বিজ্ঞাপন দিন

আচ্ছালামু আলাইকুম ওয়ারাহমাতুল্লাহ। ইসলামী ব্যাংক এজেন্ট ব্যাংকিং আউটলেট দক্ষিণগাও, শাহীবাগ বাজার এর পক্ষ থেকে সকল গ্রাহক, শুভাকাংখীসহ সবাইকে জানাই ঈদ উত্তর সালাম ও আন্তরিক শুভেচ্ছা। ব্যাংক খোলা এবং যথারীতি ব্যাংকিং কার্যক্রম চলছে। এই গ্রুপে যারা আছেন তাদের মাধ্যমে সংশ্লিষ্ট এলাকার এলাকারসকলকে ইসলামী ব্যাংকের মাধ্যমে বিদেশ থেকে রেমিটপন্স পাঠানোর আহবান জানাচ্ছি। ঢাকার সবুজবাগ থানার রাজারবাগ, কুসুমবাগ, দক্ষিনগাও, শাহীবাগ, মানিকদিয়া, বাইকদিয়া, নন্দিপাড়াসহ সকল এলাকার গ্রাহক, শুভাকাংখী, শুভানুধ্যায়ীদের প্রদত্ত মোবাইল নাম্বারে যোগাযোগ করার অনুরোধ করা হলোঃ ০১৭১১-৪৫৮১৫১, ০১৭০০৯২৫২৪১:b>ইসলামী ব্যাংক এজেন্ট ব্যাংকিং আউটলেট দক্ষিণগাও, শাহীবাগ বাজার

রবিবার, ১৯ জুলাই, ২০১৫

“ও মন রমজানের ঐ রোজার শেষে এলো খুশীর ঈদ” – কেমন করে গানটি আমাদের হলো" .


বাঙালির প্রায় প্রতিটি উৎসবের সাথেই জড়িয়ে আছে কোনো না কোনো গান। একুশে ফেব্রুয়ারিতে আমরা যেমন কণ্ঠে তুলে নিই ‘আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙানো একুশে ফেব্রুয়ারি’ ঠিক তেমনি পহেলা
বৈশাখে এই বাঙালির কণ্ঠেই উঠে আসে ‘এসো হে বৈশাখ এসো এসো’ গানের চরণগুলো। তবে বাঙালি মুসলমানের ঈদ উৎসবে ‘ও মন  রমজানের ঐ রোজার শেষে এলো খুশির ঈদ’ গানটি যেমন প্রাণ  পেয়েছে, তেমন একক ও স্বতন্ত্র জনপ্রিয়তা খুব কম গানের ক্ষেত্রেই এসেছে। প্রতি বছর রমজান শেষে ঈদের চাঁদ উঠলেই সবার কণ্ঠে ধ্বণিত হতে থাকে জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের এই সাড়া জাগানো গানটি। এখানে উল্লেখ করার মতো বিষয় হলো, ‘রমজানের ঐ রোজার শেষে এলো খুশির ঈদ’ শিরোনামের যে গানটি এখন আমাদের কাছে পরিচিত, সেই গানটির সাথে এই গানের মূল কবিতার বেশ কিছু পার্থক্য রয়েছে। আর মূল গানটি নজরুল লিখেছিলেন ১৯৩১ সালের কোনো এক সময়ে। যে সময়টায় এই গান রচিত হয়, সে সময় নানা ধারার গানে নজরুলের খ্যাতি থাকলেও ইসলামি গান রেকর্ডিং-এ সেভাবে হাত দেননি নজরুল। মূলত সে সময়কার মুসলিম রক্ষণশীল সমাজ গান-বাজনার ঘোর বিরোধী হওয়ার কারণেই নজরুল তার লেখা ইসলামি গানগুলো রেকর্ডিং  করতে আগ্রহী হননি। এদিকে এই সময়েই কলকাতা তথা গোটা বাংলাতে শিল্পী হিসেবে আব্বাস উদ্দিন আহমদের নামযশ ছড়িয়ে পড়েছিল। 

নজরুলের সাথে তার হূদ্যতাও ছিল উলেস্নখ করার মতো। তাই নজরুলের বাসায় যাতায়াত এবং তার সাথে যোগাযোগের সুবাদে এক সময় আব্বাস উদ্দিনই তাকে অনুরোধ করেন ইসলামি গান রেকর্ডিং করে প্রকাশ করার ব্যবস্থা নিতে। শিল্পীর এই অনুরোধে নজরুলও বিষয়টি নিয়ে এগিয়ে যেতে সম্মত হন এবং তৎকালীন গ্রামোফোন কোম্পানির রিহার্সেল ইনচার্জ ভগবতী ভট্টাচার্যের সাথে এ নিয়ে আব্বাস উদ্দিনকে আলাপ করতে বলেন। 
প্রথম দিকে লাভ-লোকসানের কথা চিন্তা করে এক বাক্যেই তাকে না করে দেন ভগবতী। তবে নানাভাবে তাকে বুঝিয়ে অবশেষে প্রায় এক বছর পর ইসলামি গানের রেকর্ড প্রকাশের সম্মতি আদায় করেন শিল্পী আব্বাস উদ্দিন। তবে সে সময় তিনি এই শর্তে রাজি হন যে এবার ইসলামি গানের রেকর্ড হলেও যদি বিক্রি না হয় তাহলে এর পর গ্রামোফোন কোম্পানি আর কোনো ইসলামি গানের রেকর্ড প্রকাশ করবে না। ভগবতী ভট্টচার্য রাজি হওয়ার সাথে সাথে আব্বাস উদ্দিন তার রুম থেকে বের হয়ে নজরুলের খোঁজে একে ওকে জিজ্ঞেস করে জানতে পারেন যে, নজরুল তিনতলায় তার নিজস্ব কামরায় আছেন। আব্বাস উদ্দিন ঘরে প্রবেশ করেই দেখতে পেলেন, নজরুল ইন্দুবালাকে গান শেখাচ্ছেন। আব্বাস নজরুলের কাছে বসে বসে তার কানে কানে বললেন, ভগবতী ভট্টাচার্য মহাশয় রাজি হয়েছেন বাংলায় ইসলামি গান রেকর্ড করতে। আব্বাস উদ্দিনের কাছ থেকে এই কথা জানার সাথে সাথেই নজরুল গান শেখানো বন্ধ করে ইন্দুকে বাড়ি চলে যেতে বলেন। তারপর আব্বাস উদ্দিনের সাথে তার কাজ আছে বলে দশরথকে ডেকে চা ও পান আনতে বলেন। 
এ সময় কলকাতার ম্যাগন থিয়েটারের বিশ ও তিরিশের দশকের প্রধান নাট্যকার ও প্রখ্যাত সুরশিল্পী জনাব আগা হাশরের রচিত এবং
সুরারোপিত ‘হাম জায়েঙ্গে ওয়াহিঃ দিওয়ানা যাহা হো’ গানটি বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছিল। উর্দু এই গানটির সুর নজরুলেরও বেশ ভালো লাগতো। 
.ইতিমধ্যে দশরথ এক ঠোঙ্গা পান ও চা নিয়ে এলে এগুলো নিয়ে আব্বাস নজরুলের রুমে ঢুকলেন। তিনি আব্বাসকে বললেন, ‘দরজা বন্ধ করে দিয়ে চুপ করে বসে থাকো।’ এরপর নজরুল আগা হাশরের ওই বিখ্যাত জনপ্রিয় উর্দু গানের সুর ও ছন্দ পুঁজি করে সামনে
ঈদের আনন্দকে হূদয়ে লালন করতে সেই সুর ও ছন্দে মাত্র ১৫/২০ মিনিটের মধ্যে রচনা করে ফেলেন ‘ও মন রমজানের ঐ রোজার শেষে এলো খুশির ঈদ’ গানটি। গান লেখা শেষ করেই তিনি এর সুর সংযোগ করে তা আব্বাস উদ্দিনকে শিখিয়ে দেন এবং পরের দিন একই সময়ে তাকে আসতে বলেন। পরের দিন আব্বাস উদ্দিন আবারো নজরুলের কাছে গেলে তিনি ‘ইসলামের এই সওদা লয়ে এলো নবীন সওদাগর’ শিরোনামের আরো একটি গান লেখেন। অবশেষে গান দুটো লেখার ঠিক চারদিন পরেই এই গান দুটো  এইচ.এম.ভি কোম্পানিতে রেকর্ড করা হয়। এ সময় নজরুল এতোটাই অস্থির ছিলেন যে তিনি নিজে থেকেই বারবার সবকিছুর খোঁজ নিচ্ছিলেন এবং তদারকি করছিলেন। তখনকার দিনে যন্ত্র ব্যবহার হতো শুধু হারমোনিয়াম আর তবলা। এদিকে গান দুটি তখনও আব্বাসের মুখস্থ হয়নি। তাই শিল্পী আব্বাস উদ্দিনকে সহায়তা করতে নজরুল নিজেই সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিলেন। নজরুল যা লিখে দিয়েছিলেন মাইকের পাশ দিয়ে হারমোনিয়ামের ওপর ঠিক আব্বাসের চোখ বরাবর হাত দিয়ে নজরুল নিজেই সেই কাগজখানা ধরলেন। আব্বাস উদ্দিনও গেয়ে চললেন ‘ও মন রমজানের ঐ রোজার শেষেঃ’। আর এভাবেই রেকর্ডে বাণীবদ্ধ হয় কালজয়ী এই গানটি। গানটি রেকর্ড হবার মাস দুয়েক পরেই ছিল ঈদুল ফিতর। আর ঈদের সময়েই রেকর্ডটি বাজারজাত করে গ্রামোফোন কোম্পানি। রেকর্ড নম্বর ছিল ৪১১১ এবং প্রকাশকাল ছিল ১৯৩২ সালের ফেবু্রয়ারি মাস। 
.আর এই রেকর্ডটির সুবাদেই আজ থেকে প্রায় ৭৯ বছর আগে শ্রোতাদের কানে প্রথমবারের মতো পৌঁছে যায় ‘রমজানের ঐ রোজার শেষে এলো খুশির ঈদ’ গানটি। 

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

About

ব্লগ সংরক্ষাণাগার

আমার ব্লগ তালিকা

Translate

Translate

আমাদের বাংলাদেশ নিউজ 24

সর্বশেষ

অনুসরণকারী