কথায় বলে না, 'কু-পাত্রে দান'। অ্যালুমিনিয়ামের ক্ষেত্রে কথাটা একদম ঠিকঠাকভাবে খাটে। কারণ অ্যালুমিনিয়ামের পাত্রে রান্না করার পর সেই খাবার যে পরিমাণ 'বিষ' শরীরে ঢোকে, তা থেকে দীর্ঘমেয়াদি অসুখ হওয়াটাই স্বাভাবিক। এমনকী এই বিষ ধীরে ধীরে মৃত্যুর মুখে ঠেলে দেয়।
প্রত্যেক বাড়িতেই কম-বেশি অ্যালুমিনিয়ামের পাত্রেই রান্না করা হয়ে থাকে। এই পাত্রগুলিতে তেমন ভালো কোটিং থাকে না। বেশিরভাগ পাত্রে তো থাকেই না। ফলে রান্না করার সময় পাত্র থেকে অ্যালুমিনিয়ামের অংশ খাবারে মিশতে থাকে। লক্ষ্য করে থাকবেন, বেশ কিছু দিন ব্যবহার করার ফলে অ্যালুমিনিয়ামের পাত্র ক্ষয়ে যায়, বা নীচের দিকে ফুটো হয়ে যায়।
রান্না করার সময় হাতা-খুন্তি নাড়ানোর জন্য ওই অ্যালুমিনিয়ামের বেশিরভাগটাই খাবারের সঙ্গে মিশে যায়। পরে তা আমাদের শরীরে প্রবেশ করে। আর সব থেকে খারাপ যেটা তা হল, এই অ্যালুমিনিয়াম আমাদের শরীরে বাসা বেঁধে থেকে যায়। সহজে তা বের করা যায় না।
চিকিত্সকদের মতে, অ্যালুমিনিয়ামের মধ্যে মিশে থাকে ক্ষতিকারক আয়ন। মূলত এটাই শরীরের পক্ষে মারাত্মক খারাপ। কী করে এই আয়ন? এই আয়ন ব্রেন বা মস্তিষ্কের পক্ষে অত্যন্ত খারাপ। দীর্ঘ দিন ধরে এই আয়ন ব্রেনের সূক্ষ টিস্যুগুলোর ক্ষতি করতে থাকে।
এর ফলে ডেমেনশিয়া বা স্মৃতিভ্রংশ হওয়ার রোগ হয়। অ্যালঝাইমার্স হওয়ার অন্যতম প্রধান কারণও এই আয়ন। তাঁদের মতে, অ্যালুমিনিয়ামের পাত্রের বদলে স্টিলের পাত্রে রান্না করা অনেক নিরাপদ। এতে রান্না করা খাবারে কোনও ক্ষতিকারক বস্তু শরীরে ঢোকে না।
দীর্ঘ দিন ধরে এই সব পাত্রে রান্না করা খাবার খেলে সাধারণের তুলনায় বেশি ক্লান্তি লাগতে পারে। সময়-অসময়ে ঘুম পাওয়া এর অন্যতম লক্ষ্মণ। এমনটা হলে ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়াই ভালো। হাঁড়েরও ভীষণ ক্ষতি করে এই আয়ন। এর ফলে অস্টিও পোরোসিস হয়।
এ জন্যই বিশেষত মহিলাদের হাঁড়ে ক্ষয় বেশি হয়। অল্প আঘাতে ভেঙেও যেতে পারে। এখানেই শেষ নয়, দীর্ঘ দিন ধরে অ্যালুমিনিয়ামের পাত্রে রান্না করা খাবার খেলে বৃহদ্রান্ত্র বা লার্জ ইন্টেস্টাইন, কিডনি এবং রক্ত কনিকার বারোটা বাজায়। এই জিনিসই পরে ক্যান্সারের দিকে মোড় নিতে পারে।
অন্য দিগন্ত
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন