২১ জুলাই ২০১৫: মঙ্গলবার, মুক্তিযুদ্ধকালীন মানবতাবিরোধী অপরাধে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি ও বিএনপি নেতা সালাহউদ্দিন কাদের চৌধুরীর সঙ্গে জেলখানাতেই দেখা হয়েছে একই অপরাধে আমৃত্যু কারাদণ্ডাদেশপ্রাপ্ত আসামি ও জামায়াতের নায়েবে আমির মাওলানা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর।
গত শনিবার ঈদের দিন কারাগারের ভেতরে তাঁরা জামাতে নামাজ পড়তে গেলে এই দুই নেতার দেখা হয়। ওই সময় কিছুক্ষণ নিজেদের মধ্যে কুশল বিনিময়, কোলাকুলি করার পাশাপাশি কিছুক্ষণ আলাপ-আলোচনাও করেন তাঁরা।
কাশিমপুর কারাগারের কর্মকর্তারা জানান, সালাহউদ্দিন কাদের চৌধুরী ও দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদী কাশিমপুর-১ কারাগারের আলাদা আলাদা সেলে বন্দি থাকেন। তবে ঈদের জামাতের সময় সব বন্দিই নামাজে অংশ নেওয়ার সুযোগ পেয়েছে। এই কারাগারে ঈদের চারটি জামাত অনুষ্ঠিত হয়েছে। এর একটিতে ইমামতি করার আগ্রহ প্রকাশ করেছিলেন জামায়াত নেতা সাঈদী। কিন্তু তাঁকে সেই সুযোগ দেওয়া হয়নি। মূলত ইমামতি করার জন্য বাইরে থেকে মাওলানা আনার কারণেই সাঈদীকে ইমামতির দায়িত্ব দেওয়া হয়নি বলে জানান কর্মকর্তারা।
এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে কাশিমপুর-১ কারাগারের জেল সুপার সুব্রত কুমার বালা কালের কণ্ঠকে বলেন, 'কারাগারে ঈদের চারটি জামাত অনুষ্ঠিত হয়েছে। প্রত্যেকটি জামাতের জন্য বাইরে থেকে একজন করে মোট চারজন মাওলানা আনা হয়েছিল। তাই বন্দিদের মধ্য থেকে কাউকে ইমামতি করতে দেওয়া হয়নি।' কাশিমপুর-২ কারাগারে এখন বন্দি রয়েছেন বিএনপির দপ্তর সম্পাদক রুহুল কবীর রিজভী, একাত্তরে মানবতাবিরোধী অপরাধে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত জামায়াত নেতা এ টি এম আজাহারুল ইসলাম ও মীর কাসেম আলী। তাঁরাও ঈদের নামাজ পড়েছেন বলে জানা গেছে। মুক্তিযুদ্ধকালে মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে ফাঁসির দণ্ডাদেশপ্রাপ্ত জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল ও সাবেক মন্ত্রী আলী আহসান মোহাম্মদ মুজাহিদ ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে ছিলেন। ঈদের আগে তাঁকে নারায়ণগঞ্জ কারাগারে পাঠানো হয়। তবে ঈদের পরদিন রবিবার তাঁকে আবারও ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে ফেরত আনা হয়েছে।
এদিকে প্রতিবারের মতো এবারও ঈদ উপলক্ষে বিশেষ বিবেচনায় ছয়জন বন্দিকে মুক্তি দেওয়া হয়েছে। কারা অধিদপ্তরের সহকারী আইজি প্রিজন্স আবদুল জলিল কালের কণ্ঠকে বলেন, এবারের ঈদে ফৌজদারি কার্যবিধির ৪০১(১) ধারার ক্ষমতাবলে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগার, কাশিমপুর-২, ঝিনাইদহ, মাদারীপুর, নওগাঁ ও চাঁপাইনবাবগঞ্জ কারাগার থেকে একজন করে মুক্তি দেওয়া হয়। ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে যাকে মুক্তি দেওয়া হয়েছে তার পারিবারিক আইনে তিন মাসের সাজা হয়েছিল। ঈদে সরকারের সাধারণ ক্ষমার আওতায় তিনি মুক্তি পেলেন।
কারা কর্মকর্তারা জানান, দেশের প্রতিটি কারাগারেই ঈদের নামাজের আয়োজন করা হয়। জঙ্গিসহ দুর্ধর্ষ বন্দিদের জন্য আলাদা জামাতের ব্যবস্থা করা হয়। আর সাধারণ বন্দিরা নামাজ আদায় করেছে আলাদা জামাতে। ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারের জেলার নেছার আলম কালের কণ্ঠকে জানান, কারাগারে ঈদের দিন সকালে বন্দিদের পায়েস ও মুড়ি খেতে দেওয়া হয়েছে। দুপুরে ভাত, মাছ, ডিম দেওয়া হয়েছে। আর রাতে পরিবেশন করা হয়েছে পোলাও, গরুর মাংস ও সালাদ। প্রত্যেক বন্দির জন্য এদিন ৫০০ গ্রাম (আধা কেজি) গরুর মাংস বরাদ্দ করা হয় বলে জানান এই কারা কর্মকর্তা।
.উৎসঃ কালের কণ্ঠ
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন