ্ধি পাবে।
এছাড়াও বর্তমানে জার্মানে প্রায় ৬ লাখ মুসলিম অধিবাসী বসবাস করছে।
বাভারিয়ার মিউনিসিপালিটির অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি ইউভা ব্রেন্ডেল এক বিবৃতিতে বলেছেন, ২০২০ সালে জার্মানে মুসলমানের সংখ্যা চারগুণ বৃদ্ধি পাবে।
জার্মানে মুসলিম জনসংখ্যার এ বৃহৎ পরিবর্তনের ফলে সেদেশের পরিবেশেও পরিবর্তনের ছোঁয়া লাগবে এটা বলা যায় নিঃসন্দেহে।উৎসঃ বাংলানিউজ24

অন্তর্কোন্দলে ৬ মাসে আওয়ামী লীগের ৩৫ নেতাকর্মী খুন


দলীয় পদ-পদবি, চাঁদার টাকা ভাগাভাগিসহ নানা কারণে খুনোখুনিতে জড়িয়ে পড়ছে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ ও তাদের সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা। এসব কারণে গত ৬ মাসে ৩৫ নেতাকর্মী খুন হয়েছেন।
খুন আতঙ্কে ভুগছেন আওয়ামী লীগের তৃণমূল নেতাকর্মীরা। কখন কে কোথায় কীভাবে আক্রান্ত হন সে আশঙ্কায় উদ্বেগ উৎকণ্ঠা রয়েছে তারা।
এছাড়া একের পর এক খুনের ঘটনায় মাঠ পর্যায়ের নেতাকর্মীদের মধ্যে চরম আতঙ্ক বিরাজ করছে। রাজধানীসহ সারাদেশের চিত্র প্রায় একই। এসব হত্যাকা-ের নেপথ্যে রয়েছে ক্ষমতার দ্বন্দ্ব ও আধিপত্য বিস্তার। এছাড়া টেন্ডারবাজি, চাঁদাবাজি, দখলবাজি ও মাদক ব্যবসার ভাগবাটোয়ারার বিষয়ও আছে বেশ কিছু হত্যাকা-ের নেপথ্যে। হত্যাকা-ের সঙ্গে দলের অভ্যন্তরীণ কোন্দল ও ভাগবাটোয়ারার বিষয় জড়িত।
তবে দলটির শীর্ষ নেতারা বরাবরই এসব অভিযোগ অস্বীকার করে আসছেন। তাঁরা বলছেন, দলের ভেতর কোনো কোন্দল নেই। সন্ত্রাসী, খুনি ও মাদক ব্যবসায়ীদের কোনো দলও নেই। একটি কুচক্রীমহল আওয়ামী লীগের উন্নয়নে ঈর্ষান্বিত হয়ে নানা অপপ্রচার করছে। ১৩ আগস্ট রাজধানীর মধ্যবাড্ডার পানির ট্যাঙ্কি এলাকায় আধিপত্য বিস্তার নিয়ে যুবলীগের দু’গ্রুপের গোলাগুলিতে আওয়ামী লীগ ও স্বেচ্ছাসেবক লীগের ৩ নেতা নিহত হন। আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে এ খুনের ঘটনা ঘটেছিল।
১৫ আগস্ট দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে ফুল দেওয়াকে কেন্দ্র করে কুষ্টিয়া শহরের মজমপুর গেট এলাকায় জাতীয় শোক দিবসের অনুষ্ঠানে স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতার ওপর গুলিবর্ষণ করেছেন আওয়ামী লীগের বহিষ্কৃত নেতা। সবুজ (২৪) নামে আওয়ামী লীগের এক কর্মী নিহত হন।
আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ও জনপ্রশাসনমন্ত্রী সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম বলেছিলেন, ‘দলীয় কোন্দলে কোনো খুনোখুনির ঘটনা ঘটেনি। যদি এমন প্রমাণ পাওয়া যায়, তবে দল ও সরকার অবশ্যই এর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবে।’
রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, সংসদে গৃহপালিত বিরোধী দল এবং তাদের সক্রিয় কোনো ভূমিকা না থাকায় সরকারি দলের নেতাকর্মীরা ব্যক্তিগত নানা সুযোগ-সুবিধা হাসিলের জন্য বিভিন্ন অপরাধমূলক কর্মকান্ডে ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন। ফলে ক্ষমতাসীন দলটির মধ্যে খুনোখুনি ও অন্তর্দ্বন্দ্ব চরম আকার ধারণ করেছে।
বিশ্বের প্রথম মানবাধিকার ও মিডিয়া কোম্পানি ওয়ার্ল্ড সেফগার্ড অ্যান্ড মিডিয়া লিমিটেড, আইন ও সালিশ কেন্দ্রের (আসক) পত্রপত্রিকায় প্রকাশিত এ সংক্রান্ত প্রতিবেদনের মাধ্যমে পাওয়া তথ্য বিশ্লেষণ করে আওয়ামী লীগের অভ্যন্তরীণ কোন্দলের ভয়াবহ চিত্র পাওয়া গেছে।
আসকের তথ্যমতে, ‘গত ছয় বছরে (২০০৯-১৫) সরকারি দলের অভ্যন্তরীণ কোন্দলে আওয়ামী লীগ, যুবলীগ ও ছাত্রলীগের অন্তত ১৭২ নেতাকর্মী খুন হয়েছেন। রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ ও চরমপন্থিদের হাতে খুন হয়েছেন আরও ৭৪ জন।
এসব হত্যার পাশাপাশি দলীয় কোন্দলে সৃষ্ট সংঘর্ষে ছয় বছরে আহত ব্যক্তির সংখ্যা ছিল ১৩ হাজার ৬৯১। এদের প্রায় সবাই সরকারি দলের নেতাকর্মী। এ সময়ে নিজেদের মধ্যে সহিংস ঘটনা ঘটেছে এক হাজার ১১১টি। এছাড়া গত ৫ জানুয়ারি নির্বাচনের পর আওয়ামী লীগের বিভিন্ন সংগঠনের প্রায় ২৫ নেতা খুন হয়েছেনÑ বলছে ওয়ার্ল্ড সেফগার্ড অ্যান্ড মিডিয়া লিমিটেড।
৫ জুন ঝালকাঠি সদর উপজেলায় তৌহিদুল ইসলাম সিকদার নামে এক যুবলীগ নেতাকে কুপিয়ে হত্যা করেছে দুর্বৃত্তরা। স্থানীয় গগন বাজার সংলগ্ন এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। তিনি বিনয়কাঠি ইউনিয়ন যুবলীগের যুগ্ম আহ্বায়ক ছিলেন।
১৭ জুন লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলার বশিকপুর ইউনিয়নের বালাইশপুর গ্রামে মফিজ উল্লাহ (৫৫) নামে এক মুক্তিযোদ্ধা আওয়ামী লীগ নেতাকে গলাকেটে হত্যা করেছে দুর্বৃত্তরা। নিহত মফিজ উল্লাহ বশিকপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ছিলেন। এ ঘটনায় লাদেন মাছুম বাহিনীকে দায়ী করেছেন আওয়ামী লীগ নেতারা।
১৯ জুন ফেনীতে সন্ত্রাসীদের গুলিতে মোহাম্মদ মানিক (৩০) নামে যুবলীগের এক নেতা নিহত হয়েছেন। মানিক ফেনী সদর উপজেলার বালিগাঁও ইউনিয়ন যুবলীগের সহ-সভাপতি ছিলেন। এলাকায় আধিপত্য বিস্তার নিয়ে কিছুদিন আগে বালিগাঁও ইউনিয়ন যুবলীগের কিছু নেতাকর্মীর মধ্যে বিরোধ দেখা দেয়। ওই বিরোধের জেরে ইউনিয়নের ধোন সাহাদ্দা গ্রামের কয়েকজন যুবলীগ কর্মী বালিগাঁও ইউপি সদস্য ও ইউনিয়ন যুবলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মোয়াজ্জেম হোসেন ওরফে উজ্জ্বল মেম্বারকে মারধর করেন। এ ঘটনায় মোয়াজ্জেমের সমর্থকরা কুরুচিয়া গ্রামে গিয়ে মোহাম্মদ মানিককে গুলি করেন। জেলা যুবলীগের যুগ্ম আহ্বায়ক নজরুল ইসলাম মিয়াজী ওরফে স্বপন অভ্যন্তরীণ কোন্দলের কথা অস্বীকার করে বলেন, দুর্বৃত্তরা মানিককে গুলি করে হত্যা করেছে।
২৮ জুন লালমনিরহাট সদর উপজেলা যুবলীগ সদস্য বুলেটকে (৩২) কুপিয়ে হত্যা করেছে দুর্বৃত্তরা। সদর উপজেলার মহেন্দ্রনগর বাজারে এ ঘটনা ঘটে। স্থানীয়রা জানান, শত্রুতার জেরে দুর্বৃত্তরা রাতে তাঁকে ফোন করে মহেন্দ্রনগর বাজারে ডেকে নিয়ে ধারালো অস্ত্র দিয়ে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে চলে যায়। পরে স্থানীয়রা মুমূর্ষু অবস্থায় তাঁকে উদ্ধার করে লালমনিরহাট সদর হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসকরা তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন।
২৯ জুন তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে উপজেলার বাইশগাঁও ইউনিয়নের কেয়ারী গ্রামের ছিদ্দিক মিয়ার ছেলে স্থানীয় ছাত্রলীগকর্মী হারুনুর রশিদ বাবুর সঙ্গে একই গ্রামের সেলিম মিয়ার ছেলে ওসমান গনির হাতাহাতি হয়। এর জেরে ওইদিন সন্ধ্যায় বাবুর পক্ষ নিয়ে কেয়ারী গ্রামের ছাত্রলীগ নেতা হিসেবে পরিচিত ওমর ফারুকের নেতৃত্বে ৮-১০ নেতাকর্মী ওসমানের ঘর, তাঁর চাচা আওয়ামী লীগ নেতা ইয়াকুব আলী ও চাচাতো ভাই সিরাজ মাস্টারের ঘরে ভাঙচুর চালায়। এ সময় তাদের বাধা দিলে ছাত্রলীগের ওই নেতাকর্মীরা আওয়ামী লীগ নেতা ইয়াকুব আলী ও তাঁর চাচা ফজলুর রহমানকে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে এবং পিটিয়ে গুরুতর আহত করেন। পরে শনিবার দুপুর ৩টার দিকে গাজীপুরের টঙ্গীর একটি প্রাইভেট হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান ইয়াকুব আলী।
৪ জুলাই চট্টগ্রামে জমি নিয়ে বিরোধের জেরে সংঘর্ষে নুরুল হুদা নামে ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের এক নেতা নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন আরও ১২ জন। নুরুল হুদা বাড়বকু- ৯ নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি ছিলেন। সীতাকুন্ড মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ইফতেখার হাসান ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, ‘দীর্ঘদিন থেকে নিহত নুরুল হুদা ও ছালামত উল্লাহ ছুট্টুর মধ্যে সম্পত্তি সংক্রান্ত বিরোধ চলছিল। জমি চাষকে কেন্দ্র করে পূর্বশত্রুতার জেরে ছালামত উল্লার পক্ষের লোকজনের আঘাতে তাঁর মৃত্যু হয়েছে।’
৫ জুলাই কুমিল্লার মনোহরগঞ্জে তুচ্ছ ঘটনায় ইয়াকুব আলী (৫৮) নামের এক আওয়ামী লীগ নেতাকে কুপিয়ে হত্যা করেছেন স্থানীয় ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা। গাজীপুরের টঙ্গীর একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তাঁর মৃত্যু হয়। ইয়াকুব আলী উপজেলার কেয়ারী গ্রাম আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ছিলেন।
১১ জুলাই রাজবাড়ী সদরের পাঁচুরিয়া ইউনিয়নের ৭ নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগ সভাপতি আবদুস ছাত্তারকে গুলি করে হত্যা করেছে দুর্বৃত্তরা। তিনি রেল কর্মচারী ছিলেন। পুলিশ ও চেয়ারম্যানের ধারণা, জমিজমা সংক্রান্ত পূর্বশত্রুতার জেরে দুর্বৃত্তরা তাঁকে হত্যা করে।
২১ জুলাই জেলার রানীনগরে জমি নিয়ে বিরোধের জেরে আমজাদ হোসেন (৩৫) নামে আওয়ামী লীগের এক নেতাকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়। উপজেলার বোঁহার গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। নিহতের স্ত্রী ফাইমা বিবি বাদী হয়ে রানীনগর থানায় ৩৭ জনকে আসামি করে হত্যা মামলা দায়ের করলে পুলিশ ৫ আসামিকে গ্রেফতার করে।
২৪ জুলাই পাবনার বেড়া উপজেলার আমিনপুরে এক যুবলীগ নেতাকে কুপিয়ে হত্যা করেছে প্রতিপক্ষ। নিহত দানেজ শেখ আমিনপুরের চরপাড়া মালঞ্চি গ্রামের কিয়ামুদ্দিন কেরু শেখের ছেলে এবং আমিনপুর থানা যুবলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক।
৩১ জুলাই চুয়াডাঙ্গার দামুড়হুদা উপজেলা যুবলীগের যুগ্ম আহ্বায়ক আবদুল হান্নান ছোটকে (৩৫) কুপিয়ে হত্যার চেষ্টা করেছে দুর্বৃত্তরা। তিনি উপজেলার দর্শনা পৌরসভার শ্যামপুর গ্রামের মরহুম তনু মল্লিকের ছেলে। সীমান্তবর্তী ঈশ্বরচন্দ্রপুর কানাপুকুর ব্রিজের অদূরে গত বুধবার দিবাগত রাত ১টার দিকে এ ঘটনা ঘটে।
১ আগস্ট সন্দ্বীপের মগধরা ইউনিয়নের নামারবাজার এলাকায় আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে যুবলীগের এক কর্মীকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়েছে। ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে সন্দ্বীপ থানার ওসি মশিউর রহমান বলেন, ‘আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে এক গ্রুপ আরেক গ্রুপের ওপর হামলা চালিয়ে ওই কর্মীকে খুন করে।’
৭ আগস্ট নোয়াখালীর সোনাইমুড়ী উপজেলার দেওটি ইউনিয়ন যুবলীগের দফতর সম্পাদক মিলন সরকারকে (২৮) কুপিয়ে হত্যা করা হয়েছে। দেওটি ইউনিয়নের মুহুরীগঞ্জ বাজারের কাছে এ ঘটনা ঘটে। মিলন স্থানীয় সারেং বাড়ির নাদেরুজ্জামানের ছেলে। মিলনের মুহুরীগঞ্জ বাজারে ডেকোরেশনের ব্যবসা রয়েছে।
একইদিন বরিশালের আগৈলঝাড়ায় রাসেল ব্যাপারী (২৩) নামে ছাত্রলীগের এক কর্মীকে কুপিয়ে হত্যা করেছে প্রতিপক্ষ। এ ঘটনায় রিন্টু (২২) নামে আরও এক ছাত্রলীগ কর্মী গুরুতর আহত হয়েছেন। আগৈলঝাড়া উপজেলার ট্যামার এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। পরে সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রাসেল ব্যাপারীর মৃত্যু হয়।
১২ আগস্ট দুপুরে সিলেট মদন মোহন কলেজ ক্যাম্পাসে আগের দিনের বিরোধের জেরে ছাত্রলীগকর্মী আবদুল আলীকে প্রণজিৎ দাশের নেতৃত্বে কয়েকজন মিলে ছুরিকাঘাত করেন। সিলেট এমএজি ওসমানী হাসপাতালে নেওয়ার পর আলীর মৃত্যু হয়। আলী একই কলেজের দ্বাদশ শ্রেণির ছাত্র ও সিলেটের দক্ষিণ সুরমার নিজসিলাম গ্রামের আলকাছ মিয়ার ছেলে।
২১ অগাস্ট গ্রেনেড হামলায় হতাহতদের স্মরণে শুক্রবার বিকালে কালিয়াকৈর পৌর আওয়ামী লীগের অনুষ্ঠান চলার সময় কাছের চা দোকানের সামনে হত্যা করা হয় কালিয়াকৈর উপজেলা যুবলীগের সাবেক সভাপতি রফিকুল ইসলামকে (৫০)।
আওয়ামী লীগের অভ্যন্তরীণ কোন্দলে এই হত্যাকা- ঘটেছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
১ সেপ্টম্বর দুর্বৃত্তের গুলিতে পলিটেকনিক ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি ও যুবলীগ কর্মী মেহেদী হাসান বাদল নিহত হয়েছেন। নগরীর বায়েজিদ বোস্তামী থানার শেরশাহ কলোনিতে এ ঘটনা ঘটে। পুলিশ জানায়, পায়ে হেঁটে বাসায় ফেরার পথে পিছন থেকে মেহেদীকে গুলি করে দুর্বৃত্তরা পালিয়ে যায়। শেরশাহ কলোনির বাসিন্দা মুখলেছুর রহমানের ছেলে মেহেদী।
৬ সেপ্টম্বর গফরগাঁও উপজেলার নবগঠিত পাগলা থানার পাইথল ইউনিয়নে রাজমিস্ত্রিকে খুন হয়েছেন। পুলিশ ও এলাকাবাসী জানান, পাইথল পশ্চিমপাড়া ক্লাবঘর থেকে নিজ বাড়িতে ফেরার পথে রাজমিস্ত্রি মো. আজিজুল হককে (২৪) হয়েছেন। সে পাইথল পশ্চিমপাড়া গ্রামের মো. সুলতানের ছেলে। তার পরিবারের লোকজন খুনের সংবাদ পেয়ে পাগলা থানায় বিষয়টি অবহিত করে। পাইথল ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মো. আফতাব উদ্দিন ঢালী জানান, পারিবারিক কলহের জের ধরে খুন হতে পারে বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে। সে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সক্রিয় কর্মী ছিলেন।
১৪ সেপ্টম্বর ময়মনসিংহের গফরগাঁওয়ের নিগুয়ারি ইউনিয়নের ১নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি মোহর উদ্দিন (৬০) দুর্বৃত্তের ধারালো অস্ত্রের আঘাতে খুন হয়েছেন। ডুবাইল গ্রামের খোকা মিয়ার চায়ের দোকানের সামনে এ ঘটনা ঘটে। তিনি গফরগাঁও উপজেলার (পাগলা) মাখল গ্রামের মৃত শামসুদ্দিনের ছেলে।

১ অক্টোবর ফেনীর সোনাগাজীতে ছাত্রলীগ ও যুবলীগের কর্মীদের হাতে গিয়াস উদ্দিন (৩০) নামে এক আওয়ামী লীগ কর্মী খুন হয়েছেন। এ ঘটনায় রানা নামে এক ছাত্রলীগ কর্মী এবং সেলিম নামে এক যুবলীগ কর্মীকে আটক করেছে পুলিশ।
৮ অক্টোবর কক্সবাজারের পেকুয়া উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি মুক্তিযোদ্ধা আকম শাহাব উদ্দিন ফরায়েজী দুর্বৃত্তের হাতে খুন হয়েছেন। খুনের আলামত নষ্ট করতে তার মুখ ও শরীরের বিভিন্ন অংশ এসিডে ঝলসে দেয়া হয়েছে।
শাহাব উদ্দিন ফরায়েজীর ছেলে মেহেদী হাসান জানান, তার বাবাকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে।
২০ অক্টোবর হাতুড়ির আঘাতে রাজশাহী নগরীর ১১ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আসলাম (৫০) খুন হয়েছেন। নগরীর লক্ষ্মীপুর প্যারামেডিকেল রোডে এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় পুলিশ নিহত আসলামের খালাতো ভাই জাহিদকে আটক করেছে। নিহত আসলাম নগরীর হেতেমখাঁ এলাকার মৃত ইসলামের ছেলে। তিনি রাজশাহী ওয়াসার পানির পাম্পচালকের কাজ করতেন।
এলাকাবাসী অভিযোগ করেন, এক সপ্তাহ আগে জাহিদের সঙ্গে আসলামের বাকবিত-া হয়। এরই জের ধরে জাহিদ কৌশলে আসলামকে লক্ষ¥ীপুর এলাকায় নিয়ে গিয়ে তার ভাগ্নে পাভেলের সহযোগিতায় হাতুড়ি দিয়ে পিটিয়ে হত্যা করেন।
২০ অক্টোবর বাগেরহাটের রামপালে এক আওয়ামী লীগ নেতাকে কুপিয়ে হত্যা করেছে দুর্বৃত্তরা। উপজেলার রাজনগর ইউনিয়নের কালিকাপ্রসাদ গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। নিহত আব্দুল মাজেদ সরদার (৬৫) রাজনগর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের আইন বিষয়ক সম্পাদক। তিনি কালিকাপ্রসাদ গ্রামের প্রয়াত আব্বাস সরদারের ছেলে।
২২ অক্টোবর নাটোরের সিংড়া উপজেলায় প্রতিপক্ষের হামলায় আবদুল হান্নান নামের এক আওয়ামী লীগ কর্মী খুন হয়েছেন। সিংড়া উপজেলার ইটালী ইউনিয়নের তিরাইল গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
২৩ অক্টোবর রংপুর পীরগাছা উপজেলার দামুরচাকলা বাজারে আওয়ামীলীগ নেতা সদরুল ইসলামকে(৪৫) নৃশংসভাবে কুপিয়ে খুন করেছে দুর্বৃত্তরা। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, বাড়ি ফেরার সময় উপজেলার দামুরচাকলা বাজারের পূর্ব পার্শ্বে ইট ভাটার নিকট একদল মুখোশধারী সন্ত্রাসী তার পথ রোধ করে। পরে তাকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে মাথা ও হাত-পা দ্বিখন্ডিত করে লাশ রাস্তার পাশে ফেলে পালিয়ে যায়।
২৫ অক্টোবর নোয়াখালীতে ছাত্রলীগ মাগুরায় আওয়ামী লীগ কর্মী খুন আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে নোয়াখালীতে ছাত্রলীগ কর্মী তারেক হোসেন স্বপন ও মাগুরায় আওয়ামী লীগ কর্মী আরব লস্কর খুন হয়েছেন।
দলীয় আধিপত্যকে কেন্দ্র করে চাটখিল পৌরসভার ছয়ানী-টগবা গ্রামে ছাত্রলীগ কর্মী তারেক হোসেন স্বপনকে (২৪) নিজ বাড়িতে কুপিয়ে হত্যা করেছে প্রতিপক্ষ ছাত্রলীগ কর্মীরা।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, গঙ্গারামপুর ইউনিয়ন কমিউনিটি পুলিশিং কমিটির সভাপতি ও আওয়ামী লীগ নেতা মাকছুদুর রহমান ডলার এবং ইউনিয়ন যুবলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ফরিদ শেখের মধ্যে এলাকায় আধিপত্য বিস্তার নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলছিল। বিরোধের কারণেই তিনি খুন হন।
৩০ অক্টোবর যশোরের বেনাপোল পোর্ট থানার কাগজপুকুর বাজারে আব্দুস সামাদ (৪৫) নামে এক আওয়ামী লীগ কর্মীকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে প্রকাশ্যে কুপিয়ে হত্যা করেছে দুর্বৃত্তরা। নিহত সামাদ কাগজপুকুর গ্রামের নসরউদ্দিনের ছেলে।
বেনাপোল পোর্ট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) অপূর্ব হাসান জানান, নিহত সামাদের শরীরে কোপের দাগ রয়েছে। চোরাকারবারি ব্যবসায় প্রতিপক্ষের সঙ্গে দ্বন্দ্বের জের ধরে এ হত্যার ঘটনা ঘটতে পারে। তিনি স্থানীয় ওয়ার্ড আওয়ামী লীগ কর্মী ছিল।
১০ নভেম্বর রংপুরের কাউনিয়া উপজেলার টেপামধূপুর ইউনিয়ন এর বাজেমজকুর গ্রামে এক আওয়ামী লীগ নেতাকে কুপিয়ে হত্যা করেছে দুর্বৃত্তরা। নিহত রহমত আলী (৫৯) আওয়ামী লীগের টেপামধূপুর ইউনিয়ন কমিটির নেতা। পেশায় তিনি ওষুধ ব্যবসায়ী। ঘটনার সময় তিনি রাত সাড়ে ১০টায় বাড়ি ফেরার পথে চৈতার মোড় বাজারের কাছাকাছি পৌঁছালে একদল দুর্বৃত্ত তার ওপর ধারালো অস্ত্র দিয়ে হামলা চালায়। খুনিরা তাকে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে মৃত্যু নিশ্চিত করে চলে যায়।
সর্বশেষ গতকাল ১৪ নভেম্বর জমি নিয়ে বিরোধের জের নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে আওয়ামী মহিলা লীগ নেত্রী হালিমা বেগম জরিনাকে (৩৫) কুপিয়ে হত্যা করা হয়েছে। শনিবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে তার লাশ উদ্ধার করে পুলিশ।
এদিকে স্বামীসহ প্রতিপক্ষের সন্ত্রাসীরা এ হত্যাকান্ড ঘটিয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
Media watch Bangladesh এর সৌজন্যে

জাতীয় নিরাপত্তা হুমকির মুখে- খালেদা জিয়া

বর্তমান সরকারের স্বৈরাচারী আচরণের কারণে জাতীয় নিরাপত্তা হুমকির মুখে পড়েছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া। মওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানীর ৩৯তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে তিনি বলেন, মওলানা ভাসানী ছিলেন আমাদের জাতীয় স্বাধীনতার স্বপ্নদ্রষ্টা এবং দেশে জাতীয় সংকটে মুক্তির দিশারী। সাম্রাজ্যবাদ, আধিপত্যবাদ, উপনিবেশবাদ বিরোধী দীর্ঘ সংগ্রামে তিনি জীবদ্দশায় আপসহীন নেতৃত্ব দিয়েছেন। বৃটিশ বিরোধী আন্দোলন থেকে শুরু করে উপমহাদেশের নিপীড়িত-নির্যাতিত কৃষক-শ্রমিক মেহনতি মজলুম জনগণের ন্যায্য অধিকার আদায়ের সংগ্রামে শোষকের বিরুদ্ধে মওলানা ভাসানী নির্ভীক ও বলিষ্ঠ নেতৃত্ব দিয়েছেন। বিএনপি চেয়ারপারসন বলেন, পাকিস্তানি গণবিরোধী দু:শাসনের বিরুদ্ধে তিনি সম্মুখভাগে থেকে নেতৃত্ব দিয়েছেন এবং ৫০ দশকেই উপলব্ধি করতে পেরেছিলেন যে, তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানের মানুষের আত্মনিয়ন্ত্রণাধিকার, স্বাধিকার এবং এক পর্যায়ে স্বাধীনতা ছাড়া কোন বিকল্প নেই। বাংলাদেশের মহান মুক্তিযুদ্ধে তিনি জাতীয় উপদেষ্টা পরিষদে থেকে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছেন। স্বাধীন বাংলাদেশের অভ্যুদয়ের পর স্বাধীনতা যুদ্ধের মূল চেতনা তথা গণতন্ত্র, মৌলিক-মানবাধিকারসহ মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠা প্রশ্নেও কোন আপস করেননি। খালেদা জিয়া বলেন, আমাদের দেশের গণতন্ত্র, স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব ও মানুষের মৌলিক-মানবাধিকার যখন হুমকির সম্মুখীণ হয় তখন মওলানা ভাসানী আমাদের অনুপ্রেরণার উৎস হন। তার শেখানো পথ অনুসরণ করে জাতীয় স্বার্থ রক্ষা, গণতন্ত্র ও স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব ও মানবতার শত্রুদের বিরুদ্ধে প্রতিবাদী হতে আমাদের চিরদিন সাহস জোগাবে। তিনি বলেন, আজ দেশে এক নব্য স্বৈরাচার ক্ষমতায় বসে আছে। দেশে আজ গণতন্ত্র নেই, মানবাধিকার, মৌলিক অধিকার ধুলোয় লুণ্ঠিত। মানুষের ভোটের অধিকার হরণকারী বর্তমান সরকার গায়ের জোরে তাদের অপশাসন বজায় রেখেছে। জনগণের ম্যান্ডেট ছাড়া দেশ পরিচালনাকারী এ সরকারের শাসনামলে আজ শুধুই গণতন্ত্র ও মানুষের অধিকারগুলোই বিপন্ন হয়ে পড়েনি-জাতীয় নিরাপত্তাও হুমকির সম্মুখীণ হয়ে পড়েছে। আগ্রাসী শক্তির আগ্রাসী হুমকির মুখে রয়েছে প্রিয় মাতৃভূমি বাংলাদেশ। জাতির এই সংকটের মুহূর্তে মজলুম জননেতা মওলানা ভাসানীর প্রদর্শিত পথই দেশের মানুষকে শক্তি ও সাহস জোগাবে অশুভ শক্তির বিরুদ্ধে দৃঢ় অবস্থান নিতে এবং অপশাসন, অপরাজনীতিকে জনগণের ইচ্ছাধীনে পরাস্ত করতে। ঢাকার নিউজের সৌজন্যে

নৌ মন্ত্রণালয়ের ৬ জাহাজ ক্রয়ে ২২৩ কোটি টাকার ঘাপলা, পদে পদে অনিয়ম

বাংলাদেশ শিপিং কর্পোরেশনের জন্য বিদেশ থেকে ৬টি জাহাজ কিনতে গিয়ে ব্যাপক অনিয়ম ও দুর্নীতির আশ্রয় নিচ্ছে নৌ-পরিবহন মন্ত্রণালয়। প্রকৃত দামের চেয়ে প্রায় ২২৩ কোটি টাকা বেশি দামে জাহাজ ক্রয়ের বাণিজ্যিক চুক্তি করা হয়েছে। তাও অনভিজ্ঞ এক প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে এই জাহাজ সরবরাহ করা হচ্ছে। গত বছরের ৩০ এপ্রিল বাণিজ্যিক চুক্তি স্বাক্ষরের পর অন্যান্য সকল আনুষ্ঠানিকতা এখন সম্পন্নপ্রায়। আর্থিক চুক্তির প্রক্রিয়া চলছে বর্তমানে। এই জাহাজ ক্রয়কে কেন্দ্র করে এ পর্যন্ত যা কিছু হয়েছে প্রতিটি পদে পদে লাগামহীন দুর্নীতির চিহ্ন স্পষ্ট। এমনকি সর্বশেষ যে আর্থিক চুক্তি সম্পাদন হতে যাচ্ছে, এতে অর্থ পরিশোধের শর্তসমূহে নজিরবিহীন অনিয়মের আশ্রয় নেয়া হয়েছে। সরকারের স্বার্থ মোটেই দেখা হচ্ছে না। মোটা অংকের কমিশনের লোভে চুক্তিতে বড় ধরনের ঘাপলা রেখে দেওয়া হয়েছে। সংশ্লিষ্ট সূত্রমতে, এই ৬টি জাহাজ কেনা হচ্ছে ১৪৩৯ কোটি টাকায় (১৮৪.৫ মিলিয়ন ডলার), যা মূল্যায়ন কমিটির সুপারিশের চেয়ে প্রায় ২২৩ কোটি টাকা বেশি। তাও যে কোম্পানির সঙ্গে প্রাথমিকভাবে আলোচনা হয়েছে এবং মূল্যায়ন কমিটি কর্তৃক যাদের ডকইয়ার্ড পরিদর্শন করা হয়েছে তাদের কাছ থেকে এই জাহাজ সরবরাহ নেওয়া হচ্ছে না। অন্য একটি কোম্পানি থেকে জাহাজ নেওয়া হচ্ছে, যাদের জাহাজ তৈরির কোনো পূর্ব অভিজ্ঞতাই নেই। বাণিজ্যিক চুক্তি স্বাক্ষরের পর দরপত্র মূল্যায়ন কমিটি কর্তৃক এদের ডকইয়ার্ডও পরিদর্শন করা হয়নি।

সবচে’ অবাক ব্যাপার হচ্ছে, চায়না ন্যাশনাল ইমপোর্ট এন্ড এক্সপোর্ট কর্পোরেশন নামে যে প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে জাহাজ ক্রয়ের প্রাথমিক চুক্তি সম্পাদিত হয়েছে তাতে বাংলাদেশ শিপিং কর্পোরেশন অর্থাৎ সরকারের স্বার্থ মোটেই দেখা হয়নি। সকল রেওয়াজ ও নিয়ম-কানুন উপেক্ষা করে চুক্তিমূল্যের শতকরা ৫৫ ভাগ অর্থই জাহাজ তৈরির কাজ শুরুর আগে অর্থাৎ অগ্রিম পরিশোধের ব্যবস্থা করা হয়েছে। যে কারণে আইন মন্ত্রণালয় এই চুক্তির খসড়া এক দফায় ফেরত পাঠিয়েছে। পরবর্তীতে আইন মন্ত্রণালয়কে অন্যভাবে ম্যানেজ করে চুক্তিটির ওপর ইতিবাচক মতামত নেওয়া হয়েছে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে।
সূত্র জানায়, চূড়ান্ত করা এই চুক্তিতে বিভিন্নভাবে চুক্তিমূল্যের শতকরা ৫৫ ভাগ অর্থ অগ্রিম পরিশোধের ব্যবস্থা রাখা হয়েছে, যা নজিরবিহীন। আন্তর্জাতিক চুক্তির রীতি অনুযায়ী, জাহাজ ক্রয় চুক্তিতে সংশ্লিষ্ট জাহাজ তৈরি ও ডেলিভারির বিভিন্ন ধাপে মূল্য পরিশোধের নিয়ম রয়েছে। এই ধাপগুলো হলো- কাঠামো নির্মাণ, ইঞ্জিন বসানো, ইন্টেরিওর ফিনিশিং, সী ট্রায়াল প্রভৃতি। জাহাজটি যাতে মানসম্মতভাবে তৈরি হয়, জাহাজ তৈরিতে পর্যবেক্ষণ যাতে ভালো ফলাফল দেয়, সেজন্যই এই ধাপগুলো চুক্তিপত্রে নির্দিষ্ট করা হয়ে থাকে। চুক্তিস্বাক্ষর বা ধারাগুলো সেভাবেই হয়ে থাকে। কিন্তু, এই চুক্তিতে দেখা যাচ্ছে, কাজ শুরুর আগেই তিন ধাপে শতকরা ৫৫ ভাগ অর্থ পরিশোধের ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। বস্তুত, নিজেদের কমিশনের অর্থ হাতিয়ে নিতেই নৌ-পরিবহন মন্ত্রণালয়ের কর্তাব্যক্তিরা এমনটি করেছেন।
এই চুক্তিতে মূল্য পরিশোধের বিষয়ে বলা হয়েছে, প্রথম ধাপে আর্থিক চুক্তি স্বাক্ষরের ১০ দিনের মধ্যে শতকরা ১৫ ভাগ অর্থ পরিশোধ করতে হবে। এরপর জাহাজ নির্মাণের জন্য যখন প্রথম স্টিল প্লেট কাটা হবে, তার ৭ দিনের মধ্যে দিতে হবে চুক্তিমূল্যের ১৫ ভাগ অর্থ। তৃতীয়ত, যখন জাহাজ তৈরির কাজ শুরু করা হবে তার ৭ দিনের মধ্যে দিতে হবে আরো ২৫ ভাগ অর্থ। অর্থাৎ মাত্র কয়েক দিনের মধ্যেই ৫৫% অর্থ আদায় করে নেবে কোম্পানিটি। অথচ, জাহাজ ডেলিভারি দেওয়ার সময় নির্ধারণ করা হয়েছে প্রথম ১৫% প্রাপ্তি থেকে ২৭ মাস পর্যন্ত। এর অর্থ দাঁড়াচ্ছে, চুক্তি স্বাক্ষরের কিছু দিনের মধ্যে পর পর তিন দফায় ১৫% অর্থ আদায় করে নিয়ে সেই অর্থ অন্যত্র বিনিয়োগ করে সেখান থেকেও বড় অংকের অর্থ আয় করার সুযোগ পাবে কোম্পানিটি।
সংশ্লিষ্ট মহলের মতে, প্রথম স্টিল প্লেট কাটা বাবদ অর্থ পরিশোধের শর্তটি অত্যন্ত হাস্যকর। যা পৃথিবীর অন্য কোনো চুক্তিতে নেই। তাছাড়া, চুক্তি স্বাক্ষরের ১০ দিনের মধ্যে ১৫% অর্থ পরিশোধের শর্তটিও সম্পূর্ণ অস্বাভাবিক। এক্ষেত্রে শুধুমাত্র কাজ শুরুর সময় ১০% পর্যন্ত অর্থ পরিশোধ করে বাকি ৯০% অর্থ জাহাজ তৈরির বিভিন্ন ধাপে পরিশোধের ব্যবস্থা রাখা যেতো। সেক্ষেত্রে জাহাজটি মানসম্মতভাবে তৈরি হচ্ছে কিনা, পর্যবেক্ষণ করা যেতো। অগ্রিম অর্থ পরিশোধের কারণে বাড়তি যে সুদের বোঝা সেটা থেকেও রক্ষা পাওয়া যেতো। কিন্তু, নৌ-পরিবহন মন্ত্রণালয়ের প্রভাবশালী ব্যক্তিরা নিজেদের দুর্নীতির বড় অংকের কমিশন হাতিয়ে নেওয়ার লোভে সরকারি স্বার্থকে জলাঞ্জলি দিচ্ছেন এক্ষেত্রে। ২০১৪ সালের ৩০ এপ্রিল নৌ-পরিবহন মন্ত্রণালয়ের তৎকালীন সচিব সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম নিজে উপস্থিত থেকে মন্ত্রী শাহজাহান খানের সঙ্গে যোগসাজশে বাংলাদেশ সরকারের স্বার্থবিরোধী এই অবৈধ বাণিজ্যিক চুক্তিটি সম্পন্ন করেছেন। এরপর বাকি কাজ আনুষ্ঠানিকতার ধারায়ই এগুচ্ছে।
প্রথম নেগোসিয়েশন কমিটির দরপত্র মূল্যায়ন
৬টি জাহাজ ক্রয়ের প্রাথমিক প্রক্রিয়া শুরু হয় ২০১২ সালের জুলাই মাসে। এই প্রকল্পের ডিপিপি অনুমোদনের জন্য পরিকল্পনা কমিশনে প্রেরণ করা হয়।
এরপর ২০১২ সালের ১৮ সেপ্টেম্বর মন্ত্রণালয়ের যুগ্মসচিব আলাউদ্দিনের নেতৃত্বে প্রথম নেগোসিয়েশন কমিটি গঠন করা হয়। চীনা প্রতিষ্ঠান সিএমসি’র সঙ্গে আলোচনা চলে। উল্লেখ্য, সিএমসি জাহাজ নির্মাণকারী প্রতিষ্ঠান নয়। এটি একটি চীনা সরবরাহকারী অর্থাৎ মধ্যস্বত্বভোগী প্রতিষ্ঠান। সিএমসি’র প্রস্তাব অনুযায়ী জাহাজ ক্রয় সংক্রান্ত কমিটির সদস্যরা সংশ্লিষ্ট জাহাজ প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠানের ডকইয়ার্ড পরিদর্শন করেন। এছাড়া কমিটি ক্লার্কসমসহ কয়েকটি এডজাস্টার কোম্পানির মতামত নেয়। পরিদর্শন এবং এডজাস্টার কোম্পানির মতামতের ভিত্তিতে ওই ক্যাটাগরির ৬টি জাহাজ ক্রয়ের ব্যয় নির্ধারণ করে ১৫৬ মিলিয়ন ডলার। কমিটি সে অনুযায়ী একটি প্রস্তাবনা তৈরি করে মন্ত্রণালয়ে রিপোর্ট জমা দেয়।
কিন্তু, মন্ত্রী এবং তৎকালীন সচিব এতে ক্ষুব্ধ হন। মন্ত্রী শাহজাহান খান এবং তৎকালীন সচিব সৈয়দ মঞ্জুরুল ইসলাম চেয়েছিলেন আরো বেশি দর নির্ধারণ করতে। এজন্য কমিটির ওপর চাপও প্রয়োগ করেছিলেন। তাতে কাজ হয়নি। কমিটি প্রকৃত রিপোর্টই জমা দেয়। এর জের হিসেবে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে তদবির করে কমিটির সদস্য, শিপিং করপোরেশনের নির্বাহী পরিচালক (কমার্শিয়াল) মোস্তফা কামাল উদ্দিন ও নির্বাহী পরিচালক (অর্থ) গোলাম মওলাকে ওএসডি’র ব্যবস্থা করেন মন্ত্রী।
পছন্দের দরপ্রস্তাব
এই কমিটি থেকে দুই সদস্যকে ওএসডি করানোর পর নতুন একজন সদস্য এই কমিটিতে অন্তর্ভুক্ত করা হয়। তিনি হলেন বিএসসি’র নতুন নির্বাহী পরিচালক (অর্থ) ইয়াসমিন আফসানা। নতুন কমিটির ওপরও প্রচ-ভাবে চাপ প্রয়োগ করা হয় বেশি মূল্য নির্ধারণ করে রিপোর্ট পেশ করার জন্য। একে কেন্দ্র করে কমিটির একাধিক সদস্য এ সংক্রান্ত সভাতেও অংশ নেননি।
এসবের ফলে মন্ত্রণালয় এবং সংশ্লিষ্ট দফতরে চাপা ক্ষোভ বিরাজ করলেও থেমে থাকেনি মন্ত্রীর অপতৎপরতা। কর্মকর্তাদের চাপ দিয়ে কমিটির কাছ থেকে অস্বাভাবিক দামে জাহাজ কেনার সুপারিশ আদায় করা হয়েছে। এই কমিটি বস্তুত মন্ত্রী এবং তৎকালীন সচিবের ইচ্ছা পূরণ করেছে। কমিটি এই ৬টি জাহাজের দাম সুপারিশ করেছে ১৭৫ মিলিয়ন ডলার এবং এর সঙ্গে আরো সার্ভিস চার্জও যুক্ত করতে বলেছে। প্রস্তাবকৃত জাহাজের মান অনুযায়ী বাজারের যে দর তারচেয়ে এই মূল্য অনেক বেশি। অবাক ব্যাপার হলো, এই দরও পরে ঠিক থাকেনি।
আরো পছন্দের দ্বিতীয় নেগোসিয়েশন কমিটি
বাংলাদেশ শিপিং কর্পোরেশনের তৎকালীন ব্যবস্থাপনা পরিচালক, চিহ্নিত দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তা কমোডোর মকসুমুল কাদেরের নেতৃত্বে গঠন করা হয় দ্বিতীয় নেগোসিয়েশন কমিটি। মন্ত্রী-সচিবের অত্যন্ত পছন্দের এই কমিটি গঠন করা হয় ২০১৩ সালের ৯ এপ্রিল। এই কমিটির সদস্য হিসেবে রাখা হয় মন্ত্রী-সচিবের অত্যন্ত অনুগত কর্মকর্তাদেরকে। এদের মধ্যে ছিলেন সমুদ্র পরিবহন অধিদফতরের পরিচালক (প্রশাসন) মো. আলাউদ্দিন। তিনি এর আগে দীর্ঘ ৪ বছর চট্টগ্রাম বন্দরে শাস্তিমূলক পোস্টিং হিসেবে নিম্নপদে কাজ করেছেন। নেগোসিয়েশন কমিটির অন্য একজন সদস্য ছিলেন ইলিয়াস রেজা। ইলিয়াস রেজা মূলত চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের চিফ অডিট অফিসার। কিন্তু, তাকে শাস্তিমূলকভাবে গভীর সমুদ্র বন্দর কর্তৃপক্ষে সংযুক্ত করে রাখা হয়েছিলো। নতুন শাস্তি থেকে বাঁচার জন্য নেগোসিয়েশন কমিটির এই সদস্যরা মন্ত্রী-সচিব যেভাবে বলেছেন, ঠিক সেভাবেই কাজ করতে বাধ্য হয়েছেন।
জানা গেছে, নেগোসিয়েশনের জন্য সিএমসির প্রতিনিধিদল ঢাকা আসেন এপ্রিল, ২০১৪ এর প্রথমার্ধে। তারা প্রায় দু’সপ্তা ঢাকা থাকেন। কিন্তু, তারা শেষদিন বৈঠকে বসেন বিএসসির নেগোসিয়েশন কমিটির সদস্যদের সঙ্গে। এর আগে কমিটির সদস্যদের সঙ্গে তাদের সাক্ষাতই হয়নি, যা অবাক করার মতো ঘটনা। বস্তুত, নেগোসিয়েশন কমিটির সদস্যরা ছিলেন ভয়ভীতির মধ্যে। মন্ত্রী-সচিবের আদেশ পালন ছাড়া তাদের করার কিছুই ছিলো না।
এমনও অবাক করার মতো ঘটনা ঘটেছে, নেগোসিয়েশন কমিটির সদস্যরা সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত এবং রিপোর্ট তৈরি করার আগেই শিপিং কর্পোরেশনের তৎকালীন দুর্নীতিবাজ এমডি কমোডোর মকসুমুল কাদের কারো সঙ্গে আলোচনা না করেই সিএমসির চীনাস্থ প্রধান কার্যালয়ে ই-মেইল করে জানিয়ে দেন ১৮৩.৫ মি. ডলার দর ধরার সিদ্ধান্ত হয়েছে। তার এই ই-মেইলটি ছিলো সম্পূর্ণ অনৈতিক। বিএসসির এমডির এই অনৈতিক কর্মকাcBgeর কারণে নেগোসিয়েশন কমিটি বেকায়দায় পড়ে যায়। দর এর থেকে কমানো সম্ভব হয়নি আর।
অবশ্য, ইতিমধ্যে আরো একটি ঘটনা ঘটে যায়। এপ্রিল, ২০১৪ এর ১৬/১৭ তারিখের দিকে মন্ত্রী শাহজাহান খানের সভাপতিত্বে বিএসসির একটি বোর্ড সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় নেগোসিয়েশন কমিটির সদস্যরাও উপস্থিত ছিলেন। মন্ত্রী ওই সভায় বলেন, চীনা প্রতিনিধিদলের সঙ্গে নাকি তার নেগোসিয়েশন হয়েছে। তিনি ১৮৫.৫০ মি. ডলার দরে রাজি হয়েছেন। সচিব সৈয়দ মনজুরুল ইসলামেরও এতে সায় আছে বলে মন্ত্রী জানিয়েছিলেন। মন্ত্রীর এমন বক্তব্যে নেগোসিয়েশেন কমিটির সদস্যরা অবাক হন।
নেগোসিয়েশন কমিটির রিপোর্টের আগেই চুক্তিস্বাক্ষর
৬টি জাহাজ ক্রয়ের ব্যাপারে বাণিজ্যিক চুক্তি সম্পন্ন হয় ৩০ এপ্রিল, ২০১৪। অথচ এ সময় পর্যন্ত নেগোসিয়েশন কমিটি তাদের রিপোর্টই পেশ করেনি। নেগোসিশেন কমিটির কাছ থেকে পরবর্তী মাসের অর্থাৎ মে মাসের ২২ তারিখে চাপ প্রয়োগ করে বেক ডেট দিয়ে রিপোর্ট আদায় করা হয়েছে। সংশ্লিষ্ট একটি সূত্র এ তথ্য নিশ্চিত করেছে।
জানা গেছে, নেগোসিয়েশন কমিটির দু’জন সদস্য (নৌ পরিবহন মন্ত্রণালয় ও জ্বালানি মন্ত্রণালয়) তাদের রিপোর্টে ১৮৩.৫০ মি. ডলার দরের কথা উল্লেখ করেছেন। এমনকি তারা এও বলেছেন যে, যেহেতু জাহাজ নির্মাণকারী প্রতিষ্ঠানটি একেবারেই নতুন এবং যেহেতু পূর্বের প্রতিষ্ঠান থেকে জাহাজ কেনা হচ্ছে না তাই এ জাহাজগুলোর দর আরো কম হওয়া উচিত।
উল্লেখ্য, প্রথম যে মূল্যায়ন কমিটি গঠন করা হয়েছিল সেই কমিটি বিদেশে গিয়ে সরেজমিন পরিদর্শন করে এসে ওই ৬ জাহাজের দাম নির্ধারণ করে ১৫৬ মিলিয়ন ডলার বা ১,২১৬ কোটি টাকা (প্রতি ডলার ৭৮ টাকা ধরে)। কিন্তু, পরবর্তীতে মন্ত্রীর ইচ্ছানুযায়ী চুক্তি হয়েছে ১৮৪.৫ মিলিয়ন ডলার (প্রায় ১,৪৩৯ কোটি টাকা)। যা মূল্যায়ন কমিটির প্রস্তাবনার চেয়ে ২৮.৫ মিলিয়ন ডলার (প্রায় ২২৩ কোটি টাকা) বেশি।
উল্লেখ্য, পরবর্তীতে নতুন কমিটি মন্ত্রীর পছন্দের যে রিপোর্ট পেশ করেছিল তাতে মূল্য ধরা হয়েছিল ১৭৫ মিলিয়ন ডলার। অর্থাৎ দেখা যাচ্ছে, এই কমিটির সুপারিশের চেয়েও প্রায় ৭৪ কোটি টাকা বেশি দাম ধরে চুক্তি করা হয়েছে।
নির্ভরযোগ্য সূত্র মতে, জাহাজ ক্রয়ের এই চুক্তিতে সবচে’ বড় জালিয়াতিটি হয়েছে, যে প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে জাহাজ কেনার জন্য আলাপ-আলোচনা চলছিল এবং কমিটির সদস্যরা জাহাজ নির্মাণকারী যে প্রতিষ্ঠানের শিপইয়ার্ড পরিদর্শন করে ১৫৬ মিলিয়ন ডলার দাম নির্ধারণ করেছিল সেখান থেকে এখন জাহাজ কেনা হচ্ছে না। চুক্তিতে নতুন যে প্রতিষ্ঠানের নাম উল্লেখ করা হয়েছে সে সম্পর্কে দরপত্র মূল্যায়ন কমিটির সদস্যরা আগে থেকে জানতেনই না। নতুন এই প্রতিষ্ঠানের নামও শোনেননি তারা কখনো। 
৬টি জাহাজ ক্রয়ে এক নজরে বড় দাগের যেসব অনিয়ম
১. বাংলাদেশ শিপিং কর্পোরেশনের জন্য ৬টি জাহাজ ক্রয় করার জন্য যে বাণিজ্যিক চুক্তি করা হয়েছে তাতে আইন মন্ত্রণালয় এবং ইআরডির মতামত নেয়া হয়নি। অথচ বিদেশি ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে যে কোনো চুক্তির আগে এ ধরনের মতামত নেয়াটা অপরিহার্য।
২. বাণিজ্যিক চুক্তির আগে অর্থনৈতিক বিষয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির অনুমোদন নেয়াটাও অপরিহার্য ছিলো। অথচ এগুলোর কোনোটিই করা হয়নি।
৩. চুক্তি স্বাক্ষরের পর তা অনুমোদনের জন্য পাঠানো হয় অর্থনৈতিক বিষয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটি (সিসিইএ)তে। কিন্তু, তখন মন্ত্রিসভা কমিটির আর কিছুই করার থাকে না, এটি অনুমোদন করা ছাড়া। যেহেতু ইতিমধ্যে চীনের মতো একটি প্রভাবশালী দেশের সঙ্গে চুক্তি হয়ে গেছে। ফলে প্রথমে অনুমোদন না করলেও পরে অনুমোদন করতে বাধ্য হয়েছে সিসিইএ।
৪. একই অবস্থা হয়েছে আইন মন্ত্রণালয় এবং ইআরডির মতামতের ক্ষেত্রেও। যেহেতু চুক্তি আগেই হয়ে গেছে, তাই আইন মন্ত্রণালয় এবং ইআরডি ইতিবাচক মতামত দিতে বাধ্য হয়েছে। তবে মতামতের সঙ্গে তারা যেসব নির্দেশনা দিয়েছে সেগুলোও যথাযথভাবে মানা হয়নি।
৫. জাহাজ ক্রয়ের জন্য প্রথম যে মূল্যায়ন কমিটি গঠন করা হয়েছিলো তারা দর যাচাই এবং চীনের ডকইয়ার্ড পরিদর্শন করে ১৫৬ মিলিয়ন ডলার দর সুপারিশ করেছে। পরবর্তীতে অবৈধভাবে সেই কমিটির দর পরিবর্তন করা হলো। অবৈধভাবে গঠিত পছন্দের কমিটি সুপারিশ করলো ১৭৫ মিলিয়ন ডলার। সেটাও অনুসরণ করা হয়নি। চুক্তি করা হলো ১৮৪.৫ মিলিয়ন ডলারে।
এ প্রসঙ্গে যুক্তি দেখানো হয়েছে যে, ক্লাকসমের (জাহাজের বাজার দর পর্যালোচনাকারী প্রতিষ্ঠান) তথ্য অনুযায়ী বাজার দর ইতিমধ্যে নাকি সাড়ে ৫% বেড়ে গেছে। যদি তা-ই হয়ে থাকে তাহলে অবশ্যই ১৫৬ মিলিয়ন ডলারের উপর সাড়ে ৫%। কিন্তু এক্ষেত্রে ধরা হয়েছে ১৭৫ মি. ডলারের উপর সাড়ে ৫%, যা সম্পূর্ণ অযৌক্তিক।
৬. চীনের যে প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে জাহাজ ক্রয়ের চুক্তি করা হয়েছে তারা নির্মাণকারী প্রতিষ্ঠান নয়, সরবরাহকারী। দরপত্র মূল্যায়নকারী কমিটি চীনের যে জাহাজ নির্মাণকারী প্রতিষ্ঠানের ডকইয়ার্ড সরেজমিন পরিদর্শন করে এসেছে সেখান থেকে এখন জাহাজ নেয়া হচ্ছে না। যে নির্মাণকারী প্রতিষ্ঠানের জাহাজ এখন নেয়ার জন্য চুক্তি করা হয়েছে দরপত্র মূল্যায়ন কমিটির সদস্যরা তাদের চেনেন না, তাদের ডকইয়ার্ড পরিদর্শন করেননি বা তাদের সঙ্গে কোনো রকমের আলোচনাও হয়নি। চুক্তি স্বাক্ষরের পর বিএসসির এমডিসহ মন্ত্রী-সচিবের পছন্দের কর্মকর্তারা এই নতুন প্রতিষ্ঠানের অর্থায়নে ও আতিথেয়তায় চীন সফর করে এসেছেন। বস্তুত, এটি ছিলো প্রমোদ ভ্রমণ।
৭. অর্থ পরিশোধের পদ্ধতি এবং কিস্তি যেভাবে নির্ধারণ করা হয়েছে তাতে চুক্তির আন্তর্জাতিক রীতি-নীতি মোটেই অনুসরণ করা হয়নি। এতে সরকারের স্বার্থ মোটেই দেখা হয়নি। দেখা যাচ্ছে যে, জাহাজ সরবরাহের সময় দেয়া হয়েছে ২৭ মাস পর্যন্ত। অথচ জাহাজ নির্মাণের শুরুতেই তিন কিস্তিতে (১৫%+১৫%+২৫%) মোট চুক্তিমূল্যের শতকরা ৫৫% ভাগ অর্থ পরিশোধ করে দেয়া হচ্ছে, যা সম্পূর্ণ অযৌক্তিক। প্রাপ্ত এই অর্থ সংশ্লিষ্ট নির্মাণকারী প্রতিষ্ঠান বাইরে যে কোনো খাতে দীর্ঘ সময় ধরে বিনিয়োগ করে রাখতে পারবে। অন্যদিকে অগ্রিম এতো অর্থ পরিশোধের কারণে বাংলাদেশ সরকারকে এরজন্য বিপুল অংকের সুদের বোঝা বইতে হবে।
৮. চুক্তি স্বাক্ষরের পর ১৫%, প্রথম স্টিল প্লেট কাটা বাবদ ১৫% এবং জাহাজ নির্মাণ শুরু বাবদ ২৫% অর্থ দেওয়া হবে। জাহাজ নির্মাণের ক্ষেত্রে এ ধরনের চুক্তি আন্তর্জাতিক রীতিনীতি বিরোধী। ‘প্রথম স্টিল প্লেট কাটা’ বাবদ ১৫% পরিশোধের যে শর্তটি দেওয়া হয়েছে তা অত্যন্ত হাস্যকর।
৯. জাহাজ ক্রয়ের ক্ষেত্রে অর্থ পরিশোধের কিস্তিগুলো নির্ধারণ করার নিয়ম হলো, নির্মাণকাজ শুরু, কাঠামো নির্মাণ, ইঞ্জিন বসানো, ক্রেন বসানো, ইন্টেরিওর ফিনিশিং, সী ট্রায়াল প্রভৃতি। জাহাজটি যাতে মানসম্পন্নভাবে তৈরি হয়, জাহাজ তৈরিতে পর্যবেক্ষণ যাতে ভালো ফলাফল দেয় সেজন্যই অর্থ পরিশোধের ক্ষেত্রে এই ধাপগুলো চুক্তিপত্রে নির্ধারণ করা হয়ে থাকে।
১০. ইআরডির মতামতে যা বলা হয়েছে-
ক) চুক্তিমূল্য আন্তর্জাতিক বাজার মূল্যের সঙ্গে প্রতিযোগিতামূলক হওয়া প্রয়োজন। কিন্তু, চুক্তির পর দর বাড়ানো বা কমানোর কোনো সুযোগ নেই। যেহেতু বাণিজ্যিক চুক্তি ইতিমধ্যে হয়ে গেছে, দর নির্ধারণ হয়ে গেছে তাই ইআরডি এ বিষয়ে কোনো মতামত দেয়া থেকে বিরত থেকেছে।
খ) ইআরডি প্রথম দুটি কিস্তি ১৫% এবং ১০% করার কথা বলেছে।
অথচ, এক্ষেত্রে ইআরডির নির্দেশনাও মানা হয়নি। প্রথম দুটি কিস্তি করা হয়েছে ১৫% এবং ১৫%।
গ) ইআরডির মতামতে বলা হয়েছে, চুক্তিটিতে পারফরমেন্স গ্যারান্টি এর সিকিউরিটি ডিপোজিট/বন্ড এর বিষয়টি পরিষ্কার নয়, Warranty Period এর জন্য কী পরিমাণ অর্থ জমা থাকবে তা উল্লেখ করা প্রয়োজন।
কিন্তু, ইআরডির নির্দেশনার পরও এ ব্যাপারে কোনোই পদক্ষেপ নেয়া হয়নি। দেখা যাচ্ছে, Warranty Period এর সময় কোনো অর্থই জমা থাকছে না। চুক্তিতে শুধুমাত্র এই সময়ে তাদের একজন ইঞ্জিনিয়ার এখানে উপস্থিত থাকার কথা বলা হয়েছে।
ঘ) নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে জাহাজ সরবরাহ করতে না পারলেও ৪৫ দিন পর্যন্ত কোনো জরিমানা দিতে হবে না, চুক্তিতে বলা আছে। এটা শূন্য দিনে নামিয়ে আনার জন্য ইআরডি বলেছে। অর্থাৎ নির্ধারিত তারিখের মধ্যে জাহাজ সরবরাহ করতে না পারলে যাতে ওই তারিখের পরই জরিমানা আরোপ করা যায় সেজন্য ইআরডি এই পদক্ষেপ নিতে বলেছে।
অথচ, ইআরডির এই নির্দেশনাও মানা হয়নি।
ঙ) বিলম্বে জাহাজ সরবরাহের জন্য প্রতিদিন ১২০০০ ডলার জরিমানা নির্ধারণের কথা বলেছে ইআরডি।
কিন্তু, ইআরডির এই নির্দেশনা না মেনে প্রতিদিনের জন্য জরিমানা নির্ধারণ করা হয়েছে ৫ হাজার ডলার মাত্র।
চ) জাহাজের মান নিশ্চিত করার জন্য আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত ইন্ডিপেন্ডেন্ট সার্ভেয়ার নিয়োগ এবং তাদের খরচ বহনের বিষয়টি বাণিজ্যিক চুক্তির যথাযথস্থানে সন্নিবেশিত করতে বলা হয়েছে।
কিন্তু দেখা যাচ্ছে, ইআরডির নির্দেশনার পরও চুক্তিতে এর কোনো ব্যবস্থা রাখা হয়নি।
১১. আইন মন্ত্রণালয়ের মতামতে বলা হয়েছে-
ক) রেগুলেশন, রুলস, কনভেনশনস, কোড, রেজুলেশন ইত্যাদি নথিতে না থাকায় চুক্তির ক্ষেত্রে এগুলোর সংশ্লিষ্টতা পরীক্ষা করা সম্ভব হচ্ছে না।
খ) প্রতিযোগিতামূলক পদ্ধতিতে দরপত্র মূল্যায়ন এবং পিপিআর অনুসরণ করতে বলা হয়েছে আইন মন্ত্রণালয়ের মতামতে।
অথচ, প্রতিযোগিতামূলক দর বা পিপিআর এক্ষেত্রে অনুসরণ করা হয়নি।
অভিজ্ঞতাহীন প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে জাহাজ ক্রয়
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, জোসান চ্যাংহোং ইন্টারন্যাশনাল শিপইয়ার্ড কোম্পনি লি. নামে একটি চীনা প্রতিষ্ঠান এই জাহাজগুলো নির্মাণ করবে। কিন্তু, এই প্রতিষ্ঠানটি একেবারেই নতুন। জাহাজ রফতানির কোনো পূর্ব অভিজ্ঞতাই এদের নেই।
এদিকে চীনের যে সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান মধ্যস্বত্বভোগী হিসেবে এক্ষেত্রে কাজ করছে অর্থাৎ যাদের সঙ্গে বাণিজ্যিক চুক্তি সম্পাদিত হয়েছে সিএমসি নামে ওই প্রতিষ্ঠানটি নিজেরা কোনো জাহাজ নির্মাণ করে না। সিএমসি একটি ট্রেডিং প্রতিষ্ঠান। বিভিন্ন মেকানিকেল এবং ইলেক্ট্রিকেল দ্রব্যাদি আমদানি-রফতানি করে থাকে এই প্রতিষ্ঠান। জাহাজ উৎপাদন তো নয়ই, সরবরাহকারী হিসেবেও এদের অভিজ্ঞতা নেই।
নৌ-পরিবহন মন্ত্রণালয় এবং বাংলাদেশ শিপিং কর্পোরেশনের জাহাজ ক্রয়ের কাগজপত্র ও চুক্তিতে সিএমসিকে চীনের রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে।
বাস্তবে সিএমসি চীনের সরাসরি রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান নয়। চীনের রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠানসমুহের তালিকায় সিএমসির নাম নেই। সিএমসির ওয়েবসাইটেই বলা আছে, এটি চীনের অন্য একটি রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠানের অধীন প্রতিষ্ঠান মাত্র। শীর্ষ কাগজের সৌজন্যে

মজলুম জননেতা মাওলানা আব্দুল হামিদ খান ভাসানীর ৩৯তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে বেগম খালেদা জিয়ার বাণী


“জাতীয় নেতা মওলানা আব্দুল হামিদ খান ভাষানীর মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে আমি তাঁর স্মৃতির প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানাই ও তাঁর রুহের মাগফেরাত কামনা করি।
মওলানা ভাসানী- যাঁকে মজলুম জননেতা হিসেবে মানুষ জানেন, তিনি ছিলেন আমাদের জাতীয় স্বাধীনতার স্বপ্নদ্রষ্টা এবং দেশে জাতীয় সংকটে মুক্তির দিশারী।
সাম্রাাজ্যবাদ, আধিপত্যবাদ, উপনিবেশবাদ বিরোধী দীর্ঘ সংগ্রামে তিনি জীবদ্দশায় আপোষহীন নেতৃত্ব দিয়েছেন। ব্রিটিশ বিরোধী আন্দোলন থেকে শুরু করে উপমহাদেশের নিপীড়িত-নির্যাতিত কৃষক-শ্রমিক মেহনতি মজলুম জনগণের ন্যায্য অধিকার আদায়ের সংগ্রামে শোষকের বিরুদ্ধে মওলানা ভাষানী নির্ভিক ও বলিষ্ঠ নেতৃত্ব দিয়েছেন।
পাকিস্তানী গণবিরোধী দু:শাসনের বিরুদ্ধে তিনি সম্মুখভাগে থেকে নেতৃত্ব দিয়েছেন এবং ৫০ দশকেই উপলব্ধি করতে পেরেছিলেন যে, তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানের মানুষের আত্মনিয়ন্ত্রণাধিকার, স্বাধীকার এবং এক পর্যায়ে স্বাধীনতা ছাড়া কোন বিকল্প নেই।
বাংলাদেশের মহান মুক্তিযুদ্ধে তিনি জাতীয় উপদেষ্টা পরিষদে থেকে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছেন এবং স্বাধীন বাংলাদেশের অভ্যুদয়ের পর স্বাধীনতা যুদ্ধের মূল চেতনা তথা গণতন্ত্র, মৌলিক-মানবাধিকার সহ মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠা প্রশ্নেও কোন আপোষ করেননি।
আমাদের দেশের গণতন্ত্র, স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব ও মানুষের মৌলিক-মানবাধিকার যখন হুমকির সম্মুক্ষীণ হয় তখন মওলানা ভাষানী আমাদের অনুপ্রেরণার উৎস হন। তাঁর শেখানো পথ অনুসরণ করে জাতীয় স্বার্থ রক্ষা, গণতন্ত্র ও স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব ও মানবতার শত্রুদের বিরুদ্ধে প্রতিবাদী হতে আমাদের চিরদিন সাহস যোগাবে।
আজ দেশে এক নব্য স্বৈরাচার ক্ষমতায় বসে আছে।
দেশে আজ গণতন্ত্র নেই, মানবাধিকার, মৌলিক অধিকার ধুলায় লুন্ঠিত। মানুষের ভোটের অধিকার হরণকারী বর্তমান সরকার গায়ের জোরে তাদের অপশাসন বজায় রেখেছে। জনগণের ম্যান্ডেট ছাড়া দেশ পরিচালনাকারী এ সরকারের শাসনামলে আজ শুধুই গণতন্ত্র ও মানুষের অধিকারগুলোই বিপন্ন হয়ে পড়েনি-জাতীয় নিরাপত্তাও হুমকির সম্মুক্ষীণ হয়ে পড়েছে। আগ্রাসী শক্তির আগ্রাসী হুমকির মুখে রয়েছে প্রিয় মাতৃভূমি বাংলাদেশ। জাতির এই সংকটের মূহুর্তে মজলুম জননেতা মওলানা ভাষানী’র প্রদর্শিত পথই দেশের মানুষকে শক্তি ও সাহস যোগাবে অশুভ শক্তির বিরুদ্ধে দৃঢ় অবস্থান নিতে এবং অপশাসন, অপরাজনীতিকে জনগণের ইচ্ছাধীনে পরাস্ত করতে।

আল্লাহ হাফেজ, বাংলাদেশ জিন্দাবাদ।”

মঙ্গলবার, ১৩ অক্টোবর, ২০১৫

আঙ্কারায় বোমা বিস্ফোরণে হতাহতের ঘটনা তুরস্কের দূতাবাসের শোক বইতে মতিউর রহমান আকন্দের স্বাক্ষর


তুরস্কের রাজধানী আন্কারায় প্রধান রেল স্টেশনের কাছে জোড়া বোমা বিস্ফোরণে ব্যাপক হতাহতের ঘটনায় বাংলাদেশস্থ তুর্কী দূতাবাসের শোক বইতে গতকাল সোমবার স্বাক্ষর করেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য এডভোকেট মতিউর রহমান আকন্দ। 
জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও কেন্দ্রীয় প্রচারবিভাগের সহকারী সেক্রেটারি মতিউর রহমান আকন্দ গতকাল সোমবার দুপুরে ঢাকাস্থ তুরস্ক দূতাবাসে গমন করেন। তিনি গত ১০ অক্টোবর তুরস্কের রাজধানী আঙ্কারায় বোমা বিস্ফোরণে ৯৫ জন লোক নিহত এবং ২৪৫ জন লোক আহত হওয়ার মর্মান্তিক ঘটনায় গভীর শোক প্রকাশ করে দূতাবাসে সংরক্ষিত শোক বইতে স্বাক্ষর করেন। এ সময় উপস্থিত ছিলেন দূতাবাসের ডেপুটি চীফ অফ মিশন Mr. Ahmed Gurbuz.
জামায়াতে ইসলামীর ভারপ্রাপ্ত আমীর মকবুল আহমাদের পক্ষ থেকে তিনি শোক বইতে উল্লেখ করেন, বোমা হামলার এ ঘটনার নিন্দা জানানোর কোন ভাষা নেই। তুরস্কের আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি ঘটিয়ে গণতান্ত্রিক ব্যবস্থাকে অস্থিতিশীল করার হীন উদ্দেশ্যেই এ সন্ত্রাসী বোমা হামলা চালানো হয়েছে। নিহতদের জন্য তুরস্ক সরকার তিন দিনের যে শোক ঘোষণা করেছেন তার প্রতি আমি সংহতি প্রকাশ করছি। আমরা আশা করি তুরস্ক সরকার এবং জনগণ শীঘ্রই এ অবস্থা কাটিয়ে উঠতে সক্ষম হবেন। আমরা নিহতদের রূহের মাগফিরাত কামনা করছি এবং তাদের শোক-সন্তপ্ত পরিবার-পরিজন ও আহতদের প্রতি গভীর সমবেদনা প্রকাশ করছি। দৈনিক সংগ্রাম এর সৌজন্যে

রবিবার, ১১ অক্টোবর, ২০১৫

বিচারের সকল প্রক্রিয়া স্থগিত করতে লর্ড কার্লাইলের আহ্বান আলী আহসান মোহাম্মদ মুজাহিদ ন্যায্য বিচার পাননি


বৃটিশ হাউজ অব লর্ডস এর সদস্য লর্ড কার্লাইল এক বিবৃতিতে বলেছেন, আলী আহসান মোহাম্মদ মুজাহিদ ন্যায্য বিচার পাননি। তিনি বিচারের সকল প্রক্রিয়া স্থগিত করে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-আইসিটি এর প্রক্রিয়া নিয়ে আন্তর্জাতিক সমর্থনপুষ্ট রিভিউ করার আহ্বান জানান, যা হবে পুরোপুরি গ্রহণযোগ্য ও স্বচ্ছ। তিনি আশা প্রকাশ করেন, এর মধ্য দিয়ে এই বিচার প্রক্রিয়াটি ইতিহাসে এমন একটি উদাহরণ হয়ে থাকবে, যা আর কখনও হয়নি।
গতকাল রোববার দেয়া বিবৃতিতে তিনি বলেন, নাগরিক ও রাজনৈতিক অধিকার সংক্রান্ত আন্তর্জাতিক চুক্তি (আইসিসিপিআর) এবং মানবাধিকার বিষয়ক শাশ্বত ঘোষণা (ইউডিএইচআর) স্বাক্ষরকারী দেশ হিসেবে বাংলাদেশ সরকারের চুক্তির আওতায় আন্তর্জাতিক মূলনীতিগুলো মেনে চলা উচিত। দুর্ভাগ্যবশত অনেক ক্ষেত্রে এই বিষয়গুলো উপেক্ষিত রয়ে যাচ্ছে। 
লর্ড কার্লাইল আলী আহসান মোহাম্মদ মুজাহিদের নাম উল্লেখ করে বলেন, তার মামলা দেখে মনে হয়, বাংলাদেশের আইনী ব্যবস্থা রাজনৈতিক প্রতিষ্ঠানে পরিণত হয়েছে এবং তা প্রতিশোধের অস্ত্র হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে। 
তিনি বলেন, ১৯৭১ সালের যুদ্ধের ঘটনা নিয়ে তদন্ত ও অপরাধের জন্য দায়ী ব্যক্তিদের বিচারের মুখোমুখি করার উদ্যোগ প্রশসংনীয়। কিন্তু এর প্রক্রিয়া কঠোরভাবে সমালোচিত ও আন্তর্জাতিকভাবে নিন্দনীয়। তিনি বলেন, মুজাহিদ ন্যায্য বিচার পাননি। অনেক উদ্বেগের বিষয়গুলো সুরাহা করা হয়নি। তার বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ প্রমাণে ব্যর্থ হয়েছে, অধিকন্তু জনশ্রুতির উপর ভিত্তি করা হয়েছে। তিনি বলেন, মৃত্যুদন্ড দেয়ার ক্ষেত্রে বিচার প্রক্রিয়ার পদ্ধতিগত সততার সর্বোচ্চ মানদন্ড রক্ষা করা উচিত। কিন্তু এখানে তা কাঙ্খিত মানের হয়নি। 
বৃটিশ এই লর্ড বাংলাদেশ সরকারের প্রতি চলমান প্রক্রিয়া স্থগিত এবং সকল সাজা প্রদান বন্ধ করে আইসিটি ও তার প্রক্রিয়া নিয়ে আন্তর্জাতিক সমর্থনপুষ্ট রিভিউ করার আহ্বান জানান, যা হবে পুরোপুরি গ্রহণযোগ্য ও স্বচ্ছ। 
তিনি বাংলাদেশ সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেন, এর মধ্য দিয়ে বিচার প্রক্রিয়াটি একটি সম্মানজনক পর্যায়ে যাবে এবং প্রমাণিত হবে যে এটা প্রতিহিংসার জন্য ব্যবহৃত হচ্ছে না। আর এই বিচার প্রক্রিয়াটি ইতিহাসে এমন একটি উদাহরণ হয়ে থাকবে, যা আর কখনও হয়নি। 
জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল ও সাবেক মন্ত্রী আলী আহসান মোহাম্মদ মুজাহিদের মৃত্যুদন্ডাদেশ বহাল রেখে আপীল বিভাগের দেয়া রায় গত ৩০ সেপ্টেম্বর প্রকাশিত হয়। এরপর গত ৩ অক্টোবর আইনজীবীরা তার সাথে সাক্ষাৎ করেন। সাক্ষাৎ শেষে তার আইনজীবী শিশির মোহাম্মাদ মনির সাংবাদিকদের জানান, আলী আহসান মোহাম্মদ মুজাহিদ আপিল বিভাগের চূড়ান্ত রায় পুনর্বিবেচনার (রিভিউ পিটিশন) আবেদনের প্রস্তুতি নিতে পরামর্শ দিয়েছেন। নির্ধারিত সময়ের মধ্যেই রিভিউ পিটিশন দায়ের করা হবে।

কেন ডিভিশন চাইলাম ! : মাসুদ সাঈদী


বাংলাদেশ বার্তা: আজ কিছু পত্রিকার রিপোর্ট দেখলাম, 'হঠাৎ কেন ডিভিশন চাইলেন দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদী'। রহস্য আর রহস্য! আছে শিরোনামে রহস্য, আছে রিপোর্টের মধ্যেও রহস্য! কোনো কোনো পত্রিকা রিপোর্ট এমন করেছে যে রিপোর্ট পড়ে মনে হয়, ডিভিশন চাওয়াটাও যেন একটি অপরাধ।
পত্রিকার রিপোর্টের আলোকে কেন আমরা ডিভিশন চাইলাম সে বিষয়ে বিবেকবানদের কাছে আমি এর ব্যাখ্যা দেয়ার প্রয়োজনীয়তা অনুভব করছি। কারন, এক শ্রেণীর মানুষ এই আবেদনের মধ্যে 'সরকারের সাথে জামায়াতের আঁতাত' এর গন্ধ খুঁজে পাবেন। কেউবা আবার এর প্রতিবাদে রাস্তা বন্ধ করে 'মঞ্চ' খুলে 'পদ্মা মেঘনা যমুনা, এই আবেদন মানিনা' শ্লোগান তুলে রাজপথ প্রকম্পিত (!) করে তুলতে পারেন।
"আমার প্রানপ্রিয় পিতা আল্লামা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদী ট্রাইব্যুনালের রায় হওয়ার পূর্ব পর্যন্ত ডিভিশন-১ প্রাপ্ত বন্দী হিসেবে কারাগারে অন্তরীন ছিলেন। রায় হওয়ার পরপরই আমার পিতার ডিভিশন বাতিল হয়ে যায়। এরপর আপীল বিভাগ ট্রাইব্যুনালের রায় কমিয়ে যাবজ্জীবন করার পর জেল কোডের ১৫ নং অধ্যায়ের ক্লাসিফিকেশন শিরোনামের অধীন ৬১৭ নম্বর বিধি মোতাবেক আমার পিতা ডিভিশন-২ পাওয়ার অধিকারী হন। কারাগারে বহু সংখ্যক ডিভিশন-২ প্রাপ্ত কয়েদী রয়েছেন। কিন্তু গত এক বছরেও কারা কর্তৃপক্ষ আমার পিতাকে তার প্রাপ্য ডিভিশন-২ প্রদান করেননি।
আমার পরম শ্রদ্ধেয় পিতা আল্লামা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদী দীর্ঘ ৩৯ বছর যাবত ডায়াবেটিক রোগে আক্রান্ত। তিনি একই সাথে হৃদরোগেও আক্রান্ত। ২০০৩ সালে সর্ব প্রথম তার হার্টের করোনারী আর্টারীতে দুটি ব্লক ধরা পড়ে। একটিতে ৭০% অন্যটিতে ৯০%। তখন তার আর্টারীতে ২টি রিং স্থাপন করা হয়। এরপর আওয়ামী সরকার কর্তৃক অন্যায়ভাবে গ্রেফতার করার পর ২০১২ সালে তিনি বুকে তীব্র ব্যাথা নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হন। তখন আবারো আমার পিতার আর্টারীতে ৩টি ব্লক ধরা পড়ে। একটিতে ৯৯%, একটিতে ৯৫% এবং অন্যটিতে ৮০%। এরই প্রেক্ষিতে তাৎক্ষনিকভাবে ডাক্তারের সিদ্ধান্তে তার আর্টারীতে ৩টি রিং স্থাপন করা হয়। পূর্বের ২টি এবং এখনকার ৩টি নিয়ে বর্তমানে সর্বমোট ৫টি রিং আমার পিতার করোনারী আর্টারীতে স্থাপন করা আছে।
এছাড়া আমার বাবা আর্থাইটিস রোগেও আক্রান্ত। এ কারনে হাঁটু ও কোমড়ে রয়েছে তার তীব্র ব্যাথা। সরকার কর্তৃক অন্যায়ভাবে তাকে গ্রেফতারের পূর্বে তিনি নিয়মিত ফিজিওথেরাপী নিতেন। গ্রেফতার হওয়ার পর সেই রকম থেরাপী নেয়ার সুযোগ আর আমার পিতার হয়নি। যে কারনে তার হাঁটু ও কোমড়ের ব্যাথা প্রতিনিয়ত বেড়েই চলেছে।
আমার আব্বার বয়স এখন ৭৬ চলছে। এই বয়সেও উপরোক্ত নানাবিধ শারীরিক সমস্যার পরও শুধুমাত্র আল্লাহ তায়ালার মেহেরবাণীতে তিনি ভালোই আছেন। তবে বয়স ও অসুখজনিত সমস্যার কারনে তিনি শারীরিক কষ্টে আছেন। এখন তিনি দাঁড়িয়ে নামাজ পড়তে পারেন না। কারো সাহায্য ছাড়া বিছানা থেকে একা উঠে দাঁড়াতে পারেন না। ডায়াবেটিক কন্ট্রোল রাখার জন্য তার নিয়মিত হাঁটার প্রয়োজন হয় কিন্তু এখন তিনি কারো সাহায্য ছাড়া হাঁটতেও পারেন না।
এমতাবস্থায়, সংসদ সদস্য ছিলেন শুধু এই কারনে নয় বরং পিতার প্রতি দ্বায়িত্ব ও কর্তব্যবোধ থেকে পিতাকে অসুস্থতাজনিত শারীরিক কষ্ট থেকে সামান্য প্রশান্তি দেয়ার প্রত্যাশায় ব্যাকুল এক সন্তান হিসেবে আমি গত ৯ আগষ্ট ২০১৫ তারিখে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব বরাবরে যথাযথ কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে আমার পিতার প্রাপ্য ডিভিশন চেয়ে আবেদন করি। কিন্তু পরিতাপের বিষয় হল, দুই মাস পার হয়ে গেলেও অদ্যাবধি সেই আবেদনের কোন উত্তর এখনো আমি পাইনি।
এই আবেদনের মধ্যে কোন দল নেই-মত নেই, রাজনীতি নেই-কুটনীতিও নেই। আছে শুধু পিতার প্রতি সন্তানের ব্যাকুলতা, আছে শুধু পিতার প্রতি সন্তানের নিখাঁদ শ্রদ্ধা আর ভালবাসা।
Masood Sayedee - মাসুদ সাঈদী

শনিবার, ১০ অক্টোবর, ২০১৫

নেতা-কর্মীদের গ্রেফতারের নিন্দা সরকার জনসমর্থন হারিয়ে জোরপূর্বক ক্ষমতায় টিকে থাকার ষড়যন্ত্র করছে -ডাঃ শফিকুর রহমান


পুলিশের গ্রেফতার ও জুলুম থেকে গৃহবধূ এবং ছাত্রীরাও রেহাই পাচ্ছে না
পটুয়াখালী, সাতক্ষীরা, সিলেট, নীলফামারী, নোয়াখালী, ঢাকা মহনগারী এবং চট্টগ্রামে জামায়াতে ইসলামী ও ইসলামী ছাত্রশিবিরের নেতা-কর্মীদের অন্যায়ভাবে গ্রেফতারের ঘটনার তীব্র নিন্দা এবং প্রতিবাদ জানিয়ে দেয়া বিবৃতিতে জামায়াতে ইসলামীর ভারপ্রাপ্ত সেক্রেটারি জেনারেল ডাঃ শফিকুর রহমান বলেন, সরকার গ্রেফতার ও নির্যাতন চালিয়ে শক্তির জোরে অন্যায়ভাবে ক্ষমতায় আঁকড়ে থাকার অসৎ উদ্দেশ্যেই দেশের বিভিন্ন স্থানে জামায়াত এবং ছাত্রশিবিরের নেতা-কর্মীদের গ্রেফতার করছে। 
তিনি বলেন, গতকাল পুলিশ পটুয়াখালী জেলা জামায়াতের নায়েবে আমীর আবদুস সালাম খান, সাতক্ষীরা জেলার তালা উপজেলা জামায়াতের সেক্রেটারি মাওলানা মুফিদুল ইসলাম, সিলেট মহানগরীর বিমানবন্দর থানা জামায়াতের সেক্রেটারি এড. আজিম উদ্দিন, নীলফামারী জেলার সৈয়দপুর পৌরসভা জামায়াতের আমীর মোস্তাকিমসহ জেলার ৫ জন নেতা-কর্মীকে, নোয়াখালী জেলার সেনবাগ পৌরসভা জামায়াতের সভাপতি মাওলানা মোঃ হানিফ, ঢাকা মহানগরী জামায়াতের রুকন আ: গফুর এবং শ্রমিককল্যাণ ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক হারুনুর রশিদ খানের পুত্র মোঃ তহা ও পুত্রবধূ ফৌজিয়া বেগম, ইসলামী ছাত্রীসংস্থার কর্মী মুক্তা আক্তারকে ও ৮ অক্টোবর রাতে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ইসলামী ছাত্রশিবিরের সেক্রেটারি এমদাদুল্লাহকে অন্যায়ভাবে গ্রেফতার করেছে। পুলিশের গ্রেফতার ও জুলুম থেকে গৃহবধূ এবং ছাত্রীরাও রেহাই পাচ্ছে না। সারা দেশে গ্রেফতার অভিযান চালিয়ে সরকার দেশে অরাজকতা সৃষ্টি করছে।
তিনি বলেন, সরকার দেশের জনগণের ওপর স্বৈরশাসন চাপিয়ে দিয়ে জনগণ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। গণবিচ্ছিন্ন সরকার জনসমর্থন হারিয়ে জোরপূর্বক ক্ষমতায় টিকে থাকার ষড়যন্ত্র করছে। জনগণের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করে ক্ষমতার দাপট দেখিয়ে অতীতে যেমন কোন সরকার টিকে থাকতে পারেনি, তেমনি বর্তমান সরকারও বেশী দিন ক্ষমতায় টিকে থাকতে পারবে না। সরকারের দুঃশাসনের বিরুদ্ধে প্রতিবাদে সোচ্চার হওয়ার জন্য তিনি দেশবাসীর প্রতি আহ্বান জানান।
পটুয়াখালী জেলা জামায়াতের নায়েবে আমীর আবদুস সালাম খানসহ সারা দেশে জামায়াতে ইসলামী ও ইসলামী ছাত্রশিবিরের গ্রেফতারকৃত সকল নেতা-কর্মীকে অবিলম্বে মুক্তি দেয়ার জন্য তিনি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের প্রতি আহ্বান জানান।

About

ব্লগ সংরক্ষাণাগার

আমার ব্লগ তালিকা

Translate

Translate

আমাদের বাংলাদেশ নিউজ 24

সর্বশেষ

অনুসরণকারী