সঊদি আরবের আল-ক্বাসীম এলাকার বুকাইরিয়া শহরে তার জন্ম হয় ১৩৮২ হিজরীতে। তার মানে ২০১৪ সালে তাঁর বয়েস হলো মাত্র ৫৩ বছর। তিনি ছোট বেলা থেকেই খুব মেধাবী ছিলেন। প্রায় ১২ বছর বয়েসে তিনি পবিত্র কোরআনের হাফিয হন। লেখাপড়া করেছেন রিয়াদে। ১৯৯৫ সালে মক্কার উম্মুল ক্বুরা বিশ্ববিদ্যালয়-এর শরিয়া ফ্যাকাল্টি থেকে পিএইচডি ডিগ্রী অর্জন করেন।
তিনি ছোট বেলার একটা ঘটনা বলতে গিয়ে খুব আবেগী হয়ে যান। ছোট বেলায় কি একটা দুষ্টুমি করেছিলেন ফলে তার মা তার ওপর রেগে যান। রেগে গিয়ে বলেনঃ তুই বের হয়ে যা, গিয়ে হারামাইনের ‘ইমাম’ হ।
আল্লাহ সুবহানাহু ও তায়ালা তার আম্মার এই দোয়া কবুল করেছেন। তিনি কা’বা শরীফের ইমাম হওয়ার আগে অনেক ছোটবড় মসজিদের ইমামতিও করেছেন।
তিনি উম্মুল ক্বুরা বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন প্রফেসর। তিনি শরীয়া কোর্টের বিচারপতিও ছিলেন। তাঁর এই গুরু দায়িত্বের পাশাপাশি তিনি সব সময় শিক্ষকতার পেশাকে অত্যন্ত সম্মানের সাথে কাছে টেনে নিয়েছেন। সৌদি সরকারের অনুমোদিত জামেয়াতুল মা’রেফা আল-আলামিয়্যাহ (নলেজ ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির চ্যান্সেলর) যার শিক্ষকতায় আছেন সৌদি গ্রান্ড মুফতি, ধর্মমন্ত্রী সহ অনেক উচ্চ পদস্থ উলামায়ে কেরাম।
তাঁর প্রকাশিত বইয়ের সংখ্যা হলো ৯টা এবং আরো ৬ টি গ্রন্থ ও গবেষনা পত্র প্রকাশের অপেক্ষায় আছে।
তিনি খুবই বিনয়ী। সব সময় সাধারণ মানুষদের কাছে থাকতে ও সাথে থাকতে ভালোবাসেন। তিনি এখন কা’বা শরীফ ও মসজিদে নববীর প্রধান ইমাম। কিন্তু এখনও তিনি ক্লিনারদের সাথে বসে ইফতার করতে ও খাবার খেতে পছন্দ করেন। তিনি সব সময় হাস্যোজ্জ্বল থাকেন। সবার সাথে হাসি মুখে মন খুলে কথা বলেন। খুব বিনয়ের সাথে নরম ও মিষ্টিস্বরে কথা বলেন। তিনি হাল্কা কৌতুক করতে ও চুটকি বলতে পছন্দ করেন। তবে, নামাযে দাড়ালেই কেঁদে ফেলেন।
শেখ সুদাইস একবার এক টিভি অনুষ্ঠানে প্রশ্নোত্তর দিচ্ছিলেন। এমন সময় এক মহিলা ফোন করে বলেনঃ আমি স্বপ্নে দেখেছি যে এক বড় বিখ্যাত শায়খ কা’বা শরীফে উলংগ হয়ে কা’বা শরীফ তাওয়াফ করছেন। তিনি আমার কোন আত্মীয় নন, বা কাছের কেউ নন। কিন্তু আমি তাকে খুব ভালো করেই চিনি। এই স্বপ্নের ব্যাখ্যা কি?
তখন শেখ সুদাইস বললেনঃ সেই লোকের জন্যে সুসংবাদ, আল্লাহ তার প্রতি সন্তুষ্ট আছেন এবং তিনি গুনাহ থেকে মুক্ত হয়েছেন। তখন প্রশ্নকারী মহিলা বললেনঃ আমি যে শায়খকে স্বপ্ন দেখেছি তিনি হলেন ‘আপনি’ (শায়খ সুদাইস)। এ কথা শুনার সাথে সাথেই শায়খ সুদাইস অঝোর ধারায় কেঁদে দিলেন।
#বিঃদ্রঃ সপ্নব্যাখ্যা একমাত্র তারাই দেয়ার যোগ্য যাদের হাদীস ও এলেমের ওপর বিশেষ জ্ঞান রয়েছে। মুহাদ্দীস ও মুফতী। তাই এখানে শায়েখ নিজেই সপ্নের ব্যাখ্যা দিয়েছেন যে, 'উলঙ্গ দেখার মানে গুনাহ থেকে পবিত্র হওয়া'। তাই কোন সন্দেহের অবকাশ নেই।
আল্লাহ্ হজরতকে হায়াতান তায়্যিবা দান করুন। এবং দুনীয়া ও আখিরাতে আরও সম্মানীত করুন। আমিন।।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন