সিলেঠে ১৩ বছর বয়েসি সামিউল কে প্রকাশ্য দিবালোকে পিটিয়ে, খুচিয়ে মারা হয়েছে। সেই পৈচাশিক ঘটনা আবার আরেক খুনি ভিডিও করেছে ! কি নির্মম!
মনে পড়ে গেল ১৯৭৪ সালে আমার বড় চাচা যিনি পেশায় একজন ডাক্তার এবং মুক্তিযোদ্ধা ছিলেন তাকে রক্ষী বাহিনীর খুনিরা এভাবেই প্রকাশ্য দিনে দুপুরে ব্যনেট দিয়ে খুচিয়ে হত্যা করেছিল। সামিউলের মত তাকেও সেদিন মৃত্যুর মুখে পানি খেতে দেওয়া হয়নি।
স্বাধীনতার ৪৪ বছর তো কেটে গেলো, কেন আমরা সভ্য হতে পারলাম না ?? সভ্য হবার সেই চেষ্টাও আমাদের নেই । নৈতিকতা খুইয়ে পশুত্বের দিকেই বরং ছুটে চলছি । বছর দুয়েক আগে শাহবাগে আমাদের প্রায় সকল সুশীলজনতা উপস্থিত হয়ে যুদ্ধাপরাধীর বিচার নয় ফাসি দাবী করলাম!
নিজের ছোট্র অবুঝ শিশুর মাথায় ব্যানার লাগিয়ে দিলাম “ফাসী চাই’’ ! বিচারের বদলে ফাসী চাওয়ার বিরল বর্বর জাতী আমরা।
বিশ্বজিতকে যখন ছাত্রলীগের ছেলেরা কুপিয়ে হত্যা করছিল আমজনতা পুলিশ সাংবাদিক সেই দৃশ্য উপভোগ করছিল। বেসরকারী চ্যানেলে খুনের লাইভ কভারেজ দিচ্ছিল। বিশ্বজিতকে হাসপাতালে নেবার মত কেউ ছিলনা ! একজন রিকশাওয়ালা তাকে হাসপাতালে নিয়ে গেলেও তার যর্থাপুযুক্ত চিকিতসা করা হয়নি। আজও বিচার হয়নি। খুনিরা আমাদের পাশেই আছে।
বই মেলায় ব্লগার অভিজিতকে হত্যার সময়েও একই দৃশ্য । পুলিশ জনতা নিরব দর্শক। রক্তাত্ব দম্পতীর ছবি তুলছিল অনেকেই। কেউ এগিয়ে আসেনি। পল্টনেও লগি বৈঠা দিয়ে মানুষ হত্যা করা হয়েছিল যার খুনিরা এখন মুক্ত চিন্তার ধারক বাহক হয়েছে। নৈতিকতার অধ:পতন কতটা হয়েছে আমাদের তা আমরা হয়ত বুঝতেও পারছি না।
গনতন্ত্র স্বাধীনতা আর সকল নাগরিকের সমঅধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য জীবন দিয়ে যারা বাংলাদেশকে স্বাধীন করেছিল আজ সেই মুক্তিযোদ্ধাকেই ঘুস দিতে হয় রাষ্ট্রকে। তারপর নাগরিকের পয়সায় বেতন নেওয়া চাকরের গলা ধাক্কা খেয়ে আত্মহত্যা করতে হয়।
গনতন্ত্রহীন ১৯৭৪ এর সেই বাকশালেই যেন আমরা আটকে আছি।
সামিউল ক্ষমা করিস বাপ। আমার ছেলেও তোর বয়েসি। আমরা পারিনি তোদের জন্য একটি নিরাপদ বাংলাদেশ গড়ে দিতে। এই দায় নিয়েই আমাদের কবরে যেতে হবে। তোর লাশের কাছে তাই নতজানু মস্তকে দাড়িয়ে আছি।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন